নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নির্ভাণা

নির্ভাণা › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পটা কি শুধুই অরিত্রীর?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:২২

পরম স্নেহে পরম আদরে, তিল তিল করে গড়ে তোলা সন্তানের পরিণতি হোক অরিত্রীর মতো, সেটা কোন বাবা মায়েরই কাম্য নয়। বাবা মায়ের পর যিনি কলম ধরা শেখান, তিনি হচ্ছেন শিক্ষক। তাই একজন শিক্ষকের দায়িত্ব এবং দায়বদ্ধতাও অনেক বেশী। শিক্ষক যেমন শাসন করবেন, স্নেহ, মমতা দিয়ে আগলেও রাখবেন। সেই সাথে নৈতিকতা আর নিয়ম বজায় রেখে কাজ করাটাও একজন শিক্ষকের দায়িত্ব, যেখানে নিয়ম হবে সকলের জন্য সমান।

‘মৃত্যু’ বিষয়টি অনেক স্পর্শ কাতর, তাই যেকোনো মৃত্যুর ক্ষেত্রে আমাদের বাস্তব জ্ঞান অনেকটাই কম কাজ করে। এই অরিত্রীর ঘটনাকে একটু উল্টো ভাবে চিন্তা করে দেখুন। ধরুন, একজন শিক্ষক নকল বা মোবাইলে নকল করা অবস্থায় কোন ছাত্রকে দেখল এবং কিছুই বলল না, কোন পদক্ষেপ নিলেন না। এর পর সি সি টিভি ফুটেইজে ধরা পড়লো, এবং এই শিক্ষককে ডেকে অপমান করে ছাটাই করে দেওয়া হলো। এরপর শিক্ষক আত্মহত্যা করলেন......... এমন ঘটনায় আজকে হয়তো আমরা শিক্ষকের পক্ষে রাস্তায় নামতাম। আমরা আসলে এই জাগাটায় মানুষিক ভাবে কিছুটা হিপক্রেটিক।
একজন শিক্ষক হিসেবে, যেমন অনেক ছাত্র-ছাত্রীর ভালোবাসা পেয়েছি, নীতি নিয়ম মানতে গিয়ে কিছু ছাত্র-ছাত্রীর চক্ষুশূলও হয়েছি। কারণ আজ একজনের কারণে নিয়ম ভাঙ্গলে, কালকে আরও অনেকের জন্য নিয়ম ভাঙতে হবে, আর সেটা না করলে ছাত্ররাই আমাকে দুষবেন, আমি পক্ষপাতিত্ব করি !!!!!
সাধারণত, দেড় ঘণ্টার পরীক্ষায়, খুব ইমারজেন্সি না হলে আমারা ছাত্রদের কল ঘরে যেতে দেই না। একবার এক ছাত্র বেশ কয়েকবার বলার পর তার ইমারজেন্সি আচ করে, তাকে কল ঘরে যাওয়ার অনুমতি দিলাম। ঠিক তার পর পর আরও পাঁচ জন হাত তুলল !!!!

স্কুলে ভর্তি করানোর আগেই মা শিক্ষা দিয়েছিলেন, ‘কখন শিক্ষকের চেয়ারে বসবে না’, ‘শিক্ষক তোমার সাথে কোন ভুল আচরণ করলেও, বেয়াদবি করবে না, কারণ একটা অক্ষর হলেও তুমি তার কাছ থেকে শিখেছ’। পরবর্তীতে, কোন কারণে শিক্ষকের কাছ থেকে কষ্ট পেলেও, মনে অভিমান জমেছে, রাগ হয়েছি, কিন্তু মনে মনেও শিক্ষককে ‘গালি’ দিতে পারিনি। ভিডিওতে যখন দেখলাম, ভিকারুন্নেসা নূন স্কুলের অধ্যক্ষকে বাপ-মা তুলে অকথ্য ভাষায় উক্তি কাটা হচ্ছে, তার গায়ে হাত উঠানর চেষ্টায়, শাড়ির আঁচলেও টান পড়ছে, তখন ভাবি এই অভিভাবকরা সন্তানকে আসলে কি শিক্ষা দিচ্ছেন ???? আপনি পদত্যাগের দাবী জানাতে পারেন, শাস্তির দাবী জানাতে পারেন, কিন্তু আপনি আপনার মুখ কেন খারাপ করবেন আর কেনই বা আপনি গায়ে হাত তুলতে যাবেন?

একজন সন্তানের এই জ্ঞানটা থাকা উচিত, আমি যেন এমন কোন কাজ না করি যার জন্য আমার বাবা মা অপমানিত হতে পারেন। অরিত্রীর বাবা মা তো তখনই অপমানিত হয়েছেন, যখন সন্তানের কর্মকাণ্ডের জন্য তাদেরকে স্কুলে ডাকা হয়েছে।
আজকের এই ব্যস্ত জীবনে আমারা অভিভাবকরাও কি খেয়াল রাখছি, আমাদের সন্তানদের অন্য কোন ডিপ্রেশন আছে কিনা? বা আমরা সন্তানদের প্রতিনিয়ত লেখাপড়ায় প্রথম হবার আজব প্রতিযোগিতায় ঠেলে দিচ্ছি কিনা? বেশীরভাগ সুইসাইডাল কেইস গুলো ঘাঁটলে দেখা যায়, যেকোনো একটি কারণে কিন্তু মানুষ সুইসাইড করে না, তার পাশাপাশি আনুশাঙ্গিগ অনেক কারণও থাকে।

একজন শিক্ষকের আচরণ অথবা ভূমিকা বদলে দিতে পারে অনেক শিক্ষার্থীর জীবন। যদিও শিক্ষক বন্ধু হয়ে উঠার মতো কালচার আমাদের সমাজে খুব একটা প্রচলিত নেই। আর আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা?? সেটা নিয়ে না হয় না-ই বললাম, এই ইস্যু নিয়ে রচনা করা যাবে আরও একটি প্রবন্ধ !!!! পর্যাপ্ত পরিমাণে এবং আধুনিক পদ্ধতিতে টিচার্স ট্রেনিং-এর সুবিধাও কি শিক্ষকরা পাচ্ছেন? শিক্ষার মান উন্নয়ন নিয়ে কতটুকু গবেষণা হচ্ছে, সেটাও কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়।

ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশেও বলতে চাই, জীবনটা এতো ঠুনকো নয়, জীবনে চড়াই উত্রাই আসবে সেটাকে মোকাবেলা করার ক্ষমতা থাকতে হবে, প্রয়োজনে খুব কাছের কারো সাথে আলোচনা করো। জীবনে একমাত্র উপায় বলে কিছু নেই, আরও অসখ্য উপায় হয়তো তোমার জন্য অপেক্ষা করছে, তুমি হাত দিলেই সেখানে ফুল ফুটবে। কত শত মনিষী আছেন, যারা ব্যর্থতা ভরা জীবন বৈতে বৈতে অবশেষে সাফল্যের দেখা পেয়েছেন, যা কিনা ইতিহাসের পাতায় তাদের আলোকিত করে রেখেছে, রাখবে। জীবনে ব্যর্থতা কিন্তু হেরে যাওয়া নয়, জীবন থেকে ছুটি নেওয়াটাই হেরে যাওয়া।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৬

কামভাখত কামরূখ বলেছেন: খালি চোখে এটাই মাথায় আসে অন্তরালে অনেক কিছু বলার আছে বিস্তারিত পড়ুন Click This Link এটা জানানোর জন্যে প্রচার প্রসার উদ্দেশ্য না

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: মরে গিয়ে অরিত্রি যেন পাপ করে ফেলেছে!
যা ঘটেছে সব আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.