নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সংবর্ত

আমি এই ব্লগের নীতিমালা মেনে আমার সৃজনশীলতা বিকাশের চেষ্টা করব

সুব্রত মল্লিক

আমি একজন শিক্ষক...শিক্ষকতার পাশাপাশি পড়তে লিখতে ভালোবাসি..

সুব্রত মল্লিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালোবাসার মগজধোলাই

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:০৫

হীরক রাজার দেশে সত্যজিৎ রায় দেখিয়েছিলেন যে অত্যাচারী রাজা তার শাসন ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য একজন গবেষক নিয়োগ দিয়েছিলেন। যার কাজ ছিল মগজ ধোলাই যন্ত্র আবিষ্কার করে জনগণের মগজ ধোলাই করা যাতে তারা রাজা যা বলবে তাই শুনবে এবং রাজা অনায়াসে তাঁর পারপাস সার্ভ করতে পারেন। তো অনেক দিন ধরে গবেষণার পর মস্তিষ্ক প্রক্ষালন যন্ত্র আবিষ্কার করলেন। এবার রাজার দারবারে এক খনি শ্রমিক এসে ফরিয়াদ জানালেন যে, খনিতে কাজ করে তার আর শরীর চলছে না,খনিতে বিষ থাকে, তখন সভাকবি সেই শ্রমিককে শেখালেন, ‘যে করে খনিতে শ্রম তারে যেন ডরে যম।’ এরপর সেই শ্রমিক যখন বলে যে, সে যে টাকা পায় তাতে সে ঠিক মতো খেতে পায় না। তখন সভাকবি তাকে বলেন,‘কম খেলে নাহি খেদ, বেশি খেলে বাড়ে মেদ।’ আর গবেষকের মস্তিষ্ক প্রক্ষালন যন্ত্রে নিয়ে গবেষক সেই শ্রমিককে মগজ ধোলাই করে দিলে সে অমায়িক পরিশ্রম ও খাওয়ার কথা ভুলে তাকে শিখিয়ে দেয়া মন্ত্র মুখে আওড়াতে থাকে, ভুলে যায় শ্রমের বেদনা, ক্ষুধার যন্ত্রনা। আমাদের মিডিয়া এখন ঠিক সেই কাজটিই করছে। পশ্চিমা সংস্কৃতি প্রচার ও প্রসারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে আমাদের এই মিডিয়া। পশ্চিমা বেনিয়া দলের সাথে হাত মিলিয়ে ওরা আমাদের তরুণ প্রজন্মের মগজ ধোলাই শুরু করেছে খুবই সুচিন্তিত ভাবে। হীরক রাজার দেশে রাজার উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা আর এই বেনিয়াদের হিডেন পারপাস হচ্ছে ব্যবসা বৃদ্ধি করা, নিজেদের পন্যের বিক্রি বাড়ানো আর তরুণ প্রজন্মকে ভোগবাদী করে তোলা কারণ তরুণরা ভোগবাদী না হলে ওদের বাৎসরিক টার্নওভার কমে যাবে। আর তাই এই ফেব্রুয়ারি মাসে এসে দেখছি ভালোবাসা দিবস উদযাপনের জন্য সপ্তাহব্যাপী মহারণ। ওরা বলছে ৭ ফেব্রুয়ারি রোজ ডে, ৮ ফেব্রুয়ারি প্রোপোজ ডে, ৯ ফেব্রুয়ারি চকলেট ডে, ১০ ফেব্রুয়ারি টেডি ডে, ১১ ফেব্রুয়ারি প্রমিজ ডে, ১২ ফেব্রুয়ারি কিস ডে, ১৩ ফেব্রুয়ারি হাগ ডে আর ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেনটাইন ডে। মজার ব্যাপার হলো প্রত্যেকটি দিনের সাথে জড়িয়ে আছে ব্যবসা। ব্যবসাটা সামান্য গোলাপ ফুল দিয়ে শুরু হচ্ছে অর্থ্যাৎ প্রথম দিন কম খরচে পার পেয়ে গেলেন কিন্তু খরচের অভ্যাসটা গড়ে উঠল। এবার যেদিন প্রোপোজ করবেন সেদিন তো আর এমনি এমনি করা যাবে না, তার জন্য নিজেকে ফিটফাট হিসেবে জাহির করতে হবে। তারজন্য দরকার ফ্যাশনেবল জামা-প্যান্ট, ঘড়ি, চেইন, চশমা, পারফিউম ইত্যাদি ইত্যাদি অর্থ্যাৎ আপনি একটা দিন প্রপোজ করবেন তার জন্য আপনাকে কত কোম্পানীকে বড়লোক করে দিতে হচ্ছে আর নিজের পকেট ফাঁকা হচ্ছে। এভাবে যদি প্রপোজ করে সফল হন তাহলে নানান দিবস পেরিয়ে শেষে আসছে ভ্যালেন্টাইন ডে অর্থাৎ খরচের চূড়ান্ত দিন। এদিন প্রিয়তমাকে খুশি করতে আপনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন, আপনার পকেট ফাঁকা হবে আর লাভ হবে ঐ বেনিয়াদের। এভাবে সুকৌশলে ওরা আমাদের মগজ ধোলাই করে ওদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে আর আমাদেরকে ওদের সাংস্কৃতিক দাস বানিয়ে ফেলছে। আচ্ছা এভাবে বলে কয়ে, দিনক্ষন মেপে, গিফট দিয়ে কি ভালোবাসা হয়? ভালোবাসা তো হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে হয়। আর হৃদয়ের ভাবাবেগের কাছে এই সব গিফট-টিফট একেবারে তুচ্ছ। ভালোবাসা করা যায় না ভালোবাসা হয়ে যায়।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫৭

নিলু বলেছেন: ভালো লাগলো , লিখতে থাকুন

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৩৪

সুব্রত মল্লিক বলেছেন: ধন্যবাদ....অনুপ্রাণিত হলাম

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.