নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নির্ভাণা

নির্ভাণা › বিস্তারিত পোস্টঃ

অধরা-৩

১৫ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৮

সারা সপ্তাহ অফিসের পর, বৃহস্পতিবার রাতটা যেন একেবারে ইচ্ছে গাছ। আর সেই সাথে রাতে যদি থাকে বার্সেলোনার খেলা, আর কি চাই।
এমনই এক সময়, মুখে বেশ একটা আহ্লাদ আহ্লাদ ভাব নিয়ে, রাফিদের কাছে আরমিন কথাটা পারলো, ‘এই বেবি শোন না, কালকে কিন্তু তুমি আমার সাথে পিংক সিটি যাবা, আমি অনেক গুলি ড্রেস আর শাড়ি কিনবো’

‘কিছুদিন আগেই না অনলাইন থেকে কি কি ড্রেস কিনলা?’

‘আরে ধূত, ওগুলি পরে তো ফেইসবুকে পিক দেওয়া হওয়ে গেসে। নেক্সট মান্ত-ই তো আমার ওই কাজিনটার বিয়ে, টোটাল সাতটা ইভেন্ট হবে, তাও আবার আলাদা আলাদা ড্রেস কোড’

কথা গুলো যেন একেবারে এনেস্থিসিয়ার মতো রাফিদের বাঁক যন্ত্রে আঘাত হানল, তাই মুখ দিয়ে কোন টু শব্দটিও বের হলো না। এনেস্থিসিয়ার প্রভাবটা সম্ভবত মন পর্যন্ত যায়নি, তাই মনে মনে ভাবলো, ‘একটা জামা পরে ফেইসবুকে ছবি দিলে সেই জামা আর পরা যাবে না????’

বিয়ের অনুষ্ঠানের দিনটি অবশেষে এলো, আরমিন গায়ে জড়ালো ঝকমারি এক পোশাক, পরত পরত মেইক-আপ-এ, আরমিনকে যেন আর খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছেনা।
চারিদিকের এতো জাঁকজমক সাজ পোশাকের মাঝে, আজ রাফিদের চোখ আটকালো অধরার প্রতি। ও যেন সবার মাঝে একটু আলাদা, গায়ে জড়িয়েছে সুতার বুননের এক অভিজাত শাড়ি, খোঁপায় কিছু ফুল আর মুখে সামান্য কিছু সাঁজ, যাকে দেখে একেবারেই মনে হচ্ছেনা, শাড়ি, গয়না আর মেইক-আপ-এর দোকান। এতো জবড়জং সাঁজ পোশাক ছাড়াই, অধরা যেন জ্বলজ্বল করছে আত্মবিশ্বাসে। কি আশ্চর্য, এই একেই মেয়েকে রাফিদ যখন প্রথমবার দেখেছিল, তখন তো এই ভাবে মেয়েটাকে চোখে পড়েনি।

অফিসের হট কেইক জাতীয় খবর থেকে শুরু করে, ব্রেকিং নিউজ গুলোরও খবর রাখে নাঈম। সেরকমই একটা খবর নিয়ে, নাঈমের আগমন রাফিদের কিউবিকলের সামনে, ‘খবর শুনসো নাকি?’

‘তুমি খবর না দিলে আর কোত্থেকে খবর পাবো বলো?’

‘এবার তো অফিস থেকে বিশাল এক ফান্ড দিচ্ছে, সি এস আর-এর জন্য, বেশ বড় একটা এন জি ও-র সাথে নাকি কথাও হওয়ে গেছে। এন জি ও-র আন্ডারে, বৃদ্ধাশ্রম, পথ-শিশুদের স্কুল, আর অটিস্টিক বাচ্চাদের জন্য ফান্ড যাবে। এই তো সামনের সপ্তায় এন জি ও থেকে ফান্ড রিসিভ করতে আসবে। তোমার, আমার, সবার, স্যুট কোট টাই পরে, মুখে একটা ট্যটু হাসি নিয়ে উপস্থিত থাকতে হবে।‘

চলে আসলো দিনটা, এন জি ও থেকে বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি আসল। আরে!!! এটা কে? অধরা না?? রাফিদ চমকে উঠে।
অধরা দূর থেকে খেয়াল করে, ধীরে ধীরে রাফিদের কাছে এসে বলে, ‘আরে আপনি? আপনি এই কোম্পানিতে আছেন নাকি?’

‘জি, আপনার সাথে এমন কাকতালীয় ভাবে দেখা হবে ভাবতেই পারিনি। নিশ্চয়ই এন জি ও-র পক্ষ থেকে?

‘জি, প্রতিনিধিদের একজন হয়ে এসেছি’

এতো মানুষের ভিড়ে, আজকেও কি রাফিদের চোখ কাড়ছে অধরা? যেমন সাজিয়ে গুছিয়ে শুদ্ধ বাংলা বলছে, তেমনি নির্ভুল ভাবে অনর্গল ইংলিশ বলছে, কোম্পানির বিদেশী প্রতিনিধিদের সাথে। কাজের দক্ষতায় আর স্বকীয়তায় যেন অতুলনীয়। আর সেই আত্মবিশ্বাস আর রুচি বোধের জৌলুষ? এ যেন ওর মাঝে চিরন্তন। ওর নিজস্ব একটা আইডেন্টিটি আছে, যা আজ পর্যন্ত রাফিদ আরমিনের মাঝে খুঁজে পায়নি। আরমিন যুগের পালে হাওয়া লাগা একটা নৌকা, ওর নিজস্ব কোন গন্তব্য নেই।

চলবে…………

প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্ব পড়তে হলে ঃ
http://www.somewhereinblog.net/blog/Shottoboti/30257025
http://www.somewhereinblog.net/blog/Shottoboti/30257191

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.