নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্নদূত

স্বপ্ন ছোবার ইচ্ছেয় ভেসে বেড়াই ডানা মেলে।

সঞ্জয় বনিক

খুব সাধারণ একজন মানুষ। বইয়ের রাজ্যে ডুবে থাকতে ভাল লাগে।এক বড় ভাইয়ার কাছ থেকে সামুর সন্ধান পেয়েছিলাম। আর ঠিক তখন থেকেই সামুর প্রেমে পড়ি। নানা ব্যস্ততার কারণে খুব একটা বসতে পারিনা। কিন্তু প্রতিক্ষণই মিস করি সামুকে।

সঞ্জয় বনিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

শখের সাইকেল......

০৩ রা জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:২৭

অনেক ছোট বেলায় বাবার এক বন্ধু প্রায় প্রায়ই একটি সাইকেল বন্ধক রাখতেন। যদিও বন্ধকের জন্য কোন লাভ বাবা কখনই নেননি। সেই সাইকেলে চড়ে বাবার সাথে কতদিন কিন্ডারগার্টেন স্কুলে গিয়েছি! যখন একটু বড় হলাম তখন নিজেই সাইকেল চালানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। হঠাৎ একদিন সুযোগও চলে এলো। সকালে ঘুম থেকে ওঠে সাইকেল দেখে আমার খুশি আর দেখে কে? কোন রকমে হাত-মুখ ধুয়ে সাথে সাথে সাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি হাই স্কুল মাঠে। সেখানে চলে সাইকেল চালানোর আপ্রাণ চেষ্টা। আর আমার সে চেষ্টায় সঙ্গী ছিল ন্যূড ফ্রেন্ড অভি!! প্রথমদিকে সিটের ওপর হাত রেখে চালানোর চেষ্টা। একটু একটু করে তা আয়ত্তে নিয়েও আসলাম। কিন্তু বাধ সাধল যখন সাইকেল থেকে নামতে যাবো ঠিক তখন। শেষে বাধ্য হয়ে ব্রেক কষে মাঠের মধ্যে অসহায় আত্মসর্মপন। এরপর মাঠের বারান্দা থেকে সাইকেলে ওঠে প্যাডেল মেরে চালানো। এভাবেই আমার সাইকেল চালানোর হাতে খড়ি। আস্তে আস্তে দক্ষ চালকে পরিণত হলাম। প্রথমে সিঙ্গেল এরপর ডাবল তারপর তিনজনকে নিয়েও সাইকেল চালাতাম। হাত ছেড়ে দিয়ে নায়কি ভঙ্গিমায় চালানোর কসরতও বাদ থাকেনি। পেছনে বন্ধু অভিকে বসিয়ে অসংখ্যবার হাত ছেড়ে দিয়ে সাইকেল চালিয়েছি। আমার হাত ধরেই অভির সাইকেল চালানো শেখা। মজার ব্যপার হলো, অভি যখন একটু একটু করে সাইকেল চালানো শিখে ফেললো তখন সে আমার পেছনে বসতে ভয় পেতো ! অথচ এই অভিই একসময় আমার পেছনে বসে আনন্দে মাতোয়ারা হতো।

রাস্তায় কাউকে সাইকেলে যেতে দেখলেই হয়েছে, অবশ্যই তাকে আমার অতিক্রম করা চাই। আর অতিক্রম করতে গিয়ে দু-চার বার ছোট-খাটো এক্সিডেন্টের সম্মুখীনও হয়েছি। প্রথম এক্সিডেন্ট অভিকে নিয়ে। কলেজের কাছে এক ক্ষেতের মধ্যে সাইকেল নামিয়ে দিয়েছিলাম। অবশ্য আমরা কেউই সে যাত্রায় আহত হইনি। একবার বাসার পাশের দোকানে কর্মরত ছেলে সাধন অনেক অনুরোধের পর তাকে পিছনে বসিয়ে সাইকেল চালাতে গিয়ে বাধল বড় বিপত্তি। কিছুদূর যাওয়ার পরই সে আনন্দের আতিশয্যে হাত ছেড়ে দিয়ে গান গাইতে শুরু করলো। আর আমিও জোরেশোরে চালাতে লাগলাম। হঠাৎ পিছন ফিরে দেখি সাইকেলের পেছনে সাধন নেই। কোথায় গেলো সাধন তাহলে? আরেকটু পিছনে তাকাতেই দেখি রাস্তায় কুপোকাত সাধন আহত অবস্থায় কাতরাচ্ছে। আসলে আমার কোনো দোষই ছিল না। ও হাত ছেড়ে দিয়ে আনন্দ করতে করতে নিজেই কুপোকাত হয়ে গিয়েছিল। ক্লাস সিক্স কি সেভেনে পড়ার সময় পরীক্ষার আগের রাতে এক দাদাকে পেছনে বসিয়ে রাস্তায় নামতেই সুযোগ পেয়ে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে আরেকবার আহত হয়েছিলাম।

তবে মাঝে মাঝেই আমার মন খুব বিষন্ন হয়ে যেত, যেদিন দেখতাম আমার বাবার সেই বন্ধু সাইকেল নিতে চলে আসত। আশার কথা এই যে, কয়েকদিন পরই আবারও তিনি সাইকেল বন্ধক রেখে যেতেন। তখন কি যে খুশি লাগতো তা বলে বোঝানোর নয়। ইচ্ছা করলেই বাবা সাইকেলটি একবারে কিনে রাখতে পারতেন। কিন্তু বন্ধুর ভালোর জন্যেই হয়তোবা সাইকেলটি একবারে কিনতেন না !

কতো স্মৃতি যে এই সাইকেলকে ঘিরে তার অন্ত নেই। আর তাই আজো সাইকেল দেখলেই কেমন নস্টালজিক হয়ে যাই......................

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ রাত ১:৩০

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:

আগে দুই টাকায় ভাঁড়ায় সাইকেল চালাতাম। সেই দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দিলেন ভাই।

২| ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৫৯

সঞ্জয় বনিক বলেছেন: ভাই দোকান থেকে টাকা নিয়ে আমিও সুযোগ পেলেই চালাতাম। ধন্যবাদ আপনার মন্তবের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.