একটি চরম লাঞ্ছনার গল্প। (অভিজ্ঞতা থেকে)

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:০৭

জীবনে প্রথম মেয়েদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছিলাম ক্লাস ফোরে পড়ি তখন। আমার ততকালিন জিগরি দোস্ত মিনহাজ আর আমি স্কুল থেকে ফিরছিলাম। আমরা ৭,৮ জন তখন ছুটির পর যেকোনো একটা খেলা খেলে বাসায় ফিরতাম। ফলে আমরা যাওয়ার সময় রাস্তায় স্কুলের কারও সাথে দেখা হত না। সেদিন যেকোনো কারনেই হোক খেলিনাই। বাসায় ফেরার পথে দেখা পেলাম ক্লাসের সেরা দুই চুন্দ্রি ইকা আর প্রিয়ার। আমি তখন ও আলাভোলা টাইপের পোলা। মেয়েদের টিজ করা বা প্রেম-ভালবাসা কি জিনিষ বুঝতাম না। অপরদিকে মিনহাজ ছিল একটা ইচড়ে পাকা আম। সে খুব সুন্দর করে পিছন থেকে মেয়েদের উদ্দেশ্যে বানী বর্ষন করছিল। আর মেয়েরাও জবাব দিচ্ছিল।



আমার প্রথম প্রথম পছন্দ হচ্ছিল না, তাই মিনহাজকে বার বার মেয়েদের সামনে উঠার তাগাদা দিচ্ছিলাম। কিন্তু বেটা পাত্তা দিচ্ছিল না। এইভাবে চলতে চলতে যখন চৌধুরী বাড়ির মোড়ে আসলাম, ইকার ভাই, যে তখন সিক্সে পড়ে, হাসানের সামনে পরে গেলাম।



ওমা! ভাইকে দেখেই মেয়েটা বদলে গেল! এতক্ষন যে মেয়ে মিনহাজের সব দুষ্টু কথার জবাব মুচকি হাসিমাখা মুখে দিচ্ছিল সেই মেয়ে কাঁদকাঁদ হয়ে ভাইকে বলল আমরা নাকি সারা রাস্তা জ্বালাতন করেছি। হাসান প্রথমেই মিনহাজের কলার ধরল। আমি তখন দৌড় দিতে পারতাম কিন্তু ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে গেছিলাম। মিনহাজের কলার ধরে দুইটা ঝাকুনি দিয়ে ওকে কানে ধরতে বলল। বেচারা বিনা বাক্য ব্যায়ে কান ধরে ৫ বার ওঠবস করল। তারপর ফিরল আমার দিকে। আমার কলার না ধরেই বলল কান ধরতে। আমি মিন মিন করে বললাম ভাইয়া আমি তো কিছু করিনাই! ইকা, বল আমি তোমাকে কিছু বলছি?

কি নিষ্ঠুর! মেয়েটা জবাব দিল, করছ মানে? তুমি তো ওর চাইতে বেশি করছ!

আমার তখন অবস্থা খারাপ। ভ্যা করে কেঁদে দিলাম। তবুও হাসাইন্নার মনে মায়াদয়া নাই, বলে কান ধরতে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আত্মসম্মানবোধ একটু বেশি ছিল। কান্না বন্ধ করে ঘাড় গোজ করে বললাম না!

তারপর ব্যাটা আমার কলার ধরে দুইটা থাপ্পর দিল।



সারা রাস্তা কাঁদতে কাঁদতে বাসায় গেলাম। ব্যাথা পাইনি কিন্তু প্রচন্ড অপমানিত বোধ করেছিলাম। বাসায় কাউকে বলিনি।



ঘটনাটার প্রভাব দুজনের উপর দুইভাবে পরেছে। এরপর থেকে আমার মেয়েদের এড়িয়ে চলা শুরু। যা এখনও পর্যন্ত চলছে। তবে একটা ব্যাপার ভালো হয়েছে, আমি সারা জীবন ইভ টিজিং কে ঘৃনা করেছি।

অপরদিকে মিনহাজ আরও বেশি লুল হয়েছে। তার লুলামী এখনও বহাল আছে।

৩ টি +০/-০