নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্ব জোড়া পাঠশালা মোর সবার আমি ছাত্র, নানা ভাবে নতুন জিনিস শিখছি দিবা রাত্র

সাদাত তানজির

Legal Practitioner

সাদাত তানজির › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেন আমরা পিছিয়ে...

১৪ ই জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৩৮

পৃথিবীসেরা জার্নালের নাম "Nature"। সেই জার্নালে কয়েকদিন একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে যার টাইটেল হলো "কেন সাউথ কোরিয়া গবেষণায় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী"? আজ থেকে ৪০ বছর আগেও তারা অর্থনৈতিকভাবে আমাদের চেয়ে খারাপ ছাড়া ভালো ছিল না। হ্যা, তারাতো এমনি এমনি এত দ্রুত এত উন্নতি করেনি। ১৯৯৯ সালে সাউথ কোরিয়া শুধু research and development (R&D) খাতে জিডিপির ২.০৭% ব্যায় করে। আর ২০১৪ সালে research and development (R&D) খাতে ব্যায় করে ৪.২৯%। আর আমরা research and development (R&D) খাতে ব্যায় প্রায় শুন্য। এমনকি গোটা শিক্ষা খাতে আমাদের ব্যায় জিডিপির ১.৯%। অর্থাৎ প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারির মত অবসম্ভাবী খাতে খরচ বাদ দিলে উচ্চ শিক্ষার জন্য টাকা থাকে না বললেই চলে। অর্থাত শিক্ষা খাতে আমাদের ব্যায় জিডিপির শতাংশে পৃথিবীর ১৬১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৫৫তম। একটা দেশ শিক্ষা খাতে জিডিপির কত শতাংশ বরাদ্দ দেয় সেইটা জাতিসংঘ কর্তিক স্বীকৃত একটি নির্ণায়ক। Research and development (R&D) খাতে দ্বিতীয় বৃহত্তর দেশ ইসরাইল। No wonder that they are most influential country in the world! তৃতীয় বৃহত্তর দেশ হলো জাপান। সাউথ কোরিয়া এই R&D খাতে ব্যয় নিরন্তর ভাবে বাড়িয়ে চলেছে কারণ তারা বুঝতে পেরেছে শিক্ষায় উন্নতি ব্যতিত sustainable অর্থনৈতিক উন্নতি অসম্ভব।
সম্ভবত আমাদের উচ্চ শিক্ষা এবং গবেষণা খাতে ব্যয় পৃথিবীতে সর্বনিম্ন। একটা উদাহরণ দিলে হয়ত ব্যাপারটা পরিস্কার হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট বছরে বড় জোর ২২০ কোটি টাকা। এই পরিমান টাকা বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপকের গবেষণা প্রজেক্টের থেকেও কম। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আবাসিক হলের ছাদে ঘুমায়, মসজিদে ঘুমায়, ৪ সিটের এক রুমে ১৫-২০ জন থাকে যেটা বস্তির জীবন থেকেও খারাপ ছাড়া ভালো নয়। একবার ঘুরে আসুন আমাদের ক্লাস-রুম, ঘুরে আসুন আমাদের লাইব্রেরি, ঘুরে আসুন আমাদের শিক্ষকদের বসার ঘর, ঘুরে আসুন সৌচাগার, ঘুরে আসুন হলের ডাইনিং। আর ক্যাম্পাস cafeteria? Miserable!! এসব দেখলেই টের পাওয়া যাবে কেন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় ওয়ার্ল্ড ranking-এ নেই। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পিতা (ভাইস চ্যান্সেলর) বা শিক্ষকরা কি নির্বিগ্নে আনন্দে সরকারের স্তুতি করে বেড়াচ্ছে। একবারের জন্যও দাবি জানাচ্ছে না আরো বেশি বরাদ্দের। ছাত্ররাও কি সুন্দর সব মেনে চুপচাপ আছে। দেশের সাধারণ পাবলিকও নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছে।
বটম লাইন হলো শিক্ষায় উন্নতি ব্যতিত নৈতিক কি অর্থনৈতিক কোন উন্নতিই সম্ভব নয়। আর শিক্ষায় উন্নতিতো আর আকাশ থেকে পরবে না? তার জন্য দরকার একদল visionary মানুষের concerted চিন্তার একটা লং-টার্ম রূপকল্প। সেইখানে প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি শিক্ষার জন্য একটা বাজেট এবং উচ্চ শিক্ষা এবং গবেষণা খাতে আরেকটা আলাদা বাজেট প্রনয়ন করতে হবে। বর্তমানে মানুষকে ধোকা দেওয়ার জন্য তিনটি খাতকে মিলিয়ে শিক্ষা খাতে বাজেট ধরা হয় যেমন প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি শিক্ষা, ICT খাত এবং উচ্চ শিক্ষা। এই তিন খাত মিলিয়ে আমাদের বাজেট হলো ১৬১টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৫৫তম।
শিক্ষা খাতে সরকারী বাজেট যত কমবে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের লাভ তত বেশি। সরকারী স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মান যত নস্ট হবে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের তত বেশি। সরকারী স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মান খারাপ হওয়া এবং বাজেটে নাম মাত্র টাকা বরাদ্দ দেওয়া সুদুর প্রসারী ষড়যন্ত্র বলে প্রতিয়মান হচ্ছে। প্রতিবছর বাজেটে টাকার অংক বাড়িয়ে জনগনকে ধোকা দেওয়া হচ্ছে। আমাদের বাজেটের আকার যেই হারে বাড়ছে টাকার অংক কিন্তু সেই হারে বাড়ছে না। অথচ জনসংখ্যা বাড়ছে, inflation আছে। এগুলো হিসাব করলে এবং ICT খাতের খরচ বাদ দিলে দেখা যাবে শিক্ষা খাতে বছর বছর কমছে। অথচ সবাই চুপ। কোন রা নেই। আর আমাদের? মানে আমাদের গবেষণা!
সে আর না বলি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.