নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার পরিচয় একজন ব্লগার, আমি সাহসী, আমি নির্ভীক, আমি আপোষহীন । যা বিশ্বাস করি তাই লিখি তাই বলি ।
আজকাল একটা বিষয় মাথা চাড়া উঠেছে । ব্লগে ফেসবুকে বারবার চোখে পড়ছে বিষয়টা । তাই ইচ্ছে হলো, দু'কলম লিখতে । বিষয়টি হচ্ছে নাস্তিকবাদ বা নিরীশ্বরবাদ।
আজ সকালে আমার অনেক পুরানো এক বন্ধু আমার অফিসে এসে হাজির । আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য। ছোট বেলার বন্ধু । একসময় জানি দোস্ত টাইপের ছিল । সময়ের স্রোতে ভেসে গেলেও শ্যাওলার মতো আবার ফিরে এসেছে । প্রকৃত বন্ধুরা এমনই হয়, ভেসে যায় আবার ফিরে আসে । আবার ভেসে যায় । এটা থামে না । এমন কি মৃত্যুর পরেও এরা স্বপ্নের মধ্যে এসে দেখা দেয় । ওকে দেখে আমি যতোটা না অবাক হয়েছি তার চেয়েও বেশি অবাক হয়েছি ওর বেশভূষা দেখে । পোশাক আশাকে মালিন্য বেশ লক্ষণীয় । সাধারণত আমার সঙ্গে কেউ দেখা করতে এলে তাকে আমি বেশিক্ষণ অপেক্ষায় রাখি না । কিন্তু আজ নাজমুলকে বেশ কিছুক্ষণ বসতে হলো । যেহেতু আজ আমার বোর্ড মিটিং ছিল ।
আমি রিসিপশন থেকে ওকে আমার রুমে এনে বসালাম । ইচ্ছে করছিল জড়িয়ে ধরি কিন্তু সময়ের অভাবে কিছু করতে পারছিলাম না । বোর্ড মিটিং এমডি,ডিএমডি সবাই উপস্থিত থাকবেন তাই আমাকেও উপস্থিত থাকতে হবে । নিজের আবেক নিজের ভেতরে চেপে রেখে বললাম, তুই বস আমি মিটিং শেষ করে আসি । নাজমুল বলল, আমি নাস্তা খেয়ে আসিনি । আমি তা হলে নাস্তা করে আসি । আমি বললাম, না দাড়া, এখানেই নাস্তা কর । আমি আমার অফিস সহকারীকে টাকা দিয়ে বললাম, স্যারকে নাস্তা এনে দাও । চা দাও । আমি মিটিং শেষ না করা পর্যন্ত ও বসবে । মিটিং শেষ হতে দু'ঘণ্টা লাগল । এসে দেখি , নাজমুল সোফায় ঘুমাচ্ছে । আমি ওকে জাগালাম না হাতের কাজগুলো শেষ করতে লাগলাম ।অনেক দিন পর হারানো বন্ধূকে পেয়েছি অফিস থেকে বের হয়ে যাবো । সারা দিন ঘুরবো । আরো কয়েক বন্ধুর ওখানে হামলে পরবো । বারবার ফিরে যাচ্ছিলাম শৈশব,কৈশোরে । নানান স্মৃতি আমায় নাড়িয়ে দিয়ে যাচ্ছিল । এই যে নাজমুলকে এতদিন পেলাম । এটা কি আজ সকালেও ভেবে ছিলাম । নাজমূল হঠাৎ করেই হারিয়ে গিয়েছিল । হারিয়ে গিয়েছিল না বলে যদি বলি পালিয়ে গিয়েছিল তা হলে ভাল বলা হয়।
নাজমূলের অন্য একটি পরিচয় আছে, সেটি ও লুকিয়ে রাখে । আমরা ঘনিষ্ঠ কয়েকজন বন্ধু শুধু জানতাম ব্যাপারটা । ওর পরিচয় হচ্ছে ও একজন নাস্তিক । ও ঈশ্বর বা স্রষ্টায় বিশ্বাস করে না । আমি করি আমরা মানে আমার অন্যান্য বন্ধরা করি । নাজমুল ঈশ্বর বা স্রষ্টায় বিশ্বাস করে না এটা ছিল ওর পারসোনাল ব্যাপার । নাজমুল ভালবাসত এরি নামের এক খৃস্ট্রান মেয়েকে । এরি অন্যত্র বিয়ে থা করে সংসার করছে । একবার শুনেছিলাম দু'বাচ্চার মা ।
ইউনিভার্সটিতে পড়ার সময় কি করে যেন এক, কান দু'কান হতে হতে অনেকেই যেনে গিয়েছিল যে, নাজমূল নাস্তিক । যখন হুমায়ূন আজাদ স্যারের উপর হামলা হলো । এর পর নাজমুলের উপড়েও বেশ কয়েকবার হামলা হয়েছিল । তবে অবশ্যই সেটা আমাদের সামানে নয় । সে সময় নাজমুল সপ্তা-খানেক আমার বাসায় লুকিয়ে ছিল । আমার ছোট ছোট বোনেরা নাজমুলকে দূর থেকে দেখতো , ইস্কুলে ওকে নিয়ে গল্প করতো । আমাদের বাড়িতে একজন নাস্তিক থাকে ।
Atheism বা নিরীশ্বরবাদ, নাস্তিকতাবাদ এর কথা আমি প্রথম শুনি নাজমূলের মুখে । নাস্তিকবাদ একটি দর্শন যাতে ঈশ্বর বা স্রষ্টার অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয়না এবং সম্পূর্ণ ভৌত এবং প্রাকৃতিক উপায়ে প্রকৃতির ব্যাখ্যা দেয়া হয়। নাস্তিক্যবাদ বিশ্বাস নয় বরং অবিশ্বাস এবং যুক্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। বিশ্বাসকে খণ্ডন নয় বরং বিশ্বাসের অনুপস্থিতিই এখানে মুখ্য । যদিও যুক্তিগুলো আমার কাছে গ্রহণযোগ্য বলে কখনওই মনে হয়নি ।
ইংরেজি ‘এইথিজম’(Atheism) শব্দের অর্থ হল নাস্তিকক্য বা নিরীশ্বরবাদ। এইথিজম শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে গ্রিক ‘এথোস’ শব্দটি থেকে। শব্দটি সেই সকল মানুষকে নির্দেশ করে যারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই বলে মনে করে এবং প্রচলিত ধর্মগুলোর প্রতি অন্ধবিশ্বাস কে যুক্তি দ্বারা ভ্রান্ত বলে প্রমাণ করে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে সর্বপ্রথম কিছু মানুষ নিজেদের নাস্তিক বলে স্বীকৃতি দেয়। ।
নাস্তিকরা কোন বিশেষ মতাদর্শের অনুসারী নয় এবং তারা সকলে বিশেষ কোন আচার অনুষ্ঠানও পালন করে না। অর্থাৎ ব্যক্তিগত ভাবে যে কেউ, যে কোন মতাদর্শে সমর্থক হতে পারে,নাস্তিকদের মিল শুধুমাত্র এক জায়গাতেই, আর তা হল ঈশ্বরের অস্তিত্ব কে অবিশ্বাস করা । একবিংশ শতাব্দীতে কয়েকজন নাস্তিক গবেষক ও সাংবাদিকের প্রচেষ্টায় নাস্তিক্যবাদের একটি নতুন ধারা বেড়ে উঠেছে যাকে "নব-নাস্তিক্যবাদ" বা "New Atheism" নামে ডাকা হয়। এরাই এখন নাস্তিকবাদ নিয়ে ফেসবুক,টুইটার আর ব্লগে নাড়াচাড়া করছে ।
নাস্তিকবাদের ভিত্তি হচ্ছে ঈশ্বর বা স্রষ্টার অস্তিত্বকে অবিশ্বাস করা । কিন্তু নাস্তিকবাদের কোথাও নেই যে, এক জন নাস্তিক কোন আস্তিককে গালাগালি করবে । কিংবা ঈশ্বর বা স্রষ্টার ব্যাঙাত্তক উক্তি বা হাসি তামাশা করবে । কিন্তু বাস্তবে তাই হচ্ছে যে, ক'জন নামধারী নাস্তিক ফেসবুক বা টুইটারে কিংবা ব্লগে রয়েছে তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে । অন্যের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করা । বিশেষ করে মুসলমানদের এরা বিশেষ কোন কারণে টার্গেট করে নিয়েছে ।
নাজমুলকে আমি কখনও দেখিনি অন্যের বিশ্বাসে আঘাত করে কোন কথা বলতে ্ বা নিজের বিশ্বাসকে অন্যের উপরে চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করতে । মানুষ হিসাবে সবার নিজ নিজ মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে । কিন্তু অন্যের বিশ্বাসে আঘাত করার কোন অধিকার নেই । অবশ্য ঢাকা ইউনিভারসিটির এক স্যার বলতেন, নাস্তিকদের সুবিধা অনেক । যেহেতু আইন নাই সেহেতু তা ভঙ্গের ভয়ও নাই । সুতরাং নিজের বনে নিজেই রাজা । ইচ্ছে হলে মদ খাও আবার ইচ্ছে হলে নারী নিয়ে শুয়ে থাক । সে বেশ্যা হলেও কোন ক্ষতি তো নেই আবার রাণী হলেও আপত্তি নেই । যে অন্যের বিশ্বাসকে যে মূল্যায়ন করে না সে নিজের বিশ্বাসেরও ধার ধারে না । এ ধরনের বিশ্বাস সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভেঙ্গে পরে ।
.............চলবে
১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:৪৮
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: পশ্চিমের দেশগুলোতে নাস্তিকদের সাধারণ ভাবে ধর্মহীন বা পরলৌকিক বিষয় সমূহে অবিশ্বাসী হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু বৌদ্ধ ধর্মের মত যেসব ধর্মে ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হয় না, সেসব ধর্মালম্বীদেরকেও নাস্তিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিছু নাস্তিক ব্যক্তিগত ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা, হিন্দু ধর্মের দর্শন, যুক্তিবাদ, মানবতাবাদ এবং প্রকৃতিবাদে বিশ্বাস করে।
২| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫১
মুদ্দাকির বলেছেন: লেখাটা চলুক, জানতে চাই
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৩৬
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ইনশাল্লাহ্ বাকিটা লিখে ফেলবো কিছু তথ্যের জন্য পড়াশুনা করছি ....
৩| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১২:১৫
এরিক ফ্লেমিং বলেছেন: ইদানিং যারা নিজেদের নাস্তিক বলে পরিচয় দিচ্ছে বা কথায় লেখায় আচরনে বুঝাতে চেষ্টা করছে যে তিনি একজন সম্মানিত নাস্তিক তারা আসলে নাস্তিকতা বিষয় টা বোঝে বলে আমার মনে হয় না। অনেকে এটাকে হালের ফ্যাশন মনে করছে। এরা মনে করে ধর্মের অনুশাসন না মানা, ধর্মাচার কে অবজ্ঞা করা, ধর্ম গ্রন্থ এবং প্রবর্তক কে নিয়ে হাসি-তামাসা করা, কিছু ত্রুটিপূর্ণ মানুষ বা গোষ্ঠীকে দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট ধর্ম বিশ্বাসী সবাই কে কটূক্তি করাই বোধ হয় নাস্তিকতা! এবং এরা করছেও তাই।
একজন মুসলমানের গলায় সাইনবোর্ড লাগানোর দরকার হয় না, আমি একজন মুসলমান।
একজন সনাতন ধর্মালম্বীরও সাইনবোর্ড লাগে না।
একজন খ্রিস্টান বা একজন বৌদ্ধেরও লাগে না।
কিন্তু একজন নাস্তিকের সাইনবোর্ড লাগে। একজন নাস্তিককে বার বার বলতে হয় আমি আল্লাহ, ভগবান, ঈশ্বর কে বিশ্বাস করি না। যে স্রষ্টা আমাকে সৃষ্টি করেছে তাকে আমি বিশ্বাস কার না।
ধর্মের অনুশাসন না মানা, ধর্মাচার কে অবজ্ঞা করা, ধর্ম গ্রন্থ এবং প্রবর্তক কে নিয়ে হাসি-তামাসা করা, কিছু ত্রুটিপূর্ণ মানুষ বা গোষ্ঠীকে দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট ধর্ম বিশ্বাসী সবাই কে কটূক্তি করা এগুলো নাস্তিক দাবীকারী দের সাইনবোর্ড।
আসলে এরা কেউই নাস্তিক নয়! নাস্তিক হওয়া অত সহজ না।
("নাস্তিক হওয়া অত সহজ না" - এ বিষয়ে আরেক দিন লিখবো)
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ সকাল ১১:০৯
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: ইদানিং যারা নিজেদের নাস্তিক বলে পরিচয় দিচ্ছে বা কথায় লেখায় আচরনে বুঝাতে চেষ্টা করছে যে তিনি একজন সম্মানিত নাস্তিক তারা আসলে নাস্তিকতা বিষয় টা বোঝে বলে আমার মনে হয় না।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:১৪
সরদার হারুন বলেছেন: শেষ করুন । পরে কথা হবে। তবে আমি যতদূর জানি নাস্তক্যিবাদের প্রচলন
করেন গ্রীকের এপিকিউরিয়াস এবং এয়িার বুদ্বদেব।
অবশ্য নেপালের বুদ্বরা পরবর্তিতে এক আদি বুদ্বএর ধারনা করেন
কিন্তু শ্রীলংকার বুদ্বরা এখনও প্রকার অন্তরে নাস্তক।