নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন একটা অদৃশ্য শিরোনাম । যার বিস্তারিতই দেখে শুধু মানুষ, মূল শিরোনাম দেখেনা কেউ । কেউ কেউ আবার বিস্তারিত সংবাদের মাঝেই হার মেনে যায়...

নির্বাক কাকতাড়ুয়া

নদীতে ভেসে চলা ভাসমান কচুরিপানাগুলোর মতই আমার জীবন...

নির্বাক কাকতাড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটবেলার বৃষ্টির দিনগুলোর ধূসর স্মৃতি

১২ ই অক্টোবর, ২০১৭ ভোর ৫:৩৫

বৃষ্টি এলেই এখন আর ঘটা করে কদম গাছে চড়তে হয়না, বৃষ্টিস্নানে সিক্ত হওয়া কদমের ডাল ভাঙ্গা হয়না আর ।
'বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান/ আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান।' বর্ষা নিয়ে রবীন্দ্রনাথের এ আবেগময়, প্রেমসিক্ত গান শুধু আমাদের বাঙালিদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ।






বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। শত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ভিড়েও কোথায় যেন মিলে এক চিলতে বিশুদ্ধ সুখ। কদম ফুলের মতো তুলতুলে নরম, রঙিন স্বপ্ন দু'চোখের কোনায় ভেসে ওঠে ঠিক যেমন করে আকাশে সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়।
গাছে গাছে সবুজ পাতার আড়ালে ফুটে আছে কদম ফুলগুলো। দূর থেকে দেখলে মনে হবে সাদা বকগুলো বসে বসে ঝিমুচ্ছে। মনের সব নিষেধ পাশ কাটিয়ে ইচ্ছে হয় ঘুড়ির মতো উড়তে। আর যদি হয় বৃষ্টি, তাহলে তো কথাই নেই। টুপটাপ করে টিনের চালে পরা অবিরত বৃষ্টিধারা মনে করিয়ে দেয় আজ আর কাজ নেই । সারাদিন শান্তির ঘুম আর মায়ের হাতের আলু খিঁচুরি । অনেক কষ্টে রাজি করিয়ে আবার কখনো সখনো চাউল ভাজা পিঁয়াজ,মরিচ আর সরিষার তেল দিয়ে মাখায়ে খাওয়া । আহা! দূর্দান্ত । বর্ষায় এর চেয়ে দামি উপহার আর হয় না। এই সময় কদম ফুলগুলো দেখলে নিজের মনটাই কদমফুলের মতো স্নিগ্ধ হয়ে ওঠে।



বর্ষার এই শীতল আবহাওয়ায় গাছে গাছে কদম ফুলের সমারোহ দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। বর্ষার প্রথম মাস আষাঢ়ের অগ্রদূত কদমফুল।



কদমফুল আষাঢ়কে স্বাগত জানায়। বর্ষার আগেই গাছে গাছে কদমফুল ফুঠেছে। কদমফুলের মতো মেঘ-বিজলি তাদের কথা রাখতে পারেনি। আগেকার দিনের আষাঢ়ে আকাশে মেঘে গুড়গুড় শব্দ ছিল। ছিল মেঘের সঙ্গে চমকানো বিজলি। বিজলির চমকানিতে মুহূর্তেই গ্রামকে গ্রাম আলো হয়ে যেত। আষাঢ় মাসে শুধু কদমই নয়, আরো ফোটে শাপলা, পদ্ম। আষাঢ়ের একটানা বর্ষণে খাল-বিলে পানি থইথই করত। আর সেই পানিতে সাদা শাপলাগুলো ফুটে থাকত। মনে হতো যেন খাল-বিলগুলো সাদা শাড়ি পরে আছে। অপরূপ মনোরম এই দৃশ্য অবশ্য গ্রামে না গেলে উপভোগ করা যায় না!



এখন আর সেই প্রকৃতির স্নিগ্ধতা নেয়া হয়না । কদম গাছে বাদুড়ের মত ঝুলে কদম সংগ্রহ করতে হয়না । গাড়ি,ধোঁয়া,ধূলো অসহ্য গরম অক্সিজেনের সংকীর্ণতা রেহাই দেয়না কখনো এই ব্যস্ত জীবনকে ।
অথচ এই জীবনকে ঘিরেই কতশত কল্পনা,স্বপন । জন্মাতে ইচ্ছে করে আবার...



ছোটবেলার করে যেখান বাধাহীন হাঁসের প্যাঁকপ্যাঁক শব্দে ভারী হয়ে ওঠা পুকুরে উঁচু গাছের ডাল থেকে ঝাঁপ দেয় । এপার থেকে ওপারে সাঁতার প্রতিযোগিতা ।



আর বৃষ্টিতে গোসলে চাতকের মত আকাশের পানি মুখে নিয়ে গিলে ফেলা । শাপলা ফুঁটে থাকা থৈ থৈ জলে পুকুর হাবুডুবু । এলাকাতে হৈ হুল্লোড় করে ভাটার মাঠে ফুলবল খেলা আর ইচ্ছাকৃতভাবে ডুবু মাঠে আছাড় খাওয়া । কাকের সাড়িগুলোও ভিজতে থাকে আমাদের সাথে খুঁটির সাথে লটকানো বৈদ্যুতিক তারের সাথে । কখনোবা বিদ্যুৎের শক্ খেয়ে একটা কাক মারা গেলেতো হয়েছে সেদিন, সারাদিন কাকা কাকাকাকা কাকা শব্দে চারপাশ শব্দময় । যদিও কাকগুলো তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেনা কখনো!

স্মৃতিমধুর বড়ই অমলিন সেই দিনগুলো । যেখানে বাড়ির লোকদের ভয়কে উপেক্ষা করে তাদের নিষেধ অমান্য করে কাজগুলো করা আর বাড়িতে এসে একগাল বকা খাওয়া ।

চলছেতো জীবন চলছেই একটু অন্যভাবে এই যা....

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১১:৪৭

তৃতীয় চক্ষু বলেছেন: অনেক সুন্দর লিখেছেন।
শৈশবের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।

০১ লা নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:০১

নির্বাক কাকতাড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । ভালো থাকবেন সবসময় ।

২| ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৫১

আশরাফুল এষ বলেছেন: বেশ ভালো লাগলো

০১ লা নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ২:০২

নির্বাক কাকতাড়ুয়া বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই । ভালো থাকবেন সবসময় ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.