নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুদিন আগে এক ছোট ভাই পোস্ট করেছে, নানান আলেম নানান মত আমরা যাব কোন পথ।
তাকে বললাম, স্রষ্টা কুরআন দিয়েছে ( অনুবাদ এবং তাফসীর) পড়ো এবং মেধা দিয়েছে ব্যাবহার করো। মডেল হিসেবে রসূল দিয়েছে তাকে ফলো করো। বিভ্রান্তকারির কাছে যাওয়ার দরকার কি!
হ্যা, সবার সব কথাই হয়ত মনগড়া কথা নয়। ভালো ভালো কথাও বলা হয়। কিন্তু ইসলামে এক পার্সেন্টও মনগড়া কথা বলার সুযোগ নেই।
প্রথমত, ওয়াজ মাহফিলে একেক জনের একেক ধরনের বক্তব্যে মানুষ যে বিভ্রান্ত হচ্ছে এ নিয়ে নিশ্চই বিতর্কের প্রয়জন নাই? তাহলে যা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে তার দরকার কি!
দ্বিতীয়ত, মাফিলের জন্য টাকা দিলেও নেয় না বরং নিজ খরচে এসে মাফিল করে এমন বক্তা আছে নাকি? যদি থেকে থাকে এবং সত্য কথা বলে, তবে তার প্রতি শতভাগ সমর্থন। কিন্তু না, এমনটা দেখছি না।
আসলে এখন মাহফিল হচ্ছে ইসলাম প্রচারের নামে মেধাকে পুঁজি করে এক ধরনের ব্যাবসা। বর্তমানে দেশে যার বিশাল এক মার্কেট সৃষ্টি হয়েছে। এই মার্কেট দখলকে কেন্দ্র করে এক বক্তা আরেক বক্তাকে ডুবাইতে ব্যাস্ত। এজন্য একেক জন একেক ধরনের ফতোয়া দিচ্ছে। এতে করে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। শুধু তাই নয় এ কারনে আজ দেশের মুসলমানরা বিভিন্ন মোল্লার অনুসারীতেও বিভক্ত হচ্ছে।
অথচ হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এবং পরবর্তীকালের খলিফারা, ভারতীয় উপমহাদেশে দেওবন্দের ইমামরা, হযরত শাহ্ জালাল, শাহ্ পরান, খানজাহান আলী সহ যত অলি আউলিয়া এদেশে ইসলাম প্রচার করেছে তারা কেউই এভাবে ইসলাম প্রচার করেনি! তারা ইসলাম প্রচারকে অর্থ উপার্জনের মাধ্যম বানায় নি। বরং তারা এবং তাদের অনুসারীরা ইসলাম প্রচারে নিজেদের সম্পদ ব্যায় করেছে। তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে মানুষকে ইসলাম এবং সত্যের দাওয়াত দিয়েছে। আর এখন বিশাল সাজসজ্জা করে আলেমদের ভাড়া করে আনা হয়। মূলত এই ভাড়ার চক্রে অন্যকে পেছনে ফেলে নিজে চাহিদা বৃদ্ধির জন্যই এত পেছনে লাগালাগি। চাহিদা বাড়াতে কারো কারো অবস্থা এমন হইছে, যে এক বছর আগে শিডিউল নিয়ে রাখতে হয়!
এখনকার আলেমদেরকে মানুষের কাছে যেতে হয়না, মানুষই আলেমদের কাছে যায়। আলহামদুলিল্লাহ! তার মানে বোঝাই যাচ্ছে, বর্তমানে মানুষের ইসলামের প্রতি কত আগ্রহ, কত ভালোবাসা! আহ্হারে!
কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় হলো, তবুও আজ দেশে ইসলাম নেই! প্রশ্ন হতে পারে ৯০ পার্সেন্ট মুসলমানের দেশে ইসলাম নেই, এ আবার কেমন কথা! হ্যা এটাই কথা। কারন ইসলাম মানে শান্তি। তাই ইসলাম থাকলে দেশে শান্তি থাকতো। কিন্তু কই দেশে তো শান্তি নেই! ইসলাম থাকলে, পোষাকই ধর্ষনের জন্য দায়ী না বলে স্রষ্টার ভয়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রনের উপর বেশি গুরুত্ব দিতো। কারন কোরআন কোথাও খারাপ পোষাকের জন্য ধর্ষনের অনুমতি প্রদান করেনি। বরং সূরা ইউসুফের ৫৩ নং আয়াতে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করার কথা বলা হয়েছে।
ইসলাম থাকলে খুন, চুরি, ছিনতাই, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, সুদ, ঘুষ, দূর্বলের প্রতি অন্যায়, ক্ষমতার বাড়াবাড়ি, জমি দখল, খাদ্যে ভেজাল, ওজনে কম দেয়া,..... এসব কিছুই হওয়ার কথা নয়।
আমরা পৈতৃক সূত্রে ইসলাম পেয়েছি, জন্ম সূত্রে মুসলমান হয়েছি। কেউ কেউ আবার নামাজ পড়া মুসলমান।
ইসলামের পাঁচটি পিলারের একটি হচ্ছে নামাজ। সুতরাং যারা নামাজ পড়েনা তাদের নামাজের দাওয়াত দেওয়া নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ন কাজ। তবে কেবল মাত্র পিলাকেই পূর্নাঙ্গ অবকাঠামো বলা যায় না। আবার যে পিলার পূর্নাঙ্গ অবকাঠামো ধরে রাখতে পারে না, সে পিলার রাখার চেয়ে ভেঙ্গে ফেলাই উত্তম।
সুতরাং, মানুষকে যেমন নামাজ পড়ার কথা বলা দরকার। একই ভবে কিছু নামাজি ব্যাক্তিকে নামাজ না পড়ার জন্যও বলা দরকার। আসুন দেখি তারা কারা, যাদের নামাজ না পড়ার কথা বলা দরকার!
তারা সেই নামাজি, যারা ঘুষ খাচ্ছে এবং নামাজ পড়ছে, মানুষের সম্পদ দখল করছে এবং নামাজ পড়ছে, মানুষের টাকা মেরে দিচ্ছে এবং নামাজ পড়ছে। কিন্তু লাভ কি এই নামাজের!
তারচেয়ে বরং কার নিকট হতে কত ঘুষ খাওয়া হইছে, কার টাকা মেরে দেওয়া হইছে, কার সম্পদ দখল করা হয়েছে, সেসব ফেরৎ দিয়ে তারপর মসজিদে আসেন।
কয়েকটা ফতোয়া দেই, খোঁজ নিয়ে দেইখেন কোন মোল্লা ভুল বলে কিনা।
১। জমিন হতে আসমান সমান পাপ থাকলেও স্রষ্টা চাইলে ক্ষমা করেও দিতে পারে। কিন্তু যদি এমন কোন পাপ করা হয় যার মাধ্যমে কোন ব্যক্তির নিকট দায় থেকে যায়। সে সকল ক্ষেত্রে ক্ষমা করার এখতিয়ার স্রষ্টা নিজের হাতে রাখে নি। এক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত ঐ ব্যক্তি ক্ষমা না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত স্রষ্টাও ক্ষমা করতে পারবে না।
ধরুন, কেউ ক্ষমতার বলে অন্যায় ভাবে কোন নিরপরাধ ব্যক্তিকে একটা থাপ্পর দিলো , এক্ষেত্রে যাকে চর মারা হল তার কাছেই আগে ক্ষমা চাইতে হবে। যাকে চর মারা হলো সে ক্ষমা না করলে সারা জীবনের সহি ইবাদতের বিনিময়েও স্রষ্টা ক্ষমা করতে পারবে না।
২। ঘুষ নিয়ে থাকলে আগে তা ফেরৎ দিতে হবে তারপর তওবা করে ক্ষমা চাইতে হবে।
৩।কারো সম্পদ দখল করলে আগে তা ফেরৎ দিতে হবে তারপর তওবা করে ক্ষমা চাইতে হবে।
৫। কারো টাকা মেরে দেওয়া হলে আগে তা ফেরৎ দিতে হবে তারপর তওবা করে ক্ষমা চাইতে হবে।
৬। ওজনে কম দিয়ে ঠকিয়ে থাকলে আগে তা পরিমান মতো বুঝিয়ে দিতে হবে তারপর তওবা করে ক্ষমা চাইতে হবে।
সবাই প্রতিনিয়ত কমবেশি পাপ করে। তিনি দয়ালু, ক্ষমা চাইলে হয়ত ক্ষমা করে দিবেন । কিন্তু এ ব্যাপারে সর্বদা সাবধান থাকা জরুরী, লোভে পরে এমন কোন পাপ যেন না করা হয় যার ক্ষমা করার এখতিয়ার স্রষ্টা নিজের কাছে রাখেনি! তাহলে সারা জীবনের ইবাদতও এক পয়সার কাজে আসবে না।
নাহ্, এই ধরনের ওয়াজ মোল্লা মশাইরা করবে না। এগুলো বললে মানুষ জড়ো হবেনা, মার্কেট ডাউন হয়ে যাবে। অথচ এগুলো ঠিক করতে পারলে দেশের সকল সমস্যা এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৫৫
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন: সবই অর্থনীতিক স্বার্থ
২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৫৮
রিফাত হোসেন বলেছেন: কিছু মাহফিল ব্যবসা ছাড়া কিছুই না।
:লেখক বলেছেন, "তারা ইসলাম প্রচারকে অর্থ উপার্জনের মাধ্যম বানায় নি। বরং তারা এবং তাদের অনুসারীরা ইসলাম প্রচারে নিজেদের সম্পদ ব্যায় করেছে।"
পূর্ণ সহমত।
তবে,
যুগের পার্থক্য আছে। তখনের সময় জায়গার অভাব ছিল না। ঢাকার অনেক জংগল গাছপালা কেটেই বড় হয়েছে। সেনানিবাস অনেকটা দখল করে আছে, যেখানে সাধারণ সবাই যেতে পারে না। প্রাকৃতিক পানি, খাদ্যের অভাব ছিল না, যাত্রাপথ নদীকেন্দ্রীক ছিল। আমার নিজের চোখে দেখা কয়েকটি খাল; যেখানে ঢাকার সব জায়গায় সংযুক্ত ছিল তা বন্ধ হয়েছে, ভরাট হয়েছে। ঘরের কাছে নৌকা দেখেছি, মালামাল ব্যবসার জন্য এনেছে, থাক এই খাল-নদীর দেশকে হত্যা নিয়ে আরেক পোস্ট দেওয়া যাবে। তবে এইযুগে জনসংখ্যা আর বিশ্বাস খুবই স্পর্শকাতর ব্যাপার।
চাইলেই সহজে দেশান্তরি হওয়া যেমন যায় না তেমনি জীবন নির্বাহে ইহকালের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হয়।
পরিবার পালতে খরচ হয়, যা আলেমদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
কিন্তু,
চাইলে ওয়াজ বা মাহফিলকে পেশা হিসেবে না নিয়ে, সেবা হিসেবে নিলে ভাল হয়। হতে পারে তারা প্রকৌশলী, ডাক্তার, হিসাব রক্ষক, গবেষক,শিক্ষক। ডাক্তার জাকির নায়েক একজন সুন্দর উদাহরণ। সে দিক বিবেচনায় আর্থিক সম্মাননা দিতে আপত্তি নাই, মূল্যবান সময়কে বিবেচনা করে। আর উনি যদি গ্রহণ করতে না চান বা দান করে দেন। তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু টাকা নিয়ে একটা কাজ ছাড়া দুনিয়াবি কিছু না করলে, মনে মনে তাকে আমার ভন্ডের মত মনে হবে।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৫৮
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন: ধন্যবাদ, ভালো থাকুন।
৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১২
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: হুজুরেরা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে না মানেই যে, সবাই এসব বিষয় জানে না তা নয়। হালাল, হারাম কম বেশী সবাই-ই জানে। তবে আমাদের চরিত্রগত সমস্যা আছে। যে কারণে, তথাকথিত 'বিশ্ব এজতেমা' বা মাহফিলগুলোতে এত লোক অংশগ্রহণ করলেও সমাজে তার প্রভাব নেই...
১৪ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:০০
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন: এসব বিষয় বললে হুজুরের মার্কেট কমে যাবে ।
৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০০
রাজীব নুর বলেছেন:
১৪ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:০৪
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন: সবচেয়ে আশ্চর্য লাগে, খুন, ধর্ষণ, ব্যাংক ডাকাতি, দুর্নীতি, করেও জেলে যেতে হয় না। অথচ কিছু বললেই জেলে যেতে হয়!
৫| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:১৮
নতুন বলেছেন: বত`মানের ওয়াজে কি শেখানো হয়? কতটুকু জ্ঞানের কথা মানুষকে বোঝানো হয়?
এটা জ্ঞান চচা কম লোক দেখানো বেশি।
১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩৭
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন: বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে ওয়াজে যা বলা দরকার তা তেমন একটা বলা হয়না। বাংলাদেশের মূল সমস্যা হলো দূর্নীতি, ঘুষ, ভেজাল পণ্য, মানুষের হক মেরে দেওয়া, নারী ধর্ষন...... ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু ওয়াজ করা করা হচ্ছে, নামাজে হাত কোথায় বাধবে, পর্দা করতে গিয়ে মুখ খোলা রাখবে না আটকায় রাখবে, তারাবি কয় রাকাত পড়বে ইত্যাদি ইত্যাদি....
মূল ক্রাইসিসের যায়গায় বেশি বেশি হিট না করতে পারলে হবে না!
মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ।
৬| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:১১
নীল আকাশ বলেছেন: বেশিরভাগ এই দেশের লোকজন নামে মাত্র মুসলিম। ধর্মের প্রায় কিছু জানে না। নিজের ইচ্ছে মত ফতোয়া পয়দা করে বেড়ায়। কিছুদিন ধরে ইসলাম নিয়ে বিভিন জনের মন্তব্য পড়ে আমি একেবারেই অবাক হয়ে গেছি। নিজেরা যে জানে সেটা জানে না।
ইসলামের প্রথম কাজ হলো ইকরা, অর্থাত পড়। কিন্তু এইদেশের মানুষ নিজে কষ্ট করে পড়ার চাইতে শুনতে বেশি পছন্দ করে। যার ফলে এইসব মাহফিলের নামে ভন্ডামী আর ব্যবসা চলে নিরন্তর।
লেখা ভালো হয়েছে। এইসব বিষয়ে আরও লিখুন। সচেতনতা তৈরি করাও একটা দায়িত্বের মাঝে পরে যায়।
১৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৩১
প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন বলেছেন: মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ,
©somewhere in net ltd.
১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২৭
একাল-সেকাল বলেছেন:
মাহফিল বর্তমানে দোকানদারীতে পরিনত হয়েছে।
ধর্ম ভিত্তিক জীবন ঘনিষ্ঠ আলোচনার চাইতে বিভাজনের আলোচনাই প্রাধান্য পায়, সাথে কিছু কিচ্ছা কাহিনী যার বেশীর ভাগই মন গড়া, ইদানিং দেশি বিদেশী জনপ্রিয় গানের রিমিক্স ও আলোচকদের মুখে শুনা যায়।
এতে হুজুর পায় খ্যাতি, শ্রোতারা পায় আনন্দ আর ধর্ম হয় প্রশ্নবিদ্ধ।