নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক্রিকেট সাংবাদিক। গান লিখি। গল্প লিখি আর এমন একজনের জন্য অপেক্ষা করি, যে কোনোদিন ফিরবে না...

সাইফ হাসনাত

অবেলার বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিয়ে গেছে সব।ভিজে যাওয়া পৃথিবীটা হাতে নিয়ে একা বসে আছি।শেষ দিনের রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষায়...

সাইফ হাসনাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

তোমাকে আমি ভালোবাসি

২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:১৮

এক ঝাক অচেনা সাদা পাখি উড়ে যায়। মুগ্ধ দৃষ্টিতে সেদিকেই তাকিয়ে ওরা। কয়েক মুহুর্তেই পাখির ঝাক ক্ষুদ্র বিন্দুতে পরিণত হয়। চোখ ফেরায় দুজনেই।

সুমির চুলে একটা সাদা পালক। সেটা ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেয় আদনান। সুমি বুঝেনা ব্যাপারটা। ছোট্ট করে বলে-

: কী...?

আদনান কিছু বলেনা। সুমির চোখে চোখ রেখে নেশাগ্রস্তের মতো তাকিয়ে থাকে। ওর মনের বেতারে বাজে তখন , তুমি চোখে রাখ চোখ, চোখে চোখে কথা হোক...।

সুমির চোখও আটকে থাকে আদনানের চোখে। চোখের সুরঙ্গপথে দুজন-ই ঝড় তুলে দুজনের হৃদয়ে। হৃদয়ে গভীরে।

স্বল্প দৈর্ঘ্যের নিরবতা জমে একটা।

তারপর ঠোটভরা রহস্য নিয়ে হাসে আদনান। আদনানের এই হাসিটা একটু অপরিচিত মনে হয় সুমির কাছে। ও এই হাসির কোন অর্থ খোঁজে পায়না।

অনেণ পর কথা বলে আদনান-

: আজ তোমাকে বলবো সে কথা- তুমি শোন,

বলি বলি করে যে কথা বলিনি কখনো।

একবার শুনে তুমি মনে রেখ,

পথের ধূলোটা তুলে নিয়ে তুমি গায়ে মেখো...।

সুমি আবারও ছোট্ট করে বলে-

: মানে!

: মানে তুমি বুঝোনা?।

: না, বুঝিনা। তুমি বলো।

আদনান সুমির চোখের দিকে তাকিয়ে হাসে। বড় রহস্যময় সে হাসি।

হাসতে হাসতেই আদনান বলে-

: তুমি বুঝোনা, না?

সুমি এবার আদনানের তাকিয়ে থাকাটা আর সহ্য করতে পারেনা। ও মাথা নীচু করে বালুর দিকে তাকিয়ে থাকে।

সুমি আগেই ভেবেছিলো, আদনান ওকে কিছু বলবে। এ জন্য মনে মনে ও প্রস্তুতও হয়েছিলো। কিন্তু আদনানের সামনে আসার পরই সব কেমন যেনো এলোমেলো হয়ে গেলো।

০২

সেই প্রথম দিন থেকেই আদনান সুমির কাছে এক রহস্যমানব হয়ে আছে। আর সে রহস্যময়তা এতোই গভীর যে, সুমির কাছে আদনানকে মনে হয় অজানা-অচেনা কোন দূর গ্রহের বাসিন্দা।

এই হয়তো দেখা যাচ্ছে হাসি খুশি আর প্রাণচঞ্চল এক আদনান, একটু পরে আবার সে-ই ভাবনার সাগরে ডুব দেয়া এক জটিল মানুষ। যার কাছে পৃথিবীর অন্য সব কোলাহোল তুচ্ছ। খুব তুচ্ছ।

ওদের পরিচয়ের কয়েকদিন পর থেকেই সুমির মনে হতো, আদনান ওকে কিছু বলতে চায়।

আসলেই আদনান সুমিকে কিছু বলতে চায়। কিন্তু পারেনা। পারেনা, ওর সহজ-সরল মানসিকতার কারণে।

অনেক অপোর পর সুযোগ পেয়েও আদনান মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনা। আকারে ইংগিতে যা-ও বলে সুমি তা না বুঝার ভান করে এড়িয়ে যায়। আসলে সুমি চায়, আদনান সরাসরি-ই বলুক এবং অবশ্যই সহজ-সরলভাবে।

আদনানা আর সুমির সম্পর্কটা কেমন যেনো অন্য রকম! ওরা কেউ-ই কাউকে নিজের কথা খুলে বলেনি। অথচ নিজেদের অজান্তেই ওরা দুঃখ-সুখের অনূভুতিগুলো ভাগ করার জন্য বরাদ্দ রেখেছে নিজেদের সান্নিধ্যকেই।

সৃষ্টিকর্তা হয়তো স্বর্গীয় ভালোবাসার রূপ এমনই করেছেন!

০৩

আদনান সুমির দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়েই থাকে। চোখ সরায় না।

সুমি বুঝেনা আদনানের ইচ্ছাটা কী। ও যদি কিছু বলবেই তাহলে এতো ইংগিত-ইশারার কী প্রয়োজন! সুমি বুঝেনা।

আদনানের নিরবতা ভাঙ্গেনা। মুখ খুলে সুমি। ওর কথা অভিমান ভরা-

: আদনান! তুমি কেমন মানুষ!

মিটমিট করে হাসতে হাসতে আদনান বলে-

: তুমি জানোনা আমি কেমন মানুষ?

: তুমি কখনো বলোনি আমাকে।

: কেনো? তুমি বুঝোনা আমাকে?

: তুমি বুঝতে দিয়েছো কখনো?

উল্টো প্রশ্ন করে সুমি।

সুমির প্রশ্নের উত্তর না দিয়েই আদনান আনমনা ভঙ্গিতে বলতে থাকে-

: ভালোবাসি ঝুম বৃষ্টি,

ভালোবাসি অন্ধকার-আলো।

আমি কান্ত-শ্রান্ত এক পথিক,

আমি যে পথের ধূলো।

এতটুকু বলেই আদনান চুপ করে থাকে। ওর দৃষ্টি তখন আকাশের নীলে। যেই নীলকে ভালোবাসতে বাসতে নীলমেয়ে সুমির মাঝে ওর ডুবে যাওয়া।

সুমির মুখেও নিরবতা। যে নিরবতা খুব বেশি রহস্যময়।

কিছুণ চুপ থেকে সুমি মুখ খুলে-

: আচ্ছা আদনান...!

এটুকু বলেই সুমি ওর লহীন দৃষ্টি আদনানের চোখে স্থীর করে। বলে-

: তুমি আমাকে সত্যিই কিছু বলবে, নাকি বলি বলি করেই সময় শেষ করে দিবে?

সুমির এই কথাটায় আদনান যেনো চমকে উঠে। ও হাতঘড়ির দিকে তাকায়, আধঘন্টার মধ্যেই হোটেলে ফিরতে হবে।

আদনান ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলে-

: না, না, বলবো। অবশ্যই বলবো...

সুমি ওর নীচের ঠোট কামড়াতে কামড়াতে হাসে। বলে-

: কখন বলবে?

: এখনই বলবো।

: তাহলে বলো।

আদনান একটু অন্যরকম হয়ে যায়। ওর অবস্থা দেখে মনে হয়- ও যেনো খুব বিপদে পড়েছে। আদনান কৌশলে সামলে নেয় নিজেকে। বলে-

: সুমি, কথাটা না বললেই কি নয়?

: তুমি না বললে আমি বুঝবো কিভাবে?

: না, মানে... না...

সুমি ইশারায় আদনানকে হাতঘড়ি দেখায়। আর চোখ-মুখ উজ্জ্বল করে হাসে। ওর হাসি দেখে মনে হয়, ও যেনো খুব ভালো করেই আদনানকে আটকে ফেলেছে ওর হৃদয় অলিন্দে।

সুমি আদনানকে জোর করতে থাকে। আদনান বলি বলি করে বলেনা...

এক সময় বাধ্য হয় আদনান। তবু বলেনা; লেখে। সৈকতের বালুময় ভূমিতে নখের আঁচড়ে লেখে।

আদনানের লেখা শেষ হওয়ার একটু আগে সুমি ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে-

: এই কথাটা মুখে বলা যায়না... সোনা!

সুমি আলতো করে আদনানের নাকে একটা টিপ দেয়...

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-২

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৪০

ফালতু মিয়া বলেছেন: কি কইবার চাইছি ছেমরিরে হেইডাই তো বুঝবার পারলাম না, একটু খুইল্যা কও দেহি।

২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ দুপুর ১:৪৭

সাইফ হাসনাত বলেছেন: আপনার কী মনে হয়?

৩| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:১৮

শফিকুল বলেছেন: সত্যই অনন্য ভাব প্রকাশ ।
চমৎকার রচনা।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:৩৪

সাইফ হাসনাত বলেছেন: সৌজন্যতা?

৪| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৪:০৩

জিয়াউল বলেছেন: ভাল লাগল কিন্তু বাকিটুকু কি পাব।

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:৩৬

সাইফ হাসনাত বলেছেন: দুঃখিত!
গল্পটি এখানেই শেষ।

প্রকাশিত হলে আমার অন্য গল্প পড়ার আমন্ত্রণ রইলো।

৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ২:৫৮

নিহন বলেছেন: ভালোবাসি

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৩:৩৯

সাইফ হাসনাত বলেছেন: হ্যাঁ, ভালোবাসি।
পাগলের মতো ভালোবাসি।
পাবার জন্য ভালোবাসি।
সারা জীবন বাসবো...

ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.