নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময়ের দর্পণ

সোহাগ তানভীর সাকিব

বাস্তবতাকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর ক্ষুদ্র প্রয়াস।

সোহাগ তানভীর সাকিব › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার কলিগ নাফিসা

১৪ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৯:২০


আমার কলিগ নাফিসা। বসে আমার পাশের টেবিলে। গায়ের রং ফর্সা। যেমনি উচ্চতা তেমনি ওজন। আড়াই বছর বয়সী এক কন্যা সন্তানের মা। নাফিসাকে দেখলে সুঠাম দেহের বৃহদাকার প্রাণী গন্ডারের কথা মনে পড়ে। যে গড়নে বৃহত চলনে নিরীহ। কাজে কামে ধীরস্থির। অফিসের কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, এই অফিসে সবচেয়ে অপদার্থ কর্মী কে?
আমার মনে হয়, নাফিসা বাদে অন্য সবাই নাফিসার নামই বলবে।
এক বছরের বেশি সময় এই অফিসে এলেও নাফিসার সাথে আজই প্রথম কিছুটা আলাপ হয়। চাপা স্বভাবের সে। কারো সাথে তেমন আলাপে জড়ায় না। কাজ না থাকলে মুঠোফোনে বুদ হয়ে পড়ে থাকে। কখনও বা টেবিলে মাথা রেখে ঘুমায়। তাকে নিয়ে আমরা মোটেও হাসাহাসি করি না। যার প্রতিটা কর্মকান্ড ও কথাবার্তা হাস্যকর তাকে নিয়ে হাসাহাসি করা চরম হাস্যকর।
নাফিসার কথাবার্তা কেমন হাস্যকর বলি।
অফিসের কনফারেন্স রুমে কাজ-কামের অগ্রগতি বিষয়ে মিটিং চলছে। প্রধান নির্বাহী স্যার চলমান প্রজেক্টগুলোর অপডেট জানছেন ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। পিওনেরা চা নাস্তা দিচ্ছে। এ সময় নাফিসা এক পিওনকে ডেকে বলে, আমাকে চা টা একটু আগে দিন। চা ঠান্ডা হয়ে গেলে আমি খেতে পারি না।

আজকে কাজের ফাঁকে অপর এক কলিগের সাথে দাম্পত্য জীবনের কোন্দল ও কলহ নিয়ে কথা বলছিলাম। বর্তমানে ঘরে ঘরে দম্পতিদের কোন্দল ও অশান্তির পেছনে একমাত্র দায়ী স্ত্রী এ বিষয়ে আমরা দু'জন যখন একমত ঠিক তখন নাফিসা আমাদের আলোচনায় প্রবেশ করে। বলে, না ভাই আপনাদের কথায় একমত হতে পারলাম না। নারীরা কখনই দায়ী নয়, পুরুষেরাই দায়ী।
আমাদের ক্ষুদ্র আলোচনায় নাফিসা তার মত প্রতিষ্ঠা করে তর্কে বিজয়ী হতে সাংসারিক জীবনের নানা ঘটনা উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে। আমরাও আমাদের মত যে সঠিক সেটা প্রমাণের জন্য উদাহরণ হিসেবে নিজের দাম্পত্য জীবনের তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করি।
লাঞ্চ টাইম হলে আলোচনা অমীমাংসিত থেকে সমাপ্ত হয়।
চেয়ার ছেড়ে উঠছি এমন সময় নাফিসা এসে একটা কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলে, ধরুন আপনাকে গিফট দিলাম।
খুলে দেখি সুন্দর একটি আলপনা। বলি, বাহ্ সুন্দর তো!
-আপনাদের সাথে কথা বলছিলাম আর আঁক ছিলাম। আরো কিছু আলপনা আঁকা আছে। যখন কাজ থাকে না তখন আঁকি। ভালো লাগে।
আলমিরা থেকে বেশ কয়েকটি কাগজ বের করে তার চিত্রকর্ম দেখায়। খেয়াল করে দেখি, তার কাছে অবস্থান করা ফাইলগুলো আলপনার দ্বারা সজ্জিত।

সুস্থ ও স্বাভাবিক কোনো মানুষ-ই অপদার্থ নয়। প্রতিটা মানুষেরই নিজস্ব গুণ আছে। সৃজনশীল সত্তা আছে। আমরা সেই গুণ বা সত্তা আবিষ্কার করতে না পারলে অপদার্থ ভাবি।

-সোহাগ তানভীর

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৯:২৯

সভ্য বলেছেন: আমাদের এমনটা ভাবা উচিত নয়। সবার ভিতরে ঈশ্বর জিনিষ দিয়েছেন।

২| ১৪ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১১:৫০

গরল বলেছেন: আপনার পোষ্টের ভাষা বডি শেমিং এর পর্যায়ে পড়ে, উন্নত দেশে হলে আর এই লেখা আপনার কলিগের দৃষ্টিগোচড় হলে আপনার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারত।

বর্তমানে ঘরে ঘরে দম্পতিদের কোন্দল ও অশান্তির পেছনে একমাত্র দায়ী স্ত্রী এ বিষয়ে আমরা দু'জন যখন একমত, এই মনোভাব নিয়ে ভদ্র সমাজে চলাফেরা করেন কিভাবে?

আপনার কলিগ যদি কোন কাজেরই না হয় তাহলে তাকে চাকুরীতে রেখেছে কেন? নিশ্চই এমন কোন কাজ করে যা আপনি জানেন না বা বুঝেন না।

৩| ১৫ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১২:২০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কাউকেই ছোট করে দেখা ঠিক না।
সঠিক খোচা পেলে পেলে নিস্প্রভ
ম্যাচ কাঠিটি বারুদের ঝলকানি
দেখাতে পারে।

৪| ১৫ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১২:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: সহকর্মীকে শ্রদ্ধা করতে হবে। বন্ধু ভাবতে হবে। আপনার লেখায় স্পষ্ট একজন সহকর্মীর উপর আপনার চিন্তা ভাবনা অতি নিম্ম মানের।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.