নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে ফিরে ফিরে পাই এক চিলতে হাসিতে।
ছবি নেট ।
এইতো দুই দিন আগের কথা সফিকের বাসায় গেলাম। মেলাদিন ধরে যাই যাই করছি কিন্তু সময় হয়ে উঠছে না ভীষণ ব্যস্ত ছিলাম এ কদিন।
যেই ভাবা সেই মতন কাজ করলাম। সফিক আমার ন্যাংটো কালের দোস্ত। দুইজনের লিংগের চামড়া হারানোর দিন একই দিন! হা হা হা। এক সপ্তাহ তিন দিন পর দুইজন সুস্থ হওয়ার পর বাসার পিছনে মাঠে যেয়ে কে কতদূর দূরে মুত্র নিক্ষেপ করতে পারে সেই প্রতিযোগিতা করতাম!
এখনো সন্ধ্যায় যখন অফিসের কাম সেরে বাসায় ফেরত আসি। মাঠটা কে দেখি আর আফসোস করি কারণ সেই মাঠ এখন নানান প্লটে ভাগ হয়ে বিশাল বিশাল ইমারত এর পাহাড় !
সফিক আমার এমন দোস্ত। আমার ভেতর বাহির ও জানে আমিও ওরটা তেমন জানি। ওরা এখন আমাদের এলাকা ছেড়ে নতুনবাজার এর দিকে চলে গেছে। ওর বাবা সস্তায় পেয়েছিল কোন এক সময় তখন কিনে রেখে দিয়েছিল এ জায়গা। অবশ্য যখন কিনেছিলেন তখন উহা জমিন ছিল না একটা ডোবা ছিল! আমাদেরকে ও বলেছিল। বাবার সোজা উত্তর টাকা দিয়া পানি কিনমু ক্যান ? এখন সেই পানি শুকিয়ে সোনা !
বাসায় আম্মাকে বললাম, সফিকদের বাসায় যাচ্ছি যাবে কি না। তিনি বললেন আজ আর নয় অন্যদিন। শরীর টা নাকি ভালো যাচ্ছে না কয়দিন ধরে। আমি বললাম খুব খারাপ লাগছে? তাইলে আমিও যাচ্ছি না। উনি বললেন, আরে না অমন কিছু না। বয়স হইছে না! আসলে বয়স হইছে না!
কথাটা আমিও দুই একবার রিপিট করলাম। সে যাই হোক আম্মার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে উনার কপালে একটা চুমু খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম আল্লাহর নাম নিয়া। মুখে পশুর মতন এক টুকরো কাপড় ঠাসতে হলো কারণ যা দিনকাল চলছে!
নতুনবাজার নেমে কিছু ফল নিলাম আর পাঁচ কেজি গরুর মাংস কারণ খালাম্মার হাতের বিরিয়ানি খাই না বহুদিন।খুব খেতে ইচ্ছে করছে আজ। এ কাম আমি বহুবার করছি। খালাম্মা ও গ্রহণ করেছে আমার এই পাগলামি।
সফিকরে আগেই ফোন করছিলাম তারপর আবারও করলাম।
হ্যালো, খালাম্মার পুত! কই আছত?
রোবটের মতন এক কথার উত্তর বাসায়। আমি আইচ্ছা, থাক আসছি। ও আবারও হুম, আয়। আমি ওকে বলে লাইন কেটে দিলাম।
এদিকে আগেও এসেছি তবুও আজ যেমন নতুন লাগছে। নতুন নতুন বাড়ি হচ্ছে। একটার গা ঘেঁষে আরেকটা কোথাও কোন তেমন ফাঁকা জায়গা নাই। হয়তো তিন হাজার সনে এমন হাল হবে ছাদে ছাদে করে পুরা ঢাকা শহর হাঁটা যাবে। ভাবা যায়!
যদিও ঢাকা নাকি অবাসযোগ্য শহর তবুও এ শহর এর একটা যাদু আছে। এখানে যে একবার এসে পড়ে সে আর ফিরতে পারে না। কেন পারে না তা এক প্রশ্ন। হয়তো এতো কষ্ট ধকল সহে সহে মানুষ একটা মায়া তৈরী করে ফেলে যার ফলে আর ফিরে যাওয়া হয়না শিকড়ে অথবা এখানটার নানান সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না কেউ সহজে। ভালো স্কুল, ভালো হাসপাতাল, ভালো শপিংমল আরও কত কি!
কলিং বেল চাপার পর খালাম্মা দরজা খুললেন। সেই পুরাতন তবু নতুন চিরচেনা হাসি। আমি যথারীতি সালাম দিলাম। উনি জিগ্যেস করলেন আম্মার কথা। কেন তিনি আসেন নি। আমি ঠিক আছি কি না ইত্যাদি।
পিছন থেকে সফিক বলতে লাগলো কি শুরু করলে দরজার সামনেই এত জেরা শুরু করছ। এমন করলে কেউ আর এ বাসায় আসবে না ডান বাম দিয়া চলে যাবে যত্তসব! দিনকে দিন কি যে শুরু করছ? আয়তো ভিতরে আমাকে উদ্দেশ্য করে বলা।
আমি আরে না ঠিক আছে। খালাম্মা আমার হাতে এত কিছু দেখে জিগ্যেস করলেন কি এতসব! আমি বললাম আপনারে একটু কষ্ট দিমু মনে কিছু নিবেন না। এইযে গরুর মাংস। আপনার হাতের বিরিয়ানি খেতে ইচ্ছে করছে। আর কিছু ফলমূল। খালাম্মা হাসতে লাগলো পাগল ছেলে! সফিক বলল, তোর হালায় মাথায় গ্যাস্টিক আছে! আমি কইলাম হ আছে স্বীকার করছি।
সফিক এসে বাজার গুলি নিয়ে রান্না ঘরে রেখে এলো। আমি ওর ঘরে গেলাম। খালাম্মা হাসতে হাসতে চলে গেলেন বিরিয়ানির আয়োজন করতে।
সফিক ঘরে ঢুকতেই ওরে কইলাম চল ছাদে যাই। এইখানে দম বন্ধ লাগছে। ও কইল ছাদে গেলেও তাই লাগবে চারপাশে বড় বড় ইমারত!
আসলে সফিকের কথা সত্য! চারপাশে এত বড় বড় ইমারত যে, মনে হয় বিশাল সমুদ্রে বড় বড় জাহাজের সামনে ছোট নৌকার মতন অমন ছোট সফিকদের বাসা! চারপাশে বড় বড় ইমারত এর মাঝে দু তলা একটা সাদা বিল্ডিং! মানান সই না।
যাই হোক ছাদে কত গুলি টব এর মাঝে নানান পদের ফুল। আমি সফিক রে জিগাইলাম এগুলি কে করছে? খালাম্মা? সফিকের উত্তর আরে না। আম্মার এত সময় কই। ঐ এক ভাড়াটিয়ার মেয়ে। আমি কই কস কি মুমিন! তা মেয়েটা কি করে? সফিকের উত্তর এই ইন্টারে পড়ে মনে হয় অত জানি না। মাঝেমধ্যে দেখি। হাই, হ্যালো কথা হয়। এই আর কি!
আমি সফিকরে খোঁচাইতে লাগাইলাম। হাই হ্যালো শুধু চলে অন্য কিছু হয় না? সফিক দূর ব্যাটা! একটা বাচ্চা মেয়ের লগে আমার যায়। আমি হাইসা কইলাম ইন্টারে পড়ে তারে কইতাছস বাচ্চা মেয়ে!আরে ব্যাটা খোঁজ নিয়া দেখ তোর আমার মতন দুই চার দশ জন ঘুরাইতাছে নাকে দড়ি দিয়া!
সফিক দূর ব্যাটা ! এ মেয়ে হিজাব পড়ে নামাজ রোজা করে। পড়াশোনায় ভালো। আমি তাইলে তো তোর কপালে এই মেয়ে বরাদ্দ! খালাম্মা তোর কবুলের আশায় বইসা রইছে। বলতে পাচ্ছে না তবে বলবে। তয় যাই করিছ ভাইবা করিছ হিজাবের নীচেও বহু বিষধর নাগিনী বাস করে। হা হা হা। সফিক দূর ব্যাটা! এই বালছাল প্যাঁচাল রাখ। হুদাই টাইম লস। মায়ে আছে নানীর পেটে!
আমি সফিকরে কইলাম, আরে! কাহানী একটা ঘইটা গেছে। সফিক কি? কি হইছে? আমি বলতে শুরু করলাম, তুই জবা আপুরে চিনতি না। ঐ যে আমাদের মহল্লার উত্তর দিকের রমিজ ভবনের তিন তলায় থাকত। সফিক, হুম। চিনতে পারছি। তোর প্রথম ক্রাশ! আমি লজ্জা পেলাম একটু। সফিক বলল, আইচ্ছা, তুই না তারে কি একটা উপন্যাস উপহার দিছিলি জন্মদিনে। তারপর তার ভিতর কিছু লিখে দিছিলি। এরপর আন্টির কাছে বিচার আর তোরে উদোম মাইর দিল আংকেল এবং আন্টি! সেই জবা না!
আমি কইলাম হ। এইবার থাম! রেল গাড়ির মতন ছুটতে থাকে হালার পো! সামনে রাস্তার কাম হলে স্পীড ব্রেকার লাগাইছ।
সফিক তখন বলল, আইচ্ছা, কি জানি লিখছিলি? বল না একবার শুনি। মনে আছে তোর। আমি হাসতে হাসতে কইলাম আছেরে মনে আছে। বলতে লাগলাম
" তোমার রক্ত জবার মতন ঠোঁট
ঘুম কাড়ে হায়!
তোমার ক্ষীনকটি
বারেবারে মারে হায়!
তোমারে ভেবে ভেবে রাত দিন যায়
যদি তুমি ধরা দাও
ফর্সা সকালে রঙধনু চমকায়! "
সফিক হাসতে হাসতে কইল ইহা রসময় গুপ্ত সাহেবের প্রভাব! আমিও কইলাম কথা ঠিক তয় শরীর বলতে আমি তারেই বুঝতাম ! সফিক মানে? আমি কইলাম তাইতো কইতাছি। তুই হুনছ কই খালি ডাইনে বামে যাওয়া শুরু করছ। সফিক আইচ্ছা বয়ান কর।
আমি কইলাম গেল শুক্রবার আমাদের বাসায় হঠাৎ হাজির। আম্মা তো দেখে অবাক। তারপর তাদের সে কি আড্ডা! ছেলে মেয়ে সব বড় হয়ে গেছে। মেয়ের বিয়ে সামনের মাসে। তাই দাওয়াত করতে আসছে। করোনার জন্য বারবার পিছাতে হয়েছে। মগবাজারে একটা ফ্লাট কিনেছে ইত্যাদি। এগুলো অবশ্য মায়ের কাছ থেকে শুনলাম।
তিনি আমার কথা জিগ্যেস করাতে মা বলল, ওর ঘরে আছে। যাও। ঐ টা বলে ইশারা করল। আমি নামাজ পড়ে আসছি। আর শোন খেয়ে যাবে কিন্ত! কতদিন পর তুমি আসছ। তিনি বারবার না করতে লাগলেন।
আমি তখন বের হব। এমন সময় দরজায় টোকা। আমি মনে করছি মা। বললাম, মা কিছু লাগবে? তখন তিনি বললেন খালাম্মা নামাজ পড়তে গেছে। আমি জবা! আমিতো কিছুক্ষণ ঘোরের মধ্যে ছিলাম হিসেব মিলাতে লাগলাম কোন জবা? দরজা খুলে দেখি উনি!
সালাম দিলাম। হাল হকিকত জিগ্যেস করলাম। সেও জিগ্যেস করল। সফিক এর মাঝে বাঁ হাত হান্দাই দিল। বলল, এই!
আমি কইলাম ব্যাটা! কাহানী তো শুরু হয় নাই। সফিক বলতে লাগলো ও আইচ্ছা!
আমি বলতে শুরু করলাম, যে জবাকে দেখে এত ঘুম হারাম করছি। সেই জবা এখন ইয়া মোটা! ক্ষীনকটি বলতে কিছু নাই। আর বুক! বুকের জায়গায় নাই মানে কোমড়ে!
সফিক তুই হালায় একটা এক্সরে মেশিন! এক্কেবারে সব চেক করে ফেলছত। আইচ্ছা, তারপর কি হলো?সে আমারে জিগ্যেস করল কি করছি? আমার উত্তর রেডি " আপনার স্বামী যা করে! " উনি মনে হয় এমন উত্তর আশা করেন নি। আমি সাথে সাথে বললাম মানে কাম করি নয়টা পাঁচটার অফিস। উনি ও বলে যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন। হাসতে হাসতে বলল তুমি আগের মতনই আছো। একটু বদলাওনি। আমিও মুখের উপর বলে দিলাম কিন্তু আপনি বদলে গেছেন শরীর থেকে মনে। সব দিক থেকে। তিনি বললেন, বিয়ের পর এই হয়! আমি কইলাম তাই নাকি! তিনি আবারও হাসতে লাগলেন। এত বড় একটা মোটা শরীর যদি হাসতে থাকে আর দুলতে থাকে তাইলে কেমন লাগে? তুই ক? আমি বিরক্ত প্রকাশ না করে বললাম বসেন চা নাস্তা করেন। আমি একটু বাইরে যাচ্ছি প্লিজ। উনি হেসে বললেন অবশ্যই আর হ্যাঁ তুমি কিন্তু আসছ আমার মেয়ের বিয়ে। আমি বললাম জ্বী আচ্ছা চেষ্টা করব ইন শা আল্লাহ। তারপর উনার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাইরে চলে এলাম।
সফিক তখন আমারে জিগ্যেস করল, আচ্ছা, উনার না আকরাম ভাই এর সাথে প্রেম ছিল তারপর বিয়ে করল কারে? আমি হাসতে হাসতে কইলাম ইহাই জগতের সিস্টেম! আকরাম ঐ কয়দিন টিপটাপ আর চুমাটুমা খাইছে। আকরাম যেই লুইচ্চা! মনে কর আর কয়দিন গেলে ঠাকুর ডুবিয়ে নেকি হাসিল করত হা হা হা.... ( চলবে )
০৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৭:৪০
স্প্যানকড বলেছেন: আবার জিগায় ! ভালো থাকবেন অপু ভাই । ধন্যবাদ।
২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ৩:৫০
চাঁদগাজী বলেছেন:
মনে রখার মতো কিছু নেই!
০৭ ই অক্টোবর, ২০২১ সকাল ৭:৪২
স্প্যানকড বলেছেন: ভুলে যাবার মতন ও কিছু নেই ! মুরুব্বি ঠিক আছেন তো? ঠান্ডা কিন্তু আইতাছে !
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০২১ রাত ১২:৪১
অপু তানভীর বলেছেন: পরের পর্বে আকরাম ভাই আর জবা আপার প্রেমের গল্প শুনবার চাই ।