নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শুধু দেশের জন্য

জীবন অতি সংক্ষিপ্ত

গ. ম. ছাকলাইন

আমি একজন সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ

গ. ম. ছাকলাইন › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে সামনাসামনি ওটাই আমার প্রথম দেখা\'

৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ১২:৩৯





'অনেক ঝুঁকি নিয়ে, বিপদ এড়িয়ে অবশেষে একদিন আমি পৌঁছে গেলাম মুজিবনগর। প্রবেশনার হিসেবে যোগ দিলাম প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র বিভাগে। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় সেখানেই নিয়োজিত ছিলাম।'

বাংলাদেশের সাবেক একজন কূটনীতিকের সাথে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের তিনবার সাক্ষাত হয়। যা সেই কূটনীতিক নিজের ভাষায় বর্ননা করেছেন এভাবে-

জন্ম ও শৈশব

জিয়াউর রহমানের জন্ম ১৯ জানুয়ারী ১৯৩৬ সালে বগুড়ার বাগবাড়ীতে। তার বাবা মনসুর রহমান একজন রসায়নবিদ হিসেবে কলকাতাতে সরকারী চাকুরী করতেন। তার শৈশবের কিছুকাল বগুড়ার গ্রামে ও কিছুকাল কলকাতাতে কেটেছে। দেশবিভাগের পর (১৯৪৭) তার বাবা করাচি চলে যান। তখন জিয়া কলকাতার হেয়ার স্কুল ত্যাগ করেন এবং করাচি একাডেমী স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫৩ সালে তিনি ঐ স্কুল থেকে তার মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন এবং তারপর করাচিতে ডি.জে. কলেজে ভর্তি হন।


ছবি- শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার।

শহীদ জিয়াউর রহমান যখন প্রেসিডেন্ট, তখন আমার পোস্টিং ছিল বিদেশে। প্রথমে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে, পরে ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসে। বিদেশে থাকা অবস্থাতেই তার সাথে তিনবার সাক্ষাতের সৌভাগ্য আমার হয়। প্রথম সাক্ষাৎটি হয় ১৯৭৭ সালে, লন্ডলে। তিনি সেবার কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের সম্মেলনে যোগ দিতে লন্ডন এসেছিলেন। দ্বিতীয় সাক্ষাৎও লন্ডনে, ১৯৭৯ সালে, হাভানায় জোটনিরপেক্ষ শীর্ষ সম্মেলনে যাওয়ার পথে লন্ডনে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতিকালে। শেষবার তার দেখা পাই ১৯৮০ সালে বেলগ্রেডে। যুগোস্লাভিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট টিটোর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরুর পর শহীদ জিয়াউর রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কথা শুধু বাংলাদেশীরা নয়, বরং বিশ্বের সব স্বাধীনতাপ্রিয় মানুষই সর্বদা স্মরণ করবে। আমার স্মৃতিতে এখনো ভাস্বর হয়ে আছে সেসব মুহূর্তের কথা, যখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নিরস্ত্র, নিরপরাধ ও বেসামরিক মানুষের ওপর নিষ্ঠুরভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানি সেনারা আর গোটা জাতি অপেক্ষা করছিল যথোপযুক্ত নির্দেশনার।

সেই দিশেহারা মুহূর্তে ইথারে ভেসে আসে মেজর জিয়ার কণ্ঠস্বর। চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর একটি রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার জিয়া সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের স্থাপিত একটি অস্থায়ী বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণা গোটা জাতিকে উজ্জীবিত করে। মাতৃভূমিকে স্বাধীন করার চেতনায় তারা নতুনভাবে উদ্দীপ্ত হয়।

মার্চের ঝোড়ো দিনগুলোতে আমি সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিসের (সিএসএস) মৌখিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলাম। কিন্তু ২৫ মার্চের নারকীয় হত্যাযজ্ঞ দেখে এবং মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে আমি তাৎক্ষণিকভাবে মনস্থির করে ফেললাম, পাকিস্তান সরকারের চাকরি আমি কখনোই করব না, বরং মুক্তিযুদ্ধে চলে যাবো। তাতে যদি জীবনও যায় তো যাক।

প্রথম সান্নিধ্য

অনেক ঝুঁকি নিয়ে, বিপদ এড়িয়ে অবশেষে একদিন আমি পৌঁছে গেলাম মুজিবনগর। প্রবেশনার হিসেবে যোগ দিলাম প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র বিভাগে। মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় সেখানেই নিয়োজিত ছিলাম। শহীদ জিয়া ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের ‘জেড’ ফোর্সের কমান্ডিং অফিসার। কিন্তু এ সময় তার সাক্ষাৎ লাভের সুযোগ আমার হয়নি। তার সাথে আমার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয় ১৯৭৭ সালে লন্ডনে। সেবার তিনি কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানদের সম্মেলনে যোগ দিতে লন্ডনে এসেছিলেন। আমি ছিলাম লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের দ্বিতীয় সচিব ও হেড অব চ্যানসারি। ওই সময় হাইকমিশনার ছিলেন এ এফ এম আবদুল ফাতেহ। এ ছাড়া ছিলেন আবুল আহসান (ডেপুটি হাইকমিশনার), ইনাম আহমেদ চৌধুরী (ইকনোমিক মিনিস্টার), মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী (মিনিস্টার কনসুলার) ও এম আর ওসমানী (পলিটিক্যাল কাউন্সিলর)।

প্রেসিডেন্ট আসছেন তাই প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি ও ব্যবস্থা নেয়া হলো। প্রেসিডেন্টের থাকার ব্যবস্থা হলো শেরাটন হোটেলে। হোটেলটি হাইকমিশনের কাছেই; ২৮ কুইন্স গেট, লন্ডন এসডাব্লিউ-৭ এলাকায়। প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গীদের মধ্যে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রফেসর শামস-উল হক, পররাষ্ট্র সচিব তোবারক হোসেন, প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার মেজর জেনালে নুরুল ইসলাম, ডাইরেক্টর জেনারেল এম মহসিন ও প্রাইভেট সেক্রেটারি কর্নেল অলি আহমদ।

প্রেসিডেন্ট ও তার সফরসঙ্গীরা এলেন বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে। এয়ারপোর্টে হাইকমিশনার তাকে অভ্যর্থনা জানালেন। সাথে আমরা হাইকমিশনের অন্যরা প্রায় সবাই ছিলাম। ব্রিটেনের ফরেইন অফিস, কমনওয়েলথ অফিস ও কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট থেকেও কর্মকর্তারা এসেছিলেন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানাতে।

সত্যি বলতে কী, প্রেসিডেন্টের আগমনের দিন গুনছিলাম আমি। ভাবছিলাম, প্রেসিডেন্টকে খুব কাছে থেকে দেখার বিরল একটি সুযোগ এটা। এয়ারপোর্ট অভ্যর্থনার আনুষ্ঠানিকতা শেষে আমরা তাকে নিয়ে যাই অ্যালকক অ্যান্ড ব্রাউন ভিআইপি লাউঞ্জে। সেখানে চা-নাশতা পরিবেশন করা হয়। আমাদের সবাইকে প্রেসিডেন্টের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন হাইকমিশনার। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে সামনাসামনি ওটাই আমার প্রথম দেখা। দেখলাম, তার পরনে ধূসর রঙের সুট, চোখে সেই চিরসেনা সানগ্লাস। শুরুতে প্রেসিডেন্ট ছিলেন খানিকটা রিজার্ভড। কিন্তু ওই দূরত্ব কাটতে সময় লাগল না। অল্পক্ষণের মধ্যেই খোলামেলা আলাপে পরিবেশ প্রাণবন্ত হয়ে উঠল। প্রেসিডেন্টের সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণে মুগ্ধ হলাম আমি। তিনি কথা বলছিলেন মৃদুস্বরে এবং আমাদের সম্মান রেখে ও সৌজন্যবোধের সাথে। দু-একটি বিরল ব্যতিক্রম বাদ দিলে এখন রাজনীতিকদের মধ্যে এমন আচরণ দেখাই যায় না। এয়ারপোর্ট থেকে আমরা প্রেসিডেন্ট ও তার সফরসঙ্গীদের হোটেলে পৌঁছে দিলাম। সেদিন সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট জিয়া ও তার সিনিয়র সফরসঙ্গীরা হাইকমিশন পরিদর্শনে এলেন। প্রেসিডেন্ট হাইকমিশনের সবার সাথেই কুশল বিনিময় করলেন, এমনকি সাধারণ কর্মচারীদের সাথেও। এ সময় সাংবাদিকদের সাথে ছিলেন আনোয়ার হোসেন মঞ্জুও (এখন ইত্তেফাক সম্পাদক)। প্রেসিডেন্ট জিয়া তার (মঞ্জু) সাথে হাত মেলানোর সময় বললেন, ‘হাইকমিশনে কবে যোগ দিচ্ছেন?’

প্রেসিডেন্টের এ কথায় একটু যেন অপ্রতিভ হলেন মঞ্জু। কিন্তু মুহূর্ত মাত্র। তার পরই সবার কলহাস্যে সব ভেসে গেল। পরিবেশ আবার উচ্ছ্বল ও প্রাণবন্ত হয়ে উঠল।

প্রেসিডেন্ট জিয়া হাইকমিমনে বেশ কিছু সময় ছিলেন। এ সময় তিনি প্রত্যেককে তার সাথে কথা বলা ও মতবিনিময় করার সুযোগ দিয়েছিলেন। তিনি লন্ডনে বেশ ক’জন বাংলাদেশী তরুণ পেশাজীবীকেও সাক্ষাৎ দেন। তাদের দেশে ফিরে জাতি গঠনে আত্মনিয়োগ করতে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেন। তিনি তাদের কাছে তার সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা ও কর্মসূচির কথা এবং একটি সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে তার ভবিষ্যৎ লক্ষ্য তুলে ধরেন। এ ব্যাপারে আরো কথা বলতে তিনি তাদের বলেন, যেন তারা তার দলের (বিএনপি) মহাসচিব প্রফেসর বি. চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ রাখেন। প্রেসিডেন্ট জিয়া এ সময় জানান যে, তিনি শিগগিরই বি. চৌধুরীকে লন্ডন পাঠাবেন।

কয়েক মাস পর নিউ ইয়র্ক যাওয়ার পথে লন্ডন আসেন বি. চৌধুরী। তিনি তরুণ বাংলাদেশী পেশাজীবীদের সাথে ফলোআপ ডিসকাশনে মিলিত হন। এ সময় তিনি তাদের কয়েকজনকে দেশে ফিরে বিএনপিতে যোগ দিতে রাজি করাতে সক্ষম হন। তাদের মধ্যে ছিলেন ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া।

প্রেসিডেন্ট জিয়ার ওই সফরকালে একটি ঘটনায় তার সাহস ও আত্মবিশ্বাস দেখে আমি অভিভূত হই।

ঘটনাটি ছিল এ রকম

একদিন দিনের কর্মসূচি শেষে প্রেসিডেন্টের গড়িবহর হোটেলে ফিরছিল। এ সময় তার নজরে আসে রাস্তার অপর পাড়ে প্ল্যাকার্ড হাতে একদল বাংলাদেশী স্লোগান দিচ্ছে। নিরাপত্তাতকর্মীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই প্রেসিডেন্ট জিয়া তার গাড়ি থেকে নেমে পড়লেন। হেঁটে চলে গেলেন বিক্ষোভকারীদের কাছে এবং তাদের সাথে কথা বলতে শুরু করলেন। তিনি তাদের কাছে বিক্ষোভের কারণ এবং তাদের সমস্যা সমাধানে তার কিছু করার আছে কিনা জানতে চাইলেন। তিনি তাদের কথা বলার জন্য হোটেলে আসারও আমন্ত্রণ জানালেন। প্রেসিডেন্ট জিয়া তাদের একেবারে সামনে চলে আসবেন, এমনটা কল্পনায়ও ছিল না বিক্ষোভকারীদের। প্রেসিডেন্টের সাহসী তৎপরতায় তারা হতভম্ব হয়ে গেল।

প্রসঙ্গক্রমে আমি আরো একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করতে চাই। ঘটনাটি ব্রিটিশ রাজকীয় প্রটোকল নিয়ে। কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে আগত রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানদের সম্মানে বাকিংহাম প্রাসাদে ভোজসভার আয়োজন করেছিলেন রাণী। ড্রেস কোড : ফর্মাল। অর্থাৎ সবাইকে কালো সুট ও বো টাই পরে যেতে হবে। মেজর জেনারেল (তখন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) মইনুল হোসেন চৌধুরী বিষয়টি জানালেন প্রেসিডেন্টকে। শোনামাত্র প্রেসিডেন্ট জিয়া ড্রেস কোডের বিষয়টি নাকচ করে দিলেন।

আমার এখনো মনে আছে, প্রেসিডেন্ট জিয়া স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, আমরা কমনওয়েলথে আছি স্বইচ্ছায়, বাধ্য হয়ে নয়।
এই একটি মাত্র কথার মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়ার প্রখর জাতীয়তাবাদী মনোভাবটি পরিস্ফুট হয়ে উঠেছিল। ‘কী হয়’ ভেবে সবাই উদ্বিগ্ন ছিলাম। বিষয়টি ফরেইন অ্যান্ড কমনওয়েলথ অফিসকে জানিয়ে দেয়া হয়। এক দিন পর তারা আমাদের জানান যে, তারা আমাদের প্রেসিডেন্টের এ মনোভাবের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধাশীল। সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানেরা সাধারণ সুট বা জাতীয় পোশাক পরেই রাণীর ভোজসভায় আসতে পারবেন। আমরা সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম।

দ্বিতীয় সান্নিধ্য

১৯৭৯ সালের শেষ দিকের কথা। জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের (ন্যাম) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যাচ্ছিলেন কিউবার রাজধানী হাভানায়। পথে লন্ডনে সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি করবেন। ওই সময় ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে প্রলঙ্করী ঘূর্ণিঝড় (হারিকেন) এন্ড্রু আসি-আসি করছিল। ফলে প্রেসিডেন্টের সংক্ষিপ্ত যাত্রাবিরতি আর সংক্ষিপ্ত থাকল না, প্রলম্বিত হলো। সেবার তার সাথে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শামস-উল হক, পররাষ্ট্র সচিব এস এ এম এস কিবরিয়া (পরে আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, এখন প্রয়াত), চিফ অফ প্রটোকল এম আর ওসমানী প্রমুখ। প্রেসিডেন্ট জিয়া ও তার সফরসঙ্গীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছিল হিথরো এয়ারপোর্টের কাছেই একটি হোটেলে, যাতে তারা খুব ভোরেই হাভানা রওনা হতে পারেন। কিন্তু আগেই বলেছি, বাদ সাধল ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের আবহাওয়া। তাদের যাত্রা বিলম্বিত হলো। এ অবস্থায় নবনিযুক্ত হাইকমিশনার এ আর এস দোহা (পরে এরশাদ সরকারের মন্ত্রী) প্রেসিডেন্টের সম্মানে ওই হোটেলেই এক নৈশভোজের আয়োজন করলেন। অন্যদের সাথে হাইকমিশনের সব অফিসারও নৈশভোজে আমন্ত্রিত ছিলেন। সেখানে প্রেসিডেন্ট জিয়াকে দেখলাম বেশ খোশমেজাজে। তিনি আমাদের সবার সাথে নানা বিষয়ে মতবিনিময় করলেন। আমাদের জানালেন বিভিন্ন সেক্টরে তার সরকার কী কী কর্মসূচি ও ব্যবস্থা নিয়েছে, বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পল্লী উন্নয়ন সেক্টরে। আমাদের তার সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক লক্ষ্য সন্বন্ধেও জানালেন। বললেন, তিনি চান দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরো জোরদার করে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটাতে এবং এর মাধ্যমে গোটা অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে।

প্রেসিডেন্ট জিয়ার কথা শুনে নিজের দেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমাদের আশাবাদ শতগুণ বেড়ে গেল। কথা বলার ফাঁকে প্রেসিডেন্ট হাসতে হাসতে কিবরিয়াকে দেখিয়ে বললেন, আপনাদের ফরেইন সেক্রেটারি চেইন স্মোকার ছিলেন। এখন ধূমপানই ছেড়ে দিয়েছেন। তাহলে দেখুন, কেউ সত্যি সত্যি চাইলে নিজের ও দেশের আলোর জন্য কাজ করতে পারেন। ভালো কিছু করার সিদ্ধান্ত নেয়া এবং কাজটা করাই আসল কথা।

প্রেসিডেন্টের যাত্রাবিরতিটি ছিল সংক্ষিপ্ত। কিন্তু এই সংক্ষিপ্ত সময়টাকেও তিনি কাজে লাগাতে চাইলেন। সিদ্ধান্ত নিলেন, বিশ্রাম নয়, বরং এ সময়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাথে বৈঠক করবেন। এ সময় প্রেসিডেন্টের সাথে যারা বৈঠক করেন তাদের মধ্যে ছিলেন বার্মিংহামের তাজাম্মুল হক (পরে এরশাদের শাসনামলে প্যারিসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত), লন্ডনের বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা: গিয়াসউদ্দিন মিয়া ও বেশ কিছু তরুণ বাংলাদেশী পেশাজীবী।

একের পর এক বৈঠকে রাত গভীর হচ্ছিল। আমরা ভাবতে থাকলামÑ এই তো, এবারের মিটিংটা শেষ হলেই হলো। প্রেসিডেন্ট ঘুমাতে গেলেই আমরা বাসায় ফিরব, আগামীকাল ভোরে ভোরে চলে আসব। কিন্তু কিসের কী। মিটিং পর্ব যখন শেষ, লন্ডনে তখন ভোর ৩টা। আমরা ভাবলাম, এবার তো শেষ হলো। কিন্তু আমাদের সবাইকে চমকে দিয়ে প্রেসিডেন্ট ইচ্ছা প্রকাশ করলেন এবার তিনি হাইকমিশন পরিদর্শনে যাবেন। কী আর করা, আমরা দ্রুত একটি অ্যাডভান্স টিম পাঠালাম হাইকমিশনে, প্রেসিডেন্টের পরিদর্শনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে। হোটেল থেকে হাইকমিশন এক ঘণ্টার পথ। প্রেসিডেন্ট জিয়া ভোর ৪টায় হাইকমিশনে পৌঁছলেন, পরিদর্শন শেষে ভিজিটরস বুকে স্বাক্ষর দিলেন এবং ভোর ৬টায় হোটেলে ফিরে গেলেন। হোটেলে ফিরেই তিনি আমাদের আমন্ত্রণ জানালেন সকাল ৭টায় তার সাথে নাশতা করার।

নাশতার টেবিলে প্রেসিডেন্ট জিয়াকে দেখে আমাদের বিস্ময়ের সীমা রইল না, কী তরতাজা। দীর্ঘ রাত জাগরণের ক্লান্তির চিহ্নমাত্র নেই তার চেহারায়।

এদিকে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের আবহাওয়াও ধীরে ধীরে ভালো হয়ে আসছিল। ফলে ওই দিন দুপুরেই হাভানার উদ্দেশে লন্ডন ছাড়লেন প্রেসিডেন্ট জিয়া ও তার সফরসঙ্গীরা।

তৃতীয় সান্নিধ্য

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সাথে আমার তৃতীয় ও শেষ দেখা ১৯৮০ সালের মে মাসে, বেলগ্রেডে। যুগোস্লাভিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট টিটোর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দিতে প্রেসিডেন্ট জিয়া বেলগ্রেড এসেছিলেন। আমাকে তখন লন্ডন থেকে বদলি করা হয়েছিল ইয়াঙ্গুনে। বেলগ্রেডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ফখরুদ্দীন আহমদ ও তার মিসেস আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ইয়াঙ্গুনে যোগদানের আগে ক’টা দিন যেন আমি তাদের সাথে কাটাই। এখানে বলে রাকি, রাষ্ট্রদূত ফখরুদ্দীন ও তার মিসেসই ছিলেন আমাদের বিয়ের ঘটক। আমি ও আমার স্ত্রী জুয়েনাকে তারা অত্যন্ত স্নেহ করতেন। দু’জনের কেউই আর এ পৃথিবীতে নেই, কিন্তু আমাদের মনের গভীরে তারা আছেন।

বেলগ্রেডে বাংলাদেশ দূতাবাসটি ছিল ছোট। রাষ্ট্রদূত ছাড়া ওখানে ছিলেন ফার্স্ট সেক্রেটারি কাজী নজরুল ইসলাম (মুক্তিযুদ্ধকালে মুজিবনগরে আমরা একসাথে কাজ করেছি। ফলে তার সাথেও আমার সম্পর্ক ছিল গভীর)। কিন্তু মাত্র এই দু’জনের পক্ষে প্রেসিডেন্টের সফর সামাল দেয়া ছিল আসলেই কঠিন। প্রেসিডেন্ট জিয়ার বেলগ্রেড সফর যখন চূড়ান্ত হলো, রাষ্ট্রদূত ফখরুদ্দীন আহমদ আমাকে বললেন, পররাষ্ট্র সচিবের সাথে তার (ফখরুদ্দীন) আলাপ হয়েছে, প্রেসিডেন্টের সফরকালে আমি অফিসিয়ালি অন ডিউটিতে থাকব। এভাবে আমাকে ছুটি কাটানোর কথা ভুলে গিয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়ার সফরের সাথে জড়িয়ে পড়তে হলো।

প্রেসিডেন্ট জিয়ার সফরটি ছিল চার দিনের। কিন্তু মার্শাল টিটোর শেষকৃত্য অনুষ্ঠান এবং একটি কী দু’টি সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়া সফরটি ছিল ঢিলেঢালা। অন্যান্য বারের মতো সেবারও তার সফরসঙ্গী দলটি ছিল ছোটÑ পররাষ্ট্রমন্ত্রী শামস-উল হক, চিফ অফ প্রটোকল খায়রুল আনাম, প্রেসিডেন্টের মিলিটারি সেক্রেটারি মেজর জেনারেল সাদেকুর রহমান চৌধুরী, কয়েকজন সাংবাদিক ও তার সিকিউরিটি টিম। লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার নিযুক্ত হওয়ার আগে বেলগ্রেডে রাষ্ট্রদূত ছিলেন এ আর এস দোহা। তাই তাকেও প্রেসিডেন্টের সফরসঙ্গী দলে থাকতে বলা হয়েছিল।

সেবারই প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে খুব কাছে থেকে দেখার এবং ভালোভাবে জানার সুযোগ পাই আমি। যে হোটেলে প্রেসিডেন্টের থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল, সেটি ছিল ড্যানিয়ুব নদীর তীরে। তার রুমে বসেই নদীটির শোভা উপভোগ করা যেত। সেবার তার কাছে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অনেক ঘটনার কথা শুনি, যা আমার জীবনে একটা বড় অভিজ্ঞতা। তবে নিজেকে আমার সবচেয়ে ভাগ্যবান মনে হয় এ কারণে যে, জিয়াউর হরমানের নিজের মুখ থেকে তার স্বাধীনতা ঘোষণার বিষয়টি আমি শুনেছি।

ওই দিন সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্টের সম্মানে নিজের বাসভবনে এক নৈশভোজের আয়োজন করেন রাষ্ট্রদূত ফখরুদ্দীন ও মিসেস ফখরুদ্দীন। সেই সন্ধ্যায় আমরা অন্য এক জিয়াউর রহমানকে দেখি যিনি প্রাণবন্ত, রসিক ও স্নেহময় একজন মানুষ।

তিনি রাষ্ট্রদূতের পুরো বাড়িটি ঘুরলেন। গভীর আগ্রহ নিয়ে দেখলেন কিছু ডেকোরেটিভ আইটেম। বাংলাদেশের কয়েকজন বিখ্যাত শিল্পীর চিত্রকর্ম দেখে তার প্রশংসা করলেন। ভবিষ্যতের বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে মহিলাদের পূর্ণ ভূমিকা পালন করতে দেয়ার ব্যাপারে ভোজসভায় আগত মহিলাদের সাথে খোলামেলা আলাপ করলেন। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নারীদের অংশগ্রহণ এবং বাংলাদেশের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন বিষয়ে প্রেসিডেন্ট জিয়ার প্রাগ্রসর দৃষ্টিভঙ্গি দেখে আমার স্ত্রী মুগ্ধ হলেন।

যুগোস্লাভ সরকারের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট, তার সফরসঙ্গী দল ও আমাদের সবাইকে কিছু টুরিস্ট স্পট দেখাতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এক রেস্টুরেন্টে বসে আমরা দুপুরের খাবার খাচ্ছিলাম। ওখান থেকেই দূরে পাহাড় ও নদী দেখা যাচ্ছিল। হঠাৎ আমরা প্রেসিডেন্টের গলা শুনতে পেলাম : এবার কিছু জোকস শোনা যাক।

তিনি প্রত্যেককে কমপক্ষে একটি করে হলেও জোক বলতে বললেন। তার এ কথায় অনেকেই বিশেষ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রফেসর শামস-উল হক মহাবিপাকে পড়ে গেলেন। তবে পরিস্থিতি সামাল দিলেন মি. দোহা। তিনি একের পর এক জোক বলে যেতে থাকলেন আর চার দিকে হাসির রোল পড়ে গেল। নাসিরউদ্দিন হোজ্জার গল্পগুলো শুনে স্বয়ং প্রেসিডেন্ট জিয়া বেশ মজা পেলেন। মি. দোহা এমনিতেই প্রেসিডেন্টের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, এবার তিনি চলে এলেন লাইমলাইটে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী শামস-উল হক পরে আমাদের বলেন, গত আড়াই বছরে তিনি প্রেসিডেন্টকে কাজ ছাড়া আর কিছু করতে দেখেননি। এই প্রথম প্রেসিডেন্টকে ছুটির মেজাজে দেখলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সে সময় কে জানত চট্টগ্রামে নিহত হওয়ার মাত্র এক বছর আগে এটাই ছিল তার শেষ কাজবিহীন অবকাশ যাপন!

শহীদ জিয়ার মত কোন রাষ্ট্রপ্রাধান যদি বাংলাদেশ আবার ফিরে পেত তবে বাংলাদেশে ফিরে আসত শান্তি আর সাধারন মানুষ পেত তার মানবাধিকার। শহীদ জিয়া আর কোনদিন ফিরে আসবেনা এটা বাস্তব সত্য। কিন্তু শহীদ জিয়ার বিকল্প হতে পারে তার পরিবার। শহীদ জিয়ার পুত্র তারেক রহমান।

শহীদ জিয়া সম্পর্কে বিদেশী পত্রিকার কিছু লেখা-







জাতিসংঘে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাষন-


তথ্যসূত্র:Click Here
শহীদ জিয়া সম্পর্কে কিছু লেখা-
জিয়ার শাহাদাতের পর সুরঞ্জিত সেন সেদিন সংসদে যা বলেছিলেন
কেমন ছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান
স্বাধীন বাংলার রূপকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, একটি নাম একটি ইতিহাস
শহীদ জিয়া আধুনিক বাংলার রূপকার
জিয়াকে জানতে স্মৃতি জাদুঘরে প্রতিদিন
জিয়া ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন
আমি মেজর জিয়া বলছি

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ১:৩৬

রেফায়েত প্রধান বলেছেন: আল্লাহ পাক যেন শহীদ জিয়াউর রহমানের জীবনের গুনা-খাতা মাফ করে দিয়ে তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করপন।আমিন,,

৩০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:২৫

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: আমিন। শহীদ জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারই একমাত্র বাংলাদেশের জন্য কল্যানকর।

২| ৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ২:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


জিয়া বুদ্ধিমান ছিলেন সৈনিক হিসেবে; সেখানে তিনি উজ্বল ছিলেন; পশ্চিমের দুস্টদের তালে পরে জাতিকে করেছেন বিভ্রান্ত, নিজে প্রাণ হারিয়েছেন, সৃস্টি করে গেছেন ফালু, মালু, আব্্বাস, গিয়াস, কোকো, খোকা, আর চোর ডাকাতে ভরা ব্যুরোক্রেট ।

সঠিক শাস্টি উনি পাননি, আরো শাস্তি আসবে।

৩০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩৭

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: গাজী ভাই, আপনি আসলে একটি বিশেষ দলের পক্ষে লিখে থাকেন! তাই আপনাদের চোখে অন্যদের ভাল চোখে পড়েনা। জিয়াউর রহমান ছিলেন বিশ্ব নেতা এটা আপনাদের মানতে কষ্ট হয় কিন্তু এটাই সত্য এবং দেশের মানুষ এটা বিশ্বাস করে। দেশের মানুষ জিয়াউর রহমানকে পছন্দ করে বলেই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন পাচ্ছেনা!

জিয়া বিশ্ব নেতা-জিমি কার্টার-http://www.ghoshona26march.com/?p=293

৩| ৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ২:০৩

রঙতুলি বলেছেন: আল্লাহ পাক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জীবনের গুনা-খাতা মাফ করে দিয়ে তাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন ।

৩০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:৩৯

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: আমিন। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মত রাষ্ট্রনায়ক বাংলাদেশে আবার আসুক।

৪| ৩০ শে মে, ২০১৫ ভোর ৪:২৫

ভয়ংকর বিশু বলেছেন: জিয়া হত্যার বিচার চাই, খালেদা জিয়া নিরব কেনো?

৩০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪০

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: আমিও জিয়া হত্যার বিচার চাই।

৫| ৩০ শে মে, ২০১৫ ভোর ৪:২৭

ভয়ংকর বিশু বলেছেন: জিয়া, তারেক, ফালু, পিন্টু, কোকো ---- এগুলা দেশের সম্পদ।

৩০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪১

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: তারা সম্পদ বলেই দেশের মানুষ তাদেরকে ভালবাসে।

৬| ৩০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১০:৪৭

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
ভয়ংকর বিশু বলেছেন: জিয়া হত্যার বিচার চাই, খালেদা জিয়া নিরব কেনো?

খালেদা জিয়া নিরব কেনো? সে কথাতো আমাদেরও।
উনি দু'বার ক্ষমতায় ছিলেন তখন বিচার চাইলো না কেন ???

কোন ব্লগার এ সমন্ধে লিখলে কৃতজ্ঞ হবো।

৩০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:২৬

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: বিচার চাওয়ার ব্যাপারে একমত। কিন্তু ভাই বিচার করার জন্য যদি ক্ষমতায় থাকতে হয় তাহলে আপনার আমার মত সাধারন মানুষ কোথায় যাবে? সাধারন মানুষতো আর ক্ষমতায় যাবে না তাহলেকি তারা কোনদিন সুষ্ঠু বিচার পাবেনা? চেষ্টা করব এবিষয়ে লেখার জন্য। ধন্যবাদ

৭| ৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:০২

ভয়ংকর বিশু বলেছেন: এই লেখক বিএনপির দালাল। একে পিটাতে মন চায়।

৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৪৫

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: ব্লগে যুক্তি দিয়ে উত্তর দিতে হয় গায়ের জোর দিয়ে নয়। গায়ের জোর দিয়ে আর যাই হোক সত্য প্রতিষ্ঠিত হয় না।

৮| ৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ৯:০৬

ওয়াছেকুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন: প্রেসিডেন্ট জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের মানুষের প্রাণপ্রিয় প্রেসিডেন্ট। তার মৃতু্্যতে মানুষের আহাজারি তাই প্রমাণ করে। আপনার লিখা পড়ে জিয়ার কিছু ঘটনা জেনে খুবই ভাল লাগলো। যা এই পোষ্ট না পড়লে কিছুই জানা হত না। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে। দোয়া করি আল্লাহ এই মহান নেতাকে জান্নাত দান করুন।

৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ১০:৫২

গ. ম. ছাকলাইন বলেছেন: আমিন।
ভাল থাকবেন।

৯| ৩০ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:০৫

তপ্ত সীসা বলেছেন: কিছু অন্যরকম ঘটনা জানলাম। সবকিছুর মুলে হইলো মুজিব। স্বাধীনতার পরের সময়টা ভালোভাবে সামলাইতে পারলে দেশের এই দুর্দিন আসতোনা, আর জিয়ারেও সামনে আসা লাগতোনা।

১০| ৩১ শে মে, ২০১৫ রাত ১:৪১

প্রভাষ প্রদৌত বলেছেন: একজন সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা যদি কখনো স্বাধীনতা ঘোষণা করে তবে সেটা হয় সামরিক বিদ্রোহ , যেটা মুক্তিযুদ্ধ বা স্বাধীনতা যুদ্ধ কখনোই স্বীকৃতি পাবে না,

পাকিস্তান ১৯৭১ সাল থেকেই দাবি করে আসছে , আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ভারতের ষড়যন্ত্রের ফল , ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর মত দেশদ্রোহীরা পাকিস্তান ভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করছিল , তাদের সাইজ করে দেশের ম্নগ্লের জন্য অপারেশন সার্চলাইট চালানো হয় , এরপর বাঙালীরা সামরিক বিদ্রোহ করে এবং তারপর গৃহযুদ্ধ শুরু হয় এবং ভারতের ষড়যন্ত্রের কাছে পাকিস্তান সরকার ব্যর্থ হয় , বাংলাদেশের জন্ম হচ্ছে ভারতের ষড়যন্ত্রের ফসল , জিয়ার মত একজন সামরিক অফিসারকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেব প্রতিষ্ঠা করে পাকিস্তানি দাবিকে সত্যি প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে এবং বাংলাদেশের মহান গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধকে একজন সামরিক অফিসারের বিদ্রোহ হিসেবে চালানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে

১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান পাকিস্তানের সাধারন নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন , তাই তখনকার পাকিস্তানের নির্বাচনী নিয়মানুযায়ী বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী , এছাড়াও বঙ্গবন্ধু তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধান এবং পুর্ব পাকিস্তনের জাতীয় নেতা , তাই এটা স্পষ্টভাবে প্রতিয়মান যে স্বাধীনতা ঘোষণার একমাত্র অধিকার এবং রাজনৈতিক ম্যান্ডেট বঙ্গবন্ধুর ছিল , উনি ছাড়া অন্য কেউ স্বাধীনতার ঘোষণা করলে কোনভাবে গ্রহণযোগ্য হত না , হবেও না , এবং ইতিহাসের শাশ্বত সত্য হচ্ছে বঙ্গবন্ধুই স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন । এই জন্যই বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম তথা মুক্তিযুধে কে গৃহযুদ্ধ , সামরিক বিদ্রোহ এবং ভারতের ষড়যন্ত্র এসব পাকিস্তানি প্রচারণা সফল করতে জিয়ার মত একজন মেজরকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্র হচ্ছে ,আসল সত্য হচ্ছে জিয়া ১৯৭১ সালের ২৭শে মার্চ বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে ।

বংলাদেশের স্বাধীনতা ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন এবং ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রচার করে , অথচ জিয়া বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে ২৭শে মার্চ ,

পাঠক লক্ষ্য করুন যেখানে জাতীয় নেতা বঙ্গবন্ধু ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন , এমনকি ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রচার করে ,সেখানে জিয়ার মত একজন সামরিক অফিসার ২৭শে মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ( যার রেঞ্জই ছিল সর্বচ্চো ৫০ কিমি ) থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে কিভাবে স্বাধীনতার ঘোষক হয় ????????????? আপনারা সবাই এই মিথায় পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের বিপক্ষে রুখে দাড়ান।

১১| ৩১ শে মে, ২০১৫ রাত ৩:৪৯

চাঁপাডাঙার চান্দু বলেছেন: পোষ্টটা হচ্ছে একজন ব্যক্তির ব্যাক্তিগত স্মৃতিচারন। তারপরেও কুকুরের বাচ্চাগুলোর ঘেউ ঘেউ এর কারণে টেকা দায়। কই থেকে কি আনছে, কি বলছে কোন মাথা মুন্ডু নাই। এই গুলা থাকবে টিএসসিতে, মেয়েদের ওড়না ধরে টানাটানি করবে; ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলবে, একটা আরেকটাকে কুপিয়ে মারবে। কিন্তু ব্লগে এই জানোয়ারগুলা কি করতে আসে?

যাই হোক ভাই, পোষ্টটা অনেক অনেক ভালো লাগলো। প্রিয়তে নিলাম

১২| ৩১ শে মে, ২০১৫ ভোর ৫:০৪

ভয়ংকর বিশু বলেছেন: পাদের পোষ্ট, হালায় দালাল

১৩| ৩১ শে মে, ২০১৫ ভোর ৫:০৬

ভয়ংকর বিশু বলেছেন: প্রভাষ প্রদৌত বলেছেন:
পাঠক লক্ষ্য করুন যেখানে জাতীয় নেতা বঙ্গবন্ধু ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন , এমনকি ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে প্রচার করে ,সেখানে জিয়ার মত একজন সামরিক অফিসার ২৭শে মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র ( যার রেঞ্জই ছিল সর্বচ্চো ৫০ কিমি ) থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করে কিভাবে স্বাধীনতার ঘোষক হয় ????????????? আপনারা সবাই এই মিথায় পাকিস্তানি ষড়যন্ত্রের বিপক্ষে রুখে দাড়ান।

পাকিস্তানের দালালদের পিটিয়ে মারার আইন চাই

১৪| ৩১ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮

চাঁপাডাঙার চান্দু বলেছেন: সবার আগে জিন্নাহর গোলাম, পাকিস্তানের দালাল, ভুট্টোর জিগরি মুজিবের কবরে লাথি মেরে আয় দেখি ;)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.