![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এখন থেকে আম গাছ হচ্ছে আমাদের জাতীয় বৃক্ষ।
আজ মন্ত্রিসভার আয়োজিত বৈঠকে আম গাছকে বাংলাদেশের জাতীয় বৃক্ষ হিসাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ আম গবেষণা কেন্দ্র
আম গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের একটি গবেষণা কেন্দ্র। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধীনে আম সংশ্লিষ্ট সকল ধরণের গবেষণা পরিচালনা করে থাকে। রাজশাহী শহর থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পূর্বদিকে নবাবগঞ্জ নামক স্থানে এর সদর দপ্তর অবস্থিত।
আম গবেষণা কেন্দ্রের মোট জমির পরিমাণ ৩০.৬ একর বা ১২.৪০ হেক্টর। এই জমির উপর রয়েছে ফলের বাগান, অফিস, গবেষণাগার, আবাসিক ভবন এবং ৬৫ জাতের প্রায় ৩০০ আমগাছ। এই প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য হচ্ছে আম চাষের উপর ইস্তর গবেষণা পরিচালনার মাধ্যমে আমের জাতিগত উন্নয়ন এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করা। প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কেন্দ্রের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তার সহযোগী হিসেবে আরও ৪ জন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা রয়েছেন। আম গবেষণা কেন্দ্রের সাথে অন্যান্য অনেক জাতীয় প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে।
মধু মাসের মধু ফল হলো আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু। তবে আমের স্থান হচ্ছে সবার শীর্ষে অর্থাত্ আম সব ফলের সেরা। কবি আমীর খসরু চতুর্দশ শতাব্দীতে আমকে ‘হিন্দুস্থানের সেরা ফল’ রূপে উল্লেখ করেন। আধুনিককালে বিখ্যাত উদ্যানবিদ পোপেনো আমকে ‘প্রাচ্যের ফলের রাজা’ বলে সম্বোধন করেন।
উত্কৃষ্ট জাতের আম স্বাদে-গন্ধে খুবই আকর্ষণীয়। নিম্নে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য আমের বর্ণনা দেয়া হলো।
১. ফজলি : বৃহদাকৃতি সুস্বাদু আম। শাঁস কমলা বর্ণের বা লাল হয়। গাছ বৃহদাকারের। নাবী জাতীয় আম। মধ্য জুলাই-মধ্য সেপ্টেম্বরে পাকে। ২. ল্যাংড়া : পাতলা বাকল ও হালকা বীজবিশিষ্ট জাত। শাঁস হালকা কমলাভ; মিষ্ট, রসাল ও আঁশবিহীন। আম ঋতুর মাঝামাঝিতে (জুনের শেষাংশ থেকে জুলাই) পাকে। ৩. গোপালভোগ : শাঁস গভীর কমলাভ। ওজন ২৫০ গ্রাম থেকে ৩২৫ গ্রাম। এটা আশু জাতীয় এবং জুন মাসে পাকে। ৪. কিষাণভোগ : জুন-মধ্য জুলাইতে পাকে (মধ্য মৌসুমি)। ৫. খীর্সাপাতি : গোপালভোগ অপেক্ষা সামান্য ছোট। মিষ্টি ও ছোট আঁটিবিশিষ্ট। শাঁস হলুদাভ বাদামি। আশু জাত (জুন); থোকা থোকা ফল। ঘরে রাখা চলে। ৬. হিমসাগর : মাঝারি আকারের এ ফল ওজনে ৩৭৫ থেকে ৫০০ গ্রাম হয়। জুন-জুলাই মাসে পাকে। ফল রসালো, মিষ্টি ও আঁশবিহীন এবং আঁটি ক্ষুদ্রকায়। ত্বক মাঝারি পুরু। মিষ্টতা ও সংরক্ষণশীলতার দিক থেকে অপূর্ব বলা চলে।
৭. কোহিতুর : মাঝারি আকারের এ ফল প্রায় ২৫০ গ্রাম ওজনের হয়। রাজশাহীর আম। শাঁস রসালো, সুমিষ্ট, কোমল; জুন-জুলাই (মধ্য-মৌসুমি)। ৮. মোহনভোগ : ২৭৫-৬২৫ গ্রাম হয়। গোলাকার ধরনের ফল। মাঝারি-নাবী জাত। ৯. গোলাপ খাস : ২৫০ থেকে ৩৭৫ গ্রাম ওজন। আশু জাত; মে-জুন মাসে পাকে। ১০. সামার বাহিশত চৌসা : মাঝারি আকারের, কাঁধ সমান, ঠোঁট স্পষ্ট; শাঁস হলুদ ও খুব মিষ্টি; নাবী জাত, জুলাই-আগস্টে পাকে। ১১. আশ্বিনা : সবচেয়ে নাবী জাত; মৌসুম জুলাই-আগস্ট।
অন্যান্য দেশি জাতের অন্যতম সটিয়ার করা (আশু), সূর্যপুরী, মাধ্যমিকা, কুয়া পাহাড়ি (নাবী), বোম্বাই (নাবী), মোহনভোগ (মাধ্যমিক), লতা-বোম্বাই (গাছ ক্ষুদ্রাকার, ফলও ক্ষুদ্রাকার, মধ্য-মৌসুমি)। বারি কর্তৃক মুক্তায়িত আম-জাতগুলো হচ্ছে—আশুজাতীয় বারি আম-১ (মহানন্দা) মধ্য মৌসুমি, বারি আম-২ (আম্রপালি) যা কিছুটা নাবী, বারি আম-৩ এবং নাবী জাতীয় বারি আম-৪।
আম গাছ সাধারণত ৩৫-৪০মি: (১১৫-১৩০ ফিট) লম্বা এবং সর্বোচ্চ ১০মি: (৩৩ ফিট) ব্যাসার্ধের হয়ে থাকে। আম গাছ গুলো বহু বছর বাঁচে, এর কিছু প্রজাতিকে ৩০০ বছর বয়সেও ফলবতী হতে দেখা যায়। এর প্রধান শিকড় মাটির নিচে প্রায় ৬মি: (২০ ফিট) গভীর পর্যন্ত যেয়ে থাকে। আম গাছের পাতা চিরসবুজ, সরল, পর্যায়ক্রমিক, ১৫-৩৫ সে:মি: লম্বা এবং ৬-১৬ সে:মি: চওড়া হয়ে থাকে; কচি পাতা দেখতে লালচে-গোলাপী রং এর হয়। আমের মুকুল বের হয় ডালের ডগা থেকে, ফুল থেকে শুরু করে আম পাকা পর্যন্ত প্রায় ৩-৬ মাস সময় লাগে।
©somewhere in net ltd.