নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুকান্ত কুমার সাহা

I like to seek knowledge.

সুকান্ত কুমার সাহা › বিস্তারিত পোস্টঃ

তক্ষক লোভী মানুষগুলোর সুমতি হোক!

১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৭

তক্ষক! তক্ষক চাই! যে কোন দামে তক্ষক চাই! যেভাবেই হোক তক্ষক চাই! বাংলাদেশের কিছু মানুষ যেন তক্ষকের জন্য পাগল হয়ে গেছে। তাদের এটা চাইই! একটা পেলে তারা এটা কোটি কোটি টাকায় বিক্রি করবে! একদিনে বড়লোক হবে। রঙিন ফানুস ওড়াচ্ছে ওরা। কোথায় বিক্রি করবে, কার কাছে বিক্রি করবে সেই সম্পর্কে যদিও তাদের কোন ধারনাই নেই। তারপরেও তারা ছুটছে তো ছুটছেই। খাগড়াছড়ি, বান্দরবন, রাঙ্গামাটি থেকে মধুপুর হয়ে সুন্দরবন পর্যন্ত তারা ছুটছে। এখন তারা তাদের গন্তব্য ঠিক করেছে মনিপুর, মেঘালয়, আসামসহ ভারতের পাহাড়ি রাজ্য গুলোকে। সেখানেও এখন তক্ষকের ধোঁয়া! আর সেই ধোঁয়ায় হাওয়া দিচ্ছে আমাদের দেশের তক্ষকের নেশায় নেশাগ্রস্থ কিছু মানুষ! এদের অধিকাংশই বয়সে তরুণ। কাজ কাম বাদ দিয়ে নিজের পকেটের টাকা খরচ করে এরা এখন ভারত মুখী। আশা! যদি একটা পাই তাহলেই কোটিপতি!



শীতের সকালে গুয়াহাটির “ব্লু মুন হোটেল” এর রুমে বসে আমি আর নিজাম ভাই চা পানের সাথে সাথে দিনের কাজের পরিকল্পনা করছিলাম, এমন সময় রুমের দরজায় টোকা পড়লো, ইয়েস! বলেতেই হোটেল বয় দুই-তিনটা বিভিন্ন ভাষার পত্রিকা নিয়ে এসে সামনে রাখলো। তার মধ্যে থেকে দৈনিক যুগশঙ্খ পত্রিকাটি রেখে বাকিগুলো ফেরত দিলাম।



দৈনিক যুগশঙ্খ একটি বাংলা পত্রিকা, যেটা কিনা গত ৬৩ বছর ধরে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। ভাবলাম আমাদের দেশে এত দিন ধরে নিয়মিত প্রকাশিত হওয়া পত্রিকা কয়টা আছে? মনে মনে গুনে খুব একটা অগ্রসর হতে পারলাম না। ইত্তেফাক বাদে আর কোন পত্রিকার নাম মনে করতে পারলাম না!



আসামের তথা ভারতের খবর পড়ছিলাম আর পত্রিকার পাতা উল্টাচ্ছিলাম। হটাৎ তৃতীয় পাতায় প্রথম কলামে “চোরাশিকারির নিশানায় এবার গিরগিটি” খবরটায় চোখ আটকে গেল! খবরটা আমি হুবহু তুলে দিচ্ছি-

দৈনিক যুগশঙ্খ, গুয়াহাটি, বুধবার, ৯ জানুয়ারি, ২০১৩ সংখ্যার একটি প্রতিবেদন: “চোরাশিকারির নিশানায় এবার গিরগিটি”ঃ

বাঘ, গণ্ডার, হাতির মত বড় মাপের জানোয়ার চোরা শিকারিদের নিশানায় আগে থেকেই ছিল। এবার গিরগিটি শিকারেও নেমে পড়েছে চোরাশিকারি বাহিনী। টোকায় গিকো (স্থানীয় নাম) নামে এক বিশেষ প্রজাতির টিকটিকির সন্ধানে চোরাশিকারিরা উত্তর-পূর্বের বনাঞ্চল কার্যত চষে বেড়াচ্ছে। জাপান, কোরিয়া সহ এশিয়ার বেশকিছু দেশে ওই টিকটিকির বাজার দর আকাশছোঁয়া। প্রাপ্ত বয়স্ক টোকায় গিকো প্রজাতির গিরগিটির চোরাবাজারে প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকায় বিকোচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। ওই প্রজাতির পূর্ণ বয়স্ক গিরগিটির দৈর্ঘ্য ৪০ সেন্টিমিটার। এবং ওজন প্রায় ২০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। মূলত মণিপুরের জঙ্গলে টোকায় গিকো প্রজাতির গিরগিটি পাওয়া যায়। বিরল প্রজাতির ওই গিরগিটি মণিপুরের জঙ্গলে ঠিক ক’টি আছে সঠিক ভাবে তা জানা যায়নি। তবে গত ছয় মাসে পুলিশ এবং বন দফতরের যৌথ অভিযানে চোরাশিকারির কবল থেকে ৭০টি গিরগিটি উদ্ধার করা হয়। পিপল এনিম্যাল সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে। জাপান, কোরিয়ার মতো দেশে স্থানীয় ভেষজ ঔষধ তৈরিতে ওই প্রজাতির গিরগিটি ব্যবহার করা হয়। যদিও পরিবেশবিদ ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, টিকটিকি দিয়ে ওষধ তৈরির কোনও বিজ্ঞান সম্মত ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। চোরাশিকারিদের প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দারাও গিরগিটির সন্ধানে নেমে পড়েছেন। মণিপুরের থৌবাল জেলায় গিরগিটির বাচ্চা সংগ্রহ করে চোরাশিকারিরা লালনপালনের জন্য স্থানীয় কৃষকদের কাছে তুলে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন পিপল ফর এনিম্যালের সংগঠক এর বিশ্বজিৎ। ওই গিরগিটি পূর্ণ বয়স্ক হওয়ার পরে প্রচুর টাকা দিয়ে চোরাশিকারিরা কিনে নিচ্ছে। চোরাশিকারিদের দাপটে টোকায় গিকো প্রজাতির গিরগিটি মণিপুর থেকে প্রায় নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। ওই প্রজাতির গিরগিটিকে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রাণী হিসেবে ঘোষণার জন্য কেন্দ্র সরকারের কাছে আবেদন।



খবরটি পড়ে নিজাম ভাইকে জিজ্ঞাসা করলাম, ঘটনা কি, এই তক্ষক মানে গিরগিটির খপ্পরে আপনারাও পড়েছেন? নিজাম ভাই বললেন, আর বলবেন না, কি যে এক হুলছুল ব্যাপার ঘটছে আমাদের করিমগঞ্জ সহ সমগ্র নর্থ-ইস্টে। বাংলাদেশ থেকেও প্রচুর মানুষ দলবেঁধে আসছে প্রতিদিন এর খোঁজে। মূলত আপনাদের দেশের মানুষের কারনেই এই হুজুগ এখন আকাশ ছোঁয়া। শুনি এর দাম নাকি কোটি কোটি টাকা, ছেলে-পেলে কাজ কাম, খাওয়া দাওয়া বাদ দিয়ে শুধুই এর পিছনে ছুটছে।



আমি বললাম, এটা কি এখানে পাওয়া যায়? আর কাউকে পেতে দেখেছেন? আপনি কি চেনেন এটা? আমাদের ওখানে কিছু মানুষ তো প্রায় পাগল হয়ে গেছে, সাথে সাথে ফকির! আর আমি কাউকে এটা পেতে শুনিনি বা পেয়ে বড়লোক হতেও দেখেনি।



নিজাম ভাই বললেন, ছোট বেলায় তো এটা আমরা অনেক দেখেছি, জঙ্গলে থাকে। এখন কেউ পেয়েছে কিনা তা আমি জানি না। তবে যারা এটা খুঁজছে তাদের আমি চিনি। আমার পাড়ার ছেলেরাই এইসব করছে। আমি বললাম, আমি ফেরার সময় ওদের একজনের সাথে কথা বলবো। এই বিষয়ে আমার জানার আগ্রহ আছে। নিজাম ভাই বললেন, আচ্ছা।



ফেরার পথে নিজাম ভাইকে কথাটা মনে করিয়ে দিয়ে বললাম, কলা বেচা তো অনেক হল, এবার আমার রথ দেখার কাজটাও যে ষোলকলা পূর্ণ করতে হয়? আপনার পাড়ার ছেলেদের খবর দেন। আর এমনভাবে খবরটা দেন, যেন ওরা ধারনা করে- মক্কেল পাওয়া গেছে। দেখবেন ওরা হুড়মুড় করে আসবে। আমি এই লাইনের ট্যান্ডলদের চিনি। ওদের চরিত্র সম্পর্কে জানি। নিজাম ভাই ফোনে সঠিক ছেলেটি জোগাড় করার জন্য তার কোন ভাইকে নির্দেশ দিলেন।



করিমগঞ্জে আসার পর, নিজাম ভাইয়ের সাথে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে একটু অপেক্ষা করার পর দুই তিনটা ছেলে এসে হাজির, নিজাম ভাই ওদের সবাইকে চেনে না। আমি নিজাম ভাইকে চোখের ইশারা করে ওদের নিয়ে খাওয়ার হোটেল “আহার”-এ ঢুকলাম। আমি আচার আচরণে, কথায় ওদের এমন একটা ধারনা দিলাম, যেন আমি একটা কেউকেটা! এবং ওদের সাথে কথা বলে এও বুঝলাম ওদের মধ্যে বাংলাদেশের কেউ আছে বা বাংলাদেশের সাথে ভাল যোগাযোগ আছে।



একটু কথা বলতেই ওদের জড়তা কেটে গেল। আর নিজাম ভাই যেহেতু ওই অঞ্চলের একজন নামকরা ব্যাক্তি, তাই ওদের ভিতরে আর কোন ভয়ও থাকলো না। একটু খোঁচা দিতেই অনর্গল কথা বের হতে থাকলো। যে ছেলেটার কথাবার্তায় সিলেটী টান বেশি আমি সেই ছেলেটিকেই টার্গেট করলাম। ওদের সাথে কথাগুলো হল এই ভাবে:



তক্ষক কি?



- এটা একটা বড় টিকটিকি। এটা গাছের গর্তে, মাটির কোটরে থাকে। এরা সোনালী, ছাই, মাটি ও পেস্ট এই ৪ রঙের হয়। গায়ে ছিট ছিট থাকে। চোখ হয় লাল। আর এরা মুখটা আকাশের দিকে তাক করে হাঁ করে থাকে।



আকাশের দিকে তাক করে হাঁ করে থাকে?



- হ্যাঁ! কারণ এরা বিদ্যুৎ খায়। মানে ঝড়ের সময় যে বাজ পড়ে সেই বাজের বিদ্যুৎ খায়।



আমি অবাক হয়ে ফের জিজ্ঞাসা করলাম, ধুর! এটা ঠিক না। তোমরা ভুল করছো, বিদ্যুৎ কি কখনো খাওয়া যায়? শুধু কি বিদ্যুৎই খায়, আর কিছু খায় না?



- আমার এই প্রশ্নে ওদের মধ্যে আমাকে বুঝানোর আকাঙ্কা আরো বেড়ে গেল। বলল, এই বিদ্যুৎ খেয়েই তো ওদের পেটের মধ্যে মানে বুকের মধ্যে ম্যাগনেট তৈরি হয়। আর ওই ম্যাগনেটই হচ্ছে মেডিসিন। আর ওরা বাতাস, পোকা, টিকটিকি খায়। ছোট সাপও খায়।



আমি বললাম কিসের মেডিসিন?



- অনেক দামি মেডিসিন তৈরি হয় এই ম্যাগনেট দিয়ে। ঠিক কিসের ঔষধ তৈরি তা আমরা জানি না। তবে জানি বিদেশীরা রিসার্চ করে দামি ঔষধ বানায়।



এর দাম কত?



- একটু কাঁচুমাচু হয়ে বলল, এর দাম তো অনেক, কোটি কোটি টাকা। সাইজ ও বয়সের উপর এর দাম নির্ভর করে। ধরুন!



- এ গ্রেডঃ যদি ৩২০ গ্রাম হয়, তাহলে এর সাইজ হবে ১৯”-২০”, বয়স হবে ২৫০ বছর। এর বুকের মাপ হবে ৭”; যেখান থেকে ছিট ছিট রঙ শুরু হয়েছে।



- বি গ্রেডঃ যদি ৩০০ গ্রাম হয়, তাহলে এর সাইজ হবে ১৮”-১৯”, বয়স হবে ১৫০-২০০ বছর।



- সি গ্রেডঃ যদি ২৫০ গ্রাম হয়, তাহলে এর সাইজ হবে ১৬”-১৭”, বয়স হবে ১০০-১২০ বছর।



- ডি গ্রেডঃ যদি ২০০ গ্রাম হয়, তাহলে এর সাইজ হবে ১২”-১৫”, বয়স হবে ৮০-৯০ বছর।



আমি বললাম এবার দাম বল?



- ওরা বলল, এ গ্রেডঃ ১০০ থেকে ১৫০ কোটি টাকা!



আমি বড় ধরণের শকট হয়ে পুনঃ জিজ্ঞাসা করলাম, কত?



- ওরা আত্মবিশ্বাসের সাথেই বলল, দাম ঠিক আছে।



এবার আমার কাছে আর বিষয়টা মজার থাকলো না। আমি সিরিয়াস হয়ে জিজ্ঞাসা করলাম ছোট গুলো?



- ওরা বলল, বি গ্রেডঃ ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকা, সি গ্রেডঃ ৫০ লাখ টাকা আর ডি গ্রেডঃ ৪-৫ লাখ টাকা।



আমি মনে মনে বললাম, যারা এই আকামটা করছে, তারা খুবই চালাক এবং নিষ্ঠুর সাইকো অপরাধী। এই সব ছোট ছোট ছেলেপেলে দিয়ে কি না করাচ্ছে? তারা এদের মাথায় টাকার এমন বিষ ঢুকিয়েছে যে, এরা সবগুলো শেষ পর্যন্ত সর্বস্বান্ত না হয়েই পারে না!



এবার আমি জিজ্ঞাসা করলাম এর ক্রেতা কারা এবং লেনদেন হয় কিভাবে?



- লেনদেন হয় ক্যাশ টাকায় আর ব্যাংকের মাধ্যমে। আর কেনে হল বিদেশীরা। আমেরিকা, জার্মানি, চীন, থাইল্যান্ড এইসব দেশে যায়। বাংলাদেশে বিদেশীদের দালাল আছে আর এদের মাধ্যমে কেনে ঢাকা বারিধারার বড় বড় নামকরা বিল্ডিং গুলো!



এ পর্যন্ত কয়টা বিক্রি করেছ? আর কত টাকা খরচ হয়েছে এক এক জনের?



- একটাও বিক্রি করিনি। তবে আমাদের এক এক জনের লাখ টাকার উপরে খরচ হয়েছে এ পর্যন্ত।



আমি বললাম ভাল! তা তোমাদের কাছে কি এর কোন ছবি আছে? আমি দেখলে হয়ত চিনতাম! বলেই, আমি নিজাম ভাইকে চালাকি করে বললাম, আচ্ছা মণিপুরে আপনার আদিবাসী যে এজেন্ট আছে ওকে বললে বোধ হয় দুই একটা পাওয়া যাবে! আমি ঢিল মারলাম। এতক্ষণ ওদের সাথে কথা বলে ওদেরকে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। মনে মনে অপেক্ষা করলাম দেখি ওরা কি বলে। আমি পত্রিকা পড়ে ইতিমধ্যেই জেনে গেছি যে মনিপুরে এটা পাওয়া যাচ্ছে, আর এ খবর ওদের কাছে না থেকেই পারে না!



- আমাদের কাছে এর একটা ভিডিও আছে, বলেই সিলেটী উচ্চারণের ছেলেটি তার পকেট থেকে মোবাইল বের করে ভিডিও অন করলো। আমি ও নিজাম ভাই তক্ষকের ভিডিওটি দেখে অবাক! আমাদের ধারণাতেই ছিল না, আসলেই যে তক্ষক নামে কিছু আছে, আর এটা এত বড় হয়! আমি অবাক হতে হতে এবং ওদের বোঝার আগেই ব্লু-টুথ অন করে ডাটা ট্রান্সফারের কর্মটা সেরে ওদের অনুমতি চাইলাম, এটা আমি নিতে পারবো কিনা? ততক্ষণে ভিডিও কপি হয়ে গেছে! আর সেই কপিই এই ব্লগে পেস্ট করেছি। হ্যাঁ! ওরা ভিডিওটার কপি দিতে শেষ পর্যন্ত না করেনি। তা যে কারণেই হোক!



সবশেষে আমি বলতে চাই, এই সবই ধোঁকা আর মরীচিকা! আর এর পিছনেই কিছু মানুষ বুঝে, না বুঝে আর একদিনেই কোটিপতি হওয়ার লোভে ছুটছে! এতে ভাল হবে না, কারও ভাল হবে না! মধ্য থেকে একেবারে শান্ত নির্বিবাদী প্রাণীটির প্রাণ যাচ্ছে! ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ!



তাই আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে কায়মনে প্রার্থনা করি, তক্ষক লোভী এই মানুষগুলোর সুমতি হোক!



বিঃদ্রঃ পুরোনো লেখা, অন্য ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিও লিঙ্কটা দিতে পারলাম না, দুঃখিত!

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৭

সুকান্ত কুমার সাহা বলেছেন:
গুজব এবং লোভ দুটোই ব্যাধি - এ থেকে মুক্ত থাকতে চাই !!!

২| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:১৫

এম আর ইকবাল বলেছেন: চট্রগ্রামে একটা ঘটনার কথা শুনেছিলাম ।
একজন লোক এসে বহদ্দার হাট এলাকায় এক হোঠেলে উঠে তক্ষক কেনার আগ্রহ দেখায় । জানায় ৩০/৪০ লাখ টাকায় এক একটা তক্ষক কিনবে নিদ্দিষ্ট ওজনের ।
স্হানীয় কিছু পোলাপানকে কিছু টাকা অগ্রিম দিলো বিক্রেতা খুজে বার করতে । তবে সব কছু গোপনিয়তার সাথে ।এভাবে চলল কয়েক দিন ।কেউ তক্ষক খুজতে র্পাব্বত অঞ্চলেও লোক পাঠালো ।ইতিমধ্যে খবর এলো নিদ্দিষ্ট ওজনের একটা তক্ষক পাওয়া গেছে । ছবি , ভিড়িও সবই দেখানো হলো ক্রেতাকে । ক্রেতা খুশি । দাম ধরা হলো ৪০ লাখ টাকা । ক্রেতা অগ্রিম দিলো এক লাখ টাকা । ২/৩ জন ব্যবসায়ী অর্থ বিনিযোগ করে ১৫ লাখ টাকায় তক্ষক কিনলৈা র্পাব্বত এলাকা থেকে । দেখাগেল আনার পথে তক্ষক মারা গেছে ।
মানুষের ধারণা ক্রেতা বিক্রেতা একই গ্রুপ । মাঝখানে লোভী মানুষগুলোর অর্থ নাশ ।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৫১

সুকান্ত কুমার সাহা বলেছেন:
ধন্যবাদ !!

আসলে আমিও এই ব্যবসার মাজেজাটা বুঝি না। বহুদিন ধরেই শুনে আসছি, এইটা পেলে কোটিপতি, ওটা পেলে কোটিপতি। কিন্তু কাউকেই আমি কোটিপতি হতে দেখেনি। মধ্য থেকে দেখেছি কিছু লোককে ফকির হতে। এমন কি এই বিষয়টি নিয়ে মন্দির, মানুষের বাড়ী ডাকাতি হতেও শুনেছি! শুধুমাত্র কষ্টি পাথরের মূর্তির জন্য বহু মন্দির লুট হয়েছে, হিন্দুবাড়ির পূজোর ঘরে সিঁদ কেটেছে চোরেরা।

ভাগাভাগি নিয়ে, এমনকি ডাকাতি করতে যেয়ে খুন খারাবির কথাও কানে এসেছে। এদের পণ্যের কোন শেষ নেই। নিত্যনতুন পণ্য এদের ঝুলিতে যোগ হচ্ছে প্রতিনিয়ত!

কখনো শুনি- কষ্টি পাথরের মূর্তি (যা আসলে পুরনো আমলের হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি, কিছু কিছু ক্ষেত্রে গৌতম বুদ্ধের মূর্তির কথাও শুনেছি), পুরনো পয়সা (যাদের বিশেষ গুন আছে, যেমন পয়সা হাতে ধরে সূর্যয়ের দিকে তাকালে সূর্য সাদা দেখাবে, আতপ চালের মধ্যে রাখলে চালের রঙ বদলে যাবে বা চাল দূর থেকে চুম্বকের মত টেনে নিবে ইত্যাদি), সীমানা পিলার, পুরনো তালা, পান গাছের মোথা, কালো বিড়াল, বড় কোলা ব্যাঙ - এই রকম হরেক রকমের ও কিছু কিছু বিদঘুটে জিনিসই তাদের পণ্য।

ধরে নিলাম মূর্তি, পয়সা, সীমানা পিলার, পুরনো তালা এগুলোর একটা দাম আছে, এন্টিক ভ্যালু আছে। কিন্তু পান গাছের মোথা, কালো বিড়াল, কোলাব্যাঙের মাজেজাটা আসলেই আমি বুঝি না! আর এখন তো শুরু হয়েছে তক্ষক ক্রেজ!

তবে আপনার মত আমারও ধারণা এর সাথে বড় কেউ জড়িত এবং কোন না কোনভাবে কেউ কেউ লাভবান হচ্ছে! না হলে এই ক্রেজ এতদিন ধরে থাকার কথা না! বাঙ্গালির হুজুক তো বেশি দিন স্থায়ী হয় না!

শুভ কামনা! ভাল থাকবেন!

শুভ বিজয়া !!!

৩| ১৩ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:২৩

ইমানুয়েল নিমো বলেছেন: তক্ষক এর বিষয়টি অনেক আগেই জানতাম। তবে আপনার লেখা পরে ভালো লাগলো। বেশ সুন্দর গুছিয়ে লিখেছেন আপনি।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৫৮

সুকান্ত কুমার সাহা বলেছেন:
ধন্যবাদ!

আমার কাছে যে ভিডিওটা আছে তা দেখলে অবাক হয়ে যাবেন! তক্ষক যে এত বড় হতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস করবেন না!

শুভ বিজয়া !!!

৪| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১২:১৯

বিল্লা বাবা বলেছেন: খুবই ভালো লাগলো। মূল্যবান তথ্য পেলাম। এর আগে একটা FM শো তে এই ব্যাপারে প্রথম জেনেছিলাম।

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:০৩

সুকান্ত কুমার সাহা বলেছেন:
ধন্যবাদ!

এই তথ্যই শেষ না, এই লাইনের ট্যান্ডলদের সাথে কথা বললে নিজেই অবাক হয়ে যাবেন! ওদের মুখে খালি কোটি কোটি টাকার হিসাব। আগে এক–দুই কোটি টাকার কথা বলত, এখন শুধুই শত শত, এমনকি হাজার কোটি টাকার হিসাব দেয়!!

সব গুলাই পাগল !!!

শুভ বিজয়া !!!

৫| ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ ভোর ৪:১৬

নিশাচর বাদুড় বলেছেন: I had a post on this topic .

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৯:১০

সুকান্ত কুমার সাহা বলেছেন: দারুণ !!!
আপনার পোষ্ট থেকে নতুন কিছু জানলাম! আর আমাদের জানা তথ্য প্রায় একই রকম!

ধন্যবাদ!

শুভ বিজয়া !!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.