নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রকৃতির আচরণ বড়ই অদ্ভুত। গত বছর প্রচুর বৃষ্টিপাত হলো পৃথিবী জুড়ে। বৃষ্টিতে বন্যা হয়ে, ডুবে গেলো অনেক দেশ অনেক শহর ভয়ানক ভাবে। এ বছরের শুরুতেই আগুনে পুড়ে যাচ্ছে ক্যালিফোর্নিয়া। শহরটা প্রিয় আমার। আগুন লাগাটা খুব স্বাভাবিক ওখানে বৃষ্টি প্রায় হয় না শুকনো বনভূমিতে প্রায় আগুন লাগে। মানুষ সতর্ক থাকে সব সময়। জরুরী ভিত্তিতে যে কোন সময় ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে পরার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস হাতের কাছে গুছিয়ে রাখে সেখানে। আগুন লাগা ছাড়া ভূমিকম্পের ভয়ও আছে । সেখানের নাগরিকরা তারজন্যও আলাদা খাবার পোষাক, পানীয় গুছিয়ে রাখে বাড়িতে।
তবে তেমন বড় ভূমিকম্প হয়নি আশংকা অনুযায়ী। দুদিন আগে তিব্বতে ভূমিকম্প হওয়ার খবরের সাথে সাথেই ক্যালিফোর্নিয়ার আগুন লাগার খবর জানলাম। দুদিন ধরে সে আগুন ভয়ংকরী রূপ নিয়েছে। বাতাস হচ্ছে প্রায় আশি মাইল বেগে, যা আগুন উড়িয়ে নিচ্ছে দ্রুত। দশ মিনিটে ছড়িয়ে পরেছে দুশ মাইল দূরে।
এখন পর্যন্ত মালিবু প্যালিসেডস এলাকার আগুন প্রায় বিশ হাজার একর এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। বাতাসে কত দ্রুত আগুন ছড়ায় একবার স্বচক্ষে দেখেছিলাম ফার্মল্যান্ডে। তখনও বরফ ছিল জমিতে ঘাসগুলো অল্প মাথা তুলেছে। সেই ঘাসের ডগায় লাফিয়ে লাফিয়ে আগুন ছুটছিল। নিমিশে আধ মাইল জায়গায় ছড়িয়ে পরেছিল। চারটা দমকলের কর্মি প্রায় এক ঘন্টা পানি ছিটিয়ে নিভিয়ে ছিল সে আগুন।
দু বছর আগে যখন ঘুরতে গিয়েছিলাম ক্যালিফোর্নিয়ায়। প্রায় সময় মোবাইলে সাইরেন বেজে উঠত আগুন লাগার সতর্কবার্তা। কাছাকাছি আগুন থাকলে মোবাইলে সাইরেন বাজিয়ে সতর্ক করা হয়। খুব অবাক হয়েছিলাম, আমার ফোনেও কিভাবে সতর্কবার্তা চলে আসছে। সে বছরই মাসখানেক আগে পুড়ে গিয়েছিল, লিটিল হাউস অন দ্যা প্রেইরির সেট। খুব ইচ্ছে ছিল দেখার, দেখা হলো না। আগুন পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছিল।
এক রাতে আগুন খুব কাছেই ছিল। টেলিভিশনে বারে বারে দেখছিলাম আগুন কত দূর ছড়িয়েছে। রাতে ঘুমের মধ্যে আগুন এসে যাবে না তো!। কিন্তু সে আগুন দ্রুত নিভিয়ে ফেলা হয়েছিল। নিশ্চিন্ত খবর জেনে সেরাতে ঘুমাতে গিয়েছিলাম।
কিন্তু এবারের মতন এমন বিশাল আর এত দ্রুত ছড়িয়ে পরা আগুন আর হয়নি । আগুন লাগার দশ মিনিটের ভিতর ছড়িয়ে পরে দুশ মাইল দূরে, খুব দ্রুত।
শীতকালে পুড়ে যাচ্ছে, ছারখার হয়ে গেল পুরোটা শহর । বাতাসে উড়ে উড়ে যাচ্ছে আগুনের ফুলকি এখানে সেখানে। শুধু জীবন হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছে সবাই।
প্রিয় আবাস, যেখানে স্মৃতির পাহাড়, ভালোলাগা সুখ জীবন যাপন সব ফেলে, মানুষকে চলে যেতে হচ্ছে জীবন নিয়ে। অনেককে গাড়িটাও রাস্তার উপর রেখে ছুটে যেতে হচ্ছে, আগুন থেকে দূরে। গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই রাস্তায়, জ্যামে সবাই আটকে গেছে। রাস্তার উপর দিয়ে পশুরা দৌড়াচ্ছে দেখলাম টেলিভিষনে। বন পুড়ছে ওরা কোথায় যাবে। গত বছর পুড়ে ছাড়খার হয়েছে, উত্তরে ক্যানাডার দুটো প্রিয় শহর ব্যানফ, জ্যাসপার।
পুড়ে যাচ্ছে সুন্দর একটা শহর। পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে। আগুন নেভানোর পানিও শেষ হয়ে যাচ্ছে দমকল বাহিনীর কাছে । মানুষের আবিষ্কৃত আধুনিক সব ব্যবস্থা ব্যবহার করেও কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না প্রকৃতির রোদ্ররোষ। কতদূর যাবে আরো কে জানে। কাল সারাদিন আগুন জ্বলার সম্ভাবনা। সন্ধ্যায় বৃষ্টি হলে প্রকৃতির শীতল বরিষন ধারায় হয়ত আগুন নিভবে।
প্রকৃতির ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে রক্ষা করতে পারে না অথচ রাজনৈতিকরা মানুষের ক্ষতি করতে পারে যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি করে।
১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৩৩
রোকসানা লেইস বলেছেন: কি জানি প্রকৃতি প্রতিশোধ পরায়ন কিনা জানি না। আমরা মানুষরাই এই সংজ্ঞা দেই।
আমার মনে হয়, প্রকৃতি নিজের মতো সংশোধন করে নেয় সবকিছু।
২| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৮:১৭
রবিন_২০২০ বলেছেন: ক্যালিফোর্নিয়াতে দাবানল ফি বছর হচ্ছে। কিন্তু এবারের মতো আগে কখনো দেখিনি।
@জুল ভার্ন, ব্যাপারটা প্রকৃতির প্রতিশোধ নয়। ক্যালিফোর্নিয়া হচ্ছে ইডিয়ট ডেমোক্রাটদের রাজত্ব। এরা অতিরিক্ত ঘন হয়ে যাওয়া বনের গাছ কেটে বন কে স্বাভাবিক রাখেনা। মরে যাওয়া গাছ সরাতে দেয় না। তীব্র বাতাসে গাছের মরা শুকনো ডাল ঘসাঘসি করে আগুন জ্বলে উঠে। যেই জায়গায় আগুন লেগেছে ওটা ঝোড়ো বাতাসের জন্য বিখ্যাত।
তবে এবার সম্ভবত কেউ ইচ্ছা করে আগুন লাগিয়ে থাকতে পারে।
১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৪২
রোকসানা লেইস বলেছেন: ক্যালিফোর্নিয়ায়র প্রকৃতি এটা। ক্যালিফোর্নিয়ার উপরে ভ্যানকুভারও এই নিয়মে জ্বলে। গত বছর জ্যাসেপার, ব্যানফ পুড়েছে ভয়াবহ ভাবে। তার আগের বছর অন্টারিওতে আগুন লেগেছিল।
তবে এবারের মতন এত আগ্রাসী রূপ কেউ দেখেনি।
প্রকৃতির আগুন নয়, কেউ আগুন লাগিয়েছে এই আশংকার কথা যেন বেশি প্রমানিত হচ্ছে। সাথে সিটি কর্মকর্তাদেরও দোষ দেওয়া হচ্ছে। আগুন লাগার সাথে যে সাইরেন বাজে সর্তকতার জন্য সাইরেন বাজার পরে ফলস বলে সংশোধনী দেয়া হয়েছিল। যার ফলে হয় তো দেরি হয়ে গেছে, আগুন বেড়ে গেছে।
যাই হোক খারাপ লাগছে এত মানুষের সাজানো জীবন এলোমেলো হয়ে গেল নিমিশে। যদি কেউ আগুন লাগিয়ে থাকে সেটা খুব খারাপ কাজ হয়েছে।
৩| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৮:৫৪
শায়মা বলেছেন: এটা তো মনে হয় আমার গাছেদের সাথেও গাছেদের যুদ্ধ। কয়েকটা হাড়িপাতিল একসাথে লাগলে ঠোকাঠুকি লাগে। মানুষ মানুষের সাথে গায়ে গায়ে পায়ে পায়ে লাগে। একইভাবে ঘনবসতি গাছেরা নিজেরই শুকনো ডালে ঘষাঘষি লাগিয়ে জ্বলে ওঠে।
রবিনভাইয়ার মন্তব্য অনুযায়ী সাবধান হলে হয়ত এমনটা আর হবে না। তবে ঐ ঘন বনের মাঝে এত গাছ কেটে ওদেরকে হালকা রাখা গন্ডগোল করতে না দেওয়ার মত ব্যবস্থা করে দেওয়া মনে হয় মানুষের কম্ম নহে। এটা কঠিন বড়ই ......
যাইহোক মানূষের প্রয়োজনেই বুদ্ধি বাতলাতে হবে। কিভাবে শহর বাঁচানো যায়। বাঁচানো যায় গাছ পালা প্রকৃতি.......
১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৪৭
রোকসানা লেইস বলেছেন: যাই কারণ হোক শুধু বদলে গেলো মানুষের জীবন এটাই অনুভব করছি
জেনেছিলাম পাথরে পাথর ঘষে মানুষ আগুন জ্বালানো শিখেছিল। এখন মনে হচ্ছে প্রকৃতির এই আগুন জ্বালানো দেখেই মানুষ আগুনের খবর পেয়েছিল। সাথে পেয়েছিল প্রাকৃতিক ভাবে পুড়ে যাওয়া পশুর কাবাব। মানুষের জীবনের ডাইমেনশন হয় তো এভাবেই বদলেছে।
৪| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ১১:২৩
সাইফুলসাইফসাই বলেছেন: কত ভয়ংকর আগুন
১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৪৭
রোকসানা লেইস বলেছেন: অনেক ভয়ঙ্কর
৫| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ দুপুর ১২:২৪
ডি এইচ তুহিন বলেছেন: রাতে ঘুমের মধ্যে এসে যাওয়ার আতঙ্ক ভয়াবহ
১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৫০
রোকসানা লেইস বলেছেন: আমি যে কয়েকদিন ছিলাম প্রতিদিন সাইরেনে বাজত মোবাইলে কোথাও না কোথাও আগুন লেগেছে। সেরাতে কাছাকাছি ছিল। তবে এত ভয়াবহ ছিল না।
ওখানে মানুষ দিব্বি চলে এই অবস্থার সাথে মানিয়ে। মানুষ ভাবে কিছু হবে না। কিন্তু কখনো হয়ে যায় ভয়াবহ।
৬| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:০৯
মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। রিক্ত মানুষ হয়তো আবার পরিপূর্ন হয়ে উঠবে দাবানলের পরে। কিন্তু তাদের মনের ক্ষত সহজে শুকাবে না।
১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৫৫
রোকসানা লেইস বলেছেন: মানুষের সঞ্চয়গুলো মানুষ খুব যত্নে আগলে রাখে । সব এমন হারিয়ে গেলে সে দুঃখ আর কাটিয়ে উঠা যায় কি। হয় তো আর্থিক ক্ষতি হবে না তারপরও আগের মতন আর হবে না।
এই পুড়া জমিতে জরুরী অবস্থা জারী করতে হয়েছে কিছু মানুষ লুট করার জন্য ঘুরছে । মানুষ কত নিকৃষ্ট হতে পারে ভাবা যায়।
৭| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৫
রাজীব নুর বলেছেন: অনেকদিন পর আপনার লেখা পেলাম ব্লগে। সুন্দর ঝরঝরে লেখা। কোনো ভান নেই, ভনিতা নেই।
১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭
রোকসানা লেইস বলেছেন: হ্যাঁ বেশ কিছুদিন পরে এলাম। ভান ভনিতা করে আমি কখনো লিখি না।
ধন্যবাদ
৮| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১০:১৩
কামাল১৮ বলেছেন: প্রকৃতির অদ্ভুত প্রতিষোধ।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৬:০৭
রোকসানা লেইস বলেছেন: প্রকৃতি কার উপর প্রতিশোধ নেয়, প্রকৃতি কি জানে মানুষ বা পশু বাসকরে এই পৃথিবীতে। আমার মনে হয় না।
এই সব প্রতিশোধ শব্দ মানুষ তৈরি করেছে।
ভালো অনেক মানুষ মারা যায়নি তাতক্ষনিক যেমন সুনামিতে বা ভূমিকম্পে মারা যায়। যদিও অনেক মানুষ শেষ পর্যন্ত এই শক থেকে মারা যাবে। নানা রকম ট্রমার মধ্যে ঢুকে যাবে মানুষ। আর যারা দমকল বাহিনীতে কাজ করছে অনেকে অসুস্থ হবে।
৯| ১২ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৫:১২
রাজীব নুর বলেছেন: আমার মন্তব্যের উত্তর দেওয়ার জন্য আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
১৪ ই জানুয়ারি, ২০২৫ রাত ১:৫২
রোকসানা লেইস বলেছেন: আমি উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি সব সময়। কখনো দেরী হয়ে যায় সামুতে না আসার কারণে।
ভালো থেকো
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২৫ সকাল ৭:৩৬
জুল ভার্ন বলেছেন: রিভেঞ্জ অব ন্যাচার। প্রকৃতির প্রতিশোধ। কেউ যদি আমাদের প্রতি জুলুম বা অন্যায় করে তাহলে আমরা তাকে ক্ষমা করলেও প্রকৃতি তাকে কখনো ক্ষমা করে না। আমরা কীর্তিমতা দিয়ে ধরিত্রীর বিরুদ্ধে যে জুলুম করছি তারই প্রতিফলন বিশ্বব্যাপী।