![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের ভাল লাগা থেকে লিখতে পছন্দ করি। আপনার ভাল লাগবে_এই উদেশ্যে লিখি না।
ভইরা দে, ঢুকাইয়া দে, সান্ধাইয়া দে, বাঁশ ভরে দে, বালাৎকার করে দে, এইগুলা মোটা দাগের পুরুষতান্ত্রিক ভাষা। আমাদের দেশের পুরুষরা তো বটেই, শিশুকিশোর এমনকি নারীরাও নানা ভাবে এই ধরণের ভাষা নিজের অজান্তে ব্যবহার করে নারীর প্রতি সহিংসতা এবং পাশবিকতায়
নিজেদের ভূমিকা রাখেন। এমনকি, শিক্ষিত নারীরাও যখন একই ভাষা ব্যবহার করেন, তখন অবাক হতে হয়। আমাদের শিক্ষার অবস্থা এতটাই করুন কেন? নারী নিজেই নিজের শত্রুতে নিজের অজান্তেই কীভাবে পরিণত
হল?
সাধারণত যৌন সম্পর্কের সময় পুরুষ তার
পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করায়। এটা কোন বিশাল মহৎ ব্যাপার নয়, খুব সাধারণ শারীরিক কাজ। এতে গর্বিত বা লজ্জিত হবার মত কিছু নেই। নারীও
পুরুষাঙ্গ গ্রহণ করে, তাতেও গর্বিত বা লজ্জিত হবার মত আদৌ কিছু নেই। পুরো ব্যাপারটা পারস্পরিক বোঝাপড়ার, সমঝোতার, প্রেমের, আদান প্রদানের। প্রেমময় শারীরিক সম্পর্কে নারী
পুরুষের এই আদান প্রদান হবার কথা পারস্পরিক সম্মান এবং মর্যাদা অটুট রেখে। এতে কারো মর্যাদা হানী হচ্ছে না, কারো সম্ভ্রম চলে যাচ্ছে
না। কিন্তু যৌনতা সম্পর্কে আমাদের যেই ধারণা ছোটবেলা থেকে দেয়া হয়, তাতে মনে হয়, পুরুষ এখানে খাদক এবং নারী হচ্ছে তার খাদ্য। সম্পর্কটা ভোক্তা এবং পণ্যের। মনে হয়, পুরুষ
কাজটিতে আনন্দ পায় এবং নারী পায় কষ্ট। পুরুষ এখানে আধিপত্য বিস্তার করে, দখল করে, ভোগ করে, আর নারী সেখানে নিজেকে, নিজের সম্ভ্রমকে সমার্পন করে। পুরুষ এখানে গৌরব বোধ করে, আর নারী এখানে অসম্মানিত হয়।
ব্যপারটা এমন হবার কথা ছিল না। এ কারণেই ক্রিকেট খেলায় ভারতের পরাজয়ে উল্লাসের ভাষা এমন থাকে যে, ভারতকে ভরে দেয়া হয়েছে, ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ভারত
এখানে নারীর মতই অসম্মানিত হয়েছে। তার ইজ্জত নষ্ট হয়েছে। তার সর্বস্ব খোয়া গেছে। অথচ এমন হবার কথা ছিল না। নারী পুরুষের যৌন সম্পর্ককে এত কদর্য ভাবে দেখার কথা ছিল না।
যৌনতার পাশবিক চিত্রায়ন যৌনতাকে একটা ভয়াবহ ব্যাপার বলে চিহ্নিত করে।
ক্রিকেটে বাংলাদেশ জয়ী হয়েছে, এটা খুব ভাল ব্যাপার। কিন্তু উল্লাসের ভাষায় যখন এমন শব্দ ব্যবহৃত হয়, নারীর জন্য অবমাননাকর শব্দ থাকে, ব্যাপারগুলো আর এত সরল সহজ মজা থাকে না। খুব কৌশলে মনের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া
হয় পুরুষতান্ত্রিকতা। পুরুষের আধিপত্যের
কথা। শিশুকিশোর এবং নারীর মনে গেঁথে দেয়া হয়, যাদের ভরে দেয়া হচ্ছে, যাদের ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে, তারা খুব অসম্মানিত। তাদের ইজ্জত নষ্ট
হয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে কয়েক বছর আগেও
সিনেমায় যৌন সম্পর্ক দেখাতে গেলে দেখানো হতো শুধুই ধর্ষণ। চুম্বনের দৃশ্য সেন্সর করে দশ বারোটা ধর্ষনের দৃশ্য না থাকলে সেটা বাঙলা সিনেমা বলেই গণ্য হতো না। সেগুলো দেখে সিনেমা হলে উল্লাস করতো দর্শকেরা। এমনকি, নারীরাও ব্যাপারটাকে স্বাভাবিকভাবে নিতো। যৌনতা, শারীরিক সম্পর্ককে ধীরে ধীরে পাশবিকভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে নারীকে ক্রমশ
যৌনতা বিমুখ করে তোলা হয়। এখানে যৌনতা মানেই ঢুকিয়ে দেয়া, আঁচড়ে কামড়ে ক্ষতবিক্ষত করা, জোরপুর্বক ভোগ করা। ধর্ষণ, জোরাজুরি অথবা নারীর বিনা অনুমতিতে, বিনা ইচ্ছায় যৌন
সম্পর্ক। এতে নারীও ভাল মাত্রায় প্রভাবিত হয়। ছোটবেলা থেকে ধর্ষনের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে করতে বড় হয়। এতে মনে হয় নারীর কোন যৌন চাহিদা নেই। নারী একটি ভোগ্যার বস্তু, তার যৌন চাহিদা থাকা মানে সে অসম্মানিত। তাই নারী চায় তাকে কেউ জোর করে ভোগ করুক। ব্যাপারটা তার জন্য উপভোগের নয়। এখনো আমাদের দেশের নারীরা খোলামেলা ভাবে নিজেদের যৌন চাহিদার কথা প্রকাশ করতে পারেন না।
অর্থাৎ পুরো ব্যাপারটাই পুরুষের অধিকারভুক্ত,
এখানে নারীর ভূমিকা যৌন দাসীর চাইতে উন্নত কিছু না। তাদের কিছু থাকতে নেই।
আশ্চর্য হই, যখন বন্ধু তালিকার অজস্র নারী ভারতকে ভরে দিয়েছে, ঢুকিয়ে দিয়েছে, বাঁশ সান্ধাইয়া, বালাৎকার করে দিয়েছে বলে
উল্লাসিত হয়। তারা আসলে কিসের উল্লাস করে? ধর্ষণ, পাশবিকভাবে নারীর শরীরে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করিয়ে দেয়া, এগুলো কোন মহৎ বিষয় নয়। কোন পরম আকাঙ্ক্ষিত বিষয় নয়। এতে কারো গৌরব হয় না। কেউ অসম্মানিতও হয় না।
এসব বলে উল্লাস করা ধর্ষণকে মহৎ করে
তোলার, গৌরবময় করে তোলার মতই কদর্য
বিষয়।
Courtesy Mehedi bhai
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৯:৪৯
জনতার রায় বলেছেন: আপনি ভুল ধরেছেন - পুরুষাঙ্গ নয়, এখানে আইক্কাওয়ালা বাঁশের কথা বলা হয়েছে। এটা কেবল পুরুষের জন্যই প্রযোজ্য।
আমার জানা মতে আইক্কাওয়ালা বাঁশের শিকার কেবল পুরুশেরাই হয়