![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ ৮ জানুয়ারি। ১৯৭২ সালের এই দিনে পাকিস্তানের কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সগৌরবে মুক্তিলাভ করেন। এদিন বঙ্গবন্ধু ও ড. কামাল হোসেনকে বিমানে তুলে দেয়া হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় তারা পৌঁছান লন্ডনের হিথরো বিমানবন্দরে। বেলা ১০টার পর থেকে তিনি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী অ্যাডওয়ার্ড হিথ, তাজউদ্দিন আহমদ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলেন। পরে ব্রিটেনের বিমান বাহিনীর একটি বিমানে তিনি পরের দিন ৯ জানুয়ারি দেশের পথে যাত্রা করেন। দশ তারিখ সকালেই তিনি নামেন দিল্লিতে। সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশের জনক শেখ মুজিবুর রহমান সেখানে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, সমগ্র মন্ত্রিসভা, নেতৃবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং অন্যান্য অতিথি ও সেদেশের জনগণের কাছ থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা লাভ করেন। বঙ্গবন্ধু ভারতের নেতৃবৃন্দ এবং জনগণের কাছে তাদের অকৃপণ সাহায্যের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ছিল ‘অন্ধকার হতে আলোর পথে যাত্রা’। বঙ্গবন্ধু ঢাকা এসে পৌঁছেন ১০ জানুয়ারি। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের পর বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুকে প্রাণঢালা সংবর্ধনা জানানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিল। আনন্দে আত্মহারা লাখ লাখ মানুষ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে রেসকোর্স ময়দান পর্যন্ত তাকে স্বতঃস্ফূর্ত সংবর্ধনা জানান। বিকাল ৫টায় রেসকোর্স ময়দানে প্রায় ১০ লাখ লোকের উপস্থিতিতে তিনি ভাষণ দেন। সশ্রদ্ধ চিত্তে তিনি সবার ত্যাগের কথা স্মরণ করেন, সবাইকে দেশ গড়ার কাজে উদ্বুদ্ধ করেন। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে প্রবাসী সরকার তার নির্দেশনা অনুসরণ করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করে। নয় মাসের যুদ্ধের এক পর্যায়ে বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ নিতে শুরু করে। ধীরে ধীরে স্বাধীনতা অর্জনের পথে মুক্তিযোদ্ধা, জনতা ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণ তীব্র হয়। জয় তখন সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় মাত্র। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে বিশ্বব্যাপি জনমত গড়ে তোলা হয় প্রবাসী সরকারের নেতৃত্বে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবিতে সোচ্চার হলে পাকিস্তানি বর্বর শাসকগোষ্ঠী বাধ্য হয় তাকে সসম্মানে মুক্তি দিতে। প্রবাসী অস্থায়ী আওয়ামী লীগ সরকার ঢাকায় ফিরে সরকার পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিল। পরে, ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলাদেশের মাটিতে প্রত্যাবর্তন করেন। ১২ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। ২৩ সদস্য বিশিষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে।স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম সরকারের সাফল্য ছিল যুদ্ধবিধস্ত দেশ পুনর্গঠন এবং প্রায় এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন। বঙ্গবন্ধু সরকার অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে এই গুরু দায়িত্ব সম্পন্ন করে। দুর্ভিক্ষের যে আশঙ্কা করা হয়েছিল, সরকার তা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে মোকাবেলা করে। সামরিক-বেসামরিক প্রশাসন গড়ে তোলা হয়। বাংলাদেশ সেই মুহূর্তে অল্প সময়ের মধ্যে শতাধিক রাষ্ট্রের কূটনৈতিক স্বীকৃতি লাভ করতে সক্ষম হয়। স্বাধীনতা লাভের তিন মাসের মধ্যেই বাংলার মাটি থেকে ভারতীয় সৈন্যদের প্রত্যাবর্তন বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছিল। ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ জারিকৃত প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশ বলে গণপরিষদ গঠন করে নভেম্বর মাসের মধ্যেই দেশের জন্য একটি সংবিধান উপহার দেয়া হয় এবং যা কার্যকর হয় ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর।
বঙ্গবন্ধুকে অনেকে বিভিন্নভাবে ট্যাগ দিয়ে কথা বলেন। হ্যা, একজন মানুষের ভাল মন্দ গুণাগুণ থাকতেই পারে, তাই বলে তার অদক্ষতা নিয়ে মিছিল-মানববন্দন করলে চলবে না। তার ভাল দিকের প্রশংসা আপনাকে করতেই হবে। একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে তার নিজ পায়ে দাঁড় করানো কম পরিশ্রমের নয়। তার অক্লান্ত পরিশ্রমেই যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পূণর্নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। তার লোকান্তর পরবর্তী সময়ে যে অপশক্তিগুলো দেশ পরিচালনা করেছে, যদি তাদের উপর যুদ্ধবিধ্বস্ত এই দেশের ভার পড়তো, তাহলে দেশ এতো দিনে কোন গহ্বরে লুকাতো তা কল্পনাতীত। এই মহান ব্যক্তির পারলৌকিক মুক্তি ও শান্তি কামনা করি।
ঘোষণা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি এবং জাতীয় স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, জাতীয় শোক দিবসসহ আটটি দিবস পালন সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিকের জন্য বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিটের শুনানি আজ। আশাপূরণের অপেক্ষায়..
(ছবি. নেট)
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৬
সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: আপনার সুমন্তব্যে অনেক অনুপ্রাণিত হলাম। ধন্যবাদ থাকলো চিরন্তন। প্রথমাগমন হিসেবে সুস্বাগতম।
২| ২০ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: ১৯৭২, ১৯৭৩ সাল ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের সোনালী সময়।
০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৬
সৈয়দ ইসলাম বলেছেন: ঠিক তাই ভাইজান।
কিন্তু পরবর্তী সময়টা সেই সোনালি সময়কে চূড়ান্ত অপমানিত করে ছাড়লো।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১২:২৮
ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
আপনার এই সিরিজ থেকে অনেক কিছুই জানা জিনিসের পুনরায় চর্চা হল। মহান নেতাকে নিয়ে এই লেখাটি খুব ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ!