নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অধিকার বঞ্চিত পৃথিবীর উত্তরাধীকারি

প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন

অপরিপক্ক কৃষক

প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাজনীতি কি ব্যাবসা নাকি ব্যাবসায়ীরা রাজনীতি করছে?

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ সকাল ১০:০১


সংক্ষেপে কিছু বলতে চাই। সংক্ষেপ বলছি কারন তরুন প্রজন্মের কাছে ইউটিউবের লুতুর- পুতুর নাটক, গালফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ড বানানো, তাদের সঙ্গে ঘন্টা পর ঘন্টা প্রেমালাপ, ছ্যাকাখেয়ে কয়েকদিনের জন্য বিরহ পালন তারপর আবার নতুন কারো খোঁজ করা, টিকটক, দেখুন অমুক কি করল, পাবজি..... ইত্যাদি ইত্যাদি আনপ্রডাক্টিভ কাজের ব্যাস্তার ফাঁকে সময় কই লম্বা গদ্য পড়ার!
যাইহোক মূল কথায় আসি,
অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইতে বঙ্গবন্ধু লেখেন, ভারত উপ-মহাদেশের মুসলমানদের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক এবং সামাজিক মুক্তির যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ ভাগের আন্দোলন করেছিলাম দেশ ভাগের পর ঠিক তার উল্টাটা হয়। যেসমস্ত জমিদার খান বাহাদুর কিংবা রাজনীতিবিদেরা দেশ ভাগের বিরোধীতা করত দেশ ভাগের পর তারা এবং আমলারাই মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী, এমএলএ হয়ে ক্ষমতার মসনদে বসল। আর দেশ ভাগের আন্দোলনে আত্মত্যাগি নেতারা অবেহেলিত হল। ফলে পাকিস্তান স্বাধীন হলেও শাসনের কোন পরিবর্তন হয়নি, হয়নি মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি। বরং শোষনের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পায়।

আবার নব্য স্বাধীন বাংলাদেশে শুরু হল লুটপাট, পুঁজিবাদী শক্তি ক্ষমতার ঘাড়ে বসতে শুরু করল। বঙ্গবন্ধু চেষ্টা করেছিল মুনাফাখোরী পুঁজিবাদী ব্যাবসায়ী মজুদদারদের ঘাড় ঝাড়া দিয়ে নামিয়ে দিতে। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস তাকেই চিরতরে নামিয়ে দেওয়া হল। তার মৃত্যুর পর হতে আজ পর্যন্ত ক্ষমতা পালা বদল হয়েছে ঠিকই কিন্তু ক্ষমতাবানদের ঘাড়ে পুঁজিবাদী শক্তি সর্বদাই কনস্ট্যান্ট ছিলো এবং আছে।
কেউ কেউ এখন ছাত্র রাজনীতিকে এক প্রকার ব্যাবসা হিসেবে আখ্যায়িত করে তা বন্ধের দাবি জানাচ্ছে। দেখলাম আমার এক ইয়ারমেট বন্ধু, যে আমাদের ক্যাম্পাসে তৎকালীন ছাত্রলীগ সভাপতি ছিলো সেও এখন ছাত্র রাজনীতি বন্ধের দাবি জানাচ্ছে। যারা রাজনীতি কিংবা ছাত্র রাজনীতিকে ব্যাবসা বলছে আমি তাদের সাথে ভিন্ন মত প্রসন করি। রাজনীতি ব্যাবসা নয় বরং ব্যাবসায়ীরা রাজনীতি করছে। আমি বলতে চাই, শুধু ছাত্র রাজনীতি নয় টোটাল রাজনৈতিক ফিল্ডই দখল করে আছে ব্যাবসায়ী এবং দূর্নীতিবাজেরা। রাজনৈতিক দলকে এরা বানিয়েছে কোম্পানি লিমিটেড। ঝুকি নিচ্ছে, ইনভেস্ট করছে, ব্যাবসা হচ্ছে। রাজনীতিবিদেরা ক্ষমতার লোভে এদের প্রশ্রয়ও দিচ্ছে। এদেরকে রাজনীতির মাঠ থেকে বিতারিত করা দরকার। জানি এটা যত সহজে বললাম করাটা অত সহজ নয়। এ জন্য দরকার দলাদলি ভুলে দেশের জনগন এবং পিওর রাজনীতিবিদদের নৈতিক ভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।
ছাত্র রাজনীতি বন্ধ নয়, বরং ছাত্র রাজনীতিতে দলীয়করন বন্ধ করতে হবে। ছাত্র সংগঠন কোন রাজনৈতিক দলের অঙ্গ হবে না। ছাত্র সংগঠন থাকবে সতন্ত্র সংগঠন হিসেবে। সেখান থেকে উঠে আসবে আগামীর নেতৃত্ব। ছাত্র মানে তরুন, ছাত্রদের মধ্যে রয়েছ প্রাণ শক্তি। দেশ হতে দূর্নীতি, অনিয়ম অত্যাচার বন্ধে ছাত্ররাই পারে বৃহত্তর ভূমিকা রাখতে । বায়ান্নো থেকে শুরু করে দেশের সকল গৌরবময় আন্দোলনের ইতিহাস ভুলে গেলে চলবেনা, এসকল আন্দোলনে ছাত্রদের বৃহত্তর ভূমিকা রয়েছে।
ছাত্রদের সঠিক পথে আনতে হলে চাই সঠিক শিক্ষক। সেদিন এক রিপোর্ট দেখলাম, ইউজিসির তদন্তে ঢাবি সহ দেশের ১৪ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের প্রমান পাওয়া গেছে। অর্থাৎ সরকারি হিসেব মতেই ১৪ ভিসি দূর্নীতিবাজ, তাহলে বেসরকারী হিসেবে কয়জন হতে পারে ভেবে দেখুন! এই যদি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচাকদের অবস্থা তাহলে অন্য শিক্ষকদের অবস্থা কি ভেবে দেখুন! দূর্নীতিবাজ শিক্ষক কি ভাবে নীতিবান ছাত্র তৈরি করবে! একটা নির্দলীয় ছাত্র সমাজ বিনির্মানে চাই নির্দলীয় শিক্ষক। একটা নৈতিক ছাত্র সমাজ বিনির্মানে চাই নীতিবান শিক্ষক।
কৈশোরের একটা কথা মনে পরে গেল। নবম শ্রেণীতে থাকা কলীন শ্রদ্ধেয় হুমায়ুন স্যার আমাদের বাংলা ক্লাস নিতেন এবং প্রায় সময় তিনি নীতি নৈতিকতা সম্পর্কে লেকচার দিতেন। আমি মনযোগ সহকরে শুনতাম ভালই লাগত, মাঝে মধ্যে আবার ঘুমও আসত।
শেষমেষ বলতে চাই, আবরারের যে পোষ্টের উপর ভিত্তি করে তাকে হত্যার পর শিবির হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে, এর মাধ্যমে বরং শিবিরই লাভবান হচ্ছে কারণ এতে করে মূলত শিবির দেশ প্রেমিক হিসেবেই ব্রান্ডিং হচ্ছে। যদিও এটা বোঝার ক্ষমতা বর্তমান ছাত্রলীগের নেই! অন্যদিকে এ হত্যাকান্ডের মাধ্যমে তরুন প্রজন্মেকে এক প্রকার ভয়ও দেখানো হচ্ছে। বোঝানো হচ্ছে যাই হোক কোন প্রতিক্রিয়া দেখানো যাবে না। ভালো কাজের জন্য যেমন রয়েছে বাহবা, ব্যার্থতার জন্য রয়েছে তেমন সমালোচনা। এটাকে অবস্যই মেনে নিতে হবে। ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে তো ঠিকই বাহবা পেয়েছে।
কবে আমাদের মধ্যে সমালোচনাকে সহজভাবে গ্রহণ করার মানসিকতা তৈরি হবে তা একমাত্র আল্লাই জানে!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১২:২১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মৌলিক সত্যে আলোকপাত করেছেন।
কিন্তু সমস্যাটা হলো যারা প্রচলিত রাজনীতির ধারা ধরে আছে এবং ভবিষ্যত রাজনীতির কেউকেটা হতে চায়
তারা বুঝেও চোখ বন্ধ করে থাকবে নিজের লাভের আশায়
আমজনতা আচে জীবন যাপনের যাতনায় ঘাড় গুজে।
নুন আন্তে পান্তা ফুরানো দেহে মনে বিপ্লবের সাহস নেই।

চাই ফ্রেশ বিপ্লবী। সত্য, সঠিক চেতনায় সার্বিক ক্ষমতা এবং গুন সম্পন্ন।
পথে বাঁধা আসবে তা মোকাবেলার বুদ্ধি সাহস এবং ধৈর্য্য।
ভবিষ্যত রাজনীতির ষ্ট্রাকচার বদলে দেয়ার মতো ধী শক্তি ম্পন্ন।
একজন খোমেনি, একজন মাহাথীর বা একজন বঙ্গবন্ধু।

অপেক্ষায় পুরো জাতি - - -

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:২১

প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন: সে অপেক্ষমানদের সঙ্গে আমিও যুক্ত হলাম।

২| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন।
রাজনীতি ল্কোজন করেই টাকার জন্য, ক্ষমতার জন্য। অসৎ পথের টাকা গুলো ভয়হীণ ভাবে সংরক্ষন করার জন্য।

৩| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:১৯

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: সঠিক।

ছাত্র রাজনীতিতে আওয়ামী, বিম্পি, শিবির থাকায় এরা অপকর্ম করে যাচ্ছে। এই রাজনীতি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের অধিকার আদায়ে ক্যাম্পাসের সীমাবদ্ধ থাকলে এতো সমস্যা হতো না। কিন্তু আমাদের দেশে ছাত্ররাজনীতি মানেই লীগ, দল, শিবির....
তাই ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করাই উত্তম।

০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৪৮

প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন: রাজনৈতিক ফিল্ড ব্যাবসায়ীদের দখলে। তারা এতো সহজে দলীয় ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হতে দেবে না। কারন ছাত্র রাজনীতির দলীয় করন মূলত গোটা কয়েক ছাত্র দিয়ে পুরো ছাত্র সমাজকে দমিয়ে রাখার একটা সহজ কৌশল। অর্থাৎ কিছু ছাত্রকে টাকা পয়সা ক্ষমতা ইত্যাদি দিয়ে অন্যদের উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ক্যাডার হিসেবে ব্যাবহার করা। কারন ছাত্রদের উপর নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠা না করা গেলে তারা ফুসে উঠবে। এরফলে অন্যায় অত্যাচার পুঁজিবাদী ব্যাবস্থা এসব টিকেয়ে রাখা অসম্ভব হবে। কেউ যদি ছাত্র রাজনীতিতে দলীয় করন বন্ধ করতে চায় তবে পুঁজিবাদী ব্যাবসায়ীরাই টাকা পয়সা দিয়ে ছাত্রদের তার বিরুদ্ধে উসকে দেবে। এজন্য ছাত্রদেরই দলীয় রাজনীতি হতে বেড়িয়ে আসার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

৪| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৯ দুপুর ১:৫৮

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: আপনার কথায় যুক্তি আছে।
আমাদের রাজনীতিবিদরা দেশের জন্য কাজ করেন না, তাদের সাথে জনগণের সম্পর্ক নেই। তাদের সম্পর্ক ব্যবসায়ীদের সাথে। টাকার সাথে। ফলে ব্যবসায়ীদের স্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত দিয়ে টিকে থাকা কষ্টকর হবে।
গণতন্ত্র
শুদ্ধ রাজনীতি চর্চা
এবং মানুষের সাথে সম্পর্ক থাকলে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.