নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জীবন একটা অদৃশ্য শিরোনাম । যার বিস্তারিতই দেখে শুধু মানুষ, মূল শিরোনাম দেখেনা কেউ । কেউ কেউ আবার বিস্তারিত সংবাদের মাঝেই হার মেনে যায়...

নির্বাক কাকতাড়ুয়া

নদীতে ভেসে চলা ভাসমান কচুরিপানাগুলোর মতই আমার জীবন...

নির্বাক কাকতাড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের কিছু ধারাবাহিকতার কথা

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৩০

মাঝেমাঝে মনেহয় আমার জ্ঞানের সীমানাটা চীনের প্রাচীর মতো হলোনা কেনো । ছোটোবেলা থেকেই কেন যেন জ্ঞানগর্ভ মানুষদের সান্নিধ্য পেতে খুব করে ইচ্ছে করে । মাঝেমধ্যে খুব হতাশ হয়ে যাই নিজের কাছে । মনেহয় জীবনটা এত ছোটো হলো কেনো কখনো মনেহয় জীবনটা এত দীর্ঘ হলো কেনো । ছোটো মনেহয় কারণ জ্ঞানলাভের খুব সামান্যই সুযোগ পাচ্ছি‚ ছোট ছোটো করে গড়তেই জীবনেই বেলা ফুরিয়ে যাচ্ছে । আবার বড় জীবনের কারণে হতাশ লাগে যখন দেখি আপেক্ষিক কোনো প্রতিসরণ ঘটছেনা জীবনে‚ আশা-আকাঙ্ক্ষা তেমন কোনোকিছু পূরণের সুযোগ নেই ।

এই যে পুঁথিগত বিদ্যা । এটা সমাজ কথিত অর্থ উপার্জনের ঢের একটা প্ল্যান । ইশ! যদি ইকোনমিক্যাল কোনো সমস্যা না ফেস করতে হতো । সারাজীবন যদি জ্ঞানগর্ভ‚ দার্শনিক মানুষদের সাথে মিশে জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারতাম । অর্থের চিন্তা থাকতোনা‚ খাবার খোঁজার চিন্তা থাকতোনা‚ সংসারজীবনের চিন্তাভাবনা থাকতোনা । তবে যাঁরা উড়নচন্ডিগতভাবে আলগা জ্ঞান দেয় আমি তাঁদেরকে কেন যেন নিতে পারিনা । তাঁদের প্রতি অসহ্য লাগে আবার ঘৃণাও লাগে । যখন দেখি আমার স্বীয় দর্শনের সাথে তেমন ভাব জমছেনা তখন তাঁর থেকে দূরে সরে আসি ।

একটা মজার কথা বলি‚ মনোবিজ্ঞান আমার পাশের ডিপার্টমেন্ট । যখন অনার্সে পড়া শুরু করলাম‚ যখন এই-সেই সাবজেক্ট নিয়ে জানতে শুরু করলাম তখন একটা পর্যায়ে এসে মনে হলো মনোবিজ্ঞানে তো মানুষের মন নিয়ে পড়ায় । ইশ্ যদি মানুষের মন নিয়ে পড়তে পারতাম‚ যদি একজন মনোবিজ্ঞানী হতে পারতাম; তাহলে অন্যের মনের কথাগুলো জানতে পারতাম‚ মনের দুঃখ‚ কষ্টকে দূর করে দিতে পারতাম । আবার দর্শন সাবজেক্ট নিয়ে যখন জানলাম তখন মনে হচ্ছিলো ইশ্ দর্শন নিয়ে পড়ে যদি পৃথিবীর সব বিখ্যাত দার্শনিকদের মতো আমিও একজন দার্শনিক হতে পারতাম তাহলে খুব ভালো হতো । আমি প্রাণিবিদ্যার ছাত্র তাই আমার নলেজ প্রাণিকেন্দ্রিক । আমি প্রাণীদের অনেক ভালোবাসি । আর প্রাণী নিয়ে সেকারণে আমার সীমাবদ্ধ জ্ঞান । মনোবিজ্ঞান‚ ভূগোল কিংবা রাষ্ট্র/সমাজ বিজ্ঞান সম্পর্কে আমি বলতে পারবোনা‚ জানতেও পারবোনা । কারণ সেই নির্দিষ্ট সময় আমার হাতে নেই । জীবনের বেলা গড়িয়ে পড়ছে । এই সংকীর্ণ মহাকালের কতকিছু অজানা থেকে যাচ্ছে ।

যখন ইন্টারমিডিয়েটে পড়ি তখন আমি বিজ্ঞান‚ ব্যবসা‚ মানবিক তিন বিভাগেই ক্লাস করতাম । কারণ তিন বিভাগেই আমার বন্ধুরা পড়তো । যদি কোনো বিভাগের কোনো সাবজেক্ট বা কোনো শিক্ষক-শিক্ষিকার ক্লাস মনে ধরতো তখন বন্ধুদের বলে রাখতাম সেই বিষয়ের ক্লাস‚ সেই শিক্ষকের ক্লাস কবে আছে । তাঁরা আমাকে জানালে আমি ঠিক সময়ে ক্লাসে অ্যাটেন্ড করতাম‚ ছদ্মবেশে লেকচার শুনতাম । সেকারণে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকদের ভালো লাগতো । তেমন কেউ না চিনলেও আমি চিনতাম‚ সালাম-কালাম দিতাম‚ কুশলাদি জিজ্ঞাসা করতাম । কখনো পাগলের মতো সরাসরি তাঁকে এপ্রিসিয়েশন জানাতাম । জানিনা কেন করতাম‚ হয়তোবা ভালো লাগতো তাই করতাম । কিন্তু এই সমাজ মুখোমুখি এপ্রিসিয়েশন মেনে নেয়না‚ এপ্রিশিয়েট করলে দূর্বলতা ধরে নেয় আবার ভাবে যে স্বার্থপরতার জন্য এসব করছে ।

প্রচুর প্রশ্ন করতাম একসময়‚ খুব বেশি পাগলামি করতাম‚ এখনও করি তবে অনেক কম । জানার প্রতি এত কিউরিওসিটি কই থেকে যে আসতো আল্লাহ্ মালুম । কিন্তু পরে দেখলাম এতে করে অনেকেই বিরক্তিবোধ করছে‚ তারপর আস্তে আস্তে প্রশ্ন করা কমিয়ে দিলাম । এখনও প্রতিনিয়ত হাজারো প্রশ্ন মনে আসে কিন্তু বলতে পারিনা । শুধু ভাবি যে আমার জীবন দর্শন থেকে যদি কোনোদিন জানতে পারি তখন জানবো ।

খুব কষ্টের একটা বিষয় কি জানেন(সবার জন্য না)? যখন দেখবেন আপনার মনের একান্ত কথাগুলো শোনার মতোন আপনার কেউ নেই । তখন দেখবেন আপনার মনের যন্ত্রণাগুলো উহুদ পাহাড়ের মতো বিশাল আকার ধারণ করেছে । আর যাঁর ফলশ্রুতিতে আপনার জীবনে যা কিছুই ঘটে যেতে পারে‚ ইতিপূর্বে অনেকের সাথেই ঘটে গেছে । এমনকি সেই ব্যর্থতা কিংবা ফ্রাস্টেশনে ভুগে নিজের জীবন দিয়ে দিতেও কুণ্ঠাবোধ করবেননা ।

আমরা যেই সমাজে বিলং করি তাঁর সিংহভাগ হলো রূপকথার মতো । রূপকথার মতো করে সমাজ নিয়ম-নীতি তৈরি করে দিয়েছে । আমার আদি পূর্বপুরুষ‚ আমি-আপনি-আমরাই সেসবকে সমর্থন দিয়ে দিয়ে এই অবস্থাকে চলমান রাখছি এবং আমরাও নতুন সব ভূতূড়ে নিয়ম-নীতি তৈরি করে বেড়াচ্ছি । যেখানে আপনার আশেপাশের ভালো বন্ধু(বন্ধুর সঙ্গাটা অনেক সুদীর্ঘ‚ এ সমাজের আমাদের আশেপাশে বন্ধু তেমন কেউ-ই হয়ে উঠতে পারেনা শুধু নামে ‘বন্ধু’ বানাতে হয় তাই বানাই)‚ আশেপাশের আত্নীয়-স্বজন‚ পাড়া-পড়শী সবাই একই নিয়মে চলে‚ একইভাবে সবাইকে দেখে । আপনার জীবনযাত্রা‚ স্বাধীনতা‚ ভালোবাসা‚ দর্শন‚ মৃত্যু কোনোকিছুরই দাম নেই এখানে । আমি জানি আমার এই কথাগুলো অনেকের কাছে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে যাবে । কিন্তু তাতে আমি শঙ্কিত বা বিচলিত নই । আমার নিজের দর্শন আমার কাছে‚ আমার ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা-ভালোবাসা-বেদনা-বিরহ সবই আমার মতো ।

আমি জানিনা এই দীর্ঘ সময় ব্যয় করে কথাগুলো কেন লিখি‚ কার জন্য লিখি‚ দু-চারজন পাঠক ছাড়া এত বড় লেখা পড়েনা সেটাও খুব ভালো করেই জানি । তবুও লিখি...স্বইচ্ছায় লিখি । লিখতে ভালো লাগে‚ লিখতে ভালোবাসি এজন্যই হয়তোবা লিখি । আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি আমার পিতা-মাতাকে এবং আমার শিক্ষকদের কাছে যাঁদের কারণে আমি আজ বাংলাতে লিখতে শিখিয়েছেন । আমাকে বাংলা লেখা না জানার কারণে বিভ্রান্তিকর বাংলিশে লিখতে হচ্ছেনা । মোটামুটি সবাই এই লেখাটা পড়তে পারবে ।

আমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ব্লগে‚ ফেসবুকে লেখালেখি করি । প্রেম-ভালোবাসা‚ বিরহ‚ সমাজ‚ রাষ্ট্র‚ অর্থনীতি‚ রাজনীতি‚ দুর্নীতি‚ জীবনদর্শনসহ আরও নানা বিষয়ে লিখে আসছি । যদিও বর্তমানে রাজনীতি সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে খুব একটা লিখিনা । কারণ এখানে রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীনদের চোখের বালি হতে হয় । নানারকম ঝুট-ঝামেলায় পড়তে হয় । কে বা চায় স্বেচ্ছায় সেসবে জড়িয়ে নিজেকে থিতু করতে । অনেক বড় বড় মানুষ-ই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেয় সেসব নিয়ে না ভাবতে‚ না লিখতে ।

স্ট্যাটাস বেশি বড় হয়ে যাচ্ছে সেকারণে লিখাটা আর দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছিনা । লিখতে গেলে তো রাত পেরিয়ে সকাল এসে যাবে ।

(ফুটনোট: যাঁরা ধৈর্য্য নিয়ে এতক্ষণ ধরে পুরোটা পড়েছেন তাঁদের প্রতি আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি । সবসময় ভালো থাকুন‚ নিজের ভালো থাকাটা নিজের কাছেই; সেটা যেকোনো উপায়েই হতে পারে ।)


মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ২:১৮

চাঁদগাজী বলেছেন:



পড়েছি, আপনি প্রাণীবিদ্যার মানুষ, মানুষের আত্মা বলে কোন কিছু আছে, যা মৃত্যুর পর বেঁচে থাকে?

০৯ ই মে, ২০২১ ভোর ৪:৪৪

নির্বাক কাকতাড়ুয়া বলেছেন: আত্না তো ধর্মসংক্রান্ত বিষয় ভাই ।

২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৩:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: জ্ঞানই সম্পদ। বিশেষ করে দরিদ্রদের জ্ঞান ছাড়া সমাজে টিকে থাকা মুশকিল তাই লেখাপড়া করতেই হবে। যেটাকে আপনি বললেন, পুথিগত বিদ্যা। বিদ্যা না থাকলে সব দিক থেকে অবহেলিত হতে হয়।

০৯ ই মে, ২০২১ ভোর ৪:৪৫

নির্বাক কাকতাড়ুয়া বলেছেন: জ্বি ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.