![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কবি বা লেখক হয়ে অর্থ কামানো আমার জন্য একদম নিষিদ্ধ!!!
ছি, রাষ্ট্র ছি! মুক্তিযোদ্ধার সন্তান যখন শুধু একটি কাগজের সনদের জন্য বলতে পারে না তার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা!!
এই পতাকা টা যারা আমাদের এনে দিলেন তাদের দুজনের গল্প বলবো, একজন আমার বাবা যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, যার কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি নেই এবং স্বীকৃতি নিতে যার অনীহা! যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করতে গিয়ে বাবা যে গ্রামেই গিয়েছেন সেই গ্রামের মানুষই তাকে আশ্রয় দেননি এই ভয়ে যে যদি পাক হানাদার বাহিনী ও তার দোসররা জানতে পারেন যে, বাবা সেই গ্রামে আছেন তাহলে তাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হবে! ৯ মাস এভাবেই কেটে গেছে তার, পরিচিত ছাত্রনেতা হবার কারনেই ভয়ে কোন গ্রামের মানুষ তাকে থাকতে দেননি! অথচ এদেশের মুক্তি সংগ্রামের জন্যই যিনি কিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করছিলেন! যাক বাবা তার কথা কস্টে অভিমানে আর বলেন না, তার কথা না হয় আমিও অভিমানেই না বলি। অন্য গল্পটা আমার বড় মামার, যিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা, ৭১ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে চাকুরীরত অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। এলাকার সকল মুক্তিযোদ্ধার মুখেই মামার বীরত্বগাথা গল্প আমরা এখনো শুনি। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অবদান এ রাস্ট্রের কোথায় লেখা আছে কিনা তা আমাদের জানা নেই, সরকারের গেজেট এ তার নাম তালিকাভুক্ত কিনা সেটাও আমাদের জানা নেই! ৩৩ বেঙল রেজিমেন্ট এ মামা চাকুরীরত ছিলেন। চিহ্ন হিসেবে শুধু মাত্র এখন একটা ৩৩ বেঙল রেজি. লেখা মামার সেনাবাহিনীতে চাকুরীকালীন দেয়া একটি ট্রাংক আছে! বড় মামা যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ দেশ স্বাধীন হবারও ৩/৪ মাস পর বাড়ী ফিরে এসেছিলেন। দেশ স্বাধীন হবার পরও যখন তিনি বাড়ী ফিরছিলেন না তখন নানা নানী ভেবেই নিয়েছিলেন হয়ত তাদের সন্তান মারা গেছেন। তিনি যখন ফিরে আসেন তখন তার এই দীর্ঘদিন পর বাড়ি ফেরার কথা এলাকাবাসী তার কাছে শুনে জানতে পারে যে, এই দীর্ঘ ৩/৪ মাস তিনি সদ্য ভুমিষ্ট স্বাধীন দেশের পুনবাসন কাজেই নিয়োজিত ছিলেন। স্বাধীনতার পর কিছুদিন সেনাবাহিনীতে চাকুরী করে তিনি স্বেচ্ছায় চাকুরী থেকে অবসর নেন। এরপর তিনি কৃষি কাজে মনোনিবেশ করেন, নানার জমা জমিতে এবং গরু ছাগলের খামার এসব দেখাশুনা করেই তার দিন অতিবাহিত করতেন। মামা বিয়ে করেছিলেন বেশ দেরীতে, ১৯৮৫ সালে অবশেষে তিনি বিবাহিত জীবন শুরু করেন। সবচেয়ে দু:খজনক ঘটনা তা হলো মামার মৃত্য টা স্বাভাবিক ছিল না, তখন সময়টা ভাদ্র মাস আর আমন ধান রোপনের মওসুম, আকাশ কালো হয়ে আছে চারিদিক, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিল, ছাতা নিয়ে মামা বাড়ি থেকে বের হয়ে ধান রোপন দেখতে তার জমিতে গেলেন, কৃষকরা জমি তে ধান রোপন করছিলেন, তাদের সংগে মামা কথা বললেন, হাসি ঠাট্টা করলেন এবং অবশেষে তিনিও তাদের সাথে ধান রোপন করতে লাগলেন, যে যার মত কাজ করছিলেন, হটাৎ বজ্রপাতের শব্দে অন্যরা তাকিয়ে দেখেন মামা হাটু জল জমিতে পড়ে আছেন! মামা কে নিয়ে তারা বাড়ি আসলেন কিন্তু ততক্ষনে সব শেষ! মামা না ফেরার দেশে চলে গেলেন। মামী তখন ৭ মাসের অন্ত:সত্ত্বা। রোকসানা নামের আমার মামাত বোনটির জন্ম হল তখন যখন তার বাবা কবরে শুয়ে আছে। বাবা ছাড়াই সে বেড়ে উঠল, বড় হল, রোকসানার বিয়ে হয়েছে, ওর দুই সন্তান, জামাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। একদিন আমাকে ফোন করেছিল রোকসানা ও তার জামাই। মামার মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট টা কিভাবে সংগ্রহ করা যায় তার জন্য। ওকে উত্তর দিলাম হয়ত আম্মা বলতে পারবে, আম্মার সাথে কথা বল, নানা নানী মারা গেছে অনেক বছর হয়ে গেছে। আম্মা ছাড়া এই তথ্য আর কেউ দিতে পারবে না। আম্মাকে জিগেস করলাম মামার ব্যাপারে, বলল সেনাবাহিনীর ৩৩ বেঙল রেজিমেন্ট এ মামা চাকুরী করতেন, এর বেশি বলতে পারবেন না। রোকসানা কে এই তথ্য টুকুই আমি দিয়েছি, সে আর তার বাবার ব্যাপারে খোজ করেনি। এখন সে সন্তান, স্বামী নিয়েই ব্যস্ত। মুক্তিযোদ্ধা বাবার সন্তান রোকসানা শুধু মুখেই বলে সে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, কিন্তু রাষ্ট্রে তার দালিলিক সে স্বীকৃতি নেই! একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলতে পারে না, তার বাবা এ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর সেনানী, শুধু মাত্র একটা সনদের জন্য?! ছি, রাষ্ট্র ছি!!
/ সরকার পল্লব
২| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪
প্রািন্ত বলেছেন: এমন ঘটনা চোখের সামনেই দেখছি। মুক্তিযুদ্ধ না করেও অনেকে মুক্তিযোদ্ধা। আবার যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাদের অনেকেরই সার্টিফিকেট নেই। আমাদের এলাকায় শতকরা ৫০% ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা। তারা আওয়ামীলীগ করে এবং তাদের মুখে অনর্গল নীতিবাক্য। তারা প্রতিমাসে মোটা অংকের মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পান। তাদের ছেলে-মেয়ে মেধা না থাকলেও সরকারী চাকুরী হাতিয়ে নিচেছ মুক্তিযোদ্ধার কোটায়। আবার ভূয়াদের মধ্যে কেউ মারা গেলে পুলিশ গার্ড অব অনার দিচ্ছে। সত্যিই চাপাবাজদের দেশে পরিনত হয়েছে আমাদের প্রিয় এ দেশটা। গত কয়েক দিন আগেও দেখলাম একজন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা আরও কয়েকজনকে মুক্তিযোদ্ধা বানানোর জন্য দর কষাকসি করছে।
৩| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৫১
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: এটা সরকারগুলোর ব্যর্থতা...
©somewhere in net ltd.
১|
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৩:২০
যোগী বলেছেন:
রিয়েল সরি ফর ইয়োর ফাদার, বাট মাই স্যালুট ফর হিম। প্লজ কনভে।