![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একদা এক বনে এক সিংহ ছিল। সেই বনে অন্যান্য প্রাণীরাও সুখে-শান্তিতে বসবাস করে। গ্রীষ্মকালে প্রচন্ড গরম পড়ে। চারিদিকে কোথাও কোনো পানি নেই। নদী-নালা সব শুকিয়ে যায়। পানির অভাবে বনের গাছপালা সব শুকিয়ে যেতে থাকে। কোথাও কোথাও মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যায়। আকাশে মেঘের ছিটে ফোঁটা নেই। চারিদিকে গরম বাতাস আর কাঠফাটা রোদ।
বনের প্রাণীরা খাবার পানির সন্ধানে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বন থেকে বেশ খানিকটা দূরে একটা ছোট্ট ঝরণা। একটি নেকড়ে একদিন সেই ঝরণাটির সন্ধান পায়। অতএব তৃষ্ণার্ত নেকড়েটি মহা আনন্দে, সেই, ছোট্ট ঝরণার দিকে এগিয়ে যায়। ঝরণার কাছে গিয়ে সেই না পানি পান করবে তখন দেখে নেকড়েটি যেখানে দাঁড়িয়ে আছে তার বিপরীত দিকে একটু পেছনে একটা সিংহ এসে পানি পান করার জন্য দাঁড়িয়ে।
সিংহের খুব রাগ। সে হলো বনের রাজা। তার আগে একটা সামান্য নেকড়ে পানি পান করবে, কিছুতেই তা হয় না। এটা সিংহের স্ট্যাটাসে বাধে। তাই সিংহটি কিছুতেই তার আগে নেকড়েটিকে পানি পান করতে দেবে না। তাছাড়া বনের রাজা সে। রাজার সাথে প্রজার পানি পান কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।
সুতরাং পানি পান করা নিয়ে সিংহ আর নেকড়ের মধ্যে প্রচন্ড বিবাদ শুরু হয়ে যায়। প্রথমে দু'জনের কথা কাটাকাটি, পরে দস্তুর মতো লড়াই বেঁধে যায়। সে এক মারাত্মক লড়াই। অনেকক্ষণ ধরে সে লড়াই চলে। কেউ কাউকে পরাজিত করতে পারে না। সিংহ আর নেকড়ে দু'জনে সমানে সমান। লড়াই করতে করতে দু'জন-ই এক সময় হাঁফিয়ে পড়ে।
তাই একটু হাঁফ ছাড়তে বিরতি দেয়। এমন সময় সিংহ আর নেকড়ে দু'জনই লক্ষ্য করে, তাদের থেকে একটু দূরে গাছের ডালে বসে একটা ক্ষুধার্ত শকুন অপেক্ষা করছে। লড়াই করতে করতে যখন মারা যাবে তখন শকুনটি এসে ছিঁড়ে ছিঁড়ে মাংস খাবে।
এই দেখে সিংহ আর নেকড়ে থমকে যায়। দু'জন-ই চিন্তা করে, শুধু বিবাদ করে শকুনের পেটে যাওয়ার চেয়ে বিবাদ না করাই ভালো। বিবাদ করে আমাদের দু'জনের কারোর-ই কোনো লাভ নেই। বরং আমরা মারা গেলে ঐ ক্ষুধার্ত শকুনের লাভ। সিংহ আর নেকড়ে একটু থেমে কি যেন ভাবতে লাগে।
শকুনটি দেখে ওদের দু'জনেরই মনে শুভ বুদ্ধির উদয় হয়। সিংহ আর নেকড়ে সিদ্ধান্ত নেয়, আর বিবাদ নয়। তাই সিংহ নেকড়ে প্রস্তাব দেয়.....
-ভাই, আমরা আর ঝগড়া-বিবাদ করবো না। মারামারি করে আমাদের মধ্যে যে কেউ মরলে ঐ ব্যাটা শকুনের লাভ। আমাদের মাংস সে মজা করে ঠুকরে ঠুকরে খাবে। সেটি আমরা হতে দেবো না। তার চেয়ে, ভাই নেকড়ে, এসো আমরা বিবাদ মিটিয়ে নিই। তুমি তো আগে ঝরণার পানি পান করতে এসেছো, তাই তুমি ভাই, আগে পান করো।
নেকড়েটি সিংসকে বলে......
- আপনি একজন দয়ালু রাজার মতোই আচরণ করলেন। তাই আপনার প্রতি আমার শ্রদ্ধা বেড়ে গেল। আপনি বনের রাজা। রাজাকে সম্মান জানাতে হয়। তাই আমার অনুরোধ রাজা হিসেবে আপনি আগে পানি পান করুন। তারপর আমি পান করবো।
নেকড়েটি এইভাবে বনের রাজাকে যখন বলে তখন শকুনটি তাদের সব কথা শুনে ভাবে, আর এখানে অপেক্ষা করে কোনো লাভ নেই, আজ তার কপাল মন্দ। এই ভেবে আর সেখানে সময় নষ্ট না করে শকুনটি উড়ে চলে যায়।
(ঈশপের গল্প)
শিক্ষা: দু'জনের কলহে তৃতীয় জনের লাভ হয়।
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৭
সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন:
আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত প্রকাশ করছি।
২| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৪
আখেনাটেন বলেছেন: ঈশপ চাচা অনেক গিয়ানি কথাই বলে গেছেন। মেনে চললে ফায়দা হবে এটা নিশ্চিত।
সুন্দর এই ঘটনাটি পুনরায় সামনে আনার জন্য আপনাকে সাকিবীয় শুভেচ্ছা রইল।
৩| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০১
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট।
৪| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৫
শরিফুল ইসলাম (ফরহাদ) বলেছেন: দুজনের সুবুদ্ধিসম্পন্ন। মনোভাব শকুনের পেটে ক্ষুধা রেখে গেলো।
৫| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১০
ঋতো আহমেদ বলেছেন: তাই ভাবছিলাম। ঈশপের গল্পের মতো। শেষে (ঈশপের গল্প)। গল্পটা দারুণ। ভালো লাগলো এর সারমর্মে।++
৬| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৮
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় সাকিবভাই,
ঈশপমামাকে অভিনন্দন, এমন গল্পকথার উপহার দিয়ে যাওয়ার। আর আপনাকে শুভেচ্ছা। ♥♥
৭| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১০
রাজীব নুর বলেছেন: সুন্দর শিক্ষনীয় গল্প।
৮| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৯
ওমেরা বলেছেন: শিক্ষনীয় গল্প ভাল লাগল ।শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:২৪
সোহেল আহমেদ নাসিম বলেছেন: আমাদেরও শুভ বুদ্ধির উদয় হোক ....