নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি সম্ভবত খুব ছোট্ট কিছুর জন্য মারা যাবো .......
রাস্তার পাশে কিংবা মোড়ের দোকান গুলোতে ঝোলে রংচঙা চিপসের প্যাকেট। পাশেই আইসক্রিমের বড় বড় ফ্রিজ। বিভিন্ন কোম্পানী ইগলু, পোলার, কোয়ালিটি। বিভিন্ন রকম কাপ, কোন, চকোবার, ললি। বিভিন্ন স্বাদ বিভিন্ন গন্ধ বিভিন্ন রং ।
বহু বছর হয়ে গেলো পাড়ার রাস্তার মাথায় হাঁক ছেড়ে ডেকে আইসক্রিম ওয়ালা 'গাছে ধরা মালাই' কাধেঁ নিয়ে আর আসে না। যে ডাক শোনা মাত্র ই এক টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হতাম। দেরী হচ্ছে দেখে নিজেই ছুটে যেতাম মালাই ওয়াল কাছে! কাঠের বাক্স খুলে দুনিয়ার সবচে লোভনীয় মালাইটি তুলে দিতো আমাদের হাতে... সারাটি দিনের অপেক্ষা একটা 'গাছে ধরা মালাই'!
গাছে ধরা মালাই - নামটা কেন দিয়েছিলেন মালাইওয়ালা, সেটা কখনো জানতে চাওয়া হয়নি। এমনকি প্রশ্নটা মাথাতেই আসেনি ছোটবেলায়। হয়ত সদ্য গাছ থেকে পাড়া পাকা আমের মতোই টাটকা , সরেস আর সুস্বাদু ছিল আইসক্রিম গুলো। অন্তত আমাদের কাছে তেমনটাই লাগতো খেতে।
আমি এতো সেতো ভাবিনি তখন। তবে মনে হতো সত্যিকারের মালাই ধরা গাছ থাকলে মন্দ হতো না। সেই গাছ বারোমাস ফলন দেবে। আর আমি ইচ্ছা হলেই পেড়ে খাবো। সেইসাথে এটাও মনে হতো , এমনটা হলে তো আর মালাইওয়ালার জন্য অপেক্ষা করতে হবে না আর। উৎকণ্ঠায় কাটবেনা সারা দিন। হাস্যোজ্জ্বল মালাইওয়ালা মালাই বাড়িয়ে দেবেন না আমাদের দিকে। এক টাকা জোগাড়ের তোড়জোড় থাকবেন আর। এগুলোও যে ভীষণ আনন্দের ব্যাপার!
মালাইওয়ালা আসতেন কুষ্টিয়া কুমারখালি থেকে।
কালকে আসবেন তো?
- হ্যাঁ আসবো।
কাল একটু আগে আগে আসবেন। কাল বৃহস্পতিবার। হাফ স্কুল।
বৃহস্পতিবার মানেই থার্ড পিরিয়ডে ব্যাগ গুছিয়ে প্রস্তুতি। ছুটির ঘন্টার অপেক্ষা। বাড়ি ফেরার তোড়জোড়। পরের দিন ছুটি। কি অদ্ভুত অনুভূতি!
বহুকাল হয়ে গেলো গাছে ধরা মালাইয়ালা কিন্তু আর আসেনা । কিংবা আসেন। আমাকে না পেয়ে ফিরে চলে যান। আমাকে না পেয়ে ফিরে যাবে , আমি স্কুলে গেলে বাড়িতে কত কিছুই না হয়ে যাবে! এই ভাবনায় কত দিন স্কুল কামাই দিয়েছি। বড় হয়ে গেলাম বলে সব কিছু কোথাও হারিয়ে গেল।
মাঝে মাঝে কোনকিছু ভালো না লাগলে কর্পোরেট ডেস্ক ছেড়ে জানালায় এসে তাকায়। নিচের রাস্তায় তাকিয়ে থাকি। শাঁ শাঁ গাড়ি চলতে থাকে। চলতে থাকে বেঁচে থাকার লড়াই।আমি জানি এই লড়াইয়ে গাছে ধরা মালাইওয়ালা কোথায় জানি হারিয়ে গেছে। জানি এই রাস্তায় সেই মালাইওয়ালা আর আসবেন না।
তবে খুব স্বপ্নে দেখতে ইচ্ছা হয় -
কোন এক ঘুমঘুম দুপুরে গাছে ধরা মালাই ওয়ালা গলির মাথা থেকে হাঁক দেবে --- গাছে ধরা মালাই!
আমি এক টাকা হাতে দৌড়ে বের হবো, বাড়ির বাইরের 'মিঠি আম' গাছটার নিচে দাঁড়াবো...
ছবিঃ এই রাস্তায় মাথায় এসে মালাইওয়ালা হাঁক দিতো। আর আমি রাস্তায় এসে দাঁড়াতাম। সেই সময় রাস্তা বাড়ি এমন ছিল না। এখন তো আরো বদলে গেছে।
২৭ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৫০
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আহা শৈশব...
২| ২৭ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৯
করুণাধারা বলেছেন: লেখা ভালো হয়েছে। মনে হচ্ছে গাছে ধরা মালাইওয়ালা ডেকে চলে যাচ্ছে দূরের পথ ধরে।
কিন্তু কথা হচ্ছে, মুছে যাওয়া দিনগুলো যতই পিছু ডাকুক না কেন সেই ডাক শুনে উদ্বেল হওয়া যাবে না। জীবন মানে শুধু এগিয়ে চলা, সামনের দিকে। শৈশবের সব দিন ভাবনা হীন, কিন্তু বড় বেলাতেও আনন্দের দিন অনেক আসে, শুধু সেগুলোকে চিনে নিতে হয়।
২৭ শে জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
আপনি আমাকে দারুন সব উপদেশ , পরামর্শ দিয়ে যান।
কিন্তু আমি সবকিছু ভুলে যায়।
মন্তব্যে ভালো লাগা।
ভালো থাকবেন করুনাধারা আপা।
৩| ২৭ শে জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:০০
করুণাধারা বলেছেন: শিরোনাম ভালো হয়নি।
২৭ শে জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
এইসব ছোট কিছু বিষয় আমাকে খুব উতলা করে তোলে।
তাই শিরোনামটা দেয়া।
৪| ২৮ শে জুন, ২০২৪ রাত ১২:৫৮
আহমেদ জী এস বলেছেন: স্বপ্নবাজ সৌরভ,
প্রায়শঃই আপনার শৈশব স্মৃতির কাতরতা জনিত লেখা দেখতে পাই। দেখতে পাই আপনার উতলতা ।
অমন কাতরতা দেখে সহ-ব্লগার করুণাধারার বলা - "মুছে যাওয়া দিনগুলো যতই পিছু ডাকুক না কেন সেই ডাক শুনে উদ্বেল হওয়া যাবে না। জীবন মানে শুধু এগিয়ে চলা, সামনের দিকে। শৈশবের সব দিন ভাবনা হীন, কিন্তু বড় বেলাতেও আনন্দের দিন অনেক আসে, শুধু সেগুলোকে চিনে নিতে হয়।" এই কথার মতো করেই কবির ভাষায় বলি --
পুরানো জানিয়া চেয়ো না আমারে আধেক আঁখির কোণে অলস অন্যমনে।
আপনারে আমি দিতে আসি যেই জেনো জেনো সেই শুভ নিমেষেই
জীর্ণ কিছুই নেই কিছু নেই, ফেলে দিই পুরাতনে॥
আপনারে দেয় ঝরনা আপন ত্যাগরসে উচ্ছলি--
লহরে লহরে নূতন নূতন অর্ঘ্যের অঞ্জলি।
২৯ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:১৬
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
পুরোনো নিয়েই সম্ভবত বেঁচে আছি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
...জীর্ণ কিছুই নেই কিছু নেই, ফেলে দিই পুরাতনে
৫| ২৯ শে জুন, ২০২৪ দুপুর ২:৪০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আইসক্রিমওয়ালা 'গাছে ধরা মালাই' বলতো সম্ভবত বাচ্চাদের আকৃষ্ট করার জন্য।
আরও আগে ছিল লটারির আইসক্রিম। এখনও মেলাতে আছে মনে হয়। লটারির আইসক্রিম
২৯ শে জুন, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন: লটারি আইসক্রিম খেয়ে আমি একবার একটা পিংপং বল জিতেছিলাম।
তারজন্য আমাকে তিনটা আইসক্রিম কিনে দিয়ে ছিল মেজচাচা। সেটা সম্ভবত ১৯৮৭-১৯৮৮ সালে।
৬| ২৯ শে জুন, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৩
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: চমৎকার লেখনী, যেন বন্ধ কোন জানালা খুলে হুড়মুড় করে মুক্তি পাওয়া একরাশ শৈশব স্মৃতি... নষ্টালজিক। +++
৩০ শে জুন, ২০২৪ দুপুর ২:৩৯
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
এসব নিয়েই হয়তো বেঁচে আছি।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
৭| ৩০ শে জুন, ২০২৪ রাত ১১:২৫
শার্দূল ২২ বলেছেন: সৌরভের স্বপ্ন গুলো সেই শুরু থেকেই দেখা না গেলেও পড়া হয়েছে অনেক। খুব ছোট ছোট কিছু স্বপ্ন দিয়েই আমাদের সৌরভের স্বর্গে বাস আমরা জানি।
আমারও তাই মনে হয়, আমিও খুব ছোট কিছু বিষয়ের উপর আজো বেঁচে আছি, টং দোকানের চা, শিশির ভেজা শীতল ঘাস, গাছের ছায়ায় হুহু করে হাওয়ায় উড়িয়ে দেয়া কোন হাহাকার।
জীবন সফল এখানেই।
ভালো থাকা হোক সৌরভ
০১ লা জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:১৮
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
কি ভীষণ এক হাহাকার নিয়ে যে একেকটা দিন পার করছি। সেই ছোটবেলা থেকে।
ছোটবেলায় মাগরিবের আগ আগ দিয়ে খেলা শেষে যখন হাতমুখ ধোয়ার জন্য কলপাড়ে দাঁড়াতাম ! কি ভীষণ বিষণ্নতা।
৮| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:১৫
নতুন বলেছেন: আপনার ছেলের হার্টের কি সমস্যা সেটা নিয়ে লিখুন । আপনার ঐ পোস্টে মন্তব্য করতে গিয়ে আর পাইনাই। ছেলের সমস্যা নিয়ে একটা ছোট পরামর্শ যদি তার উপকার হয় তবে সেই চেস্টা করা উচিত।
০৩ রা জুলাই, ২০২৪ সকাল ৯:৫৩
স্বপ্নবাজ সৌরভ বলেছেন:
গতকাল বাবুর টেস্ট করা হয়েছে। আবার ৬ মাস পরে টেস্ট করতে হবে।
ধন্যবাদ ভাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে জুন, ২০২৪ দুপুর ২:০২
নয়ন বড়ুয়া বলেছেন: আহা শৈশব...