নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

প্রতিধ্বনি

প্রজন্মের হাত ধরে জাগরণের পথে

সজল বস

স্বপ্নদেখি যা কিছু সত্য ও সত্যকে আলিঙ্গন করে, তার শেষপ্রান্তে যাব।

সজল বস › বিস্তারিত পোস্টঃ

চিন্তা ও চিন্তার পদ্ধতি

১৩ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫৩

চিন্তা (فكر), বুদ্ধি (عقل), উপলব্ধি (ادراك) ইত্যাদি সব কিছু প্রায় একই অর্থবোধক। অর্থাৎ কোন বাস্তবতাকে যথা সম্ভব ব্যাখ্যা-বিশ্লেষন করার জন্য ইন্দ্রিয়গুলোর মধ্য দিয়ে তাকে মানুষের মস্তিষ্কে পাঠানো এবং পূর্ববর্তী অভিজ্ঞতা (previous information) ও জ্ঞানের সাথে তুলনা ও সমন্বয় করার যে প্রক্রিয়া মানুষের মধ্যে বিদ্যমান তাকেই বলা হয় ফিকর ( فكر ) বা চিন্তা। চিন্তা করার জন্য নিন্মোক্ত চারটি বিষয় বিদ্যমান থাকতে হয়।



(১) বাস্তব অবস্থা (A Reality)

(২) সুস্থ মস্তিষ্ক (A sane distinguishing mind)

(৩) ইন্দ্রিয়সমূহ (Senses) ও

(৪) পূর্ব অভিজ্ঞতা/জ্ঞান (Previous information)



বিবেক-বিবেচনা ভিত্তিক তথা বুদ্ধিবৃত্তিক পদ্ধতি (Rational Method)



এটি হচ্ছে এমন পদ্ধতি যার মাধ্যমে মানুষ চিন্তা-ভাবনা করে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে উপলব্ধিতে পৌঁছে। এ প্রক্রিয়ায় মানুষের মন তার স্বাভাবিক ক্ষমতা ব্যবহার করে চিন্তা সৃষ্টি করে। বস্তুত এটিই মানুষের চিন্তা করার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।



প্রকৃতপক্ষে বিবেক-বিবেচনা ভিত্তিক পদ্ধতি (Rational Method) হচ্ছে কোন বিবেচ্য বিষয় সম্পর্কে অবগতি লাভের জন্য একটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় চিন্তা-ভাবনার নাম। এই প্রক্রিয়ায় প্রথমে ইন্দ্রিয় সমূহের মাধ্যমে বাস্তবতা সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যাদি চিন্তাক্ষম মস্তিষ্কে নেয়া হয়;



অতঃপর মস্তিষ্কে ও স্মৃতি ভান্ডারে রক্ষিত পূর্বেকার তথ্যের সাথে বর্তমান তথ্যের তুলনা, যাচাই-বাছাই ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা হয়। অবশেষে মানব-মন বিবেচ্য বিষয় সম্পর্কে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছে। এই সিদ্ধান্ত বা রায়টিই হচ্ছে বুদ্ধি প্রসূত এই বিশেষ চিন্তা প্রক্রিয়াটি ভৌত বস্তু (যেমন পদার্থ বিদ্যা) সম্পর্কে গবেষণার ক্ষেত্রে যেমন ব্যবহৃত হতে পারে অপরদিকে শুধু মাত্র চিন্তা-ভাবনার বিষয় যেমন আকীদা, আইন ইত্যাদি আলোচনায় অথবা ফিক্‌হ শাস্ত্র, সাহিত্য ইত্যাদি বুঝার ক্ষেত্রে এটিই একমাত্র উপায়। কোন বিষয় সম্পর্কে উপলব্ধি লাভ করার ক্ষেত্রে এটি হচ্ছে মৌলিক এবং মানুষের একান্ত স্বভাবজাত পদ্ধতি। কেননা এটি হচ্ছে সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে মানুষ তার ভাবনা সমূহ এবং বস্তু সম্পর্কে তার জ্ঞানকে বুঝতে পারে। এটা মানুষের এক অনন্য ক্ষমতা যার মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে ধারনায় পৌঁছে।



বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি (Empirical or Scientific Method)



এটি হচ্ছে কোন কিছুর উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে ঐ জিনিষটির কিছু বাস্তব অবস্থা জানার পদ্ধতি। আর এই প্রক্রিয়া শুধু ভৌত বিষয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। চিন্তা বা মনের উপর এর কোন প্রয়োগ নেই। তাই এই প্রক্রিয়া শুধু পরীক্ষণযোগ্য বিষয়ের জন্য নির্দিষ্ট।



এই প্রক্রিয়াটি নির্ভর করে পরীক্ষাধীন বস্তুর উপর কিছু নতুন পরিবেশ ও অবস্থা আরোপ করার পর বস্তুর পরিবর্তিত অবস্থার সাথে প্রাথমিক তথা মূল অবস্থার তুলনামূলক বিচারের উপর। এই প্রক্রিয়ায় পরীক্ষণ শেষে ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ও পরিমাপযোগ্য কিছু ফলাফলে উপনীত হতে হয়। আর তা সাধারণত গবেষণাগারেই সম্পন্ন হয়ে থাকে। বৈজ্ঞানিক এই প্রক্রিয়ায় গবেষক যে ফলাফলে উপনীত হন তা কখনোই চুড়ান্ত (Absolute) নয় বরং সব সময়ই আপেক্ষিক। তাই এই ফলাফল সর্বদা ত্রুটিপূর্ণ অথবা ভুলের সম্ভাবনাযুক্ত। বস্তুত: ভুলের সম্ভাবনাকে সব সময় বিবেচনার মধ্যে রাখা বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় গবেষণার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নীতি।



আসলে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া বিবেক-বিবেচনা ভিত্তিক প্রক্রিয়ার একটি শাখা মাত্র। এটা কখনোই চিন্তার মৌলিক ভিত্তি নয়। এটাকে ভিত্তি হিসাবে নেয়া সম্ভব নয় কেননা এটা থেকে চিন্তা উৎসারিত হয়না বরং অনুভূতি-বুদ্ধি-বিবেচনা দ্বারা সৃষ্ট চিন্তাই এই প্রক্রিয়ার সূচনা করে, তাই এটি একটি উৎসের শাখা মাত্র। উপরন্ত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়াকে মূল উৎস হিসাবে ধরে নিলে বেশীর ভাগ তথ্য ও বাস্তব ঘটনা গবেষণার বাইরে থেকে যাবে এবং জ্ঞানের এমন অনেকগুলো শাখা বাদ পড়ে যাবে যেগুলো নিয়ে যথেষ্ঠ চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছে আর এগুলোর সত্যিকার বাস্তবতাও বিদ্যমান। অধিকন্তু এ সব বিষয়ের অস্তিত্ব সুস্পষ্ট এবং আমরা আমাদের অনুভূতি ও বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে এগুলোর অস্তিত্ব অনুভব করতে পারি।



বিবেক বিবেচনা ভিত্তিক পদ্ধতি, বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া ইত্যাদি কিছু অতি আলোচিত বাস্তব বিষয়। কিন্তু ইসলাম বিরোধী চিন্তাবিদদের অনেকে এ বিষয়গুলোকে অপব্যাখ্যা করে এবং ক্ষেত্র বিশেষে অপপ্রয়োগ করে ইসলামের মৌলিক আকীদা সম্পর্কে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া শুধু মাত্র সসীম বিষয়ের জন্য প্রয়োগযোগ্য হওয়া সত্বেও তারা অসীম স্রষ্টার অস্তিত্ব প্রমানের ক্ষেত্রে কেবলই এই প্রক্রিয়াকেই ব্যবহার করার কথা বলেছেন। যে প্রক্রিয়ায় যেকোন সুস্থ চিন্তাক্ষম মানুষ সহজেই স্রষ্টার অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে অর্থাৎ বিবেক-বিবেচনা ভিত্তিক পদ্ধতিটিকে তারা এক্ষেত্রে এড়িয়ে গেছেন। একারণেই বিষয়গুলোর মৌলিক দিক এখানে তুলে ধরা হলো।



মূলঃ Return of Islam

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৩৬

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: মহাবিশ্বের সৃষ্টি স্পেসের মধ্যে। স্পেস অসীম। স্পেসের মধ্যে যে পরিমাণ পদার্থ রয়েছে তা কিন্তু সসীম। পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পারলে মহাবিশ্বের চরিত্র সম্পর্কেও জানা যাবে।
পানি স্যাতসেতে পরিবেশে রাখলে সেখানে শ্যাওলা জন্মে। পানিরই রুপান্তির রুপ কিন্তু শ্যাওলা। শ্যাওলা ওপর থেকে নাজিল হয় না। অর্থাৎ পদার্থ তার চরিত্র অনুযায়ীই রুপান্তরিত হয়ে চলছে । সমস্ত পদার্থই শক্তি। এবং সর্বদা রুপান্তিরত হয়ে চলছে। অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে লোহায় মরিচীকা ধরছে। এই বিষয়গুলো আপনি নিশ্চয় অস্বীকার করতে পারবেন না।
এককোষী জীব থেকে বহু কোষী জীবের উদ্ভব, অ্যাডাম এবং ইভের নাটক থেকে অনেক বেশি যৌক্তিক।
একটা বাচ্চা জন্ম থেকে হামাগুরি দেয়। অর্থাৎ হামাগুরি দেওয়াটাই মানুষের জেনেটিক বৈশিষ্ট। হাটা শেখানো হয়। বা চারপাশে সবাইকে হাটতে দেখে একটা বাচ্চা হাটার চেষ্টা করে এবং শিখে ফেলে। কিন্তু কোনো মানুষের বাচ্চাকে যদি জঙ্গলে রাখা হয় , এবং সে বাচ্চাটি যদি চারপাশে কাওকে হাটা না দেখে তবে সে চার হাতপাও দিয়েই হাটবে। এবং একটা পর্যায়ে তার হাত পায়ের হাড় বাকা হয়ে যাবে। এবং হাটা শিখবে না।
অস্ট্রেলিয়ার জঙ্গলে কিছুদিন আগে এক মেয়ের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। মেয়েটা চার হাতপাও দিয়ে হাটতো।

২| ১৬ ই জুন, ২০১৩ বিকাল ৫:৫২

পরাজিত মধ্যবিত্তের একজন বলেছেন: অ্যাডাম এবং ইভ থেকে শুরু করে দুনিয়ার সব পৌরাণিক কাহিনীর যৌক্তিক ব্যাখ্যা আপনি কখনোই দিতে পারবেন না। ঈশ্বর আছে কি নাই সেটা নিয়েই বিতর্ক চলছে এখন। ঈশ্বর যদি থেকেই থাকে তবে তাকে কোন ধর্মের আন্ডারে গিয়ে মানবেন?
অসংখ্য গলদ রয়েছে । লাখ লাখ প্রশ্ন দারা বিভ্রান্ত হওয়া ছাড়া আপনার আর কিছুই করার থাকবে না। সৃষ্টিকর্তা এক অথচ তার সৃষ্টি জগত নানা ভাগে বিভক্ত। সবাই তাঁর ধর্মকে সত্য মনে করে।
আর এই জন্যই দুনিয়াতে সবচেয়ে বড় অশান্তির মূল হয়ে দাড়িয়েছে ধর্ম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.