নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানার আছে অনেক কিছু, শিক্ষা নিবে কতজন?

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition)

সবার জন্যে শিক্ষা। আমার জন্যে তো বটেই। নিজে আগে শিক্ষা নিয়ে আরেকজনের মাঝে তা ছড়িয়ে দেওয়া...এটাই থাকবে আমার লেখাগুলোর উদ্দেশ্য।

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) › বিস্তারিত পোস্টঃ

সরাইখানা চিনে যে জন, ঘরের পথে ধাবিত সে মন

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৪



সরাইখানায় কখনো গিয়েছেন কি? কত রকম মদই না সেইখানে পাওয়া যায়! কি তাদের রঙের বাহার, আকৃতি আর স্বাদ! কোন কোনটা বুদ্ধির ক্ষিপ্রতাসম, কোনটা যেন গল্পের এক একটি সুড়ঙ্গ, আবার কোনটা আত্মার গান রাখার আলমিরা বিশেষ।

মানুষ হয়ে জন্ম নেওয়ার অর্থ হচ্ছে- সেই জায়গায় প্রবেশ করা যেখানে হরেক রকমের আকাঙ্খা পূরণ করা হয়। অহংবোধ নামক আঙুরের বহিরাবরণ যখন ভেঙ্গে পড়ে, শুধু তখনই নতুন কোন কিছু তাতে ভরা যায়। পঁচিয়ে কোন কিছু তৈরী করা একটি ফলপ্রসূ পদ্ধতি, আর তা যে কোন মানুষের রূপান্তরিত হওয়ার অনেক পুরোনো একটি চিহ্ন।

যখন আঙ্গুরের রস একত্রিত করে কোন অন্ধকার জায়গায় কিছু দিন রেখে দেওয়া হয়, এর ফলাফল হয় অসাধারণ। এর কারণেই এক মাতালের সাথে আরেক মাতালের দেখা হয়, কিন্তু, কেউ কাউকে চিনতে পারে না। আসলে, সরাইখানার উত্তেজক দ্বিধা আর অর্ধ-পরিস্ফুট চাহিদার রাজ্যে 'তুমিত্ব' বলে কিছু থাকে না, সবই 'আমি'-তে একাকার হয়ে যায়।

কিন্তু, সরাইখানায় কিছুক্ষণ থাকার পর, হঠাৎ করেই 'এ আমি কোথায় এলাম' জাতীয় ভাবনার উদ্রেক হয়, মাতালের মনে তখন নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার তাগাদা জাগে। সেই ভাবনা তাকে বাড়ির দিকে ধাবিত করে।

কোরআন বলে- ''আমরা সবাই ফিরে যাবো।'' সরাইখানা হচ্ছে সেই মহিমান্বিত নরক যেখানে মানুষ ক্ষণিকের জন্যে মৌজ-মাস্তি করে আর ভোগান্তির শিকার হয়, তারপর, সেইখান থেকে ঠেলে বের করে দেওয়া হয় সত্য পথ খুঁজে নেওয়ার জন্যে। সরাইখানা খুবই ভয়ংকর একটি জায়গা, যেখানে মাঝে মাঝে নিজেকে অদৃশ্য হয়ে রাখাটা খুব জরুরী। কিন্তু, সাবধান! এমনকি সেই অবস্থাতেও কক্ষনো নিজের হৃদয়কে লুকিয়ে রাখবে না। সকল সময় নিজেকে পরিবর্তনের জানালা খুলে রাখবে।

আঘাত পেয়ে ভেঙ্গে পড়া, পথে ডুকড়ে কেঁদে উঠার মাধ্যমে মানুষ নিজেকে সরাইখানায় আবিস্কার করে। আর সেইখান থেকেই মানুষের আত্মা তার বাড়ির পথটি খুঁজে নেয়। ।



এখন সকাল ৪টা বাজে। নাসরুদ্দিন সরাইখানা ছেড়ে বের হয়ে শহরের অলিতে-গলিতে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাকে এভাবে চলতে দেখে এক পুলিশ থামিয়ে বললো- ''তুমি মাঝরাতে এভাবে কেন শহরের রাস্তায় ঘুরছো?''

''জনাব'', নাসরুদ্দিনের উত্তর, ''আমি যদি এই প্রশ্নের উত্তরই জানতাম, তবে সেই কখন ঘরে গিয়ে পৌছে যেতাম!''



সারাটা বেলা আমি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াই, আর রাতেও সেই কথাই বলি-
কোথা হতে আমার এখানে আসা আর কি কাজেই বা আমি এথায় ঘুরে চলি-
তা জানা নেই আমার।
আমার আত্মা কোন মহাজাগতিক জায়গা হতে আনা-
তা স্বীকারে নেইকো কোন মানা-
সেথায় হবে গন্তব্য সবার।

এই মত্ততা শুরু অন্য কোন সরাই থেকে-
সেথা যবে ফিরে যাবো এ ধরায় চিহ্ন এঁকে-
প্রশান্ত হবে যে এ মন।
আমি যেন অন্য মহাদেশের কোন এক পাখী-
এসে বসেছি পক্ষীশালায় বন্ধ করে দু'আঁখি-
সময় বয়ে যায় হয়ে নির্জন।

উড়ে চলে যাবার সময় তো আসছে হেঁকে-
কাছে এসে শুনাবে আমার কথা- সে কে?
বলবে কথা আমারি মুখ দিয়ে?
কে সে যে দেখবে আমার চোখে
কি বা সে আত্মা যে আমার দিকে ঝুকে?
করি এ আলাপ প্রশ্ন শুধিয়ে।

যদি পেতাম কোন দিন এর উত্তর-
মত্ততার এ বেড়াজাল ভাংতাম সত্বর-
আসিনি এথায় নিজ ইচ্ছে প্রয়োগে।
পারবো না চলে যেতে যেভাবে এসেছি
যার মহান হাতে নিজেরে সঁপেছি-
ঘরে নিবেন তিনি মোর জীবন বিয়োগে।

এই কাব্য, আমি কি জানতাম তা আমায় বলতে হবে কভু?
আমি এর পরিকল্পক নই, তা জানেন সদা প্রভু,
মন থেকে তা মোর জানা।
যখন আমি বাইরে কোথাও যাই-
এই কথাগুলো কখনো না শুনাই-
শান্তির বাণী হয় না অচেনা।


++++++++++++++
মহান দার্শনিক শেখ রুমী'র লেখা অবলম্বনে
++++++++++++++++++++++++++

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৬

রাজীব নুর বলেছেন: বইয়ের নেশা ছাড়া আর কোনো নেশাই আমার পছন্দ না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.