নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিখতে গিয়ে হাত থেমে যাচ্ছে। বারবার ঝাপসা হয়ে আসছে চোখ। একটি তরুণ, বরং কিশোরই বলা যায়, সদ্য বয়ো:সন্ধিতে পদার্পণকারী সেই কিশোরটির মৃত্যুদৃশ্য দেখে চোখ অশ্রুভারাক্রান্ত হয়নি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে বলে আমার বিশ্বাস হয় না।। যাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এপিসি থেকে চরম নিষ্ঠুরতার সাথে রাস্তার আবর্জনার মতো নীচে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। রাস্তায় ফেলে দেওয়ার পর মাথাটা একদিকে কাত হয়ে যায় ও তাকে জোরে জোরে শ্বাস নিতে দেখা যায়। দুহাত দুদিকে ছড়ানো। পা দুটি ভাঁজ হয়ে গেছে। একটি পা গিয়ে ঠেকে আছে এপিসির বাম দিকের পেছনের চাকার গায়ে।
স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল দোমড়ানো-মোচড়ানো দেহটাতে তখনও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল। ছেলেটাকে বাঁচানোর কোনোরকম চেষ্টা না করে অবহেলাভরে পশুর মতো টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে রোড ডিভাইডারের ওপরে তুলে আবার ওপাশের রাস্তায় ফেলে দেওয়া হয়। দায় সেরে চলে যায় নিষ্ঠুর ঘাতকের দল। অনেকক্ষণ ধরে কচি দেহটা বেওয়ারিশের মতো পড়ে থাকে সেখানে। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ছোট্ট দেহটা কি তখন ফরিয়াদ জানাচ্ছিল বিধাতার কাছে? অসহায় অব্যক্ত অভিমানে কি বুকটা ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছিল? মানুষের জীবন কি এতই সস্তা? জীবনের মূল্য কি এতটুকুই! এ কেমন নিষ্ঠুরতা!! এ কেমন সমাজে আমাদের বসবাস!!!
ইয়ামিনকে যেভাবে প্রথমে এপিসির ছাদ থেকে এবং পরে সড়ক বিভাজক পার করিয়ে সার্ভিস লেনে ফেলা হয়, তাতে মনে হচ্ছিল কোনো মানুষ নয়, বরং কোনো পণ্যের বস্তা ফেলা হচ্ছে। করুণ, মর্মান্তিক ও অমানবিক এ দৃশ্য কাঁদিয়েছে অনেককে।
প্রায় একঘণ্টা পর আনুমানিক বেলা তিনটার দিকে কয়েকজন আন্দোলনকারী ইয়ামিনকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ইয়ামিনের বুকের বাম পাশ ও গলায় অসংখ্য ছররা গুলির চিহ্ন ছিল। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনচার্জ মো. ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বুকে অনেকগুলো গুলি (ছররা গুলি) লেগেছে।
মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (MIST) কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শেখ আসহাবুল ইয়ামিন এ পৃথিবীর সব আকর্ষণকে উপেক্ষা করে চলে গেছে বহুদূরে। যেখান থেকে সে আর কখনও ফিরে আসবে না। একটি ফুল পরিপূর্ণভাবে প্রস্ফূটিত হওয়ার আগেই নিষ্ঠুর হায়েনাদের পদাঘাতে থেঁতলে গেল চিরতরে। মায়ের বুকফাটা আহাজারি আর শোকে স্তব্ধ নির্বাক বাবার অশ্রু কি কখনও থামবে? সব ভুলে গিয়ে তাঁরা কি আবার স্বাভাবিক হবেন? আর কখনও এই পৃথিবীতে ফেরত না আসা ইয়ামিন কি তার ওপর হওয়া নিষ্ঠুরতার বিচার পাবে?
চিরনিদ্রায় শায়িত শেখ আসহাবুল ইয়ামিনের কবরের পাশে ছলছল চোখে বিড়ালটি হয়ত তার সমব্যথী হয়ে অনেকদিন এভাবে বসে থাকবে। কিন্তু আমরা অচিরেই ভুলে যাব এ দেশটিকে বৈষম্যমুক্ত করতে ইয়ামিনের মতো অনেক মেধাবী আর মূল্যবান প্রাণ ঝরে গেছে চিরতরে, যারা আর কখনও ফিরে আসবে না স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে হেঁটে বেড়াতে। আর কখনও দেখতে পাবে না তাঁদের এই আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। মুক্ত হয়েছে দেশ। মুক্তি পেয়েছে সাধারণ মানুষ।
ইয়ামিনের মা ছেলের কবরে একটি তুলসী গাছ লাগিয়েছেন। জানি না তাঁর মনের অবস্থা এখন কেমন। ছেলের কবরের মাটিতে ঝরে পড়া তাঁর অশ্রুগুলোর মূল্য কি দিতে পারবে এই দেশ? যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে বুকে তা কি সারবে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত?
ইয়ামিনেরা হয়ত ওপার থেকে সব দেখছে আর বলছে, আমাদের তোমরা ভুলে যেও না। তোমাদের জন্য আমরা নিজেদের জীবন অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছিলাম। দেশকে বৈষম্যমুক্ত রেখো। আমাদের তোমরা ভুলে যেও না
ছবি: ইন্টারনেট ও প্রথম আলো।
view this link
১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:০৬
দি এমপেরর বলেছেন: মিথমেকার বলেছেন: ইয়ামিন দেশের জন্য নিরস্ত্র-যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছে। তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা!
শ্রদ্ধা সব শহিদের প্রতি। এদের আত্মত্যাগ কখনও বৃথা যাবে না।
২| ১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:১২
ভুয়া মফিজ বলেছেন: যেই পুলিশগুলো এর সাথে জড়িত ছিল, মোটামুটি তাদের সবার চেহারাই এসেছে ভিডিওতে। খুনের দায়ে এদের প্রত্যেকের বিচার হওয়া দেখতে চাই, যতো দ্রুত সম্ভব।
১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:০৮
দি এমপেরর বলেছেন: অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যেন ভবিষ্যতে কেউ কোনোদিন এমন নিষ্ঠুরতা দেখানোর চিন্তাও মনে ঠাঁই না দেয়।
৩| ১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ইচ্ছে করলেই অপরাধী পুলিশদের খুঁজে সঠিক বিচার হওয়া সম্ভব। আশা করি বিচার হবে।
১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:১০
দি এমপেরর বলেছেন: আমিও আশায় বুক বাঁধতে চাই। নিষ্ঠুর অপরাধীগুলো যাতে কোনোভাবেই আইনের ফাঁকফোকর গলে বেরিয়ে যেতে না পারে।
৪| ১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:৩১
মেঠোপথ২৩ বলেছেন: আমাদের ধৈর্যধারন করতে হবে । অপরাধের পাল্লা এত ভারী যে, সব বিচার কি আর একদিনে করা সম্ভব হবে ?
১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ৮:৪০
দি এমপেরর বলেছেন: যত তাড়াতাড়ি খুনীদের বিচার হয় তত তাড়াতাড়ি নিহতদের আত্মা শান্তি পাবে।
৫| ১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১০:২৬
করুণাধারা বলেছেন: এই ছবিগুলো দেখলে কেমন একটা অপরাধ বোধ হয়। এই কচি তরুণ ছেলেগুলো প্রাণ দিয়েছে, তাই আমরা এক ভয়ংকর সাইকোপ্যাথ আর তার অনুগত নৃশংস শয়তান কিছু মানুষের কবল থেকে রক্ষা পেয়েছি!
১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ রাত ১১:১১
দি এমপেরর বলেছেন: অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে রাখতে হচ্ছে। রক্তের প্রতিটি ফোঁটার বদলা না নেয়া পর্যন্ত মন স্থির হবে না।
৬| ১৮ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:৫৩
রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত হৃদয়বিদারক।
১৮ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ২:০৯
দি এমপেরর বলেছেন: মনকে ক্ষতবিক্ষত করে দেয়।
১৮ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫
দি এমপেরর বলেছেন: ব্লগে আপনাকে অনেকদিন দেখিনি।
৭| ১৮ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৬
মিরোরডডল বলেছেন:
মানুষের জীবন কি এতই সস্তা? জীবনের মূল্য কি এতটুকুই! এ কেমন নিষ্ঠুরতা!!
তাইতো দেখেছি। অমানুষদের কাছে মানুষের জীবন মূল্যহীন!
এইসব খুনিদের জনসমক্ষে বিচার হওয়া উচিত।
ইয়ামিন এবং ইয়ামিনদের সকলের প্রতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা।
ওপারে ভালো থাকুক।
১৮ ই আগস্ট, ২০২৪ বিকাল ৪:০৮
দি এমপেরর বলেছেন: ছেলেগুলো একেবারে অস্তিত্ব ধরে ঝাঁকিয়ে দিয়ে গেছে। ঠিকমত ঘুমোতে দেয় না। চিন্তা করি সে মা-বাবার কথা, যাঁদের শূন্য বুক হাহাকার করে ফিরবে জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে; তাঁরা কীভাবে বাকি জীবন কাটাবেন!
৮| ১৯ শে আগস্ট, ২০২৪ সকাল ১০:৪০
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: কিছু কিছু ভিডিও দেখার মত সাহস আমার হয়নি।
এই হত্যার বিচার দ্রুত হোক সেই কামনায় করি।
১৯ শে আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১২:০৭
দি এমপেরর বলেছেন: এত নিষ্ঠুরতা সহ্য করার মতো ছিল না। বিচার দেখতে পারলে মনটা তাও কিছুটা সান্ত্বনা পাবে।
৯| ২২ শে আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:১৪
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: জাতি কখনো ভুলবেনা এই দৃশ্য।
১০| ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২৪
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: এই ছোট্ট ছাত্রসেনার ভিডিও লিংক যতবার দেখি ততবার মনটা ভেঙ্গে যায়। নিষ্ঠুর পুলিশগুলো জাস্ট কুকুরের মত আচরণ করেছে। তদের যখন সঠিক বিচার হবে তখন আমার মনটা শান্ত হবে।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই আগস্ট, ২০২৪ দুপুর ১:০৬
মিথমেকার বলেছেন: নিরস্ত্র ইয়ামিনকে পুলিশ গাড়ির ওপর থেকে টেনে-হিচড়ে নিচে ফেলার পরও সে বেঁচে ছিল, ভিডিওতে দেখা গিয়েছে সে হালকা নড়ে উঠেছে!
নির্দয় হায়নার পালের একটুও দয়া হয়নি ওকে হসপিটালে নেয়ার।
সৃষ্টিকর্তার কাছে একটাই প্রার্থনা; ওদের বিচার যেন এই পৃথিবীতেই হয়, এই মাটিতেই হয়!
ইয়ামিন দেশের জন্য নিরস্ত্র-যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছে। তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা!