নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইচ্ছে থাকিলে উপায় হয়, আমার কেবল উপায় থাকিলেই ইচ্ছে হয়

শিস্‌তালি

Stay Hungry, Stay Foolish!Stay Sexy, Stay Virgin!!!

শিস্‌তালি › বিস্তারিত পোস্টঃ

নিষ্পাপী

০৫ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:২৫

সেলস মিটিংয়ে ঢুকলেই মোবাইল সাইলেন্ট করে দেয় আদনান। আজ মিটিং শেষ হবারও প্রায় মিনিট দশেক পরে মোবাইল পকেট থেকে বের করে দেখে ২০টি মিসড কল আর রুহির পাঠানো একটি এসএমএস- ‘শীগগিরই বাসায় আস, আবরারকে পাওয়া যাচ্ছে না’! মানে কি এসবের! এসএমএস পড়তে না পড়তেই বিন্দু বিন্দু ঘাম জমতে থাকে আদনানের কপালে। সে সাথে সাথে কল ব্যাক করে রুহিকে কিন্তু ওপাশ থেকে কোন সাড়া নেই!

দ্রুত বাসায় এসেই দেখতে পায় ঘরভর্তি কাছের কিছু আত্মীয়স্বজন আর বিভিন্ন ফ্ল্যাটের লোকজন। রুহির কাঁদতে কাঁদতে প্রায় মূর্ছা যাবার দশা! রুহির বড় বোন জুঁই এর সাথে আলাপ করে আদনান জানতে পারল, সাত মাস বয়সী আবরারকে ঘুম পারিয়ে রুহি গোসলে যায় আর বুয়া আমেনার মা দরজা ভেজিয়ে লক না করেই সেই সময় ময়লা ফেলতে যায়। দশ মিনিটের মধ্যে ফিরে এসে সে রান্নাঘরে তার কাজকর্মে ব্যস্ত হয়ে পরে, তারও মিনিট দশেক পর রুহি গোসল সেরে বেডরুমে এসে দেখে বাবু নেই!!!

প্রায় এক মাস হতে চলল আদনানদের টাওয়ারের CCTV নষ্ট। ফ্ল্যাট মালিক সমিতির গত সপ্তাহের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল এ সপ্তাহের মধ্যেই CCTV ঠিক করা হবে কিন্তু তার আগেই এ অঘটন ঘটে গেল! কিংবা কে জানে এ অঘটনটি ঘটানো হবে বলেই হয়তোবা ইচ্ছে করেই মাসখানেক আগে CCTV নষ্ট করা হয়েছিল আর তারপর এই এক মাস জুড়ে চলে এই নাটকের মহা প্রস্তুতি!

এই টাওয়ারের গেস্ট রেজিস্টার খাতা থাকলেও কোন কালেই তা ঠিকমতো মেইনটেইন করা হয়নি। আদনান এই ব্যাপারটি নিয়ে গার্ডদের একাধিকবার বললেও কোন লাভ হয়নি। ব্যাপারটি আসলে কেউ তেমন গুরুত্ব দিত না। সত্যি বলতে কি, দশ বছরেরও বেশী সময় ধরে এই টাওয়ারগুলোতে তেমন কোন অঘটন ঘটেনি বলে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে কেউ খুব বেশী উদ্বিগ্ন ছিল না কখনোই!

টাওয়ারে জুয়েল নামে নতুন এক গার্ড এসেছে দু’সপ্তাহ আগে যার সাথে কয়েক মিনিট কথা বললেই যে কেউ বুঝতে পারবে জুয়েল মহা ধুরন্ধর প্রকৃতির ছেলে। আবরারকে হারানোর পর আদনানের হঠাৎ করেই মনে হতে লাগলো, জুয়েল ছেলেটি শুধু ধুরন্ধর প্রকৃতির নয় বরং তার চেহারাটিও অনেকটা চোরের মত!

আর আমেনার মা খুবই বিশ্বস্ত, আদনান-রুহির সংসার শুরুর একদম প্রথম থেকেই সে তাদের সাথে আছে। এই পাঁচ বছরে সে কখনও একটি টাকাও এদিক সেদিক করেনি বরং এমনও হয়েছে প্যান্ট ধোবার সময় পকেটে ৫০০ টাকার চকচকে নোট পেয়ে সে আদনানকে ফেরত দিয়ে দিয়েছে। অফিস থেকে এসেই আদনান মানিব্যাগ ড্রেসিং টেবিলে রেখে গোসলে যায়, আমেনার মা কখনো ছুঁয়েও দেখেনি। এরকম একজন বিশ্বস্ত বুয়াকে আর যাই হোক অবিশ্বাস করা যায় না! কিন্তু বেশীরভাগের সন্দেহই শুরুতে আমেনার মা’র দিকেই গেল।

পুলিশকে সাথে সাথেই খবর দেওয়া উচিত হবে কিনা আদনান বুঝতে পারল না কেননা সেক্ষেত্রে অপহরণকারীরা ক্ষেপে গিয়ে বড় কোন অঘটনও ঘটিয়ে ফেলতে পারে!

সে আশায় থাকল অপহরণকারীরা হয়তোবা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মুক্তিপণ চেয়ে যোগাযোগ করবে। শুরু হল অপেক্ষার পালা। আবরার জন্মানোর সময় আদনান স্ট্যাটাস দিয়েছিল, ‘হে অপেক্ষা! তুমি বড়ই মধুর!’ আর সাত মাস পর সেই আবরারকে ফিরে পাবার জন্য অপেক্ষায় থাকাকে আদনানের কাছে পৃথিবীর কঠিনতম কাজ মনে হল!

গার্ডদের সবার সাথে কথা বলে আদনান নিশ্চিত হল, অপরিচিত কাউকেই তারা টাওয়ারে যেতে দেখেনি। ডিউটিতে সে সময় জুয়েল আর সবচেয়ে পুরনো গার্ড সেলিম ছিল। শুধু রাস্তার ওপাশে পান-বিড়ির দোকানদার জানাল, আলখেল্লা পরা গায়ে চাদর জড়ানো এক হুজুরকে সে দেখেছে টাওয়ার থেকে বের হতে যদিও টাওয়ারের অনেকের সাথে কথা বলে আদনান এর সত্যতা খুঁজে পেল না!

পুলিশকে খবর না দিলেও আদনান দুটো কাজ করলো, এক. গার্ড সেলিমকে বলে দিল গার্ড জুয়েলকে চোখে চোখে রাখতে সে যেন কিছুতেই টাওয়ার ছেড়ে কোথাও যেতে না পারে। আর আমেনার মাকে রাতটা থেকে যেতে বলল। অবশ্য অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে সে এমনিতেই থেকে যেত কারণ সে নিজেও প্রচণ্ড অপরাধবোধে ভুগছে। সে ময়লা ফেলতে যাবার সুযোগেই তো...... নাকি আমেনার মা ইচ্ছে করেই সে সুযোগ করে দিয়েছিল!

বিয়ের প্রায় সাড়ে চার বছর পর আদনান-রুহির ঘর আলো করে পৃথিবীতে আসে আবরার। কত প্রতীক্ষা আর কত প্রার্থনার পর সেই পরম আকাঙ্ক্ষিত সন্তান লাভ! আর সেই সন্তানকে সামান্য অবহেলায় হারিয়ে রুহির অবস্থা তাই পাগলপ্রায়। সে প্রলাপ করতে থাকে, ‘ আদনান ওদেরকে বল আমার আবরারকে ফিরিয়ে দিতে। আমার সব গয়না তুমি তাদের দিয়ে দাও তবু আমার আবরারকে তুমি ফিরিয়ে নিয়ে এস।’

আর সহ্য করতে পারে না আদনান। জায়নামাজে বসে খোদার কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আর্তনাদ করতে থাকে।

থানায় না জানালেও র‌্যাবের বন্ধু সোহেলকে রাত দশটায় আবরার হারানোর বিষয়টি জানিয়ে রাখে আদনান। সোহেল তখনই জুয়েল ও আমেনার মার ঠিকানায় সোর্স পাঠয়ে দেয় তথ্য সংগ্রহের জন্য ও সার্বক্ষণিক নজরদারীর জন্য।

অপেক্ষার পালা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে কিন্তু আদনান বা রুহির কারো মোবাইলেই অপরিচিত কোন নাম্বার থেকে কোন কল বা এসএমএস আসে না!

নির্ঘুম রাত কাটানোর পর ভোরে প্রথম আলো হাতে নিয়েই শিরোনাম দেখে আঁতকে উঠে আদনান, নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটিতে পাঁচ বছর বয়সী দুই ভাইকে অপহরণ করে কিডনি কেটে নিয়েছে ছেলেধরার দল। মুক্তিপণ চেয়ে তারা পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেনি কারণ তাদের আসল উদ্দেশ্যই ছিল, নাবালক শিশু দুটির কিডনি!

কি সর্বনাশের কথা! আর অপেক্ষা করা উচিত হবে না বিধায় থানায় খবর দেওয়া হল। সকাল দশটায় পুলিশ এসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমেনার মা আর জুয়েলকে ধরে নিয়ে গেল। যাবার সময় আমেনার মা কেমন অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে ছিল।

বেলা এগারোটার দিকে আদনানের মোবাইলে অপরিচিত নাম্বার থেকে দুটো কল আসে কিন্তু সে সময় আদনান ড্রয়িং রুমের টিএনটি থেকে সোহেলের সাথে কথা বলছিল। র‌্যাবের সোর্স তখনও পর্যন্ত তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোন তথ্য বের করতে পারেনি। ফোনালাপ শেষে আদনান তখনই সেই অপরিচিত নাম্বারে ফোন দিয়ে শুনতে পায়, দুঃখিত এই মুহূর্তে সংযোগ দেওয়া সম্ভব নয়!

শাহজাদপুরের সুবাস্তু নজর ভ্যালীতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকে আদনান-রুহি। ৭টি টাওয়ারে প্রায় ৪২০ টি পরিবারের বসবাস এই সুবাস্তু নজর ভ্যালীতে। চারতলা পর্যন্ত সুবাস্তু মার্কেট আর পঞ্চম তলায় কমন ছাদ যেখানে মসজিদ, দোকান,লন্ড্রি, ফুডকোর্ট, সেলুন আছে এবং যেই ছাদ দিয়ে খুব সহজেই এক টাওয়ার থেকে আরেক টাওয়ারে লিফটে করে চলে যাওয়া যায়। আবার ৪০০ স্কয়ার ফিটের ফ্ল্যাট আছে প্রায় প্রতিটি ফ্লোরেই যে ফ্ল্যাটগুলোর বেশীরভাগই চাকুরীজীবী ব্যাচেলর কিংবা বনানি-গুলশানের বিভিন্ন প্রাইভেট ভার্সিটি পড়ুয়া ছাত্রদের নেওয়া। আদনানদের বাসা ৩ নং টাওয়ারের ছয়তলায়, যা পঞ্চম তলার ছাদের ঠিক উপরেই। ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকা ছাত্রদের মধ্যে কেউ ড্রাগ অ্যাডিকটেড কিনা সেটা জানবার জন্য সোহেল মরিয়া হয়ে উঠলো। সে সুবাস্তুর অফিসে এসে সকল ফ্ল্যাট মালিক ও ভাড়াটিয়াদের ডাটাবেস নিয়ে কাজ করা শুরু করলো। ছাদের ঠিক এক ফ্লোর উপরে হওয়ায় অপহরণকারীদের যে কেউ অন্য টাওয়ার থেকে এসে এই ছাদ দিয়ে তাদের বাসায় গিয়ে আবার খুব সহজেই সেই ছাদ দিয়ে অন্য আরেক টাওয়ার দিয়ে বাবুকে নিয়ে চাইলেই চলে যেতে পারে। কিন্তু ঘটনা যাই হোক মুক্তিপণ চেয়ে কেউ এখনো তার সাথে কেন যোগাযোগ করছে না সেই চিন্তায় আদনান অস্থির হয়ে উঠলো। তবে কি ...... আদনানের কেবলই সকালের পত্রিকার শিরোনাম মনে পড়তে লাগলো। নাহ, সে আর কোন অলুক্ষনে চিন্তা করতে চাচ্ছে না আপাতত!



- ‘ জী আপা, আমার দোকানেতো মানুষ নাই আপাতত। আমি বিশ মিনিট পরেই সুমনকে দিয়ে আপনার বাসায় ল্যাকটোজেন আর ডায়াপার পাঠিয়ে দিচ্ছি। আপা কি সাইজ বললেন! Pampers 6 to 10 months small size... ঠিক আছে পাঠিয়ে দেব’

পাঁচতলার ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে সিগারেট খেতে এসে দোকানদারের মোবাইলে আলাপ শুনছিল আদনান। জিজ্ঞেস করলো, কোন ফ্ল্যাটে? দোকানদার জানাল, Tower 7, Flat E2 জামিল সাহেবের বাসায়।

আদনানের মনে পড়ল জামিল সাহেবের স্ত্রী শবনম আর তার স্ত্রী রুহি প্রায় একই সময়ে প্রেগন্যান্ট হয়েছিল এবং তারা দুজনেই স্কয়ারে একই ডাক্তারকে দেখাত। দুই ফ্যামিলিই সুবাস্তু নজর ভ্যালীতে থাকলেও স্কয়ারে গিয়েই তারা আলাপের এক পর্যায়ে প্রথম জানতে পারে তাদের বসবাস এত কাছাকাছি । আহা সেই শবনম আজ তার সন্তানের জন্য ডায়াপার-ল্যাকটোজেন কিনছে আর অপরদিকে রুহি তার সন্তান ফিরে পাবার আশায় পাগলপ্রায়। আশ্চর্য হলেও সত্য গত সাত মাসে শবনম কিংবা জামিল কারো সাথেই আদনান-রুহির দেখা হয়নি। টাওয়ার ৩ থেকে টাওয়ার ৭ এর মাঝে আরও চারটি টাওয়ার আছে সেটি যেমন সত্য তার চেয়েও বড় সত্য নাগরিক ব্যস্ততায় ঢাকার মানুষদের এসব সামাজিকতা রক্ষা করবার সময় কোথায়। কি মনে করে যেন আদনান হঠাৎ বলে বসে, দোকানদার যেন তাকে দেয় জিনিসগুলো, সে এমনিতেই জামিল সাহেবের বাসায় যাচ্ছিল!

আদনান Tower 7, Flat E2 ফ্ল্যাটে কলিং বেল দিতেই শবনম দরজা খুলে দিল। মনে হল সে যেন আদনানের অপেক্ষাতেই ছিল। শবনমকে দেখেই আদনানের কেমন যেন অস্বাভাবিক আর অপ্রকৃতস্থ মনে হল যদিও সে খুব স্বাভাবিক আর সহজ গলাতেই বলল, ‘ওহ আপনি চলে এসেছেন? ওকে আর কিছুক্ষণ আমার সঙ্গে রাখি প্লিজ... বেশিক্ষণ না স্রেফ অল্প কিছুটা সময় প্লিজজজ।’

আদনান শবনমের এ অদ্ভুত আচরণের হেতু বুঝতে পারল না!

ঘণ্টাখানেক পরে Tower 7, Flat E2’র ড্রয়িংরুমে জামিল, শবনম, আদনান আর রুহি বসে আছে। রুহির কোলে আবরার আর শবনম কেমন যেন মানসিক প্রতিবন্ধীর মত ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। জামিল সাহেব মাত্র দুদিনের অফিসিয়াল ট্যুরে কক্সবাজার গিয়েছিলেন। রুহি ও শবনমের ডেলিভারি ডেট গত বছর এক সপ্তাহের আগে- পরে ছিল। রুহির কোল আলো করে আবরার এলেও বিধাতা শবনমের বেলায় কাহিনীটি অন্যরকম করে লিখেছিলেন। শবনমের পেটের সন্তান ডেলিভারির মাত্র এক মাস আগে পেটের ভেতরেই মারা যায়। প্রথম সন্তানের আনন্দ বলে কথা, তাই পাঁচ মাস পেটে থাকা অবস্থাতেই শবনম-জামিল পুরো ঘর বাচ্চাদের খেলনা, মশারি, পোশাক আর ছবিতে ভরে ফেলেছিল। পেট কেটে যখন মৃত বেবিকে বের করে আনা হয় তখনও শবনমের বিশ্বাস হচ্ছিল না বিধাতা তাকে এ অমূল্য উপহার পুরোপুরি দেবার আগেই কেড়ে নিয়েছে! এরপর শবনম মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে অনেকটাই। সন্তানের নামও ঠিক করেছিল তারা- স্বপ্নিল! প্রায় রাতেই স্বপ্নিল স্বপ্নিল বলে চিৎকার করতে করতে ঘুম থেকে জেগে উঠে শবনম। জামিল স্বপ্নিলের জন্য কেনা সব জিনিস ফেলে দিতে চেয়েছিল কিন্তু শবনম সেটা হতে দেয়নি। ডাক্তার বলেছিল বাইরে থেকে ঘুরিয়ে আনলে হয়তোবা অবস্থার উন্নতি হবে কিছুটা। জামিল তাই ইন্দোনেশিয়ার বালি থেকে শবনমকে নিয়ে ঘুরে আসার পর কিছুটা স্বস্তিতে ছিল শবনমের পাগলামি অনেকটাই কমেছে দেখে! কিন্তু মাত্র দুদিনের জন্য সে ঢাকার বাইরে গেলে শবনম এত বড় অঘটন ঘটিয়ে ফেলবে সেটা জামিল ভয়ংকর দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করেনি। এখন তার মনে পড়তে লাগলো, মাসখানেক আগে শবনমকে প্রায় সারারাত কাঁদতে দেখেছিল। হঠাৎ এত বেশী কাঁদার কারণ জিজ্ঞেস করায় শবনম বলেছিল, সেদিন সকালে টাওয়ার ৩ এর রুহিকে সে দূর থেকে দেখেছে বেবিসহ সুবাস্তু মার্কেটে শপিং করতে। আজ স্বপ্নিল বেঁচে থাকলে সেও হয়তোবা একইভাবে বাবু কোলে নিয়ে শপিং করতো।

আবরারকে নিয়ে রুহি-আদনান চলে আসবার মুহূর্তে শবনম কাঁদতে কাঁদতে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করলো তার কোন খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। সে শুধু দুদিনের জন্য আবরারকে মাতৃস্নেহ দিয়েই রুহিকে আবার তার সন্তান ফেরত দিয়ে দিত!

আদনান-রুহি চাইলে আইনের আশ্রয় নিতে পারত জামিল-শবনমের বিরুদ্ধে! কিন্তু রুহিই ক্ষমা করে দিল শবনমকে- এক মমতাময়ী মা আর যাই হোক কখনো সন্তানহারা মায়ের প্রতি এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে না।

সেই ঘটনার এক মাসের মাথায় আদনান-রুহি সুবাস্তু নজর ভ্যালী ছেড়ে বনানীর নতুন বাসায় উঠে। রুহিরা যেদিন চলে যাচ্ছিল সেদিন রাতে শবনম অনেকদিন পর আবারো পাগলের মত আর্তনাদ করতে থাকে। পূর্ব- পশ্চিম- উত্তর- দক্ষিণ- চারপাশের আকাশ-বাতাস সব ভারী হয়ে উঠে সেই গগনবিদারী চিৎকারে!

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৮

আজীব ০০৭ বলেছেন: সচেতনতার জন্য ধন্যবাদ.........

০৫ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১:০৪

শিস্‌তালি বলেছেন: নারে ভাই। এটা কোন সচেতনামূলক পোস্ট নয়- শুধুই গল্প :)

২| ০৫ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১:২০

আজীব ০০৭ বলেছেন: সচেতনামূলক পোস্ট না হলেও ব্যপার টা অন্যভাবে ঘটতে ও পারে .......

সে জন্য বলছি সচেতনতার জন্য ধন্যবাদ...........

ভালো থাকুন শুভকামনা রইল........।

০৫ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৯

শিস্‌তালি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইজান! লেখাটা কেমন লাগল?

৩| ০৫ ই মে, ২০১৪ দুপুর ২:৪৪

সিফাত সারা বলেছেন: করুন হলেও ভাল লাগলো B:-/

০৫ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৯

শিস্‌তালি বলেছেন: ধন্যবাদ আপু! দিল খুশ হো গায়া

৪| ০৫ ই মে, ২০১৪ বিকাল ৪:২৭

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


গল্প হলেও গল্পের ম্যাসেজটা ভাল লাগছে।

০৫ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩১

শিস্‌তালি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই- মেসেজটা বুঝতে পারার জন্য! একটু থ্রিলার টাইপ করতে চাচ্ছিলাম কিন্তু তেমন জমলো না :(

৫| ০৮ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭

ভবঘুরে মিথি বলেছেন: ভালাে লাগল ভাই। আমার চোখে পানি চলে এসেছে। ধন্যবাদ।

১০ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:০৩

শিস্‌তালি বলেছেন: ধন্যবাদ। অনুপ্রেরণা পেলাম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.