নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার সদয়চিত্তকে দুর্বলতা ভেবোনা,ভেতরের জন্তুটা ঘুমিয়ে আছে,মরেনি!!!

সপ্তাংশু

...আমি আফসানা রশীদ... খুবই সাধারণ একটি মেয়ে যার কিছু অসাধারণ স্বপ্ন আছে!!!!

সপ্তাংশু › বিস্তারিত পোস্টঃ

#রূঢ়_বাস্তবতা_এবং_দৃষ্টিভঙ্গির_পরিবরর্তন(পর্ব-১)

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৭:৪৯

(১)
ইরফান ছোটবেলা থেকেই স্বভাবে বেশ চটপটে ও মিশুক,পড়াশোনায়ও বরাবরই সে প্রথম সারির ছাত্র হিসেবে নিজের জায়গা দখলে রেখেছে সেই স্কুল লাইফ থেকেই কিন্তু এই যুবক বয়সে এসে,ইদানীং মানুষের কোলাহল একদমই ভালো লাগেনা তার।আশে পাশে কেউ এসে বসলেও ওর কেমন যেন বিরক্ত লাগতে শুরু হয়। ওর সাথে কেউ কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করার আগেই, সে তা এড়ানোর জন্য আগেভাগেই জায়গা ত্যাগ করে।

কলেজ লাইফ থেকেই পরিবারকে ফেলে শহরে মেসে থাকা শুরু করে সে,সেই হিসেবে একটা দূরত্ব আগে থেকেই তৈরী হয়েছিল পরিবারের সবার সাথে। কিন্তু আজকাল ভেতরে ভেতরে ইরফান নিজেকে খুব একা মনে করলেও কেন যেন কারো সাথে মনের চাপা কষ্টগুলো ঠিক শেয়ার করে উঠতে পারেনা!

অবশ্য সে আগে কাছের কিছু বন্ধুবান্ধবের সাথে তার পারিবারিক ও নিজস্ব দু:খগাথা শেয়ার করেছে বটে কিন্তু তারা একটু ভালো থাকার কোন উপায় তো বাতলে দেয়ইনি , উল্টো সেগুলো নিয়ে তাচ্ছিল্য করে যা তা আচরণ করেছে ইরফানের সাথে।
তাই এখন নিজেকে সে একেবারেই গুটিয়ে নিয়েছে সবার কাছ থেকে এবং ভালো থাকার কাঁচা অভিনয় করে যাচ্ছে দিনের পর দিন,মাসের পর মাস!
আর দিনশেষে ঘরের সিলিং ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে অতৃপ্ত এই জীবন থেকে মুক্তির সুপ্ত এক বাসনাকে মনের অজান্তেই লালিত করে দিনকে দিন ভয়াবহ রূপ দিচ্ছে!
এখন চিন্তা করে বলুন তো,এই পরিস্থিতির দায়ভার আসলে কার? ইরফানের,তার পরিবারের নাকি বন্ধুরূপী সেই মুখোশধারীদের?

(২)
আর পাঁচটা বছর আগেও তনিমাকে সবাই প্রচন্ড চুপচাপ ও লাজুক একটা মেয়ে হিসেবেই জানতো,কিন্তু এখন যেন সম্পূর্ণ নতুন এক তনিমাকে সবাই চিনে।আগের সেই লাজুকতা আজ কোথায় গেলো? এখন যাকে দেখে সে তো পুরোই দস্যি, চঞ্চল,বন্ধুবাৎসল্য স্বভাবের এক নতুন তনিমা, যে কিনা নিমিষেই যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে,পারে যে কারো সাথে অকাতরে মিশে যেতে,পারে রোদ-ঝড়-বৃষ্টি,দিন বা রাতের যে কোন সময় কারো সাহায্য ছাড়াই একাকী রাস্তায় চলাফেরা করতে,পারে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে!

যদিও এমন আমূল পরিবর্তন ব্যক্তি তনিমার ক্ষেত্রে দারূন একটা পজিটিভ দিক হওয়ার কথা ছিল কিন্তু বাস্তবতা যেন সম্পূ্র্ণ ভিন্ন হয়ে উঠলো ! ইদানীং বিভিন্নজনে এই ব্যাপারটা নিয়ে বেশ কানাঘুষাও নাকি করছে। আর করবেই বা না কেন? এ সমাজে মেয়েরা কেন ছেলেদের প্রতিযোগী হতে যাবে?কেন ছেলেদের কথায় পাল্টা জবাব দেবে? কেন নিজের জায়গায় অনড় থেকে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে যাবে ? কেন মেয়েদের আত্নসম্মানবোধ এতোটাই প্রখর হতে হবে?

আরেহ,তনিমার পরিবার কি জানেনা,মেয়েদের হতে হবে একেবারেই সাদাসিধা, কোমল ও মিষ্টভাষী। পাশাপাশি মন মানসিকতা হতে হবে এমন যাতে ছেলেদের সব রকম অন্যায় অবিচার কোনরূপ উচ্চবাচ্চ্য ছাড়াই মাথা পেতে নেয়ার ক্ষমতা রাখে,তবেই না সেই মেয়ে হতে পারবে একজন আদর্শ মেয়ে,স্ত্রী বা মা।

যদিও তনিমার বাসায় একমাত্র উপার্জনকারী তার বাবা,ঘর সাম্লানোর দায়িত্ব তার মায়েরই এবং তাদের একমাত্র সন্তান তনিমার দৈনন্দিন সব খরচাপাতিও তারাই বহন করে কিন্তু তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বা আচার-আচরণে হস্তক্ষেপ করতে একটুও দ্বিধাবোধ করেনা সমাজের গুটিকতক শুভাকাঙ্ক্ষী তথা পরচর্চাকারী ব্যক্তিবিশেষ!
এবং এই জঘন্য ব্যাপারটাই তনিমাকে দিনদিন মানসিকভাবে বেশ বিপর্যস্ত করে তুলছে আর যার বিরূপ প্রতিফলন ঘটছে তার স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ও কাজে!

এখন সত্যি করে বলুন,আপনি নিজেকে ঠিক কোন জায়গাটায় দেখতে পান,মানসিকভাবে বিপর্যস্ত একটি মেয়ের স্থানে নাকি অন্যের লাইফে হস্তক্ষেপকারী সেইসব পরচর্চাকারীর প্রতিচ্ছায়ারূপে?

(৩)
সমাজের আর দশটা ছেলের মতোই উঠতি বয়সে সঙ্গদোষে পরে বিপথে পা বাড়ায় আদিব। তাছাড়া বাবার একমাত্র ছেলে হওয়ার দরূন যখন যা চেয়েছে তাই পেয়েছে যা তাকে উশৃংখল জীবনযাপন বেঁছে নেয়ার পিছনে অনেকাংশই দায়ী।
সেই সদ্য কিশোর আদিব আজ পরিপূর্ণ যুবকে পরিণত হলেও, তার কিছু কিছু বদাভ্যাস এখনো ত্যাগ করতে পারেনি বা কেউ হয়ত তাকে তা ত্যাগ করার জন্য বারণও করেনি।
বাহ্যিক দিক দিয়ে আদিবকে নিয়ে সবাই যতোই নেগেটিভ কথা বলুক না কেন,ভেতরের আদিব কিন্তু সম্পূর্ণ অন্য এক মানুষ। তার মধ্যে বিদ্যমান একটা কোমল এবং ভালবাসা ও মায়ায় পরিপূর্ণ হৃদয়ের আবেগগুলো যেন সব প্রতিকূলতা ছিন্ন করে বেরিয়ে আসতে চায় কিন্তু কেন যেন প্রকাশিত হতে পারেনা!

মজার ব্যাপার হলো, যেইসব বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে সে একদিন বিপথে পা বাড়িয়েছিল,তাদের অনেকের সাথেই আজ আর তার দেখা হয়না,অনেকের আবার হদিসও জানা নেই,অনেকে আবার বন্ধু থেকে চিরশক্রতে পরিণত হয়েছে আজ!

কিন্তু করুন বাস্তবতা হলো, যাদের মাধ্যমে আদিবের জীবনে এক কালো অধ্যায়ের সুচনা হয়েছিল তার ছায়া কিন্তু আজও আদিবকে একাই বয়ে নিয়ে চলতে হচ্ছে।
সারাদিন যতোই পাড়ার বন্ধুবান্ধব, ছোট-বড় ভাইদের নিয়ে হৈ-হুল্লোড় করুক, শেষ রাত্রীরে কিন্তু আদিবের নিজের বিবেকের কাছে নিজেকে ' অপরাধী' বলেই মনে হয়।
মনের অজান্তেই প্রশ্ন জাগে তার মনে, সে যেই জীবনটা এখন পার করছে এটা কি সত্যি তার লাইফ হওয়ার কথা ছিল? তার মধ্যেও তো কত গুণ আছে, কত সুপ্ত প্রতিভা আছে সেগুলো কি তবে তার জীবনে কোন কাজেই আসবেনা?
এদিকে বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান হিসেবে তার যে দায়িত্বগুলো আছে তা সঠিকভাবে পালন করতে পারবে তো?নাকি একজন ব্যর্থ সন্তান হিসেবে আজীবন নিজেকেই দোষরোপ করে যাবে!

হঠাৎ এক গভীর বিষণ্ণতাবোধ কাজ করতে থাকে আদিবের মনে। বারান্দায় এক কোনে দাঁড়িয়ে গাঁজার শেষ স্টিকটা ধরাতে ধরাতে তার সুপ্ত প্রতিভা-গান সুরে সুরে ধোঁয়ার ফাঁকে বের হয় ঠিকই তবে সেইসাথে তার চোখ দিয়ে যে নিশ্চুপ কান্নার ফোটাগুলো পড়তে থাকে তা কেবল মধ্যরাতের ফিনিক ফোটা জোৎস্নার আলোতেই চিকচিক করে ওঠে! যার কথা জানতে পারেনা কেউ এবং কোনদিন হয়তো কেউ জানতেও পারবেনা!
এখন একটু চিন্তা করে বলুন তো,আদিবের লাইফের অপূর্ণ স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়নে কে তাকে সাহায্য করবে? সম্পূর্ণ আদিবের নিজস্ব ইচ্ছাশক্তি নাকি তার পরিবার-পরিজন ও প্রকৃত বন্ধুবান্ধবদের সাপোর্ট ?

(চলবে)

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: ৩ টা পয়েন্টই সুন্দর।
বিশেষ করে ২ নম্বটা বেশ

মানুষ খুব বেশিওমানবিল হয়ে পড়েছে। এটা চিন্তার বিষয়।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩১

সপ্তাংশু বলেছেন: ধন্যবাদ!
আমি মনে করি,আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির যথাযথ পরিবর্তন আনতে পারলে হয়ত বা মানুষের মধ্যকার অমানবিকতাকে কিছুটা হলেও দমন করা সম্ভব!

২| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৩৭

মোঃ হোসাইন খাঁন বলেছেন: মা বাবার থেকে বন্ধুসুলভ আচরন ও ঠিক মত সময় দেয়া হলে সন্তানের মানসিকগত পরিবেশ ইতিবাচকের দিকে ধাবিত হয় ।
৩টা পয়েন্টে খুব ভাল বিষয় তুলে ধরেছেন ।
আপনার লেখার হাত কনেক ভাল চালিয়ে যান ।

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৫

সপ্তাংশু বলেছেন: আপনার সাথে একমত।
সঠিক পারিবারিক শিক্ষা ও সাপোর্ট এর অভাবে অনেকেই অকালে ঝরে পড়ছে,আবার সেই নূন্যতম সাপোর্টটুকু পেয়েই অনেকে সমাজে শত প্রতিকূলতার মাঝেও টিকে আছে। সঠিক মানসিক বিকাশের শুরুটাই যেন পরিবারে হয় সেদিকে আমাদের দৃষ্টিপাত দেয়া জরুরী।

৩| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৩

আবু মুহাম্মদ বলেছেন: পরের লেখা গুলো আরো ভাল হবে,,, অপেক্ষা !

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:৩৬

সপ্তাংশু বলেছেন: ধন্যবাদ!
আমি অবশ্যই চেষ্টা করবো লেখার প্লট ও মান আরো ভাল করার!

৪| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৮

সনেট কবি বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

৫| ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:১১

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: ধন্যবাদ!
আমি মনে করি,আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির যথাযথ পরিবর্তন আনতে পারলে হয়ত বা মানুষের মধ্যকার অমানবিকতাকে কিছুটা হলেও দমন করা সম্ভব!

এই শহরের মানুষ আর ভালো হবে না। তারা দিন দিন অমানুষে পরিনত হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.