নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের দর্পণ

সোহাগ তানভীর সাকিব

বাস্তবতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস।

সোহাগ তানভীর সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধুম্রজাল

০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২৪



বই: ধুম্রজাল (গল্পগ্রন্থ)
লেখক: সোহাগ তানভীর সাকিব
প্রকাশনী: হরিৎপত্র প্রকাশন (অমর একুশে বইমেলা, ঢাকা। স্টল নং ২০৯)।
প্রচ্ছদ : আহ্সান রাব্বি।
মূল্য: ১৫০ টাকা।


বইটির প্রথম গল্প "ধুম্রজাল" এর অংশবিশেষ নিচে দেওয়া হলো:-
রাতে শোয়ার পর কিছুতেই আমার চোখে ঘুম আসে না। হাসান পাশে শুয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই গভীর ঘুমে নিমজ্জিত হয়ে যায়। কিন্তু অধিক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও আমি ঘুমের দেখা পাই না। নিস্তব্ধ নিঝুম চারিদিক। ঘুমন্ত লোকালয়। দেয়াল ঘড়ির টিকটিক শব্দ বিরামহীন। নিরব নিস্তব্ধ রাতে ঘুম না আসা অবস্থায় ঘড়ি চলার টিকটিক শব্দ খুবই বিরক্তিকর আর বিশ্রী লাগে। সাথে শনশন শব্দে চলে ঐ ঘাতক ফ্যান।

চোখ দুটি বন্ধ করি। এপাশ ওপাশ করি। তবুও ঘুম আসে না। কিছু সময় পর চোখ খুলে দেখি কিছুই নেই। তবে এবার কোথায় থেকে যেন মেয়েছেলের উচ্চস্বরে হাসির আওয়াজ আসে। আবার চোখ বন্ধ করি। কিছু সময় বন্ধ করে থাকার পর চোখ খুলি। এবার আর ফ্যানের দিকে তাকাই না। তাকাতে সাহস পাই না। তারপরও দেখতে পাই, মৌমিতার পা দুটি ঝুলছে আমার পেট বরাবর। রক্তহীন ফ্যাকাশে পায়ে রূপার নূপুর ঘরের আবছা অন্ধকারেও ঝিকঝিক করে। সাহস করে মৌমিতার মুখের দিকে তাকাই। লাল সালোয়ার-কামিজ পড়েছে। দীঘল কালো চুলগুলো এলোমেলো। বাম হাত মেহেদী রাঙা। দুই হাত ভার্তি কাঁচের লাল চুড়ি। সুকোমল হাত দুটি প্রাণহীন দেহের সাথে বিবর্ণ হয়ে ঝুলছে।

দাঁতে কামড় লাগা অবস্থায় জিহ্বার অগ্রভাগ বের হয়ে আছে। চোখের দিকে চোখ পড়তেই দেখি অপলক দৃষ্টিতে মৌমিতা আমার দিকে চেয়ে আছে। চোখ রাঙিয়ে যেন বলছে, এই যে মিস্টার চোখ কিন্তু তুলে নিব।

ভয়ে শরীর শীতল হয়ে যায়। মনের মধ্যে খুবই অস্থিরতা অনুভব করি। গা ছমছম করে। ঘামে ভিজে যায় শরীর। বিছানায় কিছুতেই শুয়ে থাকতে পারি না। বারান্দায় যাই। ইজি চেয়ারে বসি। আকাশে চাঁদ ছিল। আমি বারান্দায় প্রবেশ করার পর পরই মেঘের আড়ালে চলে যায়। আশেপাশে হয়ত কোথাও বকুল ফুল ফুটেছে। বাতাসে ভেবে আসছে সদ্যফোটা বকুলের সুমিষ্ট ঘ্রাণ। বাড়ির চারপাশে নিয়ন বাতি জ্বালানো। বারান্দায় ঝাপসা অন্ধকার। তিন তলার এ বারান্দা থেকে মংলা সমুদ্র বন্দর দেখা যায়। মাঝে মাঝে বন্দর থেকে আসে জাহাজ নোঙ্গর করার শব্দ। রাত খুব গভীর হওয়ার কারণে এখন সেই শব্দ অনেক কম।

বারান্দায় একাকি বসে থাকতে আমার খুব একটা ভালো লাগে না। শোয়ার আগে নাসরিনের সাথে বেশকিছু সময় ফেসবুকে চ্যাটিং করেছি। ভিডিও কলেও কিছু সময় কথা বলেছি। এখন তিনটা বাজে। ঘুমিয়ে পরেছে নাসরিন। ফোন দিতে গিয়েও দেই না। ওর কাঁচা ঘুম ভাঙতে ইচ্ছা করছে না।

চোখ দুটি বন্ধ করে বসে থাকি। ভাবি, নাসরিনকে যদি সাথে করে নিয়ে আসতে পারতাম তাহলে কতই না ভালো লাগতো। পশুর নদী আর সুন্দরবন নাসরিনের সাথে ঘুরে বেড়াতাম। এখন সবকিছু ভালো ভাবে চিনে যাই। বিয়ের পর নাসরিনকে সাথে করে আবার আসবো। এসব ভাবতে ভাবতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। ঘুমের ঘোরে থাকলেও সম্পূর্ণ বেহুশ হয় নি তখনও।

এমতাবস্থায় যখন আমি। হাঁটা শব্দ কানে আসে। নূপুরের রিনিঝিনি শব্দ স্পষ্ট শুনতে পাই। ঘরের ভেতর কে যেন নূপুর পায়ে হাঁটছে। মনের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়। এতরাতে আমাদের ঘরে নূপুরের শব্দ। চেয়ার থেকে ওঠে ঘরের ভেতরে যাই। হেঁটে বেড়ানো কাউকে পাই না। এবার বারান্দার ওদিক থেকে আসে চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ। ভয়ে গা ছমছম করছে। শিউরে ওঠে হাত পায়ের লোম। ভূতের বাড়ি এসেছি নাকি!!

সাড়া জীবন শুধু ভূতের গল্প শুনেছি, কখনও চোখে দেখিনি। আজ দেখবো। ভয়ে শরীরের লোম শিউরে উঠলেও মনটাকে শক্ত রাখি। দুর্বল হই না। আজ দেখবোই দেখবো। চুড়ির রিনিঝিনি শব্দ শুনে আবার বারান্দার দিকে ফিরে যাই।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৯

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো কথা। আবেগের কথা।

০২ রা জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৪২

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: ভালোবাসা নিবেন প্রিয়।

২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫০

নীল আকাশ বলেছেন: প্যারা গুলির মধ্যে স্পেস দিয়ে লিখলে ভালো হতো।
এটা কি একটা গল্পের অংশ? অনেকগুলি চরিত্র একজায়গায়?

১০ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৫৩

সোহাগ তানভীর সাকিব বলেছেন: জ্বী, এটা একটা গল্পের অংশ বিশেষ। একটু খেয়াল করলে দেখবেন লেখার নিচে বিশেষ দ্রষ্টব্য দেওয়া আছে।

লেখা পোষ্ট করার পরামর্শ দেওয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.