![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Legal Practitioner
সনটি ছিলো ১৩৪৪ ইংরেজী । সিলেটে হিন্দু রাজা গৌর গোবিন্দের রাজ্যের এক মহল্লায় ১৩টি মুসলিম পরিবার বাস করতেন। তারই একজন ছিলেন শেখ বুরহান উদ্দিন। তিনি হিন্দু জালিম রাজা গৌর গোবিন্দের কারণে গোপনে ইবাদত-বন্দেগী করতেন। কারণ, সেখানে প্রকাশ্যে মুসলমানদের জন্য ইবাদত-বন্দেগী করা নিষিদ্ধ ছিলো। কেউই গরু জবাই ও কুরবানী করতে পারতো না।
শেখ বুরহান উদ্দিনের কোনো সন্তান ছিলো না। সন্তানের জন্য মহান আল্লাহ পাকের নিকট দোয়া করে তিনি নিয়ত করলেন, যদি তার একটি সন্তান হয় তাহলে তিনি শুকরিয়া স্বরূপ মহান আল্লাহর নামে একটি গরু কুরবানী করবেন। কিছুদিন অপেক্ষার পর সত্যি সত্যিই ঘরআলো করে একজন ফুটফুটে সন্তান জন্ম নিলো। খুশি হয়ে বুরহানুদ্দীন শুকরিয়া করে নিয়ত মুতাবিক একদিন গোপনে একটি গরু কুরবানী করে গোশত মুসলমানদের মধ্যে বিলি করতে লাগলেন। এমন সময় একটি কাক এসে ছোঁ মেরে এক টুকরা গোশত নিয়ে গেলো। মহান আল্লাহ পাক উনার কি কুদরত, কাক গোশতের টুকরাটি ফেললো গৌর গোবিন্দের মন্দিরের প্রধান প্রবেশ পথে।
গোবিন্দ এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সৈন্য পাঠিয়ে শেখ বুরহান উদ্দিনকে রাজার সামনে উপস্থিত করলো।
জালিম হিন্দু রাজা গৌড় গোবিন্দ বুরহান উদ্দিনের ডান হাত কেটে দিলো। নিষ্পাপ সদ্য জন্ম নেয়া শিশু (গুলজার)-কে কথিত দেবতার সামনে বলি দিলো।
এ অবস্থা দেখে শিশুটির মা অর্থাৎ শেখ বুরহান উদ্দিনের স্ত্রী অজ্ঞান হয়ে মৃত্যু বরণ করলেন। শুধু এতটুকুই নয়, ওই যালিম গোবিন্দ ওই দিনই আক্রমণ চালিয়ে ওই এলাকার সকল মুসলমানদেরকে নির্মমভাবে শহীদ করে ফেললো!
অত্যন্ত ব্যথিত অন্তরে শেখ বুরহান উদ্দিন পায়ে হেঁটে উপস্থিত হলেন সোনারগাঁয়ে শামসুদ্দিন ইলিয়াসশাহের দরবারে। ইলিয়াস শাহ সব শুনে যালিম হিন্দু রাজা গৌর গোবিন্দকে শাস্তি দেয়ার জন্য সৈন্য-সামন্ত পাঠালেন যুদ্ধ করার জন্য। বেশ কিছুদিন যুদ্ধ হলো, শত শত মুসলিম সৈন্য শহীদ হলো। কিন্তু জয় করা হলো না।
এরপর শেখ বুরহান উদ্দিন রওয়ানা হলেন দিল্লির পথে। দিল্লির সম্রাট আলাউদ্দিন ফিরোজ শাহ তুঘলকের সামনে। তিনি বুরহান উদ্দিনের নিকট হতে সব বিষয় শুনে যবন গোবিন্দকে শায়েস্তা করার জন্য সৈন্যসহ সিকান্দার গাজীকে সেনাপতি করে অভিযানে পাঠালেন। কিন্তু পথিমধ্যে অনেক প্রতিকূলতার কারণে তারা দিল্লিতে ফিরে গেলেন।
অতঃপর নতুন কিছু সৈন্যসহ আর একজন বীর সাইয়্যিদ নাসির উদ্দিনকে সেনাপতি করা হলো। সম্রাটের আদেশ পেয়ে তিনি দোয়া নিতে গেলেন তাঁর পীর শায়েখ হযরত খাজা নিজাম উদ্দিন রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবারে। তখন ওখানেই অবস্থান করছিলেন হযরত শাহ জালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি। সবকিছু শুনে হযরত শাহ জালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি সিদ্ধান্ত নিলেন তিনিও সাইয়্যিদ নাসির উদ্দিনের সাথে এই অভিযানে যাবেন।
অতঃপর হযরত শাহ জালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ৩৬০ জন সঙ্গী নিয়ে সাইয়্যিদ নাসির উদ্দিনের সৈন্যবাহিনীর সাথে রওয়ানা দিলেন।
পথিমধ্যে গৌর গোবিন্দের সৈন্যদের সাথে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। ওলীয়ে কামিলগণ উনাদের দোয়া, মহান আল্লাহ পাক উনার গায়েবী মদদ এবং হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রূহানিয়তের নিকট গৌর গোবিন্দের যাদুমন্ত্র অকার্যকর হয়ে তার বাহিনীর চরম পরাজয় হলো। নিহত হলো গোবিন্দের সেনাপতি মনা রায়। মুসলিম বাহিনী অগ্রসর হতে থাকলো গৌর গোবিন্দের রাজধানী অভিমুখে। সুরমা নদী পার হয়ে মুসলিম বাহিনী যখন প্রাসাদের নিকটবর্তী হলো, তখন হিন্দু রাজা গৌর গোবিন্দ প্রাসাদ ছেড়ে পালিয়ে যায়। মুসলমানের আযানের ধ্বনিতে গৌর গোবিন্দের প্রাসাদ ও মন্দির ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে ধ্বংস হয়ে যায়।
উদিত হলো নতুন সূর্য। উড়তে লাগলো ইসলামের পতাকা। গৌর গৌবিন্দের রাজ্যের নতুন নাম হলো জালালাবাদ।।
সূফীরাও জিহাদ করেছেন। এক মুসলিম আরেক মুসলিমের জন্য সাহায্যের হাত বাড়াতে দূর থেকে ছুটে এসেছেন। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে ষড়যন্ত্র চলছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসীরা আজ কে কোথায়! কোথায় আজ হযরত শাহজালাল রহমতুল্লাহি আলাইহির উত্তরসুরীরা। এ বোধদয় আজ বড় দরকার।
২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৪৪
সাদাত তানজির বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ...
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ২:৪৩
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: ভালো লিখেছেন।