নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কে আমি? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজি...!!

সরকার পল্লব

কবি বা লেখক হয়ে অর্থ কামানো আমার জন্য একদম নিষিদ্ধ!!!

সরকার পল্লব › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঈশ্বরের লুকোচুরি!

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪১

ঈশ্বরের লুকোচুরি!

শীতের ভোর বেলায় প্রার্থনা করার আগে নিজেকে পবিত্র করার জন্য পুকুর পাড়ে গেলেন এক ব্যক্তি। ভাল করে লক্ষ্য করে দেখলেন পুকুরের অপর প্রান্তে আরেক ব্যক্তি পানিতে নেমে গোসল করছেন, এই দৃশ্য দেখে সে ব্যক্তি ভাবছেন, আহা, ঐ ব্যক্তি আমার চেয়েও কতই না বড় ধার্মিক যিনি কিনা এই শীতের ভোরে গোসল করে পবিত্র হয়ে প্রার্থনা করবেন আর আমি কিনা সেখানে শুধুমাত্র হাত, মুখ, পা ধুয়েই প্রার্থনা করবো! এদিকে পুকুরের ব্যক্তি গোসল করার সময় হঠাৎ লক্ষ্য করলো যে পুকুরের অপর প্রান্তে আর এক ব্যক্তি হাত, মুখ, পা ধুচ্ছেন। এবার পুকুরে নেমে গোসল করা ব্যক্তি ভাবছেন, আহা, ঐ ব্যাটা আমার চেয়েও কতই না বড় চোর, যে কিনা চুরি করে এসে গোসল সেরে এখন হাত, মুখ, পা ধুয়ে বাসায় ফিরছে!
যে যেমন মানুষ, তার দৃষ্টিভঙ্গিও হবে তেমন। ধার্মিকের দৃষ্টিতে চোরকে ধার্মিক ভাবা আবার চোরের দৃষ্টিতে ধার্মিক কে চোর ভাবা এখন আমাদের এই সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের নিত্য দিনের দৃষ্টিভঙ্গি! আমরা কোন ভাল মানুষের দেয়া সনদে খারাপ মানুষকে ভাল ভাবছি পক্ষান্তরে খারাপ মানুষের দেয়া সনদে ভাল মানুষকে খারাপ ভাবছি। আমাদের এই ভাল আর মন্দকে চিনতে হলে পুকুর পাড়ে গিয়ে আগে থেকে বসে থাকলেও আমরা বলতে পারবো না যে কে ভাল আর কে মন্দ! আমরা শুধু এইটুকুই বলতে পারবো যে কোন ব্যক্তিটি সবার আগে পুকুর পাড়ে এসেছে। ভাল আর মন্দকে চিনতে হলে দুজন ব্যক্তির চলাফেরা, কথা বার্তা উপলব্ধি করে তবেই না বোঝা যাবে কোন ব্যক্তিটি ভাল এবং কোন ব্যক্তিটি খারাপ। গল্পটা এমনি শোনালাম, এবার আসি মুল প্রসঙ্গে, হ্যা, ঈশ্বর লুকোচুরী খেলছেন, আর সেটা হলো তিনি আছেন আবার তিনি নেই। পৃথিবীতে মানুষ দুই ভাগে বিভক্ত, এক ঈশ্বর আছে আর অন্যরা ঈশ্বর নাই এই বিশ্বাসে। কিছু মানুষ আবার মধ্যপন্থায় আছে, এই পন্থিরা মহাশুন্যে অবস্থান করেন, অর্থাৎ এরা জমিনেও বাস করেন না আবার আসমানেও বাস করেন না।
পেটের জ্বালায় চোর চুরি করতে গেলে মনিবের হাতে ধরা না পরার জন্য মনে মনে প্রার্থনা করেন সেটা তার ঈশ্বরের কাছেই হয়ত, আবার সেই বাড়ির মনিবও তার সম্পদ চুরি না হবার জন্যও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করে যেন তার সম্পত্তি চুরি না হয়। ঈশ্বর তখনই ঈশ্বর হয়ে উঠে চোর যখন চুরি কার্য সম্পাদন করে বাড়ি ফিরে বাচ্চাদের মুখে দুটো ভাত তুলে দিতে পারেন আর মনে মনে ধন্যবাদ জানান তার ঈশ্বর কে, পক্ষান্তরে মনিবের কাছে ঈশ্বর হয়ে উঠেন ভিলেন। আবার মনিবের কাছে ঈশ্বর তখনই ঈশ্বর হয়ে উঠে যখন চোর ধরে মনিব তার সম্পদ রক্ষা করতে পারে, ধরা পড়ার পর আবার সেই চোরের প্রার্থনা না শোনার জন্য সেই ঈশ্বরই তার কাছে হয়ে যায় ভিলেন।
ঈশ্বর তেমনই যেমন বাতাস। এইটা অনুভব করা যায় কিন্তু দেখা যায় না। বাতাস যেমন কখনো গরম আবার কখনো শীতল অনুভব হয়। ঈশ্বর এক অনুভুতির নাম! এই অনুভুতি কারো জাগতে পারে আবার কারো নাও জাগতে পারে। জোড় করে এই অনুভুতি কাউ কে জাগানোর কি প্রয়োজন! ঈশ্বর আছে কি নাই এ নিয়ে দুই মতবাদের মানুষের দুনিয়াতে দাঙা ফ্যাসাদ বাধানোর কোন প্রয়োজন নাই। যারা দাবী করে ঈশ্বর আছে, তারা সেই বিশ্বাস নিয়ে থাকুক, আর যারা দাবী করে ঈশ্বর নাই, তাদের উচিত যার অস্তিত্বই নাই তাকে প্রমাণ করার কি আছে? অথচ তারা ঈশ্বর নাই এইটা প্রমাণেই ব্যস্ত! উভয় পক্ষ এবং মধ্যপন্থার এই পৃথিবীর শ্রেষ্ট প্রানীদের উচিত আগে মানুষ হয়ে উঠা, তাহলে ঈশ্বর থাকুক বা না থাকুক, এই পৃথিবী হবে একমাত্র মানুষের পৃথিবী! সেখানে না হয় অদৃশ্য ঈশ্বর লুকোচুরি খেলছে খেলুক, আর সে খেলায় মাটির মানুষের অদৃশ্য ঈশ্বরের অস্তিত্ত্বের প্রমাণ নিয়ে যুক্তি তর্ক, হাঙ্গা, দাঙ্গা, খুনোখুনি বোকামী ছাড়া কিছুই না!

/ সরকার পল্লব

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.