![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুসলিম,বাংলাদেশী,স্বপ্নচারী।কুরআন-হাদিসের পর গণিত,ফিজিক্স,কম্পিউটার প্রোগ্রামিং আর ব্লগিং ভালো লাগে।আশা করি পৃথিবীর সকল মানুষ অচিরেই ইসলামের সুশীতল ছায়া তলে আসবে। :s
কিছু সুযোগ যা আমি-আপনি পেতে পারতাম।যা সমৃদ্ধ করতে পারত,পরিবর্তন করতে পারত হাজারো জিবন।আলোর দিশা দিতে পারত,সৃষ্টি করতে পারত নতুন যুগ।সেই সব সুযোগের মধ্যে ‘জানার সুযোগ’ , ‘বানার সুযোগ’ অন্যতম।জানার বা জ্ঞানের প্রতিশব্দ যদি বলতে হয় তাহলে আজকের এই দিনে বলা যায় জ্ঞানের প্রতিশব্দ ‘ইন্টারনেট’।যদিও আমাদের দেশের বেশীর ভাগ ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীই হয়ত ভাবেন,ইন্টারনেট মানেই ফেসবুক,ইন্টারনেট মানেই হোয়াটস-এপ।তারা হয়ত খান একাডেমী ,শিক্ষক.কম,কোড.অর্গ,ইউটিউব–এ ক্লাশ করার কথা কল্পনা করতেও পারেন না,তাদের সীমাবদ্ধতার জন্যে।তাদের ধারণাও নেই তার হাতের ফোনটার শক্তি কত।কারণ,ফোনটার পাওয়ার হাউস হলো ‘ইন্টারনেট’ সংযোগ ।শুধু সংযোগ নয় তার জন্য কাভারেজ চাই,তাতে ভালো ‘স্পিড’ থাকা চাই।আবার স্পিড ভালো হলেই তো হবে না তাতে আবার ডাটা থাকা চাই।প্রয়োজনীয় ডাটা ক্রয় করা যা আমাদের দেশের সাধারণের সাধ্যের বাইরে।সাধারণ বললেও এখানে ছাত্র-তরুণদেরই বিশেষায়িত করা যায়।আর তাদের পরিবারে ‘অসচেতনতা’ থাকার ফলে তাদের প্রচলিত উচ্চ মূল্যে ডাটা ক্রয় করা হয়ে ওঠে না।কারন মাস শেষে বাবা-মায়ের কাছে বা বড় ভাইয়ের কাছে আপনি বলতে পারবেন না “আমার ১২০০ টাকা লাগবে ইন্টারনেট বিলের জন্য” কারন তারা এই ব্যাপারে ধারনা রাখেন না ।আর শোনার পর তারা এই ১২০০ টাকা খরচ করাতে ১ টাকার লাভও হয়ত খুজে পাবেন না ।তাই ইন্টারনেটের ডাটা কেনার জন্য টাকা চাই শুনার পর হয়ত বলবে ইন্টারনেট,ইন্টারনেটে তুই কি করিস ? যদি বলেন শিখি,জানি,পড়ি।এক একজন হয়ত এক এক রকম প্রতিক্রিয়া পাবেন।কেউ হয়ত শুনবেনঃ ঘরের বই তো সারা দিন পরে থাকে সারা দিন তো খেলা ধুলা করে বেরাস তার আবার ইন্টারনেট থেকে শেখা,পড়া।এত্ত মোবাইল গুতাগুতি করিস ক্যান ? সারা দিন কম্পিউটারে কি করিস তুই ? তারা হয়ত জানেই না আপনার ক্লাশের বোরিং সব বিষয় ছাড়াও,কোনো এক বিজ্ঞান ব্লগের দারুণ সব আর্টিকেল পড়াতে আপনি রোমাঞ্চ খুজে পান।বিভিন্ন দেশী বিদেশী লেখকদের উপন্যাস,কবিতা গল্প পরতে ভালো লাগে আপনার।রোবোটিক্সের দারুন সব ইনোভেশন অত্যাধুনিক সব আইডিয়া আপনার করতে ইচ্ছা হলেও সুযোগের জন্য এগুলোর চর্চা করতে পারেন না, কিন্তু টেক ব্লগে এগুলোর খবর সবর রাখার জন্য আপনার মন হাকুশ পাকুশ করে।জেনেটিক্সের এই যুগে ক্লোনিংএর বৈচিত্র,মানব জাতির সুরক্ষার জন্য চলা বিভিন্ন গবেষণা আপনি নিজে করতে না পারলেও এসবের খবর রাখা আপনার কাছে কতটা আনন্দের।আবার কেউ, বলবেঃইন্টারনেট ? ছিঃ ছিঃ ছিঃ তুই ইন্টারনেট চালাস ? ছিঃ ছিঃ ছিঃ ।তাদের এই মানসিকতা,ইন্টারনেট ঘৃণার পেছনেও কারণ আছে।এখানে বলা প্রয়োজন,কারো হাতে যদি সামান্য চুলকানি হয় তাহলে চুলকানির জ্বালায় হাত কেটে ফেলা বুদ্ধিমানের কাজ নয়,ঔষুধের প্রয়োগের দ্বারা চুলকানি নিরাময় করে হাতের জ্বালা-যন্ত্রণা কমিয়ে তাকে আবার কর্মক্ষম করাই যথাযথ।আশার কথা হলো আস্তে আস্তে তাদের কু-ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে।মানুষ জানছে ইন্টারনেট কি,কিভাবে এর ব্যবহার করতে হয়,এর ভালো-মন্দ দিক কি।তারা জানছে ইন্টারনেটের দ্বারা সারা দিন গান আর ভিডিও দেখা যায় যেমন তেমনি,বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের বিখ্যাত সব স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের,এক্সপার্টদের অনলাইন ক্লাশে অংশ নেয়া যায় যখন ইচ্ছা তখন আবার কোর্স শেষে ইন্টারনেটেই পরিক্ষায় বসে সার্টিফিকেটও পাওয়া যায়,যা অভিজ্ঞতার ঝুলি সমৃদ্ধ করেই না শুধু,ভবিষ্যত চাকুরীতে আবেদনের সময় ইতিবাচক প্রভাব ফেলে,ঐতিহাসিক তথ্যবহুল ঘটনার কথা জানা যায়,বিখ্যাতদের জিবনী পড়া যায়,বিভিন্ন ভাষায় বিভিন্ন ধাচের হাজারো সব ব্লগের আর্টিকেল হাজারো নিউজ পোর্টালে দেশ বিদেশের খবরা খবর পড়া যায়,উইকিপিডিয়ার দ্বারা মুহুর্তে জ্ঞান সমুদ্রে বিচরণ করা যায়,যে কোন সমস্যা যে কোন টপিকস নিয়ে জানতে বা সমাধান করতে গুগল মামাকে বললেই সাথে সাথে হাজার লক্ষ ওয়েব আর ব্লগে লুকিয়ে থাকা সেই সমাধান সেই কন্টেন্টকে আপনার সামনে হাজির করে দেয়,আসক.কমে প্রশ্ন করে তার থেকে অভিজ্ঞদের উত্তর পাওয়া যায় আবার নিজেও নিজেকে যাচাই করার জন্য উত্তর দেওয়া যায়,বাংলাতেও এমন সুবিধার অনেক সাইট রয়েছে যেখানে যে কোন প্রশ্ন করা ও তার উত্তর দেওয়া যায়।যারা হয়ত কোডিং ভালোবাসেন তারা অনলাইনেই বিভিন্ন কোর্স করে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে এক একজন সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার,ওয়েব ডেভেলপার,প্রোগ্রামার হতে পারেন যাদের কেউ কেউ অনায়াসেই বিভিন্ন সফটওয়ার কোম্পানিতে জব পান,গেম বানিয়ে বিভিন্ন এপ বানিয়ে নিজের সৃজনশীল সত্তাকে অনুভব করেন প্লে-স্টোরে নিজের বানানো এপ নামানোর অ কৃত্রিম ভালোলাগা ছুয়ে দেখেন।মাইক্রোসফট,ফেসবুক,এপল,গুগলে শ’ শ’ প্রোগ্রামার আছেন যারা স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজ লাইফে যাওয়াটাকে সময়ের অপচয় ভেবে এভাবে ইন্টারনেট থেকে একা একাই এক একজন ‘মানিক’ হয়েছেন ।সেই সব কলেজ পালানো কোডারদের লেখা কোডের দরুণই হয়ত আজ এই এন্ড্রয়েট,উইন্ডোজ, আর লিনাক্সের দারুণ সব ফিচার ব্যাবহার করতে পারছি।তাদেরই হয়ত কেউ আইফোন সেভেনের ডিজাইন নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা গবেষণা করছেন।কেউ আবার ফেসবুকের এক একটি বাগ ফিক্স করতে নিয়োগ করছেন নিজের সব শক্তি,মেধাকে।কেউ বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে মেতে আছেন বছরের পর বছর।সেই সব লোকের জানার,শেখার নিজেকে মানবতার উন্নয়নের জন্য কাজের উপযুক্ত করতে শিক্ষক ছিল এই ইন্টারনেটই।কারণ তারা জন্মের সময় এক একজন কোডার হয়ে জন্মে নাই।তাদেরও শিখতে হয়েছিলো।পার্থক্য এটাই তাদের প্রাপ্ত সুবিধা,আর আমাদের সীমাবদ্ধতা।আমাদের তরুণরা আজকের এই দিনে এসেও তাদের মত সুবিধা পাচ্ছেন না।তারা হয়ত পাঁচ-দশ-বিশ-পঞ্চাশ-একশ এমবিপিএসে থাকার ফলেই আজ এই উচ্চতায় আসিন।কিন্তু আমাদের হাজারো তরুণ দশ-বিশ-পঞ্চাশ-একশ কেবিপিএসে থেকেও রেনেসা সৃষ্টি করছে।এমনও হয় যে,একটা লাইক দিতে দিতে দুই গ্লাস পানি সাবার করা যায়,সেই রকম পরিবেশ থেকে মাইক্রোসফট গুগলে স্থান করে নেয়া চাট্টিখানি কথা নয়।এতে নিজের অক্লান্ত পরিশ্রম,অধ্যবসায়,লেগে থাকার ক্ষমতা,ও তাদের মেধা সম্পর্কে ধারণা করা যায়।প্রতিবছরই বাংলাদেশ থেকে অনেকেই এই রকম সব বিশ্বখ্যাত কোম্পানীতে জব পাচ্ছেন তাও আবার থার্ড ইয়ারেই অর্থাৎ গ্রাজুয়েশন শেষ না করেই,যা এই দেশের সোনালী ভবিষ্যতের সামান্য নমুনা।বলা হচ্ছে ‘ইন্টারনেট’ হচ্ছে ষষ্ঠ মৌলিক চাহিদা।অর্থাৎ খাদ্য,বস্ত্র,বাসস্থান,চিকিৎসা আর শিক্ষার পাশাপাশি ইন্টারনেটের অধিকার আছে প্রত্যেক নাগরিকের কিন্তু আমাদের দেশে ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে সন্তুষ্ট লোক খুবই কম।যারা আছেন তারা ঢাকায় থাকেন, ৫০০ টাকায় ওয়াইফাই ইন্টারনেট স্পিড এভারেজে ১ এমবিপিএস,সারা দিন সারা রাত ব্রাউজিং,আপলোড-ডাউনলোড কি করো করো ইচ্ছা মন খুশখুশ, হাজার জিবি ব্যাবহার করো বাধা নেই।কিন্তু ঢাকার বাইরে অন্য স্থানে সেই ভাবে অপটিকাল ফাইবার না থাকার ফলে এই ওয়াইফাই ইন্টারনেটের সুবিধা নেই।হাতে থাকল বিখ্যাত সব টেলি-কোম্পানী।তাদের হাস্যকর ফ্রি,আনলিমিটেড,ফেয়ার ইউজেস পলিসি আর বিখ্যাত সব প্যাকেজ ও অফারের জ্বালা তো আছেই তার উপর কাভারেজের জন্য ভালো নেটওয়ার্ক আইসি সম্বলিত ফোন চাই,নেটয়ার্কের টাওয়ার বলেন আর থাম্বা খাম্বা যাই বলেন তার আশে পাশে বাড়ি হওয়া চাই।না হলে খোলা মাঠে যান,ছাদে চড়েন,জানালার কাছে যান আরো কত কাহিনী। তার পরেও গরুর গাড়ি মার্কা এই সংযোগের প্রতি অনেক ভালোবাসা।ভবিষ্যতে ট্রেন বা সুপারসনিক বিমান মার্কা হবে এই আশায় অনেকের কাছেই অকাজের,মূল্যহীন এই লেখার সমাপ্তি।জয়তু ইন্টারনেট।
©Sanoarul
©somewhere in net ltd.