![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিল্প ক্ষেত্র : যন্ত্রসঙ্গীত, লেখালেখি ও ছবি আঁকা। জীবন, চারপাশের পরিবেশ, প্রকৃতি – এই সব নিয়ে লেখালেখি করি নিজের পর্যবেক্ষণ এবং উপলব্ধি থেকে, তাই আমাকে একজন স্বতঃস্ফূর্ত লেখক ও বলা যেতে পারে।
ভালবাসা আর হাজারো সৃতিতে ঘেরা সি এন্ড বি কলোনি, যেখানে কেটেছে জীবনের ১৯টি বছর। শৈশবের দিনগুলি কখনই ফিরে আসবে না জানি, তবে ফিরে পওয়া গেলে হয়তো ভালই হত। কলের দুয়ারের সামনে ছোট্ট খেলার মাঠ, যেখানে সময় উপযোগী সব ধরনের খেলায় খেলতাম আমরা। ডাংগুলী, মারবেল, ক্রিকেট, সাত চারা, কানামাছি, কাবাডি- এমন অনেক খেলাই খেলতাম বছরের বিভিন্ন সময়ে। রাতের বেলা কারেন্ট চলে গেলে সবাই বাসা থেকে বের হইয়ে গল্প করেই সময়টা কাটিয়ে দিতাম, কারেন্ট এলে সবাই দৌড়ে চলে যেতাম যার যার বাসায়। শীতকালে আবার ভিন্নতা, পাড়ার বড় ছোট সবাই মিলে ব্যাডমিন্টন কোর্ট তৈরি করতাম। সকলে টাকা তুলে খেলার নেট, লাইট বোর্ড ও লাগাতাম যাতে রাতে ও খেলা যায়। রোজার সময়টাতে তারাবি নামাজ এর পরেই শুরু হইয়ে যেত আমাদের খেলা। পালা করে দু জন দু জনের টিম ভাগ করে খেলা চলত সেহেরির আগ অবদি।
মাঠের পাশেই হেলাল চাচার বাসা, চাচার বরই গাছে ডিল ছুঁড়ে কত বরই খেয়েছি, আবার সাথে চাচার দৌড়ানিও খেয়েছি বহুবার। চাচার বাসার টিনের চালের উপর থেকে টেনিস বল আনতে গিয়ে কতবার যে চাচার বকা শুনেছি। চাচা আজ পৃথিবীতে নেই। কিন্তু শত অভিমানের মধ্যেও চাচার চোখে যে ভালোবাসা দেখেছি আমাদের প্রতি তা সারাটা জীবন মনের এক কোনে থেকে যাবে। ফেলে আসা সেই দিন গুলির কথা মনে পড়লে সুখ- দুঃখ দুটোই অনুভব হয়।
কলোনিতে সব পরিবারি বেশ পুরনো। মানে, দীর্ঘ দিন যাবত রয়েছেন পরিবার গুলো। আমার জন্মের পর থেকে উনাদের হাতেই আমার বেড়ে উঠা। তাই প্রতিটি পরিবারের কাছেই আমি ঋণী। দুর্গা পুজা, কালি পুজা, ঈদ – কখনই আমার কাছে আলাদা মনে হয়নি। বরং সারা বছর আমিও অপেক্ষায় থাকতাম কবে ঈদ আসবে। ঈদের দিন সকাল থেকেই বেরিয়ে যেতাম বন্ধুদের বাসায়। সুজন, ইউসুফ, বেলাল, মুন্না, কাউছার, শামসুল থেকে শুরু করে একের পর এক সবার বাসায় বন্ধুরা দল বেঁধে যেতাম আর মজার মজার লাচ্ছা সেমাই, জরদ্দা ভাত, লাল সেমাই খাওয়া হতো। সালামি ও পেয়েছি বহুবার।
কাজের সুবাধে পাড়ি দিয়েছি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, কিন্তু কলোনির প্রতিটি মানুষের আন্তরিক সেই আদর ভালবাসা আর কোথাও খুজে পাইনি। বৃষ্টির দিনে বন্ধুরা হাঁটু জল পানিতে কত হৈ চৈ করেছি যা আর কখনই করা হবে না। সি এন্ড বি কলোনি আমার শিকর, আমার ভালোবাসা। যারা কলোনিতে বড় হয়েছে শুধু তারাই রিলেট করতে পারবে আমার লেখা গুলো।
সেই দিন গুলোতে ফিরে যেতে ইচ্ছে হয় আবারো। জানি, হইত বা তা আর কখনই হবেন না। যে সময় চলে যায় তা যে আর ফিরে আসে না।
---------------
সানি মজুমদার
আবুধাবি, ইউ এ
চিত্রকর : তিসা সেন
১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১১:০৭
সানি মজুমদার বলেছেন: ধন্যবাদ ইকরাম ভাই। যে সময় চলে যায় তা আর ফিরে আসে না, কিন্তু ফেলে আসা দিনের কিছু মুহুর্ত মনে করতেই অদ্ভুত এক ভালো লাগা অনুভব হয় মনের ভিতর। সেই দিন গুলি যেমন সরল ছিল তেমনি চারপাশের লোকজন ছিল সাদা মাটা। তাই মাঝে মাঝেই যন্ত্রিক জীবন থেকে নিজেকে একটু আড়াল করে শৈশবের স্মৃতি চারণ করি। ভালোই লাগে....
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১৭
আল-ইকরাম বলেছেন: মানব জীবনের সবচেয়ে মধুময়, আনন্দঘন মূহুর্ত হলো ছেলেবেলা। আফসোস! জীবনের ফেলে আসা সেই মূল্যবান, আনন্দময় সময়টা আর কখনোই ফিরে আসে না। মানব জীবনের সকল দুঃখ বেদনার মধ্যে ছেলে বেলার এই জীবনটা ফিরে না পাওয়াটাই অনেক বেশী দুঃখের, বেদনার। স্মৃতি চারণ ভাল লেগেছে। শুভ কামনা রইল।