![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার পুত্রকে তার ধর্মীয় শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ের একটা চ্যাপ্টার বুঝিয়ে দিতে গিয়ে আমি নিজের কাছেই কিছুটা বিপত্তিজনক অবস্থায় পড়ে গেলাম। তাকে তার বইয়ে লেখা 'গল্প' টা বুঝিয়ে দিলাম ঠিকমতোই। 'গল্প' টা যে আসলে শুধু 'গল্প' না, আমরা বড়রাও বাস্তব ঘটনা হিসাবেই জানি এবং মানি, সেটাও তাকে বলতে হল। কিন্তু তাকে বোঝাতে গিয়ে আমার মনে যেসব প্রশ্ন নতুন করে উদিত হল, সেই একই প্রশ্ন যদি তার মনেও কখনো জেগে ওঠে, এবং আমার আজকের বোঝানোটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, তখন কি বলবো, ভাবতেই আমি কিছুটা ভীত, সংকিত এবং অসহায় বোধ করছি। গল্পটা প্রায় সবাই জানেন। নুহ (আঃ) এর কিস্তি বা নৌকার গল্প।
নুহ (আঃ) কে দ্বিতীয় আদম (আঃ) হিসাবেও ডাকা হয়। কারন, কয়েকটি পবিত্র ধর্মমতে, তিনিই বর্তমান মানবজাতির পিতা। কারন, তিনি, তাঁর স্ত্রী, তাঁর চারপুত্র এবং তাদের স্ত্রীরা ছাড়া সেই মহাপ্লাবনের শুরুতে আর কোন মানুষ সেই কিস্তিতে ওঠার সুযোগ পায় নাই। কারন, অন্যরা সবাই নুহ (আঃ) -কে অনুসরন না করায় স্রষ্টা তাদেরকে ঝড়বৃষ্টি বন্যার পানিতে ভাসিয়ে ধ্বংস করে ফেললেন। আজকের পৃথিবীতে আমারা যত রকম মানুষই দেখিনা কেন, সবাই নুহ (আঃ) এর ছেলেদের বংশধর।
সমস্যা তৈরি করলেন এক মাথামোটা ব্রিটিশ গাঁজাখোর বিজ্ঞানী, তার বিবর্তনবাদ নামের এক ধারণা প্রচার করতে গিয়ে। দাড়িওয়ালা সেই বিজ্ঞানীর নাম আপনারা সবাই জানেন। ডারউইন। ব্যাটা বলে কিনা, মানব জাতির উৎপত্তি বানর থেকে বিবর্তন হতে হতে। আদম-হাওয়ার বাস্তব প্রমানিত ঘটনা নাকি বানানো গল্প। অবশ্য, এক সময় তার এই মতবাদকে শয়তানের কুমন্ত্রনা হিসাবে সিলেবাস থেকে বাদ দেয়া হল, এবং ভবিষ্যতে যারা এসম্পর্কে কোন কিছু পড়াবেন, তারাও শয়তানের অনুসারী হিসাবেই চিহ্নিত হবেন। তাঁর পরও, প্রানীবিজ্ঞান নামের একটা বিষয় আছে, যেখানে কিছুটা হলেও সেই অগ্রহণযোগ্য মতবাদ একটু হলেও পড়াতে এবং পড়তে হয়।
কাজেই, চার হাজার বছরের ধর্মীয় ইতিহাস এবং প্রমানাদি অনুযায়ী, কোনকালেই কোন প্রানী এক প্রাণী থেকে অন্য প্রানীতে রুপান্তরিত হয় নাই। ফুল স্টপ। এর উপরে কোন কথা বলা যাবেনা। বর্তমানে পৃথিবীতে স্থলচর এবং আকাশে উড়ন্ত প্রানীর প্রজাতির সংখ্যা ৩৩,০০০ (তেত্রিশ হাজার)। আরও কিছু ছিলো, তারা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পৃথিবীতে জীবিত সকল মানুষ যেমন নুহ (আঃ) এর চার পুত্রের বংশধর, তেমনি, এই তেত্রিশ হাজার প্রজাতির প্রানিরাও কিন্তু সেই নৌকা বা জাহাজ থেকেই বন্যার পর শুকনো মাটিতে নেমে বংশবিস্তার করেছে। সেজন্যেই, নুহ (আঃ) স্রষ্টার নির্দেশ অনুযায়ী প্রত্যেক প্রজাতির একজোড়া করে (একটি পুরুষ এবং একটি স্ত্রী) ধরে নিয়ে সেই বিশাল জাহাজে তুলে নেন। কাজেই, সেই জাহাজে মোট প্রানীর সংখ্যা ছিল ৬৬,০০০ (ছেষট্টি হাজার মাত্র)। এর মধ্যে হাতি, ঘোড়া, গাধা, জিরাফ, বাঘ, ভাল্লুক, মায়া হরিণ, চিত্রল হরিণ, হায়েনা, চিতাবাঘ, ক্যাঙ্গারু, পাণ্ডা, জেব্রা, নীল গাই, গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়া, কুকুর, বিড়াল, হাঁস, মুরগি, চীনা মুরগি, কোয়েল পাখি, কবুতর, কাক, শালিক পাখি, বুলবুলি পাখি, টুনটুনি পাখি, হামিং বার্ড, মৌমাছি, ভীমরুল, মশা, মাছি, উইপোকা, লাল পিপড়া, কালো পিপড়া, তেলাপোকা, টিকটিকি, গিরগিটি, অজগর সাপ, ঢোড়া সাপ, লাউডগা সাপ, শঙ্খচূড় সাপ, কোলাব্যাঙ, কুনোব্যাঙ, গেছোব্যাঙ, আরো অনেক কিছুই ছিল। আবারো বলছি, সব কিছু ছিল একজোড়া করে। কাঠের তৈরি সেই বিশাল জাহাজে আলাদা আলাদা খাঁচায় ভরে রাখা হল সব ধরনের প্রানীদেরকে। কারন ছেড়ে দেয়া অবস্থায় রাখলে কে কাকে খেয়ে ফেলে, ঠিক নাই।
সেই অত্যন্ত বড় কাঠের জাহাজটি তৈরি করা হয়েছিলো খুব সম্ভবতঃ সাত দিনে। তবে, স্রষ্টা যেহেতু সরাসরি জাহাজটা তৈরী করতে সহযোগিতা করেছিলেন, সেটা সাত দিন কেন, সাত সেকেন্ডেও তৈরী করা কোন ব্যাপার না। যথাসময়ে ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। বন্যা শুরু হয়ে গেল। সেই জাহাজ ভেসে চলল, চলতে থাকলো টানা চল্লিশ দিন ধরে। পুরাতন কিন্তু প্রচলিত কিছু ভুলে ভরা ধর্ম মতে সেই বন্যায় সারা পৃথিবী ডুবে ছিল প্রায় এক বছর। তবে আমরা চল্লিশ দিনেই স্থির থাকি। এই চল্লিশ দিন চলার মতো পর্যাপ্ত খাবার দাবার, পানি ইত্যাদিও জাহাজে তোলা হয়েছিল, নিঃসন্দেহে। আর সেই খাবার দাবার যে শুধু মানুষের জন্যেই তোলা হয়েছিলো, তা তো না। যেমন ধরেন, হাতির জন্যে কলাগাছ, গরুর জন্যে খড়, ছাগলের জন্যে বটপাতা, গমের ভুশী, পাখির জন্যে ফড়িং, পিপড়া, মৌমাছির জন্যে চিনি, সাপের জন্যে মুরগির বাচ্চা, বাঘের জন্যে হরিণ ছানা, সবই নেয়া হয়েছিলো। আবার এদের ত্যাগ করা বর্জ্য পদার্থ খেয়ে আরও অনেকেই সুখে শান্তিতেই পার করে দিয়েছিল, ধরে নেয়া যায়। অন্তত, কারো কোন অসুবিধা হয়েছিল, তেমন কোন বর্ণনা কোন গ্রন্থেই পাওয়া যায় নাই।
তারপর বন্যা এক সময় শেষ হল। সবাই সারিবদ্ধ ভাবে সিঁড়ি বেয়ে জাহাজ থেকে নেমে আসলো। ক্যাঙ্গারুরা লাফিয়ে লাফিয়ে অস্ট্রেলিয়া চলে গেল। পান্ডারা চলে গেল চীন দেশে। পেঙ্গুইন আর শ্বেত ভাল্লুকরা হাত ধরাধরি করে চলে গেল সাইবেরিয়া। লেমুর ছাড়াও আরও কিছু কিছু অদ্ভুত জন্তু জানোয়ার, যাদের নাম মনে পড়ছেনা, তারা চলে গেল মাদাগাস্কার। অতঃপর তারা যে যার জায়গামত পৌঁছে শুখে শান্তিতে বসবাস এবং বংশবৃদ্ধি করতে লাগলো।
এটা কিন্তু একেবারেই কোন গল্প বা রুপকথা না। বাস্তব ঘটনা। তবে অনেক আগের ঘটনা তো। আমারই অনেক কিছু মনে পড়ছেনা। কোথাও ভুলভাল করলে ধরিয়ে দিবেন। কারেকশন করে নেব। আর যেহেতু এটা আমাদের বেশ কয়েকটা ধর্মের পবিত্র পুস্তকের অংশ, কাজেই এই ইতিহাসটা আপনিও বেশী বেশী করে শেয়ার করে সকল ধার্মিক ভাইদের কাছে ছড়িয়ে দিয়ে অশেষ সওয়াবের ভাগীদার হবেন।
আমার শুধু একটা জায়গায় সামান্য খটকা আছে। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাহাজের নাম খুঁজতে গেলে গুগোলে কি সব উল্টা পাল্টা জাহাজের নাম আসে, এই ব্যাটারা কিচ্ছু জানেনা। তুর পাহাড়ের গায়ে ঠেকে যাওয়ার পর, হজরত নুহ (আঃ) এর কিস্তি বা জাহাজটাই যে মানব জাতীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জাহাজ, সেই জাহাজের খুঁজে পাওয়া ফসিল যে এই ঘটনার অকাট্য প্রমান, এই বিষয়টাকে এরা গুরুত্বই দেয় না। আশ্চর্য!!!
(আরো আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, বেশ কয়েকটা ধর্মের কিছু কিছু করে পড়ে দেখি অনেক ধর্মেই এই একি ঘটনা একটু বাড়িয়ে কমিয়ে বলেছে। দুষ্ট লোকেরা বলে, সব রশুনের কি যেন... আমি আবার সেসবে একেবারেই কান দেই না। আমি আমার বিশ্বাসের জায়গায় পর্বতের মতই অটল।)
২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৮
রাজীব নুর বলেছেন: ্নুহ'র অলৌকিক ক্ষমতা আমার মুগ্ধ করে।
৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৫৫
মি.সিম্পলম্যান বলেছেন: আল কোরআনে আছে নুহ আঃ এর ঘটনা। সো না বিশ্বাসের কোন প্রশ্ন নেই। তবে আমার জানা মতে উনার সাথে উনার আরও কিছু অনুসারী ছিলেন।
ডারউইন তত্ত -বিবর্তনবাদ- হতে পারে অন্য কিছু প্রাণীর ক্ষেত্রে বা আল্লাহ আদম আঃ কে পৃথিবীতে পাঠাবার পূর্বে পৃথিবীতে অন্য যে সব প্রাণী দীর্ঘকাল ছিল তাদের ক্ষেত্রে (আল্লাহ ভালো জানেন) । তবে মানব জাতির বংশ পরম্পরা আদম ও হাওয়া আঃ এর মধ্য দিয়ে ঘটেছে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১২:১৯
নতুন বলেছেন: মানুষ প্রতিকি আর বাস্তবতাকে গুলিয়ে কাহিনি গুলি বানিয়েছে।
হয়তে কোন স্হানে এই রকমের বড় প্লাবন হয়েছিলো সেটার কাহিনি এতো বড় আকারে সবাই গল্প করে।
কিন্তু বাস্তবে দুনিয়ার এতো প্রানী একটা নৌকায়, এতো দিন খাবার দিয়ে বাচিয়ে রাখা, এতো বড় কাঠের নৌকা এতো দিন সাগরে ভেসে থাকা..... <<<< পুরাই অতিরন্জিত কাহিনি।