![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন শিক্ষক...শিক্ষকতার পাশাপাশি পড়তে লিখতে ভালোবাসি..
এবার শীতে বাড়ি গিয়ে শুনলাম খেজুর গাছ কাটার মতো লোক আর পাওয়া যাচ্ছে না। একটা বয়স্ক লোক খেজুর গাছ কটাতো কিন্তু এখন সে অসুস্থ তাই আর কাটতে পারছে না। এখনকার জেনারেশনের কেউ আর এসব কাজ করতে চায় না। তাই দেখলাম খেজুর গাছ গুলো নিষ্প্রাণ দাঁড়িয়ে আছে তাকে নিয়ে আর কোনো হাকডাক নেই। অথচ ছোটবেলায় এই খেজুর রসের সাথে আমার এক অদ্ভূত সখ্যতা গড়ে উঠেছিল। আমদের ২০ টা মতো খেজুর গাছ ছিল এবং শীতকালে সপ্তাহে প্রায় ৭-৮ ভাড় রস হতো। আমাদের গাছ কাটতো বৃহষ্পতি নামক একজন গাছী। গ্রাম্য ভাষায় সবাই তাকে ব্রেস্পতি বলে ডাকতো। যেদিন গাছ কাটতো তার আগের দিন বাবার সাথে পুকুর ঘাটে বসে ভাড়গুলো খেজুরের ছোবড়া দিয়ে পরিস্কার করে রোদে শুকাতে দিতাম। এরপর খেজুর গাছ কাটার দিন সকালে ভাড়গুলো শুকনো লতাপাতার দুইপাশে সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে আগুনে পোড়ানোর পর ভাড়ের গলায় দড়ি (আমাদের এলাকায় কানাচ বলে) লাগিয়ে প্রত্যেক গাছের নীচে রেখে স্কুলে যেতাম। এবার স্কুল থেকে ফিরেই চলে যেতাম গাছ কাটা দেখতে। গাছী গাছ কাটতো আর আমি তার সাথে ঘুরে ঘুরে বেড়াতাম। গাছ কাটার পর দেখতাম কোন গাছ থেকে কতটুকু রসের ফোটা পড়ছে। গাছীকে জিজ্ঞাসা করতাম অমুক গাছে কাল এক ভাড় রস হবে কিনা? গাছী তার মতামত জানাতো। গাছী যখন বলতো অমুক গাছে কাল একভাড় রস হবে এরপর বিকাল থেকে শুরু হতো রস দেখার পালা, একটু পর পর গিয়ে দেখে আসতাম রস কতটুকু হলো। বিকেল বেলা সুন্দর পাটকাঠি ভেঙে নিয়ে একবারে পাইপের মতো করে তৈরি করে যে গাছের রস মিস্টি সেই গাছে উঠে যেতাম রসাস্বদনে। এরপর ভোরে উঠে মাথায় থাকত সেই গাছের রসে ভাড় পূর্ণ হলো কিনা..তাই বাবা ঘুম থেকে ওঠার আগেই আমি তীব্র শীত উপেক্ষা করে গাছে উঠে দেখে আসতাম আসলেই ভাড় পূর্ণ হলো কিনা! অপূর্ণ থাকলে মনটাই খারাপ হয়ে যেত আর পূর্ণ হলে কি যে অপার্থিব আনন্দ পেতাম সেটি ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব না। এরপর বাবার সাথে ঘুরে ঘুরে রস পেড়ে আনতাম এবং ইচ্ছা মতো রস খেতাম। রস খাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট উঁচু গাছ ছিল, সেই গাছের রস আলাদা করে রাখা হতো। রস আস্বাদনের পর গায়ে কাপুনি দিয়ে উঠতো। তখন একটা পাটি নিয়ে চলে যেতাম পুকুর পাড়ে। পুকুর পাড়ে রোদে বসে বই পড়তাম আর অপেক্ষায় থাকতাম কখন বাবার রস জ্বালানো শেষ হবে আর গুড়ের মিষ্টি গন্ধ এসে মনটা ভরিয়ে দিবে। রস জ্বালানো শেষ হলে এবার গুড় খাওয়ার পালা। কলা গাছের পাতায় গুড় নিয়ে আঙুল দিয়ে রসিয়ে রসিয়ে গুড় খাওয়া। আর পৌষ মাস আসলে পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে পিঠা খাওয়ার উৎসব....আর এগোতে পারছিনা খুব নস্টালজিক হয়ে পড়ছি..আবার সেই বৃহষ্পতিরা ফিরে আসত!!!আবার সেই পাগলামিতে ভরা খেজুর রসের প্রেমে পড়া দুষ্টু-মিষ্টি দিনগুলো ফিরে পেতাম!!!! ফিরে পাব কি!!!!!!!!!!
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫১
সুব্রত মল্লিক বলেছেন: এই ঐতিহ্যগুলো সত্যি হারিয়ে যেতে বসেছে
২| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৮
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: ওরে ভাই কি কথা মনে করিয়ে দিলেন, দু দশক আগে মনে হয় নানা বাড়ির খেজুরের রস খেয়েছিলাম। এখন সব ইতিহাস।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫২
সুব্রত মল্লিক বলেছেন: ইতিহাস আবার ফিরে আসলে অনেক ভালো লাগত কিন্তু...
৩| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:২৪
ইকরাম বাপ্পী বলেছেন: আগে শীতের সময় গ্রামে যাওয়া হলে খাওয়া হত কিন্তু এখন আর গ্রামে যাওয়া হয় না আর এর কথাতো বাদই থাকুক...... গ্রামে কাজিনদের সাথে বিকালে কিংবা সকালে বাইরে গেলে গাছের নিচে যেয়ে হা করে থাকার মাঝেও এক রকম মজা ছিল, গাছে চড়তে পারতাম না কিনা তাই
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৩
সুব্রত মল্লিক বলেছেন: শেকড়ের কাছে ফিরে যেতে পারলে আসলেই অনেক ভালেো লাগে
৪| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৯
রুদ্র জাহেদ বলেছেন: সেই ছোটবেলার কথ মনে করিয়ে দিলেন।গ্রামের সেই সহজ সরল জীবন আর ফিরে পাবো না!!
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৪
সুব্রত মল্লিক বলেছেন: জটিল জীবনের আবর্তে সেই সোনালী দিনগুলি খাঁটি কথা বলেছেন
৫| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৭
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: মনে হয় না আর ফেরত পাওয়া যাবে। ভালো ভালো অনাবিল আনন্দের সবকিছুই আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে।
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৪
সুব্রত মল্লিক বলেছেন: আপনার সাথে সহমত
৬| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪১
ফেরদৌসা রুহী বলেছেন: আমি দুয়েকবার খেয়েছি তাই এসব এত টানেনা।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪২
সুব্রত মল্লিক বলেছেন: বেশিবার খেলে ভালো লাগত
৭| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: এগুলো তো কয়েকদিন আগেও কত আনন্দ নিয়ে করা হতো - এখন তো বিলুপ্ত প্রায়! সেই দিন বাঘের পেটে চলে গেছে।
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪
সুব্রত মল্লিক বলেছেন: সত্যি বলেছেন
৮| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৭
সুমন কর বলেছেন: আহা...ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিলেন.... ছোটবেলা মামার বাড়ি গেলে, শীতকালে সকালের প্রথম খাবার ছিল ওটাই...
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪০
সুব্রত মল্লিক বলেছেন: আসেলই খুব মজার ছিল
৯| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:১৯
জুন বলেছেন: ছোটবেলায় বাবার কাজের সুত্রে সীতাকুন্ডে থাকা অবস্থায় খুব ভোরে খেজুরের রস খাবার অভিজ্ঞতা হয়েছিল। আম্মা পড়ে এগুলো জাল দিয়ে নরম গুড় ছাড়াও কেমন একটা আঠালো চকলেটের মত তৈরী করতো । কিযে স্বাদ টেনে টেনে খেতে। এসব কথা এখন মনে পড়লে আমাদের ছেলেপুলেদের জন্য দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে। কি বন্দী জীবন তাদের পিসির উপর চোখ রেখে সময় কাটানো।
বছর কয়েক আগে যশোরে কোন এক গ্রামের মাঠে খেজুর গাছের নীচে রস জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরী করছে লোকজন দেখেছি।
ভালোলাগলো আপনার স্মৃতিচারণ।
+
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৯
সুব্রত মল্লিক বলেছেন: ধন্যবাদ.....এখন সেদিন আর নেই সত্যি খুব খারাপ লাগে...
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ৯:৩৪
রানার ব্লগ বলেছেন: খেজুরের রস খাওার যে কি মজা তা এই জেনারেশান জীবনেও জানবে না। কোকাকোলা আর পেপসি এর স্বাদ এর কাছে নস্যি। হায় সেই দিন আর আসবেনা। যাহা চলে যায় তাহা আর ফিরিয়া আসে না। আমি আজো সেই স্বাদ খুজে বেড়াই বাংলার পথে প্রান্তে।