নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি হলাম ইচ্ছে ঘুড়ি মা ডাকেন যাদুর কাঠি বাবা ডাকেন মণি বুড়ি
একদিন কি কারণে যেন একজনকে বলতে শুনেছিলাম,
"আমি আজও লবণ আর চিনি মিশিয়ে ফেলি,লবণ ভেবে খাই চিনি,চিনি ভেবে লবণ।"
শুনে মনে মনে বলেছিলাম,
"ফাইজলামির আর জায়গা পায় না!"
# গত মাসে আমাদের এলাকার এক আন্টির বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম। দীর্ঘ ত্রিশ বছর ডায়াবেটিসে ভোগার কারণে আন্টির চোখে হালকা, পাতলা সমস্যা হয়।শরীরটাও মাঝে মাঝে হালকা পাতলা খারাপ হয়।বাদবাকি আন্টি পুরাই ফিট।জীবনটাকে যতটুকু উপভোগ করার,তিনি করেন।এক চুলও ছাড় দেন না।
আন্টির ড্রইং রুমে বসার সাথে সাথে, আন্টি অনেক উৎসাহ,উদ্দীপনা নিয়ে আমার কাছে একটা কাঁচের সাদা বাটি আর একটা চা চামচ নিয়ে ছুটে আসলেন।
বাটির মধ্যে পায়েস টাইপের কিছু হবে।দেখতে অনেক লোভনীয় হয়েছে।
আগের চেয়ে আরও দ্বিগুণ উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে আন্টি বললেন,
"একটা নতুন রেসিপি ট্রাই করছি, ইউটিউব দেখে।ক্যামন হয়ছে, দ্যাখত মা?"
আমিও দেরি না করে অতি উৎসাহের সহিত এক চামচ নাস্তা নিয়ে মুখে পুরে দিলাম।
এই মূর্খতা পূর্ণ কাজের জন্য আমার জিহ্বা,আলজিভ,গলা পেট সকলে মিলে আমাকে শত ধিক জানাল।
ঐদিকে আন্টির আর তর সইছে না মনে হয়।
জিজ্ঞেস করলেন,
"ক্যামন হইছে মা?মজা না?"
আমি কিছু বলতে পারলাম না।শুধু একটা ভদ্রতার হাসি দেয়ার চেষ্টা করলাম।কিন্তু, ঠিকঠাক মত মনে হয় হাসতে পারলাম না।
চেহারটা যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলাম,কিন্তু বিধি বাম। আয়না দেখার সুযোগ হয়নি,কিন্তু মনে হয়েছে, কেঁচোর গায়ে লবণ ছিটালে কেঁচো যেমন কুঁকড়ে যায় আমার চেহারাও অমন করে কুঁকড়ে যাচ্ছিল।
আমার চেহারার এই বেহাল দসা দেখে আন্টির ভ্রু কুঁচকে গেল। আমার কাছ থেকে বাটি কেড়ে নিয়ে ঐ চামচই না ধুয়ে তড়িঘড়ি ঐ অতি সুন্দর অখাদ্য,এক চামচ নিয়ে নিজের মুখে পুরে নিলেন।
আর যায় কই!
সাথে সাথে মুখে হাত দিয়ে বেসিনের দিকে দৌড় দিলেন।
মুখ মুছতে মুছতে ফেরত আাসলেন।মন খারাপ করে বললেন,
"সরি সরি মা, আমি চিনি আর লবণ গুলায়ে ফেলছি।আমার চোখটা এরকম ধোকা দিল আমাকে!"
মনে মনে বললাম
"ফাইজলামির আর জায়গা পায় না!"
মুখে বললাম,
"ইট্স ওকে আন্টি।ভুল ভ্রান্তিত মানুষেরই হয়।ব্যাপার না।
আপনি আবার ট্রাই করেন।ইনশাল্লাহ ভাল হবে।"
আমার কথা শুনে আন্টি আবার উৎসাহিত হলেন।
আমি সুযোগ বুঝে কেটে পড়লাম।
# বিয়ের আগে কেউ চা বানানোর কথা বললে আমার রাগে গা জ্বালা দিয়ে উঠত,কারণ আমি ভাল চা বানাতে পারতাম না।
বিয়ের পরে আমার হাজব্যান্ড থেকে খুব ভাল চা বানানো শিখেছি।এখন আমার চা মাশাল্লাহ খুব জনপ্রিয়।
কোন অতিথি বাসায় আসলে আমার চা না খেয়ে ফেরত যান না।আর চায়ে চুমুক দিতেই চোখটা বন্ধ করে সহসা খুলে তৃপ্তি সহকারে যখন বাহ্ শব্দটা আপনা আপনিই ওদের মুখ থেকে বেরোয়। শুধু ঐটুকুতে আমার তৃষ্ণার্ত মন পুরোপুরি ভরে না।
আরও কিছু শোনার জন্য জিজ্ঞেস করি,
কেমন হয়েছে?সব ঠিক আছে ত?"
উত্তর আসে,
অ-নে-ক ভাল হইছে।কিভাবে এত ভাল চা বানান আপনি?
কথাটা কানে যেতেই আমার কান+ মন প্রসন্নতায় ভরে যায়।
গত কয়েকদিন ধরে একটা বিশ্রী রোগে ভোগছিলাম।
আর তার জন্যে বোধহয় মস্তিষ্কেও হালকা পাতলা গোলযোগ হচ্ছিল।চোখেও মাঝে মাঝে ঝাপসা দেখছিলাম।
সেদিন এক দূর সম্পর্কের মামা আসলেন বাসায়।
সোফায় বসতে বসতে বললেন,
"সারমিন, তোমার হাতের চা না খেয়ে যাচ্ছি না,কিন্তু।
তোমার হাতের চা খেয়ে যতটা তৃপ্তি পাই,দুনিয়াতে আর কোথাও চা খেয়ে এত তৃপ্তি পাই না।এই দুনিয়াতে মনে হয় না তোমার চেয়ে ভালো চা কেউ বানাতে পারে।
শ্রুতি মধুর কথাগুলি শুনতে শুনতে মনে মনে বললাম,
আলবৎ!হতেই হবে।
মুখে বললাম,
কী যে বলেন না মামা! এত বাড়িয়ে বলার কি দরকার?"
বলেই চা বানাতে চলে গেলাম।
যত্ন করে দুধ গুলে অনেকক্খন যাবত দুধটাকে ঘন করে তাতে এক চিমটি লবণ, আর এক চামচ চিনি, এক চামচ চা পাতা দিয়ে বেশ খানিকক্ষণ চুলায় রেখে পারফেক্ট কালার আাসার পর মামার সামনে টা সহ চা পরিবেশন করলাম।
মামা খুব স্বযত্নে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে দুই তিনবার ফু দিয়ে চায়ে তার প্রথম চুমুকটা দিলেন।
সাথে সাথে অন্যদিনের মত চোখটাও ঠিকঠাক বুজলেন।কিন্তু বাহ্ শব্দটা বলতে বোধহয় ভুলে গেলেন।ঐদিকে আমার কর্ণদ্বয় কিছু একটা শোনার জন্যে উদগ্রীব হয়ে আছে।স্বভাবদোষে জিজ্ঞেস করে ফেললাম,
"চা কেমন হয়ছে মামা?"
মামা মনে হল হঠাৎ যেন বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন।
একটা ভদ্রতার হাসি দেয়ার চেষ্টা করলে, কিন্তু উনার মুখমন্ডল উনার সাথে ঠিকঠাক কোঅপারেট করছিল না।
উনি কিছু একটা বলার জন্যে আমার চোখের দিকে তাকালেন।
যথেষ্ট ভদ্রভাবেই তাকালেন।
কি বলবেন মনে হয় বুঝে উঠতে পারছিলেন না।
কিন্তু উনার চক্ষুদ্বয় আমার সাথে ভদ্রতা দেখায়নি।
মামা কিছু না বললেও তার চক্ষুদ্বয় খুব নিষ্ঠুর এবং স্পষ্টভাবে বলছিল,
"ফাইজলামির আর জায়গা পায় না!"
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৮:৫৭
ফারহানা শারমিন বলেছেন: হুম।সাময়িক আন্টি।পরে আবার আপু হয়ে গেছি।
২| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩১
চাঁদগাজী বলেছেন:
এখানে কোন বিচার, আচার কিছুই নেই, সামান্য জীবন-চক্র
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:১১
ফারহানা শারমিন বলেছেন: না ভাই শুধুমাত্র জীবন-চক্র না।ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি,না বুঝে কাউকে নিয়ে কোন কমেন্ট করেছি ত আল্লাহর পক্ষ থেকে এমন ধেতানি খেয়েছি।মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।শুভ কামনা রইল।
৩| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩৫
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: শেষে আপনিও চিনির বদলে লবন দিয়ে দিয়েছেন।
আপনার চায়ের গল্প শুনে আপনার হাতের চা খেতে ইচ্ছে করছে।
প্রথম কমেন্টকারী হিসেবে এক কাপ চা কি পেতে পারি?
এই পোষ্টটি দুবার এসেছে।একটি ডিলিস করে দিন।
ভাল থাকুন।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:১৭
ফারহানা শারমিন বলেছেন: অবশ্যই পারেন।কবে আসছেন বলুন।ঐটা ডিলিট করে দিয়েছি।মন্তব্যের জন্যে এবং লাইকের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।শুভ কামনা রইল।
৪| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:০৫
এমএ জব্বার বলেছেন: কেউ তো জানে না কখন যে কার কি হয়, জীবন তো বদলায় না শুধু বদলে যায় সময়। এটা যে সত্য কথা আপনার লেখা থেকে আরেক টা প্রমাণ মিললো। যাই হোক আপনি চা এ চিনির বদলে লবণ দিয়ে ফেললেও লিখনিতে কিন্তু পারফেক্ট মিষ্টি হয়েছে। ধন্যবাদান্তে অনলাইন শপিং স্বপ্নবাড়ী ডট কম
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:২২
ফারহানা শারমিন বলেছেন: আপনার মন্তব্যও আমার কাছে মিষ্টি লেগেছে।শুভ কামনা রইল।
৫| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:১৭
অাব্দুল্লাহ অাল কাফি বলেছেন: হাতপাকা হতে হলে আরও পড়তে হবে।প্রথমাংশ ভালো লাগে নি তেমনটা।দ্বিতীয়াংশ চলে।লিখতে থাকুন।থেমে গেলে চলবে না কিন্তু।সমালোচনাকে পজিটিভলি নেয়ার চেষ্টা করুন।শুভ কামনা রইলো।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:২৪
ফারহানা শারমিন বলেছেন: ধন্যবাদ। আপনার জন্যেও শুভ কামনা রইল।
৬| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:২৪
কামরুননাহার কলি বলেছেন: আপ্পি একদিন চা খাবো আপনার হাতের। খাওয়াবেন তো।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:২৮
ফারহানা শারমিন বলেছেন: অবশ্যই খাওয়াব।বাসায় আসেন।শুভ কামনা রইল।
৭| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১০:৪৮
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি অনেক দুষ্ট আছেন।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩৪
ফারহানা শারমিন বলেছেন: আপনিত আমার ফেমিলি মেম্বারদের মত বললেন। ওরা বলে আমার তিন বছরের ছেলের চেয়ে নাকি আমি বেশি দুষ্ট।মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।শুভ কামনা রইল।
৮| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ১১:০৯
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: মামা আর ভুলেও কোনদিন চা খাইতে চাইবেন না।
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪১
ফারহানা শারমিন বলেছেন: কেন খাবেনা! আফটার অল মামা বলে কথা। আর এমনিতেও আর কোন ধরনের ঝামেলা হবে না। লাল চিনি আনিয়েছি। মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইল।
৯| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২৬
অাব্দুল মান্নান বলেছেন: শেষ পর্যন্ত অাপনিও
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪৮
ফারহানা শারমিন বলেছেন: কি করব রে ভাই ভাগ্যের লিখন না যায় খন্ডন। মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইল।
১০| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:০০
পালক পালক বলেছেন: আপনার লিখা পড়তে গিয়ে হাসতে হাসতে শেষ। দারুন লাগলো
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৫১
ফারহানা শারমিন বলেছেন: আপনাকে আনন্দ দিতে পেরেছি জেনে ভাল লাগল। মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইল।
১১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৯:৩৫
কথাকথিকেথিকথন বলেছেন:
হা হা ! প্রকৃতি বুঝি আর ছাড় দিলো না !!
০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৫৫
ফারহানা শারমিন বলেছেন: নারে ভাই।দেখেন কত নিষ্ঠুর। মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইল।
১২| ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৪৬
কাতিআশা বলেছেন: খুব সাবলীল লেখা..মজা লাগলো!
১৩| ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৮:২২
ফারহানা শারমিন বলেছেন: পড়ার জন্যে এবং মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।শুভ কামনা রইল।
১৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৯
মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: আসলে কি একটু দেরীই হয়ে গেলো বুঝি এখনতো আর চা টা থাকবেন না। এবার মাথায় আর কোন গন্ডগোল না থাকুক। এতো সুন্দর করে যে লিখতে পারে তার এলোমেলো হওয়ার কথা না। যখনি চা খেতে আসবো তিতে বা মিঠে যে কোন চা হলেই হলো।
১৫| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৮
ফারহানা শারমিন বলেছেন: না।আপাতত মাথা ঠিক আছে।ভাল চা ই খাওয়াতে পারব ইনশাল্লাহ।পড়ার জন্যে এবং মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।শুভ কামনা রইল।
১৬| ২০ শে আগস্ট, ২০২০ ভোর ৪:৫৯
আনমোনা বলেছেন: চায়ে চিনি খাইনা। সুতরাং লবনও খাবনা।
লেখার শেষটা বেশ ভালো হয়েছে।
২০ শে আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১:৪০
ফারহানা শারমিন বলেছেন: খুব ভাল, তাহলে তো আর কোন চিন্তাই নেই। নিশ্চিন্তে চা খেতে পারেন। মন্তব্যের জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইল।
১৭| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ৭:২৭
কবিতা ক্থ্য বলেছেন: আপনার চা এর দাওয়াত কবে পাব?
অন্তত যারা এখানে কমেন্ট করলো তাদের সবাইকে একসাথে একবার চায়ের দাওয়াত দেয়া উচিত।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৫
ফারহানা শারমিন বলেছেন: আমি এক পায়ে খাড়া
১৮| ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২২ সকাল ১০:৪৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: গল্পের সাথে শিরোনামটা যথার্থ হয়েছে।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৫
ফারহানা শারমিন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। অনেক দিন পর আমার পোস্টে আপনার মন্তব্য পেলাম।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩১
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনিও তো আন্টি হয়ে গেলেন!