![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভুমিকা
চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল ইসলামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিধানাবলী। রোজা, ঈদ, কুরবানীসহ হজ্বের মত ইসলামের মৌলিক বিষয়াবলী। সুতরাং চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে পরিস্কার ধারণা না থাকলে এই সকল বিষয়ে সমস্যা হতে বাধ্য। সুতরাং প্রতিটি মুসলমানের এ বিষয়ে পরিচ্ছন্ন জ্ঞান থাকা আবশ্যক। ইসলাম একটি সার্বজনীন ধর্ম। গোটা পৃথিবীর সকল অঞ্চলের বিগত-আগত ও অনাগত সকল মানুষের জন্য কার্যকরী “স্রষ্টা” কর্তৃক নির্ধারিত একটি জীবন ব্যবস্থা।
ইসলাম কোন ভৌগলিক সীমারেখায় সীমাবদ্ধ ধর্ম নয়, ইসলাম ধর্মকে সার্বজনীন আখ্যা দিয়ে পবিত্র কুর’আনে ইরশাদ হচ্ছে- { وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلا كَافَّةً لِلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لا يَعْلَمُونَ (سبأ: 28) } অর্থাৎ আমি (আল্লাহ তা’য়ালা) তোমাকে (রাসূল সা.) সকল মানুষের জন্য সুসংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারীরূপে প্রেরণ করেছি, যদিও অধিকাংশ লোক তা জানেনা। অন্য আয়াতে স্পষ্ট ঘোষণা হয়েছে-[" إن الدين عند الله الاسلام " [ آل عمران: 19 অর্থাৎ আল্লাহ তা’য়ালার কাছে মনোনিত দ্বীন হলো ইসলাম। আর এই দ্বীনের পূর্ণাঙ্গ আনুগত্য সকলের উপর আবশ্যক। যেমন পবিত্র কুর’আনে ইরশাদ হচ্ছে -{ ياأيها الذين ءَامَنُواْ ادخلوا فِي السلم كَافَّةً } [ البقرة : 208 ] অর্থাৎ তোমরা ইসলাম ধর্মে পূর্ণাঙ্গভাবে প্রবিষ্ট হও।
উল্লেখিত আয়াতে কারীমার মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে, সকল মানুষের জন্য আল্লাহ তা’য়ালার মনোনিত দ্বীন হলো ইসলাম, আর রাসূল কারীম সা. কে সকল মানুষের জন্য পথ প্রদর্শক হিসেবে পাঠানো হয়েছে, কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য বা নির্দিষ্ট মানুষের জন্য নয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই এর বিধানাবলী ও সার্বজনীন হবে, কোন নির্দিষ্ট অঞ্চল বা নির্দিষ্ট মানুষের নির্ধারিত সময় ভিত্তিক হবেনা এটাই যৌক্তিক। আর একারণেই ইসলামী শরীয়তের সকল বিধান আমভাবে বর্ণিত হয়েছে। সময়ের সীমা নির্ধারিত করে দিয়েছে, কিন্তু প্রচলিত নির্ধারিত সময় নির্ধারিত করে দেয়নি, কিংবা কোন অঞ্চলের সময়ের অনুস্বরণ করার কথাও কুর’আন হাদীসের কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। সময়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল বিধানের প্রতি আমরা দৃষ্টি বুলালেই এর বাস্তবতা আমাদের চোখে ধরা পড়বে। যেমন-আল্লাহ তা’য়ালা রোজা রাখার বিধানে সময়ের সীমা নির্ধারণ করে দিয়ে ইরশাদ করেন-
وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّى يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا كَذَلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ آَيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ (سورة البقرة-187)
-“সুবহে সাদিকের পর থেকে সূর্য অস্ত যাবার আগ পর্যন্ত পানাহার ও সহবাস থেকে মুক্ত থাকতে হবে।” গোটা পৃথিবীর সকল মানুষের জন্য একই বিধান। এখন প্রশ্ন হলো-আল্লাহ তা’য়ালার এই বিধান পৃথিবীর সব মানুষ একই সময়ে আদায় করতে সক্ষম হবে? অবশ্যই না, কারণ পৃথিবীর সকল স্থানে এক সময়ে সুবহে সাদিক ও সূর্যাস্ত যাওয়া অসম্ভব, তাই এক সময়ে এ বিধান সবার আদায় করা সম্ভব নয়, কিন্তু একই গুন সম্পন্ন সীমায় এই বিধান পৃথিবীর সকল মুসলমানের জন্য পালন করা সম্ভব। কারণ পৃথিবীর সকল স্থানেই সুবহে সাদিক যেমন আসে, ঠিক সূর্যাস্ত ও যায়, যদিও এক সময়ে নয়। সুতরাং পৃথিবীর সব মুসলমান রোযা রাখার বিধান আল্লাহ তা’য়ালার বেঁধে দেয়া গুন বিশিষ্ট (সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও সহবাস থেকে বিরত থাকা) সীমার মধ্যে আদায় করতে কোন অসুবিধা নেই। যদিও এক সময়ে আদায় করা সম্ভব নয়, কারণ পৃথিবীর এক স্থানে যখন সূর্য উঠে অন্য স্থানে তখন অস্ত যায়, বা এক স্থানে যখন দুপুর অন্য স্থানে তখন বিকাল বা রাত। এমনিভাবে নামাযের সময়ের ক্ষেত্রে ও একই পদ্ধতী প্রযোজ্য। অর্থাৎ কুর’আন ও হাদীসে আমাল আদায়ের যেই গুন বিশিষ্ট সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে তা যে এলাকায় পাওয়া যাবে, সে এলাকার বাসিন্দাদের উপর সেই আমাল তখন আদায় করা আবশ্যক। যে এলাকায় সেই গুন বিশিষ্ট সীমা আসেনি তাদের উপর আবশ্যক নয়, কারণ তাহলে আল্লাহ তা’য়ালা আদেশ মানা হবেনা বরং তা মনের পূজা বা যেই এলাকার সময় হিসেবে ইবাদাত আদায় করা হচ্ছে সেই এলাকা পূজা ছাড়া অন্য কিছু হতে পারেনা।
চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে শরয়ী দৃষ্টিকোণ
মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে ঘোষণা করেন
هُوَ الَّذِي جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاء وَالْقَمَرَ نُورًا وَقَدَّرَهُ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُواْ عَدَدَ السِّنِينَ وَالْحِسَابَ مَا خَلَقَ اللَّهُ ذَلِكَ إِلاَّ بِالْحَقِّ يُفَصِّلُ الآيَاتِ لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ (سورة يونس-5)
তিনি ঐ সত্বা! যিনি সুর্যকে সৃষ্টি করেছেন দীপ্তিশালী ও চন্দ্রকে আলোকময়, এবং তার জন্য নির্দিষ্ট করেছেন তার কক্ষপথ,যাতে তোমরা তার সাহায্যে বছর গণনা ও তারিখ হিসেব করতে পার। এগুলোকে তিনি যথার্থ কারণেই সৃষ্টি করেছেন,তিনি তার নিদর্শনাবলী বিশদভাবে ব্যাক্ষা করেছেন জ্ঞানীদের জন্য।(সুরা ইউনুস, আয়াত-৫)
মুফাসসিরীনে কিরাম উক্ত আয়াতের তাফসীর করতে গিয়ে বলেন-মহান রাব্বুল আলামীন সুর্য দ্বারা দিনের সময় আর চন্দ্র দ্বারা মাস ও বছরের হিসেব নির্ধারণ করেছেন।
وقال في هذه الآية الكريمة: { وقدره } أي: القمر { وَقَدَّرَهُ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوا عَدَدَ السِّنِينَ وَالْحِسَابَ } فبالشمس تعرف الأيام، وبسير القمر تعرف الشهور والأعوام(. تفسير ابن كثير – 4 / 247)
উক্ত আয়াত ও তার তাফসীর দ্বারা একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, কোন মাস শেষ হয়েছে কী না? তা নির্ধারিত হবে চন্দ্রের দ্বারা। অর্থাৎ চাঁদের উদয় ও অস্ত দেখে নিরূপিত হবে মাস শুরু হয়েছে ও শেষ হয়েছে কী না? আর এদিকেই ইংগিত করে আল্লাহর নবী সা: বলেন
محمد بن زياد قال سمعت أبا هريرة رضي الله عنه يقول : قال النبي صلى الله عليه و سلم أو قال قال أبو القاسم صلى الله عليه و سلم ( صوموا لرؤيته وأفطروا لرؤيته فإن غبي عليكم فأكملوا عدة شعبان ثلاثين ) )كتاب الصوم- باب قول النبي صلى الله عليه و سلم ( إذا رأيتم الهلال فصوموا وإذا رأيتموه فأفطروا - صحيح البخاري – 2 / 674)
وبإسناده سمعت أبا القاسم صلى الله عليه وسلم يقول صوموا لرؤيته وأفطروا لرؤيته فإن غم عليكم فعدوا ثلاثين (مسند أحمد – الجزء السادس العشر-16 / 91)
অনুবাদ-(১) আবু হুরায়রা রা: বলেন, আল্লাহর নবী সা: বলেছেন-তোমরা (চাঁদ) দেখে রোযা রাখ ও (চাঁদ) দেখে রোযা ভাঙ্গো,(বুখারী শরীফ-২/৬৭৪)
(২) নবী সা: বলেছেন-তোমরা (চাঁদ) দেখে রোযা রাখ ও (চাঁদ) দেখে রোযা ভাঙ্গো, আর যদি তোমাদের উপর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে তোমরা ৩০ দিন পূর্ণ কর। ( মুসনাদে আহমাদ-১৬ /৯১)
উক্ত হাদিসে নববীতে আল্লাহর নবী আমাদের মূলনীতি নির্ধারিত করে দিলেন যে চাঁদ দেখা গেলে বুঝা যাবে মাস শেষ, নতুন মাস শুরু হয়েছে। তাই রমযানের চাঁদ দেখা গেলে রোযা রাখবে আর শাওয়ালের চাঁদ দেখা গেলে রোযা ভেঙ্গে ফেলবে। আর দ্বিতীয় হাদিসটির দ্বারা বুঝা গেল ২৯ তারিখ চাঁদ দেখা না গেলে ৩০ দিন পূর্ণ হলে মাস শেষ হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে। এর কোন ব্যত্যয় গ্রহণযোগ্য নয়।
সুতরাং যে এলাকায় রোযা বা ঈদের চাঁদ দেখা যাবে সেই এলাকা ও তার পাশের এলাকা যার উদয়াচল এক (তথা উক্ত এলাকার সাথে সময়ের এত পার্থক্য নয় যে, সেখানে কখনো এ এলাকার মাসের হিসেবে কখনো ২৮ বা ৩১ তারিখ হয়ে যায়)তাদের জন্যই কেবল রোযা ও ঈদ আবশ্যক হবে। উদায়াচল ভিন্ন অন্য এলাকার জন্য উক্ত চাঁদ দেখার দ্বারা শরয়ী হুকুমের ক্ষেত্রে কোন প্রভাব পড়বেনা।
اختلاف مطالع তথাউদায়াচলেরভিন্নতা
উদায়াচলের ভিন্নতা বলা হয় সুর্যাস্ত ও সুর্যোদয়ের সময়ের ভিন্নতার কারণে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকার সময়ের মাঝে একদিন বা তারচে’ বেশি দিনের পার্থক্য হয়ে যাওয়া। অর্থাৎ এক এলাকায় যখন মাসের ৩০ বা ২৯ তারিখ হয়ে চাঁদ উঠছে তথা মাস শেষ হচ্ছে দূরবর্তী অন্য দেশে তখন মাসের ২৮ বা ৩১ দিন হয়ে যাচ্ছে। এরকম যদি কোন দেশের সাথে অন্য দেশের দূরত্ব হয়, বুঝা যাবে যে, এ দুই দেশের উদয়াচল ভিন্ন, এক নয়। সুতরাং এ দুই দেশের মাঝে এক দেশে চাঁদ উঠলে অন্য দেশেও চাঁদ উঠেছে বলে শরয়ী বিধান কার্যকর হবেনা।
যেমন সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের উদায়াচলের পার্থক্য আছে, অর্থাৎ সৌদির মাস আমাদের একদিন আগে বা পড়ে শেষ হয়, সুতরাং সে দেশে রোযা বা ঈদের চাঁদ উঠলে বাংলাদেশে রোযা বা ঈদ করা যাবেনা। বরং বাংলাদেশ বা পার্শবর্তী দেশে যদি চাঁদ উঠে, যাদের সাথে বাংলাদেশের উদায়াচলের পার্থক্য নেই (ভারত, পাকিস্তান, বার্মা ইত্যাদী) তবে সে দেশের চাঁদ উঠার সংবাদ যদি আমাদের কাছে শরয়ী মানদন্ডে নির্ভরযোগ্য সুত্রে পৌঁছে, তবে আমাদের দেশের হেলাল কমিটি তা গ্রহণ করে সারা দেশে প্রচার করবে। ফিক্বহী কিতাবে উক্ত বক্তব্যের পক্ষে নিম্নের ইবারত পাওয়া যায়-
هذا إذا كانت المسافة بين البلدين قريبة لا تختلف فيها المطالع فأما إذا كانت بعيدة فلا يلزم أحد البلدين حكم الآخر لأن مطالع البلاد عند المسافة الفاحشة تختلف فيعتبر في أهل كل بلد مطالع بلدهم دون البلد الآخر بدائع الصنائع -2/224-225كتاب الصوم / فصل وأما شرائطها)
أنه ليس بين تلك البلاد بعد كثير بحيث تختلف به المطالع لكن ظاهر الاطلاق يقتضي لزوم عامة البلاد ما ثبت عند بلدة أخرى فكل من استفاض عندهم خبر تلك البلدة يلزمهم اتباع أهلها ويدل عليه قوله فيلزمهم اهل المشرق برؤية اهل المغرب ” (منحة الخالق على البحر الرائق 2/271)
সারাপৃথিবীতেএকইসময়েঈদকরারদাবীহাস্যকর
পৃথিবীর ভৌগলিক অবস্থা সম্পর্কে যার সাধারণ জ্ঞান রয়েছে সে কখনো একথা বলতে পারেনা যে, সারা পৃথিবীতে এক সময়ে ঈদ করা সম্ভব। কারণ আমরা জানি পৃথিবীতে রাত দিনের পার্থক্য কেন হয়? পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে, নিজ অক্ষের উপর ও আবর্তিত হয়। পৃথিবী তার মেরু রেখার উপর পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে ঘুরছে। পৃথিবী তার মেরু রেখার চারদিকে এভাবে ঘুরে আসতে প্রায় ২৪ ঘন্টা সময় লাগে। এ চব্বিশ ঘন্টাকে বলা হয় এক দিন। পৃথিবীর এ দৈনিক গতির নাম আহ্নিক গতি। এ আবর্তের সময় পৃথিবীর যে অংশ সূর্যের দিকে থাকে সে অংশে তখন দিন এবং অপর অংশে রাত হয়। আর একারণেই বাংলাদেশে যখন দিন তখন আমেরিকাতে রাত হয়। সুতরাং বাংলাদেশে চাঁদ উঠলে আমেরিকাতে ঈদ করতে হলে ঈদের জামাত গভীর রাতে করা ছাড়া কোন পথ আছে কী? আর ঈদের নামায দিনের বেলা না পড়ে রাতে পড়ার বিধান আল্লাহ প্রদত্ব না নিজে বানানো? সৌদিতে বাংলাদেশে অফিস টাইম হয়েছে বলে যে সকল রাষ্ট্রে এখনো রাত বা অফিসের সময় হয়নি তাদের ও অফিসে যেতে হবে’ এ দাবী যেমন পাগলের প্রলাপ ছাড়া কিছুই নয়, ঠিক তেমনি সৌদিতে বা বাংলাদেশে আল্লাহ তা’য়ালার নির্দিষ্ট কোন ইবাদতের সময় হয়েছে বলে তা যে রাষ্ট্রে এর সময় হয়নি তাদের ও তা “পালন করতে হবে” বলার কথা মানসিকভাবে সুস্থ্য মানুষ বলতে পারে? সুতরাং শুধু আবেগ নয় বাস্তবতার নিরিখে চিন্তা করলে এ অদ্ভূত দাবীটি হাস্যকর ছাড়া অন্য কিছু বলে মনে হয়না।
একতার ভূয়া ধোঁয়া
যারা পৃথিবীতে একই সময়ে ঈদ করার দাবী উত্থাপন করেন, তাদের একটি যুক্তি হলো, ইসলাম একতার ধর্ম, একতার মাঝেই প্রভূত কল্যাণ নিহিত। সকল মুসলমানরা এক সময়ে ঈদ বা অন্যান্য ধর্মীয় বিষয় একসাথে পালন করলে মুসলমানদের মাঝে একতার বন্ধন দৃঢ় হবে, তাই এ হিসেবে হলেও আমাদের এক সময়ে ঈদ বা অন্যান্য ধর্মীয় কাজ করা উচিত, তাছাড়া সারা পৃথিবীতে এক ঈদের চাঁদ একবারই উঠে, একাধিকবার নয় সুতরাং এক অনুষ্ঠানের জন্য উদিত চাঁদ একবারের জন্য উঠে থাকলে সবার একসাথেই অনুষ্ঠান পালন করা উচিত।
যারা এতো সুন্দর করে এ চটকদার যুক্তিটি পেশ করেন, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন হলো, একতার অর্থ শুধু এক সময়ে কোন কাজ করা? নাকি একই কাজ একই গুনে সবাই পালন করলেও একথার অর্থ থাকে? আপনারা কী বলতে চান-বাংলাদেশে মাগরীবের সময় হলেও সৌদিতে এখনো সময় হয়নি বলে আমরা ৪ ঘন্টা অপেক্ষা করব, আর আমেরিকার মুসলমানরা সকালবেলা পড়বে মাগরীবের নামায! একসাথে নামায পড়ে একতা প্রতিষ্ঠার জন্য?
একটি কথা যদি ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করা হয় তবেই আমরা বুঝতে পারব যে, সারা পৃথিবীর মুসলমান একতাবদ্ধ হয়ে একই আমল করছে, ভিন্নভাবে নয়, এক কথায় সারা পৃথিবীর মুসলমানদের মাঝে ধর্মীয় বিষয় পালন করার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত একতা রয়েছে। বিষয়টি আমরা একটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝতে পারি-আমরা জানি হাসনাহেনা আর রজনীগন্ধা ফুল কেবল রাতে ফুটে, সুতরাং একথা নির্ধারিত হলো যে, সারা পৃথিবীর রজনীগন্ধা আর হাসনাহেনা এক নির্ধারিত সময় তথা রাতে ফুটে দিনে নয়, এ হিসেবে তাদের মধ্যে একতা রয়েছে,সৌদিতে রাত বলে এ ফুল ফুটলো, কিন্তু আমেরিকায় দিন বলে এ ফুলটি সেখানে ফুটলোনা, এ ব্যপারে একথা কী বলা যাবে যে, আমেরিকায় হাসনাহেনা ফুল তাদের মূল গুন (রাতে ফুটার ক্ষেত্রে একতা) থেকে বিচ্যুত হয়েছে? নাকি তার অবস্থানস্থল দিন না হওয়ায় সে না ফুটে সে তার স্বমহিমায় একতাবদ্ধ রয়েছে বলা হবে? আশা করি বিজ্ঞ পাঠক সবাই একথা বলবে যে, ফুলটি আমেরিকায় দিনের বেলায় ফুটলে বরং সে তার আদর্শচ্যুত বা একতা ভঙ্গের দোষে দোষি হতো। আমেরিকায় ও একই গুনবাচক সময়ে এই ফুলটি ফুটবে, কিন্তু সৌদির সময় অনুস্বরণ করে নয় বরং তার নিজের এলাকার সময় অনুস্বরণ করে, আর তার একতার নিদর্শন এটাই।
ঠিক তেমনি আল্লাহ তা’য়ালার নবী আদেশ দিয়েছেন “চাঁদ দেখে রোজা রাখতে আর চাঁদ দেখে রোজা ভাঙ্গতে” নতুবা তোমরা ত্রিশ দিন পূর্ণ কর (মুসলিম শরীফ)। সুতরাং এই আদেশ সারা পৃথিবীর মুসলমানদের জন্য এক। সুতরাং যে এলাকায় চাঁদ দেখা যাবে, তারা রোজা রাখবে এবং ঈদ করবে, আর যে এলাকায় তা দেখা না যাবে,তারা তা পালন করবেনা। যখন তারা চাঁদ দেখবে তখন তারা রোজা রাখবে ও ঈদ করবে। সেক্ষেত্রে সারা পৃথিবীর মুসলমানরা একই গুন বিশিষ্ট সময়ে আল্লাহর আদেশ পালন করে একতাবদ্ধ রইলো, অর্থাৎ সারা পৃথিবীর মুসলমানরা নবীর আদেশ একই ভাবে একই গুন বিশিষ্ট সময়ে পালন করেছে, তাহলো চাঁদ দেখে রোজা রাখলো আর চাঁদ দেখে ঈদ করলো। পক্ষান্তরে এক দেশের চাঁদ দেখার ফলে অন্য দেশে চাঁদ না দেখেও রোজা বা ঈদ করলে তারা বিভক্ত হয়ে যাচ্ছে। কারণ তখন বলা যাবে যে, কিছু মুসলমান চাঁদ উঠেছে তাই রোজা রাখলো কিছু মুসলমান তাদের দেশে চাঁদ উঠে নাই তারপরও রোজা বা ঈদ করলো। সুতরাং একতা রইলো কোথায়?
আরো সহজভাবে বললে বলা যায় যে, সূর্য উঠলে সবাই অফিসে যাবে, সুতরাং বাংলাদেশে যখন সূর্য উঠে তখন বাংলাদেশীরা অফিসে যায়, আমেরিকায় যখন সূর্য উঠবে তখন তারা অফিসে যাবে, অন্য দেশে যখন সূর্য উঠে তখন তারা অফিসে যায়, সুতরাং একথা কী বলা সঠিক নয় যে, সারা পৃথিবীর সবাই এক গুনবাচক সময়ে অফিসে যাবার ক্ষেত্রে এক। তাদের মধ্যে কোন মতভেদ নেই। নাকি আমেরিকায় রাতে আর বাংলাদেশে দিনের বেলায় অফিস একই সময়ে করলে বলা হবে যে তারা অফিসের সময়ের ক্ষেত্রে এক! নাকি ভিন্ন বলা হবে?
সারকথা
সৌদি আরবের মত উদয়াচল ভিন্ন রাষ্ট্রের চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশেও রোযা ও ঈদ করার দাবী মৌলিকভাবে মুসলমানদের মাঝে বিশৃংখলা সৃষ্টির পায়তারা, তাছাড়া নিষিদ্ধ দিনে (রজবের ২৯ তারিখ) রোযা রাখতে হবে, আবার যে দিন রোযা রাখা ফরয (রমযানের ৩০ তারিখ) সেদিন রোযা ভাঙ্গার গোনাহে পতিত হবার জন্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যেন কোন মুখরোচক স্লোগানে প্ররোচিত হয়ে সুস্পষ্ট ফায়সালাকৃত দ্বীনি বিষয়ে অযথা সন্দিহান হয়ে ফেৎনায় না জড়িয়ে পড়ি। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
সহকারী মুফতী-জামিয়াতুল আস’আদ আল ইসলামিয়া-ঢাকা
২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:০০
সুলাইমান আল উমাইর বলেছেন: জাকির নায়েক ইজতিহাদ করতে পারবে না কেননা মুজতাহিদ হতে হলে কিছু যোগ্যতার আবশ্যকতা প্রয়োজন,প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকলে যে কেউ ইসলাম নিয়ে মগজ খাটাতে পারবে না
ডা. সাহেব এক জায়গায় বলেন- প্রত্যেকের জন্য ফতোয়া প্রদান করা জায়েয। কারণ ফতোয়ার অর্থ হলো মতামত দেয়া।’
ফতোয়া দেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুমের ভাষায় মুফতি আল্লাহ তায়ালার বিধান বর্ণনা করার ক্ষেত্রে বিশ্বজগতের প্রতিপালকের ভাষ্যকার এবং তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে দস্তখত করার দায়িত্বশীল হয়।’দেখুন [ই’লামুল মাআক্কিঈন ১/৯১]
এই ফতোয়াকে তিনি ‘মতামত দেয়ার’ মতো হালকা পাতলা শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করে শুধু নিজের জন্যই নয়; বরং প্রত্যেকের জন্য এর বৈধতা দিচ্ছেন। অথচ কুরআনে কারীমে বলা হয়েছে-
‘যদি তোমাদের জ্ঞান না থাকে তাহলে জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর।’-সূরা নাহল: ৪৩
নবীজি সা. এর হাদিসে উল্লেখ হয়েছে- ‘যে ব্যক্তি (বিশুদ্ধ) জ্ঞান ছাড়া ফতোয়া দেয় এর গুনাহ ফতোয়া দাতার ওপর হবে।’ [আবু দাউদ হাদিস নং ৩৬৫৯৩]
তিনি এই আয়াত ও হাদিসকে একেবারেই ভুলে গেলেন।
মুজতাহিদ হতে হলে জেশব যোগ্যতা অর্জন করা প্রয়োজন
১. কোরআনের কোন আয়াত কখন নাজিল হয়, কোন আয়াত নাছেখ (রহিতকারী), কোন আয়াত মানছুখ (রহিত), কোন আয়াত মুজমাল (সংক্ষিপ্ত), কোন আয়াত মুতাশাবেহ ইত্যাদি বিষয়গুলো সবিস্তারে জানার সাথে সাথে কোরআনের নিগুঢ় তথ্যগুলোর সঠিক মর্মগুলি বুঝার পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে।
২. হুজুর স. কর্তৃক ত্রিশ পারা কোরআনের ব্যাখ্যায় রেখে যাওয়া দশ লক্ষ হাদীস সনদের ভিন্নতাসহ জানা আবশ্যক। আর হাদীসের এ বিশাল ভান্ডার থেকে কমপক্ষে যেসব হাদীস দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধান সাব্যস্ত হয়, সেসব হাদীস সনদ (বর্ণনাকরী), মতন (মূল বিষয়) এবং উক্ত হাদীস সমূহের বর্ণনাকারীদের জীবন ইতিহাস (সাহাবা ও তাবেয়ীনদের জীবনাচার)সহ কন্ঠস্থ থাকতে হবে। তারই সাথে হাদীসের নিগুড় তথ্যগুলি, সঠিক মর্মগুলি বুঝার পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। যাতে করে মতবিরোধ বিশিষ্ট মাসআলাসমূহে কোরআন, হাদীস, সাহাবা ও তাবেয়ীনদের নির্দেশিত সীমা অতিক্রম না করা হয়।
৩. মুজতাদি আরবী ভাষা সম্পর্কে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হতে হবে। কেননা কোরআন ও হাদীস উভয়টি আরবী। তাই আরবী ভাষা সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা ছাড়া ইজতিহাদ তো দূরের কথা শুধু কোরআন-হাদীসের অর্থ বুঝাও সম্ভবপর নয়। আরবী ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য আরবী আভিধানিক অর্থ ও পারিভাষিক অর্থ, নাহু-ছরফ, উসূল, আলাগাতের পূর্ণ দক্ষতা অপরিহার্য।
৪. মুজতাহিদ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বুদ্ধিমত্তা ও অন্তদৃর্ষ্টি দ্বারা বিশেষভাবে ভূষিত হয়ে অত্যাধিক স্মরণশক্তি ও জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে। মুজতাহিদের জন্য কেবল সাধারণ বুদ্ধিমত্তাই যথেষ্ট নয়। সাধারণ বুদ্ধিমত্তাতো সকল আলেমেরই থাকে। এতে মুজতাদিরে বিশেষ গুরুত্ব আর রইল কোথায়? মুজতাদি তাক্ব ওয়া ও খোদাভীতি সম্পন্ন হতে হবে। তাকে কখনও মনপূজারী হওয়া চলবে না।
৫. ইজতিহাদ ও মাসআলা চয়নের প্রক্রিয়া সমূহের উপর পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখতে হবে।
সূত্র :- তাফসীরে আহমদী, পৃষ্ঠা- ১০১
হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী রহ. ইমাম বাগাবী রহ. সূত্রে বর্ণনা করেন যে, ইজতিহাদের জন্য পাঁচটি শর্ত রয়েছে। যার মধ্যে এ পাঁচটি হতে একটিও কম পাওয়া যাবে, তার জন্য তাক্বলীদ ছাড়া কোন পথ নেই।
- কাঞ্জুল উসূল ইলা মা’রিফাতিল উসূল- ২৭০, উসূলে ফিক্বাহ লি আবি হুরায়রা- ২৩৬, আল মালাল ওয়ান নাহাল- ১/২০০ মিশরী ছাপা।
হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. কে জিজ্ঞাসা করা হল, যার এক লক্ষ হাদীস স্মরণ থাকে, সে কি ফক্বীহ বা মুজতাহিদ হতে পারেবে, তদুত্তরে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বললেন, না। পুনারায় জিজ্ঞাসা করা হলো, যদি পাঁচ লক্ষ হাদীস স্মরণ থাকে, তদুত্তরে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বললেন, সে সময় তাকে ফক্বীহ হবে আশা করা যেতে পারে। – এমদাদুল ফতোয়া ৪/৮৭
২| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৫৮
সুলাইমান আল উমাইর বলেছেন: জাকির নায়েক ইজতিহাদ করতে পারবে না কেননা মুজতাহিদ হতে হলে কিছু যোগ্যতার আবশ্যকতা প্রয়োজন,প্রয়োজনীয় যোগ্যতা না থাকলে যে কেউ ইসলাম নিয়ে মগজ খাটাতে পারবে না
ডা. সাহেব এক জায়গায় বলেন- প্রত্যেকের জন্য ফতোয়া প্রদান করা জায়েয। কারণ ফতোয়ার অর্থ হলো মতামত দেয়া।’
ফতোয়া দেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যুমের ভাষায় মুফতি আল্লাহ তায়ালার বিধান বর্ণনা করার ক্ষেত্রে বিশ্বজগতের প্রতিপালকের ভাষ্যকার এবং তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে দস্তখত করার দায়িত্বশীল হয়।’দেখুন [ই’লামুল মাআক্কিঈন ১/৯১]
এই ফতোয়াকে তিনি ‘মতামত দেয়ার’ মতো হালকা পাতলা শব্দ দ্বারা ব্যক্ত করে শুধু নিজের জন্যই নয়; বরং প্রত্যেকের জন্য এর বৈধতা দিচ্ছেন। অথচ কুরআনে কারীমে বলা হয়েছে-
‘যদি তোমাদের জ্ঞান না থাকে তাহলে জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা কর।’-সূরা নাহল: ৪৩
নবীজি সা. এর হাদিসে উল্লেখ হয়েছে- ‘যে ব্যক্তি (বিশুদ্ধ) জ্ঞান ছাড়া ফতোয়া দেয় এর গুনাহ ফতোয়া দাতার ওপর হবে।’ [আবু দাউদ হাদিস নং ৩৬৫৯৩]
তিনি এই আয়াত ও হাদিসকে একেবারেই ভুলে গেলেন।
মুজতাহিদ হতে হলে জেশব যোগ্যতা অর্জন করা প্রয়োজন
১. কোরআনের কোন আয়াত কখন নাজিল হয়, কোন আয়াত নাছেখ (রহিতকারী), কোন আয়াত মানছুখ (রহিত), কোন আয়াত মুজমাল (সংক্ষিপ্ত), কোন আয়াত মুতাশাবেহ ইত্যাদি বিষয়গুলো সবিস্তারে জানার সাথে সাথে কোরআনের নিগুঢ় তথ্যগুলোর সঠিক মর্মগুলি বুঝার পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে।
২. হুজুর স. কর্তৃক ত্রিশ পারা কোরআনের ব্যাখ্যায় রেখে যাওয়া দশ লক্ষ হাদীস সনদের ভিন্নতাসহ জানা আবশ্যক। আর হাদীসের এ বিশাল ভান্ডার থেকে কমপক্ষে যেসব হাদীস দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধান সাব্যস্ত হয়, সেসব হাদীস সনদ (বর্ণনাকরী), মতন (মূল বিষয়) এবং উক্ত হাদীস সমূহের বর্ণনাকারীদের জীবন ইতিহাস (সাহাবা ও তাবেয়ীনদের জীবনাচার)সহ কন্ঠস্থ থাকতে হবে। তারই সাথে হাদীসের নিগুড় তথ্যগুলি, সঠিক মর্মগুলি বুঝার পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। যাতে করে মতবিরোধ বিশিষ্ট মাসআলাসমূহে কোরআন, হাদীস, সাহাবা ও তাবেয়ীনদের নির্দেশিত সীমা অতিক্রম না করা হয়।
৩. মুজতাদি আরবী ভাষা সম্পর্কে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হতে হবে। কেননা কোরআন ও হাদীস উভয়টি আরবী। তাই আরবী ভাষা সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা ছাড়া ইজতিহাদ তো দূরের কথা শুধু কোরআন-হাদীসের অর্থ বুঝাও সম্ভবপর নয়। আরবী ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য আরবী আভিধানিক অর্থ ও পারিভাষিক অর্থ, নাহু-ছরফ, উসূল, আলাগাতের পূর্ণ দক্ষতা অপরিহার্য।
৪. মুজতাহিদ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বুদ্ধিমত্তা ও অন্তদৃর্ষ্টি দ্বারা বিশেষভাবে ভূষিত হয়ে অত্যাধিক স্মরণশক্তি ও জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে। মুজতাহিদের জন্য কেবল সাধারণ বুদ্ধিমত্তাই যথেষ্ট নয়। সাধারণ বুদ্ধিমত্তাতো সকল আলেমেরই থাকে। এতে মুজতাদিরে বিশেষ গুরুত্ব আর রইল কোথায়? মুজতাদি তাক্ব ওয়া ও খোদাভীতি সম্পন্ন হতে হবে। তাকে কখনও মনপূজারী হওয়া চলবে না।
৫. ইজতিহাদ ও মাসআলা চয়নের প্রক্রিয়া সমূহের উপর পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখতে হবে।
সূত্র :- তাফসীরে আহমদী, পৃষ্ঠা- ১০১
হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী রহ. ইমাম বাগাবী রহ. সূত্রে বর্ণনা করেন যে, ইজতিহাদের জন্য পাঁচটি শর্ত রয়েছে। যার মধ্যে এ পাঁচটি হতে একটিও কম পাওয়া যাবে, তার জন্য তাক্বলীদ ছাড়া কোন পথ নেই।
- কাঞ্জুল উসূল ইলা মা’রিফাতিল উসূল- ২৭০, উসূলে ফিক্বাহ লি আবি হুরায়রা- ২৩৬, আল মালাল ওয়ান নাহাল- ১/২০০ মিশরী ছাপা।
হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. কে জিজ্ঞাসা করা হল, যার এক লক্ষ হাদীস স্মরণ থাকে, সে কি ফক্বীহ বা মুজতাহিদ হতে পারেবে, তদুত্তরে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বললেন, না। পুনারায় জিজ্ঞাসা করা হলো, যদি পাঁচ লক্ষ হাদীস স্মরণ থাকে, তদুত্তরে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বললেন, সে সময় তাকে ফক্বীহ হবে আশা করা যেতে পারে। – এমদাদুল ফতোয়া ৪/৮৭
৩| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:০০
স্পেলবাইন্ডার বলেছেন:
বিপরীত যুক্তিটা শোনার ধৈর্য্য যদি থাকে তাহলে একটা কথা বলি-
বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইরাক, ইরান ইত্যাদি রাষ্ট্রের সীমা তো স্রেফ মানুষের তৈরি। ইসলামে এর কোন গুরুত্ব থাকার কথা নয়। ধরুন, দিনাজপুরে চাঁদ দেখা গেল কিন্তু ঢাকায় আমরা দেখলাম না। আপনার যুক্তি অনুসারে আমাদের ঈদ করা উচিত নয়। যদি বলেন উচিত তাহলে যদি দূর ভবিষ্যতে পুরো এশিয়া একটা রাষ্ট্রে পরিণত হয় তখন কি এশিয়ার যে কোন স্থানে চাঁদ দেখা গেলে পুরো এশিয়ার মুসলিমরা ঈদ পালন করবে?
২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:০৮
সুলাইমান আল উমাইর বলেছেন: যে যে স্থানে চাঁদ দেখা যায় সেই সেই স্থানে ঈদ উদজাপন হবে
কিন্তু একদিনে সারা পৃথিবীতে এটা ঠিক নয়
সৌদি আরবের মত উদয়াচল ভিন্ন রাষ্ট্রের চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশেও রোযা ও ঈদ করার দাবী মৌলিকভাবে মুসলমানদের মাঝে বিশৃংখলা সৃষ্টির পায়তারা, তাছাড়া নিষিদ্ধ দিনে (রজবের ২৯ তারিখ) রোযা রাখতে হবে, আবার যে দিন রোযা রাখা ফরয (রমযানের ৩০ তারিখ) সেদিন রোযা ভাঙ্গার গোনাহে পতিত হবার জন্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যেন কোন মুখরোচক স্লোগানে প্ররোচিত হয়ে সুস্পষ্ট ফায়সালাকৃত দ্বীনি বিষয়ে অযথা সন্দিহান হয়ে ফেৎনায় না জড়িয়ে পড়ি।
৪| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:০৩
নীড় ~ বলেছেন: পৃথিবীর সকল স্থানেই সুবহে সাদিক যেমন আসে, ঠিক সূর্যাস্ত ও যায়, যদিও এক সময়ে নয়। সুতরাং পৃথিবীর সব মুসলমান রোযা রাখার বিধান আল্লাহ তা’য়ালার বেঁধে দেয়া গুন বিশিষ্ট (সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও সহবাস থেকে বিরত থাকা) সীমার মধ্যে আদায় করতে কোন অসুবিধা নে
ভাইজান, এন্টার্কটিকা মহাদেশে বছরের ছয়মাস দিন ছয়মাস রাইত। হেতেরা কেমতে রোজা রাকপে?
২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:১২
সুলাইমান আল উমাইর বলেছেন: অই জাএগায় রোজা রাখার মানুষ নাই বুজলেন, সোজা হিসাব।
সৌদি আরবের মত উদয়াচল ভিন্ন রাষ্ট্রের চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশেও রোযা ও ঈদ করার দাবী মৌলিকভাবে মুসলমানদের মাঝে বিশৃংখলা সৃষ্টির পায়তারা, তাছাড়া নিষিদ্ধ দিনে (রজবের ২৯ তারিখ) রোযা রাখতে হবে, আবার যে দিন রোযা রাখা ফরয (রমযানের ৩০ তারিখ) সেদিন রোযা ভাঙ্গার গোনাহে পতিত হবার জন্য মুসলমানদের বিরুদ্ধে এক সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র ছাড়া কিছুই নয়। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, যেন কোন মুখরোচক স্লোগানে প্ররোচিত হয়ে সুস্পষ্ট ফায়সালাকৃত দ্বীনি বিষয়ে অযথা সন্দিহান হয়ে ফেৎনায় না জড়িয়ে পড়ি।
৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:০৫
রানার ব্লগ বলেছেন: ভাল লাগলো সত্যি ভাল লাগলো, আমন করে কেউ যদি ইসলাম কে সুন্দর ভাবে তুলে ধরতে পারত, তাইলে ওই সব আলতু ফালতু পাতি খেজুররা আমাদের সমাজে কোন রকম বিভেদ তৈরী করতে পারত না।
৬| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩১
কাজী রহমতুল্লাহ বলেছেন: সারা পৃথিবীতে একই সময়ে ঈদ হলে একই সময়ে নামাজ নয় কেন?
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০১
সুলাইমান আল উমাইর বলেছেন: NExt fotowa of zakir naik. hoile hoiteo pare
৭| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৮
ভারসাম্য বলেছেন: স্পেলবাইন্ডার এর কথার সাথে সহমত সহকারে আমি আরেকটু যুক্ত করতে চাই। পৃথিবী এখন একটা গ্লোবাল ভিলেজের মত। পৃথিবীর যেকোন অবস্থান থেকে যদি নতুন চাঁদ দেখার বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় তবে তখন থেকেই পৃথিবীর সকল স্থানেই নতুন চান্দ্রমাস শুরু হয়েছে ধরে নেয়াই সবচেয়ে উপযোগী মনে হয় আমার কাছে। আর সময় গণনার জন্য সূর্যতো আছেই।
আর দিন-মাস শুরুর ব্যাপারে সৌদি-আরব বিশেষভাবে বিবেচ্য হতে পারেনা। পৃথিবীর যেকোন স্থান থেকে প্রাপ্ত বিশ্বাসযোগ্য তথ্যই যথেষ্ট।
ফতোয়া, ইজতিহাদ বা কিয়াস একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার যার চেষ্টা প্রত্যেকটা মুসলিম এরই করা উচিৎ। তবে কারো মতামত আইনে পরিণত হতে পারে কেবল সর্বসন্মত সমঝোতা বা ইজমার দ্বারা বা ইজমার মাধ্যমে নির্বাচিত ব্যাক্তির দ্বারা।
একটা বিশেষ সময়ে ইজমার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত কোন আইনও পরবর্তী সময়ে পুনরায় ইজমার মাধ্যমে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে কুরআন ও সহীহ হাদিসের মাধ্যমে পরিষ্কারভাবে বর্ণিত কোন আইন কখনোই পরিবর্তনযোগ্য নয়।
একটি নির্দ্দিষ্ট স্থানে চাঁদ দেখার ভিত্তিতে শুধু সেই স্থানেই নাকি পৃথিবীর সকলপ্রান্তেই নতুন চান্দ্রমাস গণনা শুরু করতে হবে এ ব্যাপারে ইজতিহাদ করার যথেষ্ট অবকাশ আছে কারণ কুর'আন ও সহীহ হাদিস সমূহর মাধ্যমে এই ব্যাপারটা সম্পূর্ণভাবে স্পষ্ট করে দেয়া হয়নি। উভয় ধরণের মতামতের সপক্ষেই যথেষ্ট জোড়ালো যুক্তি আছে এবং আমার কাছে এই ব্যাপারে আপনার কথা মত জাকির নায়েকের ( আমি জাকির নায়েকের খুবই অল্প কিছু লেকচার শুনেছি এবং চাঁদ দেখা বিষয়ে তাঁর কোন লেকচার শুনেছি বলে মনে করতে পারছিনা ) ভ্রান্ত যুক্তিই অধিকতর যৌক্তিক মনে হয়।
আল্লাহ সবাইকে যৌক্তিক ভিন্নমতের প্রতি সহনশীলতা পোষণের মাধ্যমে পারস্পরিক সমঝোতার পথে চলবার তৌফিক দিন। আমিন।
৮| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১০:১১
যুক্তিপ্রাজ্ঞ বলেছেন: সারা পৃথিবীতে একসাথে ঈদ করা আমার কাছে হাস্যকর মনে হচ্ছে না, বরং এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে খুবই সম্ভব মনে হয়, আমার যুক্তিগুলি এমন -
১) চাঁদ দেখে রোযা রাখা ও রোযা ভাঙ্গার অর্থ এই না যে আমাকেই নিজ চোখে দেখতে হবে, মুসলমানদের পক্ষে বিশ্বাসযোগ্য যে কেউ সেটা দেখলেই হল এবং এ ক্ষেত্রে চাঁদটা বাংলাদেশে না মেক্সিকোতে সেটা কোন শর্ত নয়.
২) দিনরাত্রির পার্থ্যক্যের জন্য একই সময় সূর্য উঠবে না সত্য, কিন্তু পৃথিবীতে প্রথম চাঁদ দেখার পর যে এলাকায় যখন সকাল হবে সে এলাকায় তখন ঈদ পালন বা রোজা রাখতে কোন সমস্যা আমি দেখি না.
৩) আমরা যদি দিনরাত্রির পার্থ্যক্যের জন্য সারা দুনিয়ায় একই সময় ঈদ পালন মেনে না নেই তবে চিটাগাং-এ চাঁদ দেখা গেলে কেন রংপুরে চাঁদ না দেখা দেলেও ঈদ করি? আমরা জানি রংপুর ও চিটাগাং-এর মধ্যেও কয়েক মিনিটের ভেদ আছে; এই ভেদ সত্ত্বেও চিটাগাং-এ দেখা চাঁদ দিয়ে যদি রংপুরে ঈদ/রোজা পালন করা যায় তবে উগান্ডায় কেন করা যাবে না?
৪) যদি সময়ের ভিন্নতার একই যুক্তিতে নিকটবর্তী এলাকায় ঈদ করা যায় ও দূরবর্তী এলাকায় ঈদ/রোজা না করা যায়, তবে এই ভিন্নতার পরিমাণ কতটুকু হবে? কোরান/হাদিসের কোন সূত্রে এই সময় নির্ধারণ হবে?
৫) কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ ও ভারতে আগে-পরে ঈদ পালন করা হয়েছে. এই ক্ষেত্রে একই গ্রামের যে অংশ ভারতে অবস্থিত তারা ঈদ পালন করছে কিন্তু বাংলাদেশি মুসলমানরা পরের দিন করছে - এটা কীভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? বৃটিশ ভারতে আমরা একই দিনে ঈদ/রোজা পালন করেছি, এখন রাজনৈতিক বিভাজনে দুটো দেশ হয়ে গেল বলেই ভিন্ন দিনে ঈদ করলে কারণটা যে ধর্মীয় না বরং রাজনৈতিক তা কি বোঝা যাচ্ছে না!
৬) পূর্বের পয়েন্ট ধরে আরেকটা প্রশ্ন, বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোতো রাজনৈতিক কারণে সীমানা চিহ্ণিত; এখন ধরা যাক, কোন সুদূর ভবিষ্যতে ইমাম মেহেদি যুগ এল এবং সারা পৃথিবীতে একক মুসলিম খেলাফত কায়েম হল, অর্থাদ সারা দুনিয়ায় একটিই দেশ, তাহলে তখনতো মক্কায় দেখা চাঁদে সিলেটে ঈদ/রোজা পালন করা হবে. আমাদের রাজনৈতিক সীমানা ভুলে তাই সারা বিশ্বকে একক জ্ঞান করে চাঁদ দেখা বিবেচনা করতে হবে.
৭) বাংলাদেশে কেউ কেউ সৌদি আরবের সাথে মিলিয়ে ঈদ/রোজা পালন করেন. আমার কাছে এটা অগ্রহণযোগ্য মনে হয়. সৌদি নয়, বরং সারা বিশ্বের যে স্থানেই প্রথম চাঁদ দেখা যাক সেটাই ঈদ/রোজা পালনের ভিত্তি হওয়া উচিত.
৮) আমেরিকা-ইউরোপে চাঁদ দেখে নয় বরং সৌদির সাথে মিলিয়ে ঈদ/রোজা পালন করা হয়. সম্প্রতি কেউ কেউ, প্রধানত এই উপমহাদেশীয়রা চাঁদ দেখে ঈদ পালন করেন, স্বভাবতই ভিন্ন দিনে (মূলত পরে). ভিন্ন দিনে ঈদ/রোজা পালন যে মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ ও বিভাজন করছে আর এই ভেদ-বিভাজন যে ইসলামিক হতে পারে না তা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানোর প্রয়োজন নাই. এই নৈরাজ্য ঘোচাতে এক দিনে ঈদ পালনের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য.
৯) তথ্য-প্রযুক্তির যুগের আগে এলাকাভিত্তিক ঈদ পালনের বিকল্প ছিল না, কিন্তু এখন তিউনিসিয়ায় চাঁদ দেখা গেলে তৎক্ষণাৎ বাংলাদেশে জানাটা কোন ব্যপার না. এখন খালি চোখে চাঁদ দেখার জন্য বসে থাকারও অর্থ নাই, মানমন্দির থেকে প্রযুক্তির সহায়তায় এই চাঁদ দেখা যায়. তা ছাড়া, এই চাঁদ কখন কোথায় কতটুকু দেখা যাচ্ছে তার উপর ইন্টারনেটেই অসংখ্য 'মুন-সাইটিং সফটঅয়্যার' আছে তা দিয়ে জানা যায়. এখন দেশভিত্তিক চাঁদ দেখা কমিটি না রেখে ওআইসি-র নিয়ন্ত্রণাধীন একক কমিটি থাকা বাঞ্ছনীয় যেখানে ইসলামিক স্কলাররা ছাড়াও জোতির্বিদরাও থাকবেন - তারাই কেন্দ্রীয়ভাবে সারা বিশ্বে ঈদ/রোজা পালনের সিদ্ধান্ত/ঘোষনা দেবেন.
৯| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১০:৪৩
হাসিবুল ইসলাম বাপ্পী বলেছেন: সরাসরি প্রিয় তে রাখলাম
১০| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১১:২১
মুহাই বলেছেন: যে ব্যক্তি এজিদের প্রতি দুর্বল আর তাকে রহমতুল্লাহি আলাইহি ডাকে সেই সৌদি ওহাবী দালাল জোকার নায়েকের আবার ফতোয়া দেয়া ।শুধু ইলম থাকলেই যদি আলিম হয় তবে ইবলিসও বড় আলিম ।
১১| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৫৫
স্পেলবাইন্ডার বলেছেন: আপনি আমার এবং ৭ ও ৮ নম্বর কমেন্টের যুক্তিপূর্ণ উত্তর দেন দেখি- গৎবাঁধা বুলি আওড়াবেন না। তাহলেই আপনার এই বিষয়ে পোস্ট দেয়ার যোগ্যতা বোঝা যাবে।
আমাদের দেশে খুব কম আলেমেই আছেন যারা মাথা দিয়ে চিন্তা করেন। বেশিরভাগই হুজুগে চলেন।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০৯
সুলাইমান আল উমাইর বলেছেন: ইল্ম থাকলেই যদি আলেম হয় তাহলে ইবলিশ ই সবচেয়ে বর আলেম
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:১৯
সুলাইমান আল উমাইর বলেছেন: আর আমরা যত পুরাতন দের ফতওয়া কে ধরে থাকব ততই আমাদের জন্য মঙ্গল। কেননা এখন থেকে যত পেছনের জুগে জাওয়া যায়ে ততই গৌরবোজ্জ্বল ইসলামি সমাজ বেবস্থা চোখে পরে।যারা সালাফি অর্থাৎ পূর্ববর্তীদের না মেনে খালাফিদের অর্থাৎ পরবর্তীদের মানবে জাকির নায়েক জার একটি ভাল ব্যাখ্যা, তারা অবশ্যই বিভ্রান্ত। আর আমার যোগ্যতার কথা বললেন আপনি নিজের যোগ্যতাকে ছোট করলেন
বলুন, হে আল্লাহ আসমান ও যমীনের স্রষ্টা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী, আপনিই আপনার বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করবেন, যে বিষয়ে তারা মত বিরোধ করত। (Az-Zumar: 46)
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৭
সুলাইমান আল উমাইর বলেছেন: ও গতবাধা বুলির কথা বললেন...। আছা ৭ ও ৮ নং পস্তে গিএ দেইখেন ত যুক্তি ছাড়া আর কিছু আছে কিনা পুরবের আলেম্রা অবশ্যই আপনার থেকে জ্ঞানী জাকির নায়েক থেকে জ্ঞানী আমরা তাদের মাসালাই মানব ধন্নবাদ
১২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০৪
আবদুস সবুর খান বলেছেন: বর্তমানে যারা আহলে হাদীস নামধারী গাইরে মুকাল্লিদগণও এই ব্যাপারে খুব উচ্চ-বাচ্চ করতে দেখা যায়।
আবু হুরায়রা রা: বলেন, আল্লাহর নবী সা: বলেছেন-তোমরা (চাঁদ) দেখে রোযা রাখ ও (চাঁদ) দেখে রোযা ভাঙ্গো,(বুখারী শরীফ-২/৬৭৪)
তারা সারাক্ষন সহীহ হাদীস আর বুখারী শরীফ মানার দাবি করে। কিন্তু এই ব্যাপারে তাদের প্রচারিত মতের বিরুদ্ধ আচরন কেন তা বোধগম্য নয় !!!
১৩| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১২:৫৭
শুধু মুসলিম বলেছেন: সকল মুসলিমকে একই দিনে ঈদ পালন করতে হবে
এখানে ক্লিক করে ডাউনলোড করুন। তারপর বইটির লেখকের ফোন নাম্বার নিয়ে বইটির বিরুদ্ধে কথা বলুন।
বইটিতে সব কিছু কোরআন ও সহীহ হাদিস দ্বারা তুলে ধরা হয়েছে। লেখকের মতামত নেই বললেই চলে। যারা একই দিনে ঈদ পালনের বিরুদ্ধে তাদের সকল দলিল গুলো নিয়ে আসা হয়েছে। এবং ৯-১০টি প্রশ্ন ছুড়ে দেওয়া হয়েছে একই দিনে ঈদ পালনের বিরুদ্ধবাদীদের জন্য। লেখক অলটাইম রেডী যেকোন উত্তর দেওয়ার জন্য। তবে আগে বইটি পড়বেন।
আল্লাহ আমাদের সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত রাখুন। আমীন।
১৪| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:১৮
শুভ জািহদ বলেছেন: লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
সহকারী মুফতী-জামিয়াতুল আস’আদ আল ইসলামিয়া-ঢাকা
উপরোক্ত আলেম এর বুঝার ভূল হয়েছে।
২. হুজুর স. কর্তৃক ত্রিশ পারা কোরআনের ব্যাখ্যায় রেখে যাওয়া দশ লক্ষ হাদীস সনদের ভিন্নতাসহ জানা আবশ্যক। আর হাদীসের এ বিশাল ভান্ডার থেকে কমপক্ষে যেসব হাদীস দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধান সাব্যস্ত হয়, সেসব হাদীস সনদ (বর্ণনাকরী), মতন (মূল বিষয়) এবং উক্ত হাদীস সমূহের বর্ণনাকারীদের জীবন ইতিহাস (সাহাবা ও তাবেয়ীনদের জীবনাচার)সহ কন্ঠস্থ থাকতে হবে। তারই সাথে হাদীসের নিগুড় তথ্যগুলি, সঠিক মর্মগুলি বুঝার পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। যাতে করে মতবিরোধ বিশিষ্ট মাসআলাসমূহে কোরআন, হাদীস, সাহাবা ও তাবেয়ীনদের নির্দেশিত সীমা অতিক্রম না করা হয়।
উপরোক্ত শর্তটি ওলীপুরী সাহেবের। মুজতাহিদ হওয়ার উপরোক্ত শর্তটি গাজা খাওয়া ছাড়া লেখা সম্ভব নয়। কারণ দশ লক্ষ হাদিস সনদ মতন সহ কণ্ঠস্থ থাকা চারটি খানি কথা না। ওলীপুরী গাজা খেয়ে এই মন্তব্য তুলে ধরেছে। মুজতাহিদ হওয়ার শর্ত যদি এটি হয় যে ১০ লক্ষ হাদিস কন্ঠস্থ থাকতে হবে তাহলে দুনিয়াতে একজনও মুজতাহিদ নাই।
শুধুমাত্র ইমাম আহমাদ বিন হাম্বলের ১০লাখ হাদিস কণ্ঠস্থ ছিল। উপরোক্ত বক্তব্য অনুযায়ী রাসূল সাঃ এর কোন সাহাবাই মুজতাহিদ নন কারণ তাদের কারো ১০ লক্ষ হাদিস মুখস্থ ছিল না।
এছাড়াও আরও যারা যারা মুজতাহিদের ক্যাটাগরী থেকে বাদ পড়েন তারা হলেন-
১। ইমাম আবু হানিফা রহ.
২। ইমাম শাফেয়ী রহ.
৩। ইমাম মালেক রহ.
৪। রাসূল সাঃ সব সাহাবা
৫। ইমাম বুখারী রহ.
৬। ইমাম মুসলিম রহ.
৭। ইমাম তিরমীজি রহ.
৮। ইমাম আবু দাউদ রহ.
৯। ইমাম ইবনে তাইমিয়াহ রহ.
১০। ইমাম শওকানী রহ.
১১। ইমাম ইবনুল কাইয়ুম রহ.
যত ইমাম আছে তারা কেউই উপরোক্ত শর্ত অনুযায়ী মুজতাহিদ না। দুনিয়াতে একমাত্র ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল ছাড়া আর কেউই মুজতাহিদ নন।
মূলত ইমাম শওকানী তার ইরশাদ আল ফুহুল গ্রন্থে মুজতাহিদ হওয়ার ৫টি শর্ত নিয়ে এসেছেন-
১। কোরআন ও সুন্নাহ জানতে হবে
২। নাসেখ ও মানসুখ জানতে হবে
৩। আরবী গ্রামার জানতে হবে
৪। হাদিসের সহীহ যইফ যাচাইয়ের জ্ঞান থাকতে হবে
৫। ইজমা সম্পর্কে জানতে হবে।
একজন নরলাম জ্ঞান সম্পন্ন ছেলেও যদি এই বিষয়গুলো জেনে থাকে তো সেই মুজতাহিদ হতে পারবে।
মূলত মাজহাবী মুশরিকরা তাদের ইমামদের রবরে আসনে বসাতে গিয়েই এই রকম কঠোরভাবে মুজতাহিদ এর গুণাবলী বর্ণনা করে থাকে। আবারও বলছি আপনাদের মাজহাবীদের উপরোক্ত সংঙ্গা অনুযায়ী রাসূল সাঃ এর সাহাবারা একজনও মুজতাহিদ না। ইমাম আবু হানিফা সবার আগে মুজতাহিদ এর ক্যাটাগরী থেকে বাদ। কারণ তখন ১০ লাখ হাদিস সংরক্ষণই হয় নাই। উনি মুখস্থ করা তো দূরের কথা। ১০ লাখ হাদিস একমাত্র আহমাদ বিন হাম্বল রহ. ই সংগ্রহ করতে পেরেছেন।
০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:৩৪
সুলাইমান আল উমাইর বলেছেন: পূর্বে একটি হাদিসের যতগুলো সনদ থাকত ততগুলো হাদিস হিসেবে ধরা হত।তাই দশ লক্ষ হাদিস বলতে এখানে হাদিসের সংখ্যা বজান হয় নি। আর সাহাবিদের কথা বললেন,আছা সব সাহাবি কি মুজতাহিদ ছিলেন? না। আপনার জানার ভুল আসে
ইমাম সাওকানি যে শর্তগুলো দিসে তা আপনার কাসে সহজ মনে হইসে,এজন্যই ইসলাম ধ্বংসের পথে কেননা সবাই একেকজন পণ্ডিত হএ উঠতেসে একটা হাদিস যাচাই করে জইফ প্রমান কইরেন আরবি গ্রামার কে আপনি খুব সহজ মনে করসেন একটু শিখে দেইখেন ত আরবি গ্রামার জিনিশ্তা কি নাসেখ মান্সুখ ত আপ্নারা বিশ্বাসই করেন না এতা নিয়ে বলে লাভ নেই আর অলিপুরি সাহেব যেমন বলসেন তা আপনারা গাজাখুরি বলতেই পারেন কেননা আপনারা একে গাজাখুরি বলেন বলেই পুরববরতি আলেমদের আপনারা অসম্মান করেন কেননা তাদের ইজতিহাদি যোগ্যতাই আপনাদের কাছে গাযাখুরি
১৫| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:৩০
শুভ জািহদ বলেছেন: আবু হুরায়রা রা: বলেন, আল্লাহর নবী সা: বলেছেন-তোমরা (চাঁদ) দেখে রোযা রাখ ও (চাঁদ) দেখে রোযা ভাঙ্গো,(বুখারী শরীফ-২/৬৭৪)
=> এখানে তোমরা শব্দটি আম/ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন তোমরা কাবা ঘরের দিকে মুখ দিয়ে টয়লেট করো না। এখানেও তোমরা বলতে গোটা দুনিয়ার মানুষদের বুঝানো হইছে।
তাই এখানে "তোমরা" শব্দটি আঞ্চলিক মানুষদের বলা হয় নাই। বরং গোটা বিশ্বের মানুষদেরই বলা হইছে।
=============================================
সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাদের আজ রবিবার সারা বিশ্বের মুসলিমদের সাথে শাওয়ালের ১ তারিখে ঈদ উদযাপন করার তৌফিক দান করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের অনেক মানুষ এখনো তাদের বাপদাদাদের অনুসরণে শাওয়ালের চাঁদের ২ তারিখ ঈদ পালন করে থাকেন। তারা মূলত হারাম দিনে অর্থ্যাৎ শাওয়ালের চাঁদের ১ তারিখকে চাঁনরাত বলেন এবং সেই দিন অর্থ্যাৎ শাওয়ালের চাঁদের ১ তারিখ রোজা রাখেন যা সম্পূর্ণ রূপে হারাম। বাংলাদেশের মানুষ আজ বরিবার পৃথিবীর আকাশে শাওয়ালের নতুন চাঁদ থাকা সত্ত্বেও তারা আজ বরিবার রোজা রেখেছেন। আল্লাহ তাদের সত্য খোজার ও গ্রহণ করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
============================================
চাঁদ দেখে তারিখ নির্ধারণ করাঃ-
মহান আল্লাহ বলেন,
"তারা তোমাকে নতুন চাঁদ সমূহ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। তুমি বলো, (নতুন চাঁদ সমূহ) তা মানুষের জন্য সময় নির্ধারক এবং হাজ্বের সময়েরও (তারিখ) নির্ধারক। -সূরা বাকারাহ-২/১৮৯
এ আয়াত দ্বারা সুষ্পষ্টভাবে বূঝা যায় যে, মানব জাতিকে চাঁদের হিসেবে তারিখ ও হাজ্বের তারিখ নির্ণয় করতে হবে।
============================================
রোজা ও ঈদ পালনের জন্য চাঁদ দেখা জরুরীঃ-
ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,
"তোমরা চাঁদ দেখে রোজা পালন কর এবং চাঁদ দেখে ঈদ উদযাপন কর। যদি চাঁদ গোপন থাকে তবে ৩০ পূর্ণ কর। - নাসাঈ, সহীহ, আরবী মিশর ২১২৪, ২১২৫, ২১২৯, ২১৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত নাসাঈ হাদিস নং-২১২৮, তিরমিযী, সহীহ, আরবী রিয়াদ-হাদিস নং-৬৮৮, হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, হাদিস নং-৬৮৮
আরও রয়েছে-বুখারী, আরবী মিশর-১৯০৯, তাওহীদ পাবলিকেশন্স-১৯০৯, বুখারী-ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অনুবাদ-১৭৮৫, বুখারী- আধুনিক প্রকাশনী অনুবাদ-১৭৭৪, সহীহ মুসলিম-আহলে হাদিস লাইব্রেরী হাদিস নং-১৮০৮, ১৮০৯,১৮১০, ১৮১১, নাসাই-সহীহ, আরবী মিশর, হাদিস নং-২১১৭, ২১১৮, ২১১৯, ২১২২, ২১২৩, সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অনুবাদ হাদিস নং-৬৮১, ইবনে মাজাহ, সহীহ, আরবী মিশর-হাদিস নং-১৬৫০, ১৬৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অনুবাদ-১৬৫৫, আধুনিক প্রকাশনীর অনুবাদ-১৬৫৫।
এই হাদিস থেকে বুঝা গেল যে রোজা ও ঈদ পালনের জন্য চাঁদ দেখা জরুরী।
============================================
কতজন মুসলিমের চাঁদ দেখা গ্রহণীয়
আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ রাঃ থেকে বর্ণিত,
"নিশ্চয়ই রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যদি তোমাদের দুজন স্বাক্ষ্য দেয় যে, তারা (নতুন) চাঁদ দেখেছে তাহলে তোমরা রোজা ও ঈদ পালন করো। - নাসাঈ, সহীহ, আরবী মিশর-হাদিস নং-২১১৬, ই.ফা.বা-২১২০।
এই হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, যদি দুজন মুসলিম রমজানের বা শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ দেখেছে বলে স্বাক্ষ্য দেয়, তাহলে তা সকল মুসলিমের জন্য প্রযোজ্য হবে। অর্থ্যাৎ দুজন মুসলিম নতুন চাঁদের স্বাক্ষ্য দিলেই তা অনুযায়ী সকল মুসলিম রোজা ও ঈদ পালন করবে।
একই বক্তব্য সাহাবী আবদুল্লাহ বিন ওমর রাঃও দিয়েছেন যখন উনাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে কতজন ব্যক্তির স্বাক্ষ্য প্রয়োজন। দেখুন-আবু দাউদ, সহীহ, আরবী রিয়াদ হাদিস নং-২৩৩৮, হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, হাদিস নং-২৩৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অনুবাদ হাদিস নং-২৩৩১।
এই হাদিসটি থেকে বুঝা যায় যে, চাঁদ দেখার স্বাক্ষ্য দুজন ব্যক্তি থেকে হতে হবে।
শিক্ষাঃ দুজন মুসলিম নতুন চাঁদের স্বাক্ষ্য দিলেই তা সমস্ত মুসলিমের জন্য মেনে নিতে হবে। সকল মুসলিমের চাঁদ দেখা শর্ত নয়।
============================================
এক অঞ্চলে নতুন চাঁদ দেখা না গেলে অন্য অঞ্চল থেকে নতুন চাঁদ দেখার সংবাদ আসলে করণীয়
আনাস ইবনু মালিক রাঃ থেকে বর্ণিত
"তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সাহাবী আমার কতিপয় আনসার পিতৃব্য আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, একবার শাওয়ালের নতুন চাঁদ (ঈদের চাঁদ) আমাদের উপর গোপন থাকে। আমরা পরের দিন অর্থ্যা ঈদের দিন রোজা পালন করি। এমতাবস্থায়, ঐ দিনের (ঈদের দিনের) শেষভাবে একটি কাফেলা নাবী সাঃ এর কাছে এসে বিগতকাল চাঁদ দেখার স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাঃ আমাদের রোজা ভাঙ্গতে নির্দেশ দিলেন। আবু দাউদ, সহীহ, আরবী রিয়াদ- হাদিস নং-১১৫৩, ২৩৩৯, আবু দাউদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অনুবাদ, হাদিস নং-১১৫৭, ২৩৩২, আবু দাউদ, হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী, হাদিস নং-১১৫৭, ২৩৩৯, ইবনে মাজাহ, সহীহ, আরবী মিশর হাদিস নং-১৬৫৩, ইবনে মাজাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অনুবাদ হাদিস নং-১৬৫৩, আধুনিক প্রকাশনী হাদিস নং-১৬৫৩।
এই হাদিসটি থেকে বুঝা যায় যে, মদিনায় রাসূলূল্লাহ সাঃ এবং তার সাহাবীগণ কেউই শাওয়ালের নতুন চাঁদ অর্থ্যাৎ ঈদের চাঁদ দেখেন নি। তাই তারা সকলে পরেরদিন রোজা পালন করছিলেন। কিন্তু ঐ দিনের শেষভাগে অর্থ্যাৎ ইফতারের কিছু সময় পূর্বে মদিনার বাহিরে থেকে একটি কাফেলা এসে নাবী সাঃ কে জানাল যে, তারা গতকাল সন্ধায় নতুন চাঁদ দেখেছে। রাসূলুল্লাহ সাঃ যখন জানতে পারলেন যে, তারা মুসলিম তখন তিনি সকলকে রোজা ভাঙ্গতে নির্দেশ দিলেন।
অর্থ্যাৎ বুঝা গেল যে, নিজ শহরে নতুন চাঁদ দেখা না গেলেও বাহিরের শহরের নতুন চাঁদ উঠার খবর আসলে তা গ্রহণ করতে হবে। কারণ রাসূল সাঃ স্বয়ং নিজেই অন্য শহরের নতুন চাঁদের সংবাদ গ্রহণ করে আমাদের তা শিখিয়ে দিয়েছেন।
============================================
বিশ্বব্যাপী সকল মুসলিমের একই দিনে রোজা ও ঈদ পালন
আয়েশাহ রাঃ থেকে বর্ণিত
"রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, ঈদুল ফিতর হলো ঐ একদিন যেদিন সকল মানুষ ঈদুল ফিতর উদযাপন করে থাকে এবং ঈদুল আযহা হচ্ছে ঐ একদিন যেদিন সকল মানুষ ঈদুল আযহা পালন করে থাকে। - তিরমিযী, সহীহ, আরবী রিয়াদ, হাদিস নং-৮০২, হুসাইন আল মাদানী কর্তৃক প্রকাশিত তিরমিযী, হাদিস নং-৮০২, তিরমিযী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত হাদিস নং-৮০০।
এই হাদিসে "ইয়াওমা" শব্দটি একবচন, যার অর্থ একদিন। আর হাদিসে "আন্নাসু" শব্দটি "ইনসান" শব্দের বহুবচন হওয়ায় সকল মানুষ তথা সকল মুসলিমদের বোঝানো হয়েছে। যেমন আল্লাহ বলেন,
"হে মানবজাতি তোমরা তোমাদের রবকে ভয় করো। - সূরা নিসা-৪/১
এই আয়াতটিতে "আন্নাসু" শব্দটির দ্বারা সকল মানুষকে বুঝানো হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে হাদিসটিতেও "আন্নাসু শব্দটি দ্বারা সকল মানুষকে অর্থ্যাৎ সকল মুসলিমকে বলা হয়েছে।
অর্থ্যাৎ হাদিসটিতে বলা হয়েছে যে, সকল মানুষ (মুসলিম) একই দিনে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা পালন করবে। যদি ভিন্ন ভিন্ন দিনে ঈদুল ফিতর বা ঈদুল আযহা পালন করা শারীআহ'র বিধান হতো তাহলে রাসূলুল্লাহ সাঃ "ইয়াওমা" শব্দটি অর্থ্যাৎ একবচন এর পরিবর্তে "আইয়্যাম" বহুবচন শব্দ ব্যবহার করতেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাঃ "ইয়াওমা" শব্দটি একবচন ব্যবহার করার মাধ্যমে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, সকল মুসলিমকে একই দিনে ঈদ পালন করতে হবে।
যেমন মহান আল্লাহ বলেন,
যেদিন ভূমিকম্প প্রকম্পিত করবে। -সূরা নাযিআত, ৭৯/৬
এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, যেদিন ভূকম্পন হবে অর্থ্যাৎ কিয়ামত সংঘটিত হবে। আয়াতটিতে "ইয়াওমা" শব্দটি একবচন, অর্থ্যাৎ একইদিনে পৃথিবীতে ভূকম্পন হবে। এই বিষয়টি আরো ভালভাবে বুঝতে নিম্নোক্ত হাদিসটি লক্ষ্য করুন। রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,
জুমুআহ'র দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। - সহীহ মুসলিম, আহলে হাদিস লাইব্রেরী, হাদিস নং-১৪০১
এই হাদিসটি বলেছে যে, জুমুআহ দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। আর এখানে আরবী শব্দ "ইয়াওমা" একবচন ব্যবহৃত হয়েছে। যার অর্থ "একদিন"। অর্থ্যাৎ যখন কিয়ামত সংঘটিত হবে তখন পৃথিবীর সকল জায়গায় জুমাবার (শুক্রবার) থাকবে অর্থ্যাৎ বুঝে নিতে হবে যে, "ইয়াওম" শব্দটি বিভিন্ন দিনকে বুঝায় না বরং একদিনকে বুঝায়। তাই মা আয়েশাহ রাঃ হতে বর্ণিত হাদিসটি আবারও লক্ষ্য করুন,
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, ঈদুল ফিতর হলো ঐ এদকিন যেদিন সকল মানুষ ঈদুল ফিতর উদযাপন করে থাকে এবং ঈদুল আযহা হচ্ছে ঐ একদিন যেদিন সকল মানুষ ঈদুল আযহা পালন করে থাকে।-তিরমিযী, সহীহ আরবী রিয়াদ, হাদিস নং-৮০২, তিরমিযী-হুসাইন আল মাদানী কর্তৃক প্রকাশিত হাদিস নং-৮০২, তিরমিযী-ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অনুবাদ-৮০০।
এই হাদিসটিতে বলা হয়েছে, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা হচ্ছে সেইদিন যেদিন সকল মুসলিমগণ ঈদ উদযাপন করেন। আর হাদিসটিতে "ইয়াওমা" শব্দটি একবচন ব্যবহার হওয়ায় বুঝে নিতে হবে যে, রাসুলুল্লাহ সাঃ বুঝাচ্ছেন যে, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা সকল মুসলিম একইদিনে উদযাপন করবে।
আবারও লক্ষ্য করুন
আবু হুরাইরাহ রাঃ থেকে বর্ণিত,
নাবী সাঃ বলেছেন, যেদিন তোমরা রোজা পালন কর সেদিন হলো রোজা। যেদিন তোমরা ঈদুল ফিতর পালন কর সেদিন হলো ঈদুল ফিতর আর যেদিন তোমরা ঈদুল আযহা পালন কর সেই দিন ঈদুল আযহা।
-তিরমিযী, সহীহ, আরবী রিয়াদ- হাদিস নং-৬৯৭, হুসাইন আল মাদানী, হাদিস নং-৬৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অনুবাদকৃত তিরমিযী হাদিস নং-৬৯৫।
-ইবনে মাজাহ, সহীহ, আরবী মিশর-১৬৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অনুবাদকৃত হাদিস নং-১৬৬০, আধুনিক প্রকাশনী এর অনুবাদকৃত হাদিস নং-১৬৬০।
এই হাদিসটিও পূর্বের হাদিসের মতো "ইয়াওমা" একবচন শব্দটি ব্যবহার হয়েছে। আর "ইয়াওমা" দিয়ে একদিনকে বুঝানো হয় যা পূর্বে হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। হাদিসে "তোমরা" শব্দটি সকল মুসলিমদের বুঝানো হয়েছে। যেমন
মহান আল্লাহ বলেন,
তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং তোমরা নিজেদেরকে স্বহস্তে ধ্বংস করো না এবং তোমরা কল্যানকর কাজ করো। -সূরা বাকারাহ-২/১৯৫
এই আয়াতে "তোমরা ব্যয় কর"। আর এই তোমরা শব্দটি সকল মুসলিমদেরকে বুঝানো হয়েছে। ঠিক তেমনি আবু হুরাইরাহ রাঃ হতে বর্ণিত হাদিসটিতে "তোমরা" সকল মুসলিমদেরকে বুঝানো হয়েছে।
হাদিসটি আবারও লক্ষ্য করুন।
আবু হুরাইরাহ রাঃ থেকে বর্ণিত,
নাবী সাঃ বলেছেন, যেদিন তোমরা রোজা পালন কর সেদিন হলো রোজা। যেদিন তোমরা ঈদুল ফিতর পালন কর সেদিন হলো ঈদুল ফিতর আর যেদিন তোমরা ঈদুল আযহা পালন কর সেই দিন ঈদুল আযহা।
অর্থ্যাৎ রাসূলুল্লাহ সাঃ বুঝাচ্ছেন যে, একইদিনে সকল মুসলিম রোজা ও ঈদ উদযাপন করতে হবে। যদি ভিন্ন ভিন্ন দিনে রোজা ও ঈদ পালন করা ইসলামের বিধান হতে তাহলে রাসূলুল্লাহ সাঃ "ইয়াওমা" একবচন শব্দ ব্যবহার না করে "আইয়্যাম" বহুবচন শব্দ ব্যবহার করতেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাঃ "ইয়াওমা" একবচন শব্দ ব্যবহার করে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, সকল মুসলিমগণকে একইদিনে রোজা এবং ঈদ পালন করতে হবে।
============================================
একই দিনে রোজা এবং ঈদ পালন করা ফরজ
পূর্বে আমরা প্রমাণ করে এসেছি যে, রাসুলুল্লাহ সাঃ এর শিক্ষা হচ্ছে রোজা ও ঈদ পালন করতে হবে। এখন যদি আমরা একইদিনে রোজা ও ঈদ পালন না করি, তাহলেতো রাসুলুল্লাহ সাঃ এর ফায়সালাকে অমান্য করা হয়। আর রাসুলুল্লাহ সাঃ এর ফায়সালা অমান্য করা সম্পর্কে আল্রাহ বলেন,
وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَلَا مُؤْمِنَةٍ إِذَا قَضَى اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَمْرًا أَن يَكُونَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ أَمْرِهِمْ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِينًا
আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট তায় পতিত হয়। -সূরা আহযাব-৩৩/৩৬
এই আয়াত থেকে বুঝা যায় যে, রাসুলুল্লাহ সাঃ এর দেয়া শারীআহ'র বিধান মানা আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক অর্থ্যাৎ ফরজ। তাই যেহেতু একইদিনে রোজা এবং ঈদ পালন করা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর দেয়া শারীয়াতের নিয়ম আর এই নিয়ম মেনে নেয়া আমাদের জন্য ফরজ।
আল্লাহ আমাদের কোরআন ও সহীহ হাদিস মেনে একই দিনে ঈদ পালন করার তৌফিক দান করুন এবং ঈদের দিন রোজা পালন করা থেকে হিফাজত করুন। আমীন।
=============================================
যারা নিজ নিজ দেশের চাঁদ অনুযায়ী রোজা ও ঈদ পালন করে থাকেন তাদের কাছে আমাদের প্রশ্নঃ
১) দেশের সীমানা কতটুকু হবে তার কোরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী পেশ করবেন? কোন আলিমের বক্তব্য বা ফাতওয়া গ্রহনযোগ্য হবে না। কারণ আল্লাহ বলেছেন, "তোমাদের রবের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ হয়েছে তা মেনে চলো এবং তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে অভিভাবক মেনো না।-সূরা আরাফ-৭/৩
২। রাসূল সাঃ সরাসরি বলেছেন, একই দিনে বিশ্বের সকল মুসলিম রোজা ও ঈদ পালন করতে হবে। তিরমিযী সহীহ আরবী রিয়াদ ও হুসাইন আল মাদানী প্রকাশনী হাদিস নং-৮০২, ইবনে মাজাহ, সহীহ, আরবী মিশর, হাদিস নং-১৬৬০। এই হাদিস এর কি ব্যাখ্যা দিবেন আপনারা?
৩। নিজ নিজ দেশের চাঁদ অনুযায়ী রোজা ও ঈদ পালন করতে হবে এর স্বপক্ষে আল্লাহর কিতাব বা রাসূল সাঃ এর হাদিস থেকে দালিল পেশ করবেন। যেমন ভাবে আমরা করেছি। আমরা চাই দলিল? একই দিনে রোজা ও ঈদ পালণ করতে হবে না, এর দলিল কি? যুক্তি গ্রহণযোগ্য না। দলিল দিতে হবে।
৪। আপনাদের বক্তব্য অনুযায়ী "সৌদি আরবের সাথে আমরা ইফতার, সেহরী ও নামাজ আদায় করি না"। এই জন্য আপনারা সৌদির সাথে ঈদ পালন করতে চান না। তাহলে আপনাদের নিকট আমাদের প্রশ্ন? ঢাকার মানুষের সাথে চট্টগ্রামের মানুষ একসাথে ইফতার, সেহরী ও নামাজ আদায় করি না। তবে কেন রোজা ও ঈদ একই দিনে পালন করেন?
৫। সূর্যের সময়ের হিসেবে উল্লেখিত দুই শহর অর্থ্যাৎ ঢাকা ও চট্টগ্রাম এর পার্থক্য বজায় রেখে যদি আপনারা একই দিনে রোজা ও ঈদ পালন করতে পারেন। তবে কেন সৌদি আরবের সাথে সূর্যের সময়ের হিসাবটি বজায় রেখে একইদিনে রোজা ও ঈদ পালন করতে পারেন না?
আপাতত এই মাত্র ৫ টা প্রশ্ন করলাম।
১৬| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১২ সকাল ১১:৪৭
শুভ জািহদ বলেছেন: জাকির নায়েক তো আমাদের জানা মতে একই দিনে ঈদ পালনের বিপক্ষে। আপনি কোন সূত্র থেকে এই তথ্য পেলেন যে জাকির নায়েক একই চাঁদে ঈদ পালনের পক্ষে?
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ৮:৪১
মাহমুদুর রাহমান বলেছেন: কোন মানুষের সব ইজতিহাদ সঠিক না। নিজের মগজ খাটানোর কথা ইসলাম সবাইকে দিয়েছে। এমন স্বাধীনতা অন্য ধর্মে বিরল। আর জেনে রাখেন ভুল ইজতিহাদ করলেও ১ টা নেকি , সঠিক ইজতিহাদ করলে ২ গুন নেকি। ২ লাইন শুনে কোন জ্ঞানী লোকের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তোলা আমাদের পুরনো অভ্যাস। আপনার মগজ খাটিয়ে চলুন। আপনার কাজের ফলাফল আপনাকে দেয়া হবে। একটুও কম বেশি হবে না।