নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন একটা অদৃশ্য শিরোনাম । যার বিস্তারিতই দেখে শুধু মানুষ, মূল শিরোনাম দেখেনা কেউ । কেউ কেউ আবার বিস্তারিত সংবাদের মাঝেই হার মেনে যায়...

নির্বাক কাকতাড়ুয়া

নদীতে ভেসে চলা ভাসমান কচুরিপানাগুলোর মতই আমার জীবন...

নির্বাক কাকতাড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

সিরিজ: প্রাণিবিদ্যায় পইড়া হইলোটা কি!?

১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৩১

পর্ব: ০১

আপনার দাদা আপনার বাবার জন্য এতকিছু করেছে‚ আপনার বাবা আপনার জন্য এতকিছু করছেন‚ আপনি আপনার সন্তানের জন্য এতকিছু করছেন; এটা খুবই সিম্পল একটা ব্যাপার—এটা মানুষ জাতি ছাড়াও অন্য সবাই করে । পৃথিবীর প্রায় পনেরো লক্ষাধিক জীবের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে এ পর্যন্ত । সবারই গোত্র-পরিবার ছিল-এখনও আছে । সকল প্রাণীই তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কাজ করে যায় । শুধু ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভাবনাই নয় বরং আপনার মতই আবেগ, অনুভূতি-সহানুভূতি, প্রেম, ভালোবাসা, সহমর্মিতা, একতা, দুঃখ, আনন্দ, যৌন অনুভূতি সবকিছু অন্য প্রাণীদেরও কম-বেশি আছে ।

একটি খেঁকশিয়াল বহু কষ্টে একটি মুরগি ধরে নিয়ে যায় তার শাবকগুলোকে খাওয়ানোর জন্য‚ আর যদি মানুষের হাতে খেঁকশিয়ালটি পড়ে যায় তবে সে তো মরবেই সাথে তার শাবকগুলোও অনাহারে মরবে । একটি সাপ ওঁৎ পেতে থাকে পোকামাকড়‚ ব্যাঙ ধরার জন্য যেটা খেলে তার পুষ্টির জোগান হবে । তাঁর ভবিষ্যৎ প্রজন্ম টিকে থাকবে । একটি পাখি ডানা ঝাপটিয়ে এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়ায় খাবারের তাগিদে । তারপর তা এনে বাচ্চাদেরকে খাওয়ায় । এভাবে মুরগি, ব্যাঙ, পোকামাকড় চক্রাকারে ইকোসিস্টেম বজায় রাখে!

এ তো গেলো উদরপূর্তির বিষয় । মানুষ ছাড়া অন্য প্রাণীদের মাঝেও প্রণয় গড়ে ওঠে‚ যৌনমিলন ঘটে । পুরুষ ব্যাঙ প্রজনন ঋতুতে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ শব্দে আওয়াজ করে তার স্ত্রী সঙ্গীকে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের আবেদন জানায় । পুরুষ কবুতর বাক-বাকুম করে তার স্ত্রী সঙ্গীর সাথে মিলনের জন্য । এভাবেই হাতি, ঘোড়া, বানর, বাঘ, সিংহ, ভাল্লুকরা তার সঙ্গীকে আবেদন জানিয়ে থাকে ।

আবার একটি বুনো মহিষকে যখন বাঘ হামলা করে ঠিক তখন অন্য বুনো মহিষরাও সজাগ হয় । তারপর সবাই মিলে বাঘকে ভয় দেখিয়ে তাড়া করে বেড়ায় । এটাই তাঁদের ইউনিটি ।

মানুষের একে-অপরের প্রতি প্রেম-ভালোবাসার ক্ষেত্রে যেমন পছন্দ অপছন্দ আছে তেমনি অন্য প্রাণীদেরও আছে । বাড়িতে দেশী হাঁস, মুরগি থাকলে খেয়াল করবেন যখন কোনো পুং হাঁস বা মোরগ স্ত্রী হাঁস বা মুরগিকে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাড়া করে বেড়ায় তখন কিন্তু মুরগিটি পালিয়ে যেতে চায়‚ কারণ সে হয়ত সেই পুং মোরগির সাথে মিলন করাতে চাচ্ছেনা । হেরিংগাল পাখিদের ক্ষেত্রে একদল স্ত্রী-পুরুষ দলবেঁধে ক্লাব গঠন করে তখন যে যাঁর পছন্দ অনুযায়ী জোট গঠন করে যৌন মিলন ঘটায় ।

যেকোনো প্রাণী বিপদে পড়লে হতে পারে মানুষ আঘাত করেছে, তখন সে হাঁটতে পারছেনা তখন দেখা যায় তাঁরই প্রজাতির কিছু প্রাণী শেল্টার দিয়ে তাকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যায় । আবার হতে পারে কোনো হাতি গর্তে পড়ে গেছে সেক্ষেত্রে অন্য হাতিরা দলবেঁধে সুঁড় দিয়ে টেনে তোলে । আবার চিল যদি খরগোশ ধরতে আসে তখন খরগোশ মাটিতে সজোরে আঘাত করে, এতে করে অন্যরা সজাগ হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায় । মুরগির ক্ষেত্রেও, যদি কাক মুরগির ছানা নিতে আসে তখন মা মুরগিটি ডানা মেলে দেয় তখন ছানাগুলো ডানার ভিতরে চলে যায় আবার দূরে থাকলে এমন আওয়াজ দেয় যাতে করে অন্যরা সাবধান হয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যায় ।

কখনও বৈরি আবহাওয়ার কবলে পড়লে প্রাণী তার নানারকম কৌশল অবলম্বন করে যেমন উট বালির ভিতরে নাক-মুখ ঢুকিয়ে দেয় ধূলিঝড় থেকে রক্ষা পেতে । কোনো কোনো প্রাণী বুক-পিঠ ঠেকিয়ে প্রতিকূল পরিবেশ হতে নিজেকে এবং অন্যদের রক্ষা করে ।

প্রাণীদের দুঃখ প্রকাশ । আপনার আশেপাশে কোনো আহত কুকুর দেখলে বুঝবেন চোখ দিয়ে তার জল পড়ছে, বা গুটিসুটি মেরে কোথায় সুয়ে আছে । বা পোষা গরু-ছাগল-বিড়ালরা আঘাত পেলে দেখবেন তারাও কিভাবে দুঃখী মুখ নিয়ে আছে ।

জাপানিজ কোনো মেয়ে/ছেলে এসে যদি তাঁর ভাষায় আপনাকে প্রেম নিবেদন করলে যেমন আপনার বোঝার কথা না তেমনি অন্যান্য প্রাণীদের ক্ষেত্রেও । আপনি একজন মানুষ হয়ে যেখানে অন্য ভাষার একজন মানুষের কথা বুঝতে পারছেননা সেখানে অন্য প্রজাতির প্রাণীর প্রতি ভাব বিনিময়টাও কষ্টসাধ্য হলেও তাঁদের প্রতি সদয় আচরণ করাটা আপনার কর্তব্য । অন্যসব প্রাণীদেরও পরিবার আছে, সন্তান-সন্ততি আছে-থাকে, তাঁরাও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে টিকিয়ে রাখতে চায় । তাদের প্রতি দয়া-ভালোবাসা দেখানো আপনার একান্ত বাধ্যগত কর্তব্য; কারণ আপনার আধুনিক মস্তিষ্কটা ১৬০০ সিসির, এত সিসির মস্তিষ্ক অন্য কোনো প্রাণী প্রজাতিকে দান করা হয়নাই ।

[ফুটনোটঃ “প্রাণিবিদ্যায় পইড়া হইলোটা কি” এই জাতীয় টাইটেলে লেখালেখির ভাবনা অনেক আগেই মাথায় এসেছিলো । যদিও আগে কখনও এরকম সিরিজ আকারে লিখিনি, সেক্ষেত্রে একদম কাঁচা হাত আমার । যাঁর যাত্রা আজ হতে আরম্ভ করলো । এতে প্রাণী সম্পর্কিত বেশকিছু ভাবনা, আবেগ, একতা, শ্রমবণ্টন, প্রজননিক আচরণের সংমিশ্রণ থাকবে । আশা করছি পাঠক নতুনকিছু জানতে পারবেন । ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিবেন—মাফ করবেন, শুধরে নিবো । ধন্যবাদ!]

—সাব্বির আহমেদ সাকিল
৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ | গ্রীষ্মকাল | রোববার | ১৪ জুন ২০২০ ইং

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৩৭

বিজন রয় বলেছেন: বিষয়টি তো ভাল। লিখেছেনও ভাল। বৈচিত্র পেলাম।

কিন্তু শিরোনাম টাইটেল অমন কেন? অন্য কিছু হতে পারতো।

১৬০০ সিসি।
আচ্ছা ১ সিসি মানে কতটুকু?

২| ১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:১২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখার সারমর্ম কি?

৩| ১৪ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:১৩

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: “তবে এসো বৎস,আর এক শিক্ষা দিই।পাপপুন্য কিছু নাই।
কেবা ভ্রাতা,কেবা আত্মপর।কে বলিল হত্যাকাণ্ড পাপ
এ জগত মহা হত্যাশালা” রবি ঠাকুর

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.