নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বেশ আগে আমার এক প্রিয়জন আমাকে বললো তার দাদা নাকি চাঁদে কৃষ্ণের মুখ দেখেছেন। তার দাদাও আমার কাছে বসা ছিলেন। তিনি স্বীকার করলেন। কিছুক্ষন পর এই মেয়ের গানের শিক্ষক এলেন। সে তার শিক্ষককেও জিগ্যাস করে। তিনি খুব বুদ্ধিমান। প্রথমে ঘটনার বর্ণনা শুনেন। অতপর বলেন তিনিও দেখেছন। বিশ্বাস করিনি।
আজ আবার সাঈদি ভক্তরা বলছেন সাঈদি সাবকে চাঁদে দেখা গেছে। তাও আমি বিশ্বাস করছি না। কৃষ্ণভক্তরা কৃষ্ণকে চাঁদে দেখে তৃপ্ত হয়। সাঈদি ভক্তরা সাঈদিকে চাঁদে দেখে তৃপ্ত হচ্ছে। এর সত্য-মিথ্যা নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। ফালতু লোকেরাই এগুলো নিয়ে তর্ক-বিতর্ক করে। আমি মনে করি বিষয়টি সম্পূর্ণ নিউরনিক প্রেমের। প্রেমিকদের বিষয় সর্বদাই সাধারণ বিষয় থেকে ভিন্ন হয়। প্রেমিকজন দেখতেই পারে। আমরা পীর মজির উদ্দিনের একটি গান থেকে বিষয়টি আমলে আনতে পারি। কবি বলেন-
‘লাইলী মজনু দুই জনা পিরিতি করিয়া।/আখেরে হইয়া গেলা লা-মৌত আউলিয়া/ - কেহ যদি কহিত মজনু বন্দা তুমি কার।/মজনুয়ে কহিত লাইলী সকলি আমার -লাইলী বিনে অন্যরূপ চক্ষে নাহি আসে।/যে দিগে ফিরাই আঁখি লাইলী রূপ ভাসে - দুই তনে এক তন ভিন্ন নাহি ছিল।/ পিরিতি করিয়া তারা এ মতে মিশিল -একদিন মজনু এয়ছা কান্দিয়া কান্দিয়া।/ লাইলী রূপে বসে ছিল ধ্যান করিয়া ধ্যানে বসিয়া এছা মোহিত হইল।/ নিজ রূপ ছাড়িয়া তখন লাইলী রূপ ধরিল হেন কালে লাইলী আসি সম্মুখে দাড়ায়।/ বলে ওহে প্রাণনাথ দেখনা আমায় মজনু বলে আমি লাইলী তোমারে চিনি না।/ মজনু এখানে নাই লাইলী কয় জনা এমত মোহিত যেবা মাশুকে হইব।/ অজুদে মজুদ খোদা জুদা না থাকিব/ মজনুর তাল্লাসে লাইলী বাহিরে যাইত।/আখেরেতে মাও বাপে বেড়ি দিয়া রাখিত একদিন বেড়ী ভাঙ্গি বাহিরে চলিল।/ ধরিয়া আনিয়া বাপে চাবকে মারিল লাইলীর পিঠেতে চাবক মারে তার পিতায়।/ মজনুর পিঠেতে দাগ বসিল হেথায় আশক ছাদিক এছা মিলে দুই জন।/ নিশ্চয় পাইব আল্লা রছুল সে জন ’ ( পীর মজির উদ্দিন, প্রেমমালা)
মোটকথা, অন্ধ না হলে প্রেমিক হওয়া যায় না। আমাদের দেশের হিন্দু-মুসিলম শিক্ষিত-অশিক্ষিতরা বেশিরভাগ-ই ভাববাদি। ইসলাম যদিও নিচক ভাববাদে নয় কিন্তু বাংলায় এসে তা ভাববাদকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে বস্তু বা যুক্তি-প্রমাণ-শাস্ত্র ইত্যাদিকে ছেড়ে দিয়েছে। এখানে শিক্ষতরাও যুক্তির কথা_দর্শনের কথা চিৎকার দিয়ে বলেন, কিন্তু নিজেরা শাস্ত্রীয় ধর্মকে অনেক ক্ষেত্রে মানতে রাজি নয়।
সাঈদি সাবকে চাঁদে দেখার বিষয়টি মূলত ভাববাদেরই একটি অংশ। এবং তা একদিন মিথ হয়ে যাবে হয়তো। হয়তো খুঁজে একজনকেও পাওয়া যাবে না যিনি নিজে দেখেছেন। কিংবা যারা দেখেছেন তারা হয়তো বেশি আবেগি মানুষ কিংবা ভক্ত-শিষ্য। আমার শশুড় সাহেব আমাকে প্রায় বলেতন- জানো বাবা, `পীররা আকাশে উড়ে না-মুরিদরা উড়িয়ে ফেলে'। সে যাই হোক। সাঈদি সাহেব আকাশে উড়লে যা না উড়লেও তা । এতে তার বরকতের কিছু বৃদ্ধিও পাবে না, হ্রাসও পাবে না।
কেরামতির সাথে ওলি হওয়া না হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই। ওলি যিনি তিনি কেরামতি নিয়ে ভাবেনও না। ওলিআল্লাহদের কেরামতি হয় কি না আমি সেই বিতর্কে যেতে চাই না। হতেই পারে। নাও হতে পারে। কেরামতি নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। আমি বলি যিনির কেরামতি হলো তিনি কোন কর্মের বিনিময় তা লাভ করলেন তা বিবেচনা করলেই আমরা বেশি উপকৃত হতাম। সাঈদি সাবকে চাঁদে দেখা নাদেখা নিয়ে বিতর্কের কোন সুযোগ নেই।
০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৫২
সৈয়দ মবনু বলেছেন: ধন্যবাদ। কেমন আছেন? খোয়াবনামাটি পড়েছিলাম বেশ আগে। আবার দেখে নেবো। আপনার নামটা আমার কাছে খুব পরিচিত মনে হচ্ছে। কোথায় থাকেন? দুঃখিত ব্যক্তিগত প্রশ্নের জন্য।
২| ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৫০
অনার্য পথিক বলেছেন: যেসব কারণ নিহিত তা নিয়ে পরিষ্কার কথা বলা ভালো। যেসব কারণ অনুয্য বলে ধারণা করা হচ্ছে সেসব নিয়ে আগ্রহ থাকা না থাকা কোনো উল্লেখযোগ্য অংশ বলে প্রতিয়মান হয় না।
আপনার লেখা ভালো হয়েছে।
এর পূর্বে অন্যএকটি পোস্টও পাঠ করেছি। একটি হত্যাকাণ্ড। মানুষের মৃত্যু সর্বাবস্থায় দুঃখজনক। কিন্তু কোনো হত্যার ভেতর যদি মোটিভ থাকে (রাজনৈতিক) তাহলে বুঝতে হবে সমাজ একটি ক্রান্তিকালের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ থেকে উদ্ধার পেতে হলে দরকার চিন্তা, চিন্তাকে পরিকল্পনার ভেতর আট করে বেধে দেয়া। লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হওয়া - তা যত বাধাগ্রস্তই হোক।
০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৫৫
সৈয়দ মবনু বলেছেন: বাহ: আপনার নামটা আমাকে বেশ আন্দোলিত করলো_অনার্য পথিক । আপনার সাথে আমি সহমতে থেকেই বলতে চাই_ চিন্তার বিপ্লব ছাড়া এজাতিকে খুব এগিয়ে নেয়া যাবে না।
৩| ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৩৯
মেঘবতী বলেছেন: চাদের মুখে চাদ লেগেছে আমরা দেখে বলবো কি ...
সাইজীর এই কথাটা সা করে উকি দিলো। আপনি ভাবের কথা বলেছেন, বিশেষ করে আমাদের দেশ ভাবরাজ্যে ভাসমান। ভাবকে আবার খানিকটা দড়ি দিয়ে বেধেও রাখতে হয়। না হলে তা বড় বেশি জ্বালায়।
চন্দ্রমুখ উপাখ্যানটা পাঠ করে অনেকভাবে একে মিলাতে চেষ্টা করেছি। মিলেও আবার মিলেও না্। যারা এ দিয়ে গীবত করতে চান তারা অন্যকিছু ভাবতে পারেন। কিন্তু আমি এর ভেতর লালন সাইকে খুজছি। তিনি চাদমুখো বাঙালির সত্ত্বাটাকে জেনেছিলেন খুব ভালোভাবেই।
আহা একজনমে আমি লালন হতে পারতাম - এ ধরণের একটি আর্তনাদ আমাকে কখনও কখনও খুব মর্মযাতনায় নিয়ে যায়। এক বন্ধু বলেছিল, তুই যদি লালন হতি তাহলে তো তোকে আমরা মহিলা লালন বলে ডাকতাম। আমি হাসবো না কাদবো। লালন শব্দটিতেও জেন্ডার ধরে মানুষভাবে। লালন শব্দ সব লিঙ্গেই বসে যায়। এটি যে উভয়লিঙ্গবাসী শব্দ সেটা কেউ বুঝতে চায় না। ধরুন এই চাদকে যদি পুরুষ ভাবি তাহলে কী সেটা অন্যায় নয়? পানি, বাতাস প্রকৃতির এতোসব নিয়ামতকে আমি কী করে শুধু পুরুষদের দখলে দেই বলুন তো?
আপনার লেখা ভালো হয়েছে।
০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:২৯
সৈয়দ মবনু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ১১:৩৩
ইব্রাহিম মন্ডল বলেছেন: খুব মনে পড়ছে খোয়াবনামার কথা। আখতারুজ্জামান ইলিয়াস'র সেই বিখ্যাত উপন্যাস। প্রথম স্তবক পাঠ করুন। দেখবেন সেখানে এই মিথ কীভাবে রূপ ও রসে ভরে উঠেছে। সঙ্গে মানুষের বিশ্বাস ও ইতিহাস একাকার হয়ে গেছে।
আপনার এই লেখা একটি গল্পের প্রারম্বিক হিসেবে ধরে নিলে এটিকে পূর্ণমাত্রায় প্রকাশ করা যেতে পারে।
অনুরোধ : খোয়াবনামাটি পড়াথাকলে আবার সেই শুরুর স্তবকটি পাঠ করে ফেলুন। আপনি এর ভেতর থেকে নতুন উপাদান পাবেন।