![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
স্বপ্ন দেখি , কার্টুন আকিঁ আর বিশ্বাস করি আমার দেশের সব সম্ভবনা শেষ হয়ে যায়নি
দেশের সফটওয়্যার খাতের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিসেসের (বেসিস) ২০১৬-১৯ মেয়াদে কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন হবে আগামী ২৫ জুন। এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন সোনিয়া বশির কবির। তার এই নির্বাচনকে কেন্দ্র একটি মহল নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত। তারা সুকৌশলে ব্যক্তি সোনিয়া বশির কবিরের পরিচয় এবং অর্জনগুলোকে সরিয়ে রেখে শুধু 'মাইক্রোসফটের এমডি'র পরিচয় কে তুলে ধরে অপপ্রচার করছে, বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
এ দেশের কর্পোরেট সেক্টর বহুজাতিক কোম্পানিগুলোতে ভারতীয়-পাকিস্তানি সিইও-এমডি দেখের অভ্যস্ত। একজন স্বদেশী নারীকে এ পদে দেখে অনেকেই পকশ্রিকাতরতায় ভুগেছেন। আর আজ যখন সেই নারী বেসিসে একটি প্যানেলে নেতৃত্ব দিচ্ছে অনেকেরই পুরুষত্বে আঘাত এনেছে। তারা তখন সমস্বরে জাত গেলে বলে চেঁচাচ্ছে।
তারা বিপক্ষে যারা ভোট করছে তারাই কিন্তু মাইক্রোসফটকে বেসিসের সদস্য পদ দিয়েছে। সেই গোষ্ঠীই ছিল এক্সিকিউটিভ কমিটিতে। যে ভোট দিতে পারে সেই ভোট করতে পারে - এমনই রয়েছে বেসিসের গঠনতন্ত্রে। এতদিন মাইক্রোসফট প্রতিনিধি ভোট দিয়ে এসেছে তখন কোন কথা হয়নি। ভোটে দাঁড়াতে গেলেই সব গেল গেল হৈ হুল্লোড় - মাইক্রোসফটের এমডি নির্বচন করে!
বেসিসের নির্বাচনে ব্যক্তি সোনিয়া বশির কবির নির্বাচন করছেন। মাইক্রোসফট নয়। ভোট দেয়া হবে সোনিয়া বশির কবিরকে। তার প্রতিষ্ঠানকে নয়। ব্যালটে সোনিয়া বশির কবিরের নাম থাকবে, তার কোম্পানির নাম নয়। যার তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ভাবছে - এই বেনিফিট নিয়ে জিতবে। তারা মস্ত বড় ভুল করছে। ভোটাররা ভোট দেয়ার সময় দেখে প্রার্থীর ব্যাকগ্রাউন্ড, তার ক্যাপাসিটি, সে যে কথা বলে নির্বাচন করছে। এটা বাস্তবায়ন করার ক্ষমতা। তার যোগ্যতা আছে কি না। এ সব দেখে। সে কোন কোম্পানির সেটা নয়।
বেসিসের এমডিকে কর্মকর্তা ধরলে। ভোটারদের মধ্যে ৩০-৫০ জন রয়েছে যারা তাদের কোম্পানিকে রিপ্রেজেন্ট করে। এখন যে ধরণের হুইপ তোলা হচ্ছে এরা কি তাহলে আলাদা? ইক্যুয়াল সদস্য না?
সফটওয়ার ইন্ডাস্ট্রি একটা গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রি। লোকাল ইন্ডাস্ট্রি আর লোকাল মার্কেট বলে গেলে দিনদিন পিছিয়েই পড়তে হবে। বেসিসের সদস্য সামহোয়্যার ইন ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা আরিল্ড ক্লোক্কেরহৌগ নরওয়ের নাগরিক। তিনি ভোট দিচ্ছেন কোন কথা নেই! কাল যদি তিনি বেসিসের নির্বাচনের কথা বলেন তখন দেখা যাবে অনেকের 'স্বদেশ প্রেম' উথলে পড়বে - বিদেশি বিদেশি বলে লাফিয়ে উঠবে। বেসিসের একাধিক সদস্য রয়েছে যারা দৈত্বনাগরিক - তখন গল্প ফাঁদবে এতো বিদেশেই থাকে কি করবে! এতই দেউলিয়া হয়ে পড়েছে আমাদের কর্পোরেট দুনিয়া? যে এক জন সফল ব্যক্তিকে আটকানোর জন্য এরকম ফালতু যুক্তি দিয়ে চিল্লাচিল্লি?
দেশের আইটি সেক্টরে সোনিয়া বশির কবির তো নতুন কোন নাম নয়। নিজ নামেই খ্যাত। বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। চাকরি করছেন সিলিকন ভ্যালিতে। দেশে ফিরি নিজের স্টাটআপ শুরু করেছেন। আজ যেখানে ৪০+ ইন্জিনিয়ার কর্মরত। বিশেষ মহলের লোকগুলোর সোনিয়া বশিরের সাথে পরিচয় কিন্তু সেই কম্পানির সুত্র ধরেই। অথচ সেই তথ্য ভুলে যাওয়ার ভান করে মাইক্রোসফটের নামে জুজুবুড়ির ভয় দেখাচ্ছেন বেসিসের ভোটারদের। দেখার কি কেও নেই? বুঝার কি কেও নেই? জাত গেল দেশ গেল বলে যারা চিলের পেছনে দৌড়াতে বলেছে। তারা কি বুঝতে না - চোখ মেললেই তো দেখা যায় মাইক্রোসফটের এমন কোন প্রডাক্ট নেই যা আমাদের দেশিয় সফটওয়ার শিল্পের জন্য হুমকি। কেও কি দেখাতে পারবে মাইক্রোসফটের জন্য দেশিয় প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসা হারাচ্ছে! মাইক্রোসফটের ইউন্ডোজ আর অফিস দেশের কোথায় ব্যবহার হয় না! যারা আইটি সেক্টরে আছে তারা নিশ্চয় ডেভেলপার স্টুডিও উপকারিতা অস্বীকার করবে না?
ফিরে আসি মুল প্রসঙ্গে- সোনিয়া বশির কবির কে যারা 'মাইক্রোসফটের এমডি'র নামে নেগেটিভ ব্রান্ডিং করছে তারা কি ভাবে অস্বীকার করছেন তিনি আসার পরে এই বহুজাতিক কোম্পানিটির সামাজিক কার্যক্রমের কথা। তিনি আসার আগে কোম্পানিটি শুধু লাইসেন্স বিক্রি নিয়েই ব্যস্ত ছিল। তার আস পর থেকে কোম্পানিটির সোশ্যাল এক্টভিটি বেড়ে গেছে। আমার মুখের কথা না শুনে, একটু গুগল করে দেখে নিন। তিনি মাইক্রোসফটের দায়িত্ব পাওয়ার পরে কি কি উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করছেন। তার ইনটেনশন দেখে পরিষ্কার বোঝা যায় তিনি মাইক্রোসফটে কাজ করের দেশের জন্য কিছু করার তাগিদে। আজ তিনি জাতিসংঘে প্রতিনিধিত্ব করছেন বাংলাদেশের হয়ে, মাইক্রোসফটের হয়ে নয়।
ব্যক্তি সোনিয়া বশির সম্পর্কে যতটুকু জানি বেসিস থেকে তার নেয়ার কিছু নেই। তার অভিজ্ঞতা-প্রজ্ঞা-নেতৃত্ব ভীষণ প্রয়োজন এই শিল্পের জন্যে। বেসিস একটা জায়গায় এসে পৌঁছেছে। এখন এই ট্রেড বডিকে আরো অনেক দুর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার দরকার। যার জন্য সোনিয়া বশির কবিরের চেয়ে এই মুহূর্তে আর কোন বিকল্প নেই।
বেসিসের ভোটাররা বিজ্ঞ। শিক্ষিত লোকের সাধারন গুনাবলিতে সরল মনের। তাদের হয়ত সাময়িক ভাবে বিভ্রান্ত করা যাবে। কিন্তু দিন শেষে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন।
©somewhere in net ltd.