নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"শৃঙ্খল যেখানে আবদ্ধ, মুক্তি সেখানে অসম্ভব\"

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ

ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই আমার ছাড়পত্র নিয়ে আমার আগমন

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এই দুনিয়া কি ২০৫০ সাল টিকবে এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ?

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৩০

আমি কয়েকদিন যাবত নেটফ্লিক্সের আওয়ার ব্লু প্ল্যানেট সিরিজটা দেখতেছি। খুব ছোট বেলায় যখন ন্যাশনাল জিওগ্রাফি দেখতাম তখন প্রাণীকুল কত সমৃদ্ধ ছিল সেইটা দেখাত। কিন্তু নেটফ্লিক্স এই সিরিজটাকে এমন ভাবে সাজাইছে যে আমি খুবই ভয় পেয়েছি। ডেভিড আয়্যাটনবগের ভরাট গলায় এখনকার প্রাণীকুলের বর্তমান অবস্থা দেখে আমি শিহরিত। চলেন প্রথমেই একটু ভয় পাই। ২০৩০ সালের জাকার্তা শহরটা পানির নিচে তলিয়ে যাবে। কেন জানেন? এই শতকের শুরুর দিকে ইন্দোনেশিয়াতে হুট করে খাবার পানির সঙ্কট দেখা দিল। ফলে সরকার বাধ্য হয়ে ইন্ডাস্ট্রি লেভেলে ভূগর্ভের পানি উঠানোর অনুমতি দিল। ফলে তৈরি হল একটা পানি শিল্প। কিন্তু ইন্দোনেশিয়ার মানুষজন এর ভয়াবহতা টের পাচ্ছে এখন। প্রচুর পরিমাণ পানি উঠানোর কারণে নিচে ফাকা জায়গা তৈরি হচ্ছে। নিজেদের তৈরি এই মৃত্যুকূপেই শহরটা প্রতিবছর ৫ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার করে ডেবে যাচ্ছে। সাধারণত একটা শহর সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১.৫ মিটার মত উপর থাকে, এইটা আমি এভারেজের চেয়েও বেশি বলছি। চিন্তা করেন প্রতি বছর ৫ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার করে যদি শহরটা ডেবে যায় তাহলে ৬ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে শহরটা সমুদ্র গর্ভে হারিয়ে যাবে। এইতো গেল তাত্ত্বিক কথা। কিন্তু বাস্তবে যা হচ্ছে তা আরও ভয়ংকর। ইন্দোনেশিয়ার সরকার উপকুলে বাধ দিয়েও বন্যা ঠেকাতে পারছে না। কেন জানেন? মাটি চুয়ে চুয়ে পানি উপরে উঠতেছে। ফলে লবনাক্ততা বাড়ছে, সুপেয় পানির অভাব বাড়ছে, ফলে আরও বেশি ইন্ডাস্ট্রি লেভেলে ভুগর্ভের পানি তুলতে হচ্ছে যা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করছে। তো আমি আমারা আর্কিটেক্ট এক ফ্রেন্ডের সাথে ব্যাপারটা আলোচনা করলাম। ও আমাকে যেইটা বলল এইজন্য ইন্দোনেশিয়ার আর্কিটেক্ট নিয়োগ দিচ্ছে যাতে পুরো জাকার্তা শহরের জন্য একটা আরবান প্লান করে। সব আর্কিটেক্ট একমত যে ওদের মাচার মত করে থাকতে হবে, ঠিক এই ধরণের একটা আরকিতেকচারাল ডিজাইন করে এই বছর দেশের প্রখ্যাত স্থপতি সাইফুল ইসলাম আগা খান এওয়ার্ড পাইছেন।
কয়দিন আগে আমাজন নিয়ে খুব কান্নাকাটি হল। আমাজন আসলে কি করে? সহজ কথায় এইখানে প্রচুর গাছ, এই গাছ বাষ্প আকারে পানি ছাড়ে, যেই কারণে শীতকালে প্রচুর পাতা ঝরে। এই পানি মেঘ তৈরি করে, যা বৃষ্টি আকারে ঝরে। শুধুমাত্র এই পানির জন্য পুরো দক্ষিণ আমেরিকা অপেক্ষা করে। কৃষি অর্থনীতি, মৎস্য শিল্প পুরোপুরি এই বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল। ফলে জলাভূমি তৈরি হয়, যেইখানে এসে ভিড় করে জাগুয়ার, ক্যাপিবারা। জাগুয়ার ক্যাপিবারা শিকার করে। বিশাল লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে বন মহিষ পানি খেতে আসে, সিংহও পানি খেতে আসে। তখন সিংহ বন মহিষ শিকার করে। এইভাবে জীব বৈচিত্র্য রক্ষা পায়। এখন আমাজনের গাছ কম হওয়ার কারণে মেঘ কম হচ্ছে, ফলে বৃষ্টি কম হচ্ছে। নদীপথ ছোট হওয়ার কারণে বন মহিষ আর সিংহ এক ঘাটে পানি খাচ্ছে, ফলে ঘন ঘন শিকারের কারণে বন মহিষ কমে যাচ্ছে। এখন সিংহ হয়ত খুব খাবার পাচ্ছে কিন্তু কিছুদিন বুঝবে মজা!
এইতো গেল ডাঙ্গায় কি হচ্ছে, এইবার সাগরে কি হচ্ছে একটু দেখি। যারা একটু আধটু কসমস নিয়ে পড়েন তারা জানেন এই প্ল্যানেটে প্রাণ তৈরি হইছে কোন মহাজগতিক উল্কার ধুলা থেকে এইরকম একটা মতবাদ আছে। ঠিক এই ব্যাপারটাই সাগরে হয়। স্থল থেকে ধুলা ঝড়ো হাওয়ায় সাগরে যেয়ে পরে, সেইখান থেকে তৈরি ফাইটপ্লাঙ্কটন। এইগুলো প্রচুর পরিমাণে খায় আয়ঞ্চাইওভস, যারা ঝাঁকে ঝাঁকে সমুদ্রে ঘুরে বেড়ায়। এই ঝাঁকের খোঁজে পুরো সাগর চষে বেড়ায় হোয়াল্পব্যাক তিমি। ওরা যখন এটাক করে উপর থেকে কিছু পাখি ওদের ধরার জন্য বসে থাকে। একবার বুঝতে পারছেন কি হবে বৃষ্টি কম হলে?
এইতো গেল জলের কথা। বৃষ্টি কম, পানি কম তাপমাত্রা বাড়বে। ফলে মেরুর বরফ গলবে। গলার কারণে কি হচ্ছে জানেন? ইউটিউবে অয়ারলুশ লিখে সার্চ দেন। বেচারা জলের প্রাণ, বাধ্য হয়ে স্থলে আশ্রয় নিতে যেয়ে উঁচু জায়গা থেকে পরে পরে মরতেছে। সমুদ্রের পানি কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে, কার্বনডাইঅক্সাইড বাড়ার কারণে পানির এসিডিটি বাড়ছে। সাগরের প্রাণীর তো সমস্যা হচ্ছেই কিন্তু সবচেয়ে বড় ঝামেলা হচ্ছে পুরো সাগরের কোরাল রীফ সাদা হয়ে যাচ্ছে।
এইবার আমাদের দেশে আসি। রোহিঙ্গাদের কুতুপালঙ্গে যে জায়গায় রাখা হইছে ওইটা হাতীর অভয়ারণ্য ছিল, সুন্দরবনে পাওয়ার প্লান্ট হচ্ছে। জাকার্তা ২০৩০ এ তলায়ে গেলে এই দেশের কি হবে জানেন? ছোট্ট একটা পরীক্ষা কইরেন, এক বালতি পানিতে একটা পাথরের টুকরো ফেলে দেন পানি যেভাবে উপচায়ে পরে ওইটাই এদেশের ভবিষ্যৎ।

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৩৫

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ধীরেধীরে এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে এগোচ্ছে পৃথিবী। চেইন রিয়াকশানের ন্যায় পরিবেশ বিপর্যয় ঘটছে।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১:৩৯

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: খুবই ভয়ঙ্কর অবস্থা পৃথিবীর। এই সভ্যতা খুব বেশিদিন টিকবে না।

২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ২:২৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


ওদেরকে জাকার্তা ছাড়তে হবে; বাংলাদেশে ভুগর্ভস্হ পানি তোলা বন্ধ করতে হবে, জলাধারে পানি ধরে রাখতে হব।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৪:০৯

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: ৩০ মিলিয়ন মানুষ কোথায় সরাবে একটা ভাবনার বিষয়।
আমাদের দেশের পরিবেশ নিয়ে কেউ ভাবে বলে মনে হয় না, এই দেশের মূল ইস্যু পলিটিক্স, আর ক্রিকেট। মানুষকে রাসটায় থু থু ফেলতে নিষেদ করলেই কত কথা শুনা লাগে। হ্যাঁ এইটা ঠিক এখনই চিন্তা করা উচিত না হলে আমরাই সবচেয়ে বেশি ভুগব

৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ২:২৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


২০৫০ সালে বিশ্বে ৯ বিলিয়ন মানুষ হবে, দরকার হবে অনেক বেশী খাবার ও পানি।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৪:১১

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: যা সংকটকে আরও তীব্রতর করবে। বাবা ডোনাল্ড ট্রাম্প আরেকবার ক্ষমটায় থাকলে সবার বেয়ার গ্রিলস হওয়া লাগবে।

৪| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:২৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: সূর্য একটি বিরাট ফ্যাক্টর। সূর্য যত দিন থাকবে মানুষ তত দিন টিকে থাকার সম্ভাবনা আছে। তবে মানুষকে আরো মানুষ হতে হবে।
সূর্য শেষ তো দুনিয়া শেষ। সেটাই কেয়ামত।

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ভোর ৫:৪৯

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: সূর্য পরিবেশের একটা উপাদান। যেমন সালোকসংশ্লেষণের জন্য একটা আদর্শ তাপমাত্রা আছে এর চেয়ে বেশি হলে বা কম হলে উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করতে পারে না। সবকিছুই একটা আরেকটার উপর নির্ভরশীল। মেঘ কম হলে সূর্যের আলো বেশি পৃথিবীতে পরবে ফলে উষ্ণতা বাড়বে। আবার সমুদ্রের পানি বেশি হলেও ঝামেলা কারণ পানি তাপ ধরে রাখে। আসল কথা হচ্ছে পরিবেশের সকল উপাদান গুরুত্বপূর্ণ, সূর্য এই পরিবেশের একটা অংশ।

৫| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: We all fall down

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:২০

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: হ্যাঁ কিন্তু এখন সময় আছে বিপদ আঁচ করে কাজ করার।

৬| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:১২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আল্লাহ ভরসা

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:২৯

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: আমরা যেই ক্ষতি করছি পরিবেশের তাতে আল্লাহ ভরসা ছাড়া কোন উপায় নাই। আল্লাহর কাছে দোয়া করা উচিত যাতে মানুষ হেদায়েত পায়, সহিহ বুঝ হয়।

৭| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝদান দিন আর হেদায়েত দিন

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৩

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: অবশ্যই

৮| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১২

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: হ্যাঁ কিন্তু এখন সময় আছে বিপদ আঁচ করে কাজ করার।

পৃথিবী আমাদের ক্ষমা করবে না। আমরা তিলে তিলে পৃথিবীর ক্ষতি সাধন করেই যাচ্ছি।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৫

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: হ্যাঁ। গ্রেটা থুনবারগের মত বলতে হয় "হাউ ডেয়ার ইউ?" এর ছাড়া আর কিছু বলার নাই।

৯| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১১:৪৩

বলেছেন: ভয়ঙ্কর

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৮

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: খুব সম্ভবত আমরা সিক্সথ ম্যাস এক্সটিঙ্কশনের দিকে যাচ্ছি। এখনি ব্যবস্থা না নিলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।

১০| ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:৪৮

আমি তুমি আমরা বলেছেন: এজন্যই ইন্দোনেশিয়া বাধ্য হয়ে তাদের রাজধানী জাকার্তা থেকে সরিয়ে নিচ্ছে।

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৯:৩৯

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: আমি যতদূর জানি ইন্দোনেশিয়া এখন জায়গা খুজতেছে, কোথায় সরাবে?

১১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ১০:২৮

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: চলুন মঙ্গলে যাই B-)

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:২৯

সাকিবুল ইসলাম সাজ্জাদ বলেছেন: আসেন তাইলে এলন মাস্ক কে ব্লগে আমন্ত্রণ জানাই। ব্লগারদের মঙ্গলে ফ্রিতে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.