নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন একটা অদৃশ্য শিরোনাম । যার বিস্তারিতই দেখে শুধু মানুষ, মূল শিরোনাম দেখেনা কেউ । কেউ কেউ আবার বিস্তারিত সংবাদের মাঝেই হার মেনে যায়...

নির্বাক কাকতাড়ুয়া

নদীতে ভেসে চলা ভাসমান কচুরিপানাগুলোর মতই আমার জীবন...

নির্বাক কাকতাড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

হয়তোবা নতুন এক ভোরের আশায়

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৭ রাত ২:১৭

টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে । আকাশে মেঘের পর মেঘ জমতে শুরু করেছে, রাস্তার ধারে সোডিয়ামের নিয়ন বাতির স্ট্রিট লাইটগুলোও জ্বলছেনা । চারিদিকে বিদঘুটে অন্ধকার । মনে হচ্ছে দূর থেকে ভূতেরা খিলখিলিয়ে হাসছে, মানুষ বিপদে পড়লে ভূতেরা খুব মজা পায় । তবুও সংশয় নেই ছেলেটির । চারিদিকের এই বিশ্রী পরিবেশ একদম অসহ্যনীয় । যদিও ছেলেটির সাহস একটু কম তবুও এমতবস্থায় পিছু ফেরার কোনো উপায় নেই ।
তবুও অন্ধকারের মাঝেই লম্বা পা ফেলে নেমে গেলো ছেলেটি ।
দু কিলোমিটার হাটার পর খেয়াল করলো দূর থেকে একটা আলো দেখা যাচ্ছে । কাছে গিয়ে দেখে একটা বুড়ো লোক চায়ের দোকানে বসে আছে । সাদা পাকা দাঁড়ি,গোঁফ লম্বা চুল । চেহারাটাতে একটা মায়াবী ভাব, যেন কতদিনের পুরাতন সম্পর্ক ।
এই সুযোগে এক কাপ রং চা আর একটা টোষ্ট বিস্কুট দিতে বললো ছেলেটা ।

ওহ ছেলেটার নামইতো বলা হয়নি । ছেলেটার নাম কদম মিয়া মানুষ কদম বলে ডাকে (কদম ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম: Anthocephalus indicus) যা নীপ নামেও পরিচিত) ।

চা শেষ করে আবার রওনা শুরু করলো সে । মাঝরাত, আকাশের মিটমিটি তারা জ্বলছে, মাঝেমধ্যে কোনো কোনো ঝোঁপ থেকে এক ঝাঁক জোনাকি উড়ে যাচ্ছে । মাথার উপরে বাদুড় উড়ছে । বাদুড় নিশাচর প্রানী এরা রাতের বেলা খাদ্য গ্রহন করে । আম,পেয়ারা,লিচু,কাঁঠাল এসব খায় আর খাওয়া শেষে গাছভরে বমি করে দিয়ে যায় ।
এটি পৃথিবীর একমাত্র উড্ডয়ন ক্ষমতা বিশিষ্ট স্তন্যপায়ী প্রাণী। পৃথিবীতে প্রায় ১১০০ প্রজাতির বাদুড় রয়েছে। বাদুড়দের প্রজাতিসংখ্যা স্তন্যপায়ী প্রাণীর মোট প্রজাতিসংখ্যার শতকরা ২০ ভাগ । প্রায় ৭০ ভাগ বাদুড় প্রজাতি পতঙ্গভূক; বাকিরা ফল-মূল খায় ।

বাদুড় নিয়ে আমাদের অনেকেরই রয়েছে বিভিন্ন ভুল ধারণা, যেমন : বাদুড় চোখে দেখতে পারে না, বাদুড় মানুষের রক্ত খায়, বাদুড় ঘরে ঢোকা হচ্ছে অমঙ্গলের লক্ষণ আরো কতো কী....

বাদুড় চোখে দেখে না এরা চলার সময় শব্দোত্তর তরঙ্গ সৃষ্টি করে এবং সেই শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়ে ফিরে আসলে সে অনুযায়ী বাদুড় পথ চলে। এমনকি তারা শিকারও করে এভাবেই। দিনের বেলায় এরা অন্ধকার স্থানে উল্টো হয়ে ঝুলে থাকে ।

কদম মিয়া হাঁটছে । সে উদ্দেশ্যহীন, একপ্রকার যাযাবর বলা চলে । মানুষ একবার যাযবর হয়ে গেলে মানুষের আর বন্ধন ভালো লাগেনা ।

পড়নে ছাই রঙের একটা প্যান্ট আর গায়ে পলিস্টারে শার্ট যাতে বিভিন্ন ফুলের ছবি আঁকা আর পায়ে একজোড়া তালি দেয়া চটি স্যান্ডেল ।
যুদ্ধের সময় কদম মিয়ার বাবা সেই যে বেরিয়ে পড়লো তারপর আর ফিরে আসেনি । ঘরে শুধু মা আর ছোটবোন । মা অন্যর বাড়িতে কাজ করে বেড়ায় আর বোনটা রাস্তায় রাস্তায় ফুল বিক্রি করে । বড়লোকরা অনেক অদ্ভুত প্রকৃতির হয় কোনোদিন ফুল নিয়ে টাকাটা হাতে না দিয়ে মাটিতে ছুঁড়ে মারে তারপর সেই টাকাটা আবার গাড়ির চাকার নিচে থেকে কুড়িয়ে নিতে হয় । আবার কখনোবা সিগন্যাল ছেড়ে দিলে টাকাটা আর নেয়া হয়না ড্রাইভার গাড়ি হাকিয়ে চলে যায় । পিছন থেকে শত মিনতি করেও ফেরাতে পারেনা ছোট্ট মেয়েটি । সমাজের আবর্জনার মত একরকম । ইচ্ছা হলো ঝাড়ু দিয়ে ফেলে দিলো আবার কেউবা সেটাকে রান্নার খড়ি হিসেবে ব্যবহার করলো । এই শ্রেনীর লোকগুলোকে বড় বড় মানুষরা ব্যবহার করে পৈশাচিক আনন্দ পায়। যদিও রবীন্দ্রনাথ আবর্জনাদের প্রশংসা করতেন কিন্তু তিনি যে কোন আবর্জনার কথা বলেছেন তা বুঝিনি এখনো....

কদমের মাথাটা হঠাৎ করেই ঝিম ধরে গেলো । মনে হচ্ছে এক্ষুনি পাক খেয়ে পিচঢালা রাস্তায় পড়ে যাবে । চোখের রেটিনা ভেতরের দিকে ঢুকে যাচ্ছে মরা মানুষের মত । কিছু কিছু মানুষের মৃত লাশ অদ্ভুত ধরনের হয়, এমনেই ভয় লাগে । কাছে যেতে সাহসে কুলায়না ।

আবহাওয়াটা মনে হয় দূষিত হয়ে আছে । নরকের ক্ষুদ্র অংশ চারিদিকে অবহেলা আর অযত্নের ছাপ পড়ে আছে । রক্তশিরাগুলো হিম হয়ে যাচ্ছে । মনে হয় এই ভোর আর কখনো হবেনা.....



ভুলক্রুটি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.