![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
يٰۤاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللّٰهَ وَاٰمِنُوْا بِرَسُوْلِهٖ يُؤْتِكُمْ كِفْلَيْنِ مِنْ رَّحْمَتِهٖ وَيَجْعَلْ لَّـكُمْ نُوْرًا تَمْشُوْنَ بِهٖ وَيَغْفِرْ لَـكُمْؕ وَاللّٰهُ غَفُوْرٌ
رَّحِيْمٌ ۙۚ
সূরা নম্বর: ৫৭ আয়াত নম্বর: ২৮
হে মু’মিনগণ! আল্লাহ্কে ভয় কর এবং তাঁহার রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি তাঁহার অনুগ্রহে তোমাদেরকে দিবেন দ্বিগুণ পুরস্কার এবং তিনি তোমাদেরকে দিবেন আলো, যাহার সাহায্যে তোমরা চলিবে এবং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করিবেন; আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
এই আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা মু'মিনদের বলেছেন আল্লাহ কে ভয় আর রাসূলের প্রতি বিশ্বাস স্হাপন করতে। বিনিময়ে তিনি তাঁর অনুগ্রহ, পুরষ্কার, সাহায্য ও ক্ষমার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হলো,
মু'মিন কারা?
মুসলমান যারা তারা সকলেই ঈমানের দাবী করে।
কিন্তু সকলেই মুমিন নয়। মুসলমানদের মধ্যে দুইটি প্রকার ভেদ আছে।
এক) মু'মিন।
দুই) মুনাফেক।
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জামানায় মুনাফেকরাও নিজেরা নিজেদের মুসলমান হিসাবে পরিচয় দিত।
সূরা বাকারায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা প্রথমে মু'মিনের পরিচয় তারপর কাফেরদের এবং অতঃপর মুনাফিকদের পরিচয় বর্ণনা করেছেন।
মু'*মিনের পরিচয় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা সূরা বাকারায় এভাবে দিয়েছেন--
الَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِالْغَيْبِ وَ يُقِيْمُوْنَ الصَّلٰوةَ وَمِمَّا رَزَقْنٰهُمْ يُنْفِقُوْنَۙ
সূরা নম্বর: ২ আয়াত নম্বর: ৩
যাহারা অদৃশ্যে ঈমান আনে, সালাত কায়েম করে ও তাহাদেরকে যে জীবনোপকরণ দান করিয়াছি তাহা হইতে ব্যয় করে।
وَالَّذِيْنَ يُؤْمِنُوْنَ بِمَۤا اُنْزِلَ اِلَيْكَ وَمَاۤ اُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَۚ وَبِالْاٰخِرَةِ هُمْ يُوْقِنُوْنَؕ
সূরা নম্বর: ২ আয়াত নম্বর: ৪
এবং তোমার প্রতি যাহা নাযিল হইয়াছে ও তোমার পূর্বে যাহা নাযিল হইয়াছে তাহাতে যাহারা ঈমান আনে ও আখিরাতে যাহারা নিশ্চিত বিশ্বাসী।
اُولٰٓٮِٕكَ عَلٰى هُدًى مِّنْ رَّبِّهِمْ وَاُولٰٓٮِٕكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ
সূরা নম্বর: ২ আয়াত নম্বর: ৫
তাহারাই তাহাদের প্রতিপালক - নির্দেশিত পথে রহিয়াছে এবং তাহারাই সফলকাম।
মুনা*ফেকদের বর্ণনাঃ--
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَّقُوْلُ اٰمَنَّا بِاللّٰهِ وَبِالْيَوْمِ الْاٰخِرِ وَمَا هُمْ بِمُؤْمِنِيْنَۘ
সূরা নম্বর: ২ আয়াত নম্বর: ৮
আর মানুষের মধ্যে এমন লোকও রহিয়াছে যাহারা বলে, ‘আমরা আল্লাহ্ ও আখিরাতে ঈমান আনিয়াছি’, কিন্তু তাহারা মু’মিন নয়;
يُخٰدِعُوْنَ اللّٰهَ وَالَّذِيْنَ اٰمَنُوْا ۚ وَمَا يَخْدَعُوْنَ اِلَّاۤ اَنْفُسَهُمْ وَمَا يَشْعُرُوْنَؕ
সূরা নম্বর: ২ আয়াত নম্বর: ৯
আল্লাহ্ এবং মু’মিনগণকে তাহারা প্রতারিত করিতে চাহে। অথচ তাহারা যে নিজেদেরকে ভিন্ন কাহাকেও প্রতারিত করে না, ইহা তাহারা বুঝিতে পারে না।
فِىْ قُلُوْبِهِمْ مَّرَضٌۙ فَزَادَهُمُ اللّٰهُ مَرَضًا ۚ وَّلَهُمْ عَذَابٌ اَلِيْمٌۙۢبِمَا كَانُوْا يَكْذِبُوْنَ
সূরা নম্বর: ২ আয়াত নম্বর: ১০
তাহাদের অন্তরে ব্যাধি রহিয়াছে। অতঃপর আল্লাহ্ তাহাদের ব্যাধি বৃদ্ধি করিয়াছেন ও তাহাদের জন্য রহিয়াছে কষ্টদায়ক শাস্তি, কারণ তাহারা মিথ্যাবাদী।
এখন আমাদের নিজেদের সাথে মিলিয়ে দেখা খুবই জরুরি আমি কোন কাতারে পড়তেছি।
আমার মধ্যে যদি মুনাফেকির চিহ্ন থাকে তবে এখুনি নিজেকে সংশোধন করা চাই। কারন জানা নাই আমার জীবনের কতটা সময় বাকি আছে।
প্রতিটি মানুষই যে কোন বয়সের হোক মনে করে তার হায়াতের এখনো অনেক সময় বাকি আছে।
আর এভাবেই ধোঁকায় পড়ে নিজেকে সংশোধন করতে দেরী করে ফেলে।
ইসলামে মুনাফেক (মুনাফিক) সাধারণত দুই প্রকারঃ--
১) আক্বীদাগত (বিশ্বাসগত) ও
২) আমলগত (কর্মগত)।
আক্বীদাগত মুনাফেকি হলো বাহ্যিকভাবে নিজেকে মুসলিম দাবি করা, কিন্তু অন্তরে কুফরি বিশ্বাস পোষণ করা।
এটি সবচেয়ে বড় কুফরি এবং এর কারণে ব্যক্তি মুসলিম মিল্লাত থেকে খারিজ হয়ে যায়।
আর আমলগত মুনাফেকি হলো কিছু ক্ষেত্রে ইসলামের বিধি-বিধান পালন না করা বা ভন্ডামি করা, যা মুসলিম মিল্লাত থেকে খারিজ করে না তবে বড় গুনাহ হিসেবে বিবেচিত হয়।
কিছু আলেম মুনাফেকির আরও কয়েকটি প্রকারভেদ করেছেন।
যেমন:
১) কথা ও কাজের মিল না থাকাঃ--
যা মুখে বলে, কাজে তা করে না।
২) দ্বিমুখী হওয়াঃ--
কারো সামনে একরকম, আবার কারো সামনে অন্যরকম আচরণ করা।
৩) অঙ্গীকার ভঙ্গ করাঃ--
কারো সাথে করা ওয়াদা রক্ষা না করা।
৪) ঝগড়া বিবাদ করাঃ--
যেখানে শান্তি বজায় রাখা উচিত, সেখানে ঝগড়া ও বিবাদ সৃষ্টি করা।
৫) মিথ্যা কথা বলাঃ--
সত্য গোপন করে মিথ্যা কথা বলা।
মোটকথা, মুনাফিকি একটি গুরুতর চারিত্রিক ত্রুটি, যা মানুষকে আল্লাহর রহমত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।
তাই আমাদের সবাইকে এই ত্রুটিগুলো সংশোধন করতে হবে।
আর মু'মিন হওয়ার জন্য আমাদেরকে দ্বীনি ইলম অন্বেষণ করতে হবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘প্রতিটি মুসলিমের উপর ইলম শিক্ষা করা ফরজ।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং-২২৪)
ফরজ ইলম আবার দুই প্রকার।
(১)ফরজে আইন ও (২) ফরজে কিফায়া।
১) ফরজে আইনঃ-- ফরজে আইনকে ফরজে আইন এজন্য বলা হয় যে, শরীয়তদাতার নির্দেশ প্রতিটি মুকাল্লাফ তথা মুসলিম, বালেগ, বোধসম্পন্ন ব্যক্তিকে শামিল করে, যে নির্দেশটি নিজে নিজেই আদায় করা ছাড়া মুকাল্লাফ ব্যক্তি দায়িত্বমুক্ত হয় না। (শরহুল কাউকাবুল মুনীর-১/২৭৪)
২) ফরজে কেফায়াঃ-- ফরজে কেফায়া হলো, কিছু মুকাল্লাফের আদায় করার দ্বারা শরীয়ত প্রদানকারীর উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যায়, বাকিরা আদায় না করার গোনাহ থেকে রক্ষা পায়। যদিও সবার উপর বিষয়টি আবশ্যক ছিল। (শরহুল কাউকাবুল মুনীর-১/২৭৪
ইমাম গাযালী (রহ.) বলেন,
তিন প্রকার ইলম শিক্ষা করা ফরজ।
যথা,
১) ইলমুত তাওহীদ,
অর্থাৎ এতটকু জ্ঞান রাখা তওহীদ সম্পর্কে যা দীনের মূলের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহতায়ালা সম্পর্কে এ জ্ঞান রাখা যে, তিনি জীবিত, সবকিছুর উপর ক্ষমতাশালী, সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞানী, তার কোনো শরিক নেই, সকল গুণে গুণান্বিত, মাখলুকের সিফাত থেকে পবিত্র। হজরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহতায়ালার বান্দা এবং রাসুল। আল্লাহর পক্ষ থেকে মনোনীত, তিনি অহীর ব্যাপারে সত্যবাদী ইত্যাদি।
২) ইলমুস সির
‘ইলমুস সির’ হলো অন্তরকে নিষিদ্ধ বিষয় থেকে পবিত্র করা এবং কাম্য বস্তু দিয়ে অন্তরকে ভরপুর করা। ইখলাস, নেক নিয়ত, আমলের হিফাজত ইত্যাদি।
৩) ইলমুশ শরীয়াহ।
আর ইলমুশ শরীয়াহ বলতে কি? এর উদ্দেশ্য হলো, ব্যক্তির জন্য যা কিছু আদায় করা ফরজ সে সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করাও ফরজ।
কমপক্ষে ইসলামী বিধি-বিধান মেনে জীবন পরিচালনা করার জন্য যতটুকু ইলম দরকার ততটুকু ইলম অন্বেষণ করা প্রত্যেক নরনারীর জন্য ফরজ ছিল।
আর ইলম অন্বেষণ শিক্ষা করা যে ফরজ সেই হুকুম পালন না করার কারনে মুসলমান ঘরে জন্ম নিয়েও মুমিন বান্দা,আশেকে রাসূল না-হয়ে, মুনাফেক ও শাতিমে রাসূল হওয়ার এটাই হচ্ছে কারন।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা আমাদের মুসলমানদের ইলম অন্বেষণ করে মু'মিন হওয়ার এবং মুনাফেকি আচরণ থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান করুন।
আমিন।
-----RabAh ✍️
---১৮ই--জুন--২০২৫ইং
"RabAh ' কাব্যকথা"
ইলম অন্বেষণের সুবিধার্থে কিছু লিংক দেয়া হলোঃ--
https://youtube.com/playlist?list=PLhJ8mkqfL3eJy3CqKpuDdJMlg12w932Tz&si=CNILZU3EtMgLw1Jl
https://youtube.com/playlist?list=PLvjGBNSo42gXnCpmVBENmLIETiblxb9Gh&si=wFfSZEs4Ih1AwWOs
©somewhere in net ltd.