নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দয়া কি, দয়ার প্রকৃত স্বরূপ, মানুষের জীবনে দয়ার প্রয়োজনিয়তা, দয়া না হলে কি হয়, ইত্যাদি বিচার-বিশ্লেষণ মূলক আলোচনাই ‘দয়াদর্শন’। ‘দয়া’ সমাজে, ধর্মশাস্ত্রে খুবই আলোচিত একটি বিষয়। ‘দয়া’ জলের মতো দু অক্ষরের ছোট একটি শব্দ। ‘জল’ শব্দ উচ্চারণ করলে সাধারণভাবে আমরা তাঁর কিছু বৈশিষ্ট্য বুঝতে পারি, কিন্তু সাধারণের বোঝার বাইরেও জলের বৈজ্ঞানিক কিছু বৈশিষ্ট্য থেকে যায়। যেমন-জলের মধ্যকার হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন। আয়তন অনুপাতে জলে দু’ভাগ হাইড্রোজেন এবং একভাগ অক্সিজেন থাকে ইত্যাদি। ‘হাইড্রো’ শব্দের অর্থই জল, আর ‘জেন’ অর্থ উৎপাদনকারি। এই জলের মতোই আমরা ‘দয়া’ শব্দ বললে সাধারণভাবে একটা কিছু বুঝি, কিন্তু এই বোঝার বাইরেও যে এই শব্দের দার্শনিক একটা শক্ত বৈশিষ্ট্য আছে, তা আমাদের অনেকের সামনে স্পষ্ট নয়। ফলে শব্দটি আমাদের সবার কাছে খুব পরিচিত হলেও তা ‘দর্শন’ বলে কারো কাছেই বিবেচিত হয় নি। অথচ ‘দয়া’ মানুষের ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় কিংবা আন্তর্জাতিক জীবনে খুব প্রয়োজনীয় এবং গুরুত্বপূণ একটি দর্শন হতে পারতো, যদি চিন্তকেরা বিষয়টিকে স্বাধীন চিন্তার আসনে বসিয়ে প্রায়োগিক জীবনের বাস্তবিক পর্যায়ভুক্ত করার চেষ্টা করতেন। শুধু ইহকালীন জীবনেই নয়, দয়ার গুরুত্ব পরকালীন জীবনেও প্রচুর। যেমন-প্রভুর দয়া ছাড়া শুধু কর্ম দিয়ে স্বর্গলাভ অসম্ভব। তাই আমরা দেখি এই ছোট শব্দটির ভেতর দুনিয়া এবং আখিরাত সংযুক্ত হয়ে আছে।
আমরা যদি ‘দয়া’ শব্দকে ভেঙে বলি ‘দ’ দিয়ে দুনিয়া এবং ‘য়া’ দিয়ে আখিরাত, তবে কি ভুল হবে? ছোট শব্দ অথচ দর্শনের আসনে দাঁড়িয়ে উচ্চারণের সাথে সাথে বিশাল একটি শক্তি অনুভব হয় চিন্তা-চেতনায়। মনে হয় যেনো এ ছোট শব্দে লুকিয়ে আছে হৃদয়স্পর্শী গোটা জগতের শক্তি, মহত্ব আর মুক্তি। অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি, পৃথিবীতে এমন কোন শক্তির সৃষ্টি আজও হয়নি যা দুনিয়া এবং আখেরাতকে একই সাথে ধারণ করে এই ‘দয়া’ শব্দের মোকাবেলা করতে পারে। তাই শক্তির দিকে, মহত্বের দিকে, মুক্তির জন্য ‘দয়া’র তাৎপর্য বিশাল এবং ব্যাপক। ‘দয়া’ শব্দকে ইংরেজিতে; ক্যামপ্যাশন (পড়সঢ়ধংংরড়হ), সিমপ্যাথি (ংুসঢ়ধঃযু), কাইনডন্যাস (শরহফহবংং) এবং আরবিতে; ‘রহমত’ দিয়ে বুঝতে হয়। সবগুলো শব্দের সমন্বয় করলে আভিধানিক অর্থ হয়-সমবেদনা, করুনা, সহানুভতি, বদান্যতা, অনুগ্রহ, ক্ষমা ইত্যাদি। কিন্তু শব্দগুলোকে পৃথক করে উচ্চারণ করলে তাৎপর্য কিংবা বৈশিষ্ট্যের দিকে ব্যাপক অর্থে ‘দয়া’র সমতুল্য হয় না। ‘দয়া’ রহমতের সম-অর্থবোধক শব্দ হলেও রহমত শব্দে উচ্চারণগতভাবে দুনিয়া আখেরাতকে একসাথে ধারণ না করায় ‘দয়া’র মহত্ব অনেক বেড়ে যায়। তবে অর্থের দিকে ‘দয়া’ আর ‘রহমত’ একই মর্যাদার। দয়া শব্দের মূল অর্থ হলো; অন্যের দুঃখ অনুভব করে তা দূর করার প্রবৃত্তি। দার্শনিক দিকে ‘দয়া’ হলোÑপূর্ণাঙ্গ স্বচেতন হয়ে লক্ষ্য রাখা যাতে আমি কারো দ্বারা আক্রান্ত হই না এবং আমার দ্বারা কিংবা আমার সামনে যেনো কেউ আক্রান্ত হয় না। মানবিকতা, মানবপ্রেম ইত্যাদি জাতীয় যতকিছু আছে সবই এই ‘দয়া’র অর্ন্তভূক্ত। ‘দয়া’ একটি চিন্তা, ‘দয়া’ একটি দর্শন। সংজ্ঞাগত দিকে ‘দয়াদর্শন’ মানেÑজ্ঞান, বুদ্ধি, কর্ম, এবং প্রেম নিয়ে মানুষের মুক্তির চিন্তা। অর্থাৎ নিজের কিংবা অন্যের দুঃখ অনুভব করে তা দূর করার প্রবৃত্তির তত্ত্বজ্ঞান।
দয়াদর্শনের মৌলিক চার বৈশিষ্ট্য
১) জ্ঞান
২) বুদ্ধি
৩) কর্ম
৪) প্রেম
বিস্তারিত জানতে `দয়াদর্শন' বই আজই সংগ্রহ করুন। সিলেট পুলিশ লাইনের বইমেলায় রহমানিয়া বই ঘরে পাওয়া যাচ্ছে। মূল্য মাত্র ১০০ টাকা।
©somewhere in net ltd.