নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিবেকের ডায়েরি থেকে একটু বলছি: ২

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১:২৬

উলঙ্গ হয়ে লাভ নেই, পোশাকেই ভালো আছি।।
(দ্বিতীয় পর্ব)
সাইয়িদ রফিকুল হক

“ন্যাংটা-রাজার” গল্প আমাদের সবারই কম-বেশি জানা আছে।এক রাজা সবচেয়ে সুন্দর পোশাক-পরিধান করার নামে শেষপর্যন্ত পোশাক-নির্মাতা দর্জিদের কূটচালে পরাস্ত হয়ে, এবং তার নিজের পারিষদবর্গের চাটুকারিতার কাছে হার মেনে উলঙ্গ হয়ে সবার সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো।আর তার সভাসদ ও চাটুকার পারিষদবর্গ তা দেখেও একের-পর-এক তাকে বাহবা দিচ্ছিলো।আর রাজাও কী সুন্দর আরামে একেবারে “দিগম্বর” হয়ে চলাফেরা করছিলো।কিন্তু একটা কথা আমাদের সবসময় মনে রাখতে হবে যে, কেউ-কেউ নগ্ন হতে পারে, তাই বলে সমাজের সবাই কিন্তু নগ্ন হয় না।
রাজা ন্যাংটা হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো।কিন্তু তার কোনো বোধশক্তি ছিল না।তার বিচারবুদ্ধি ও বোধশক্তি ছিল তখন মৃত।তাই, সে কিছুই বুঝতে পারেনি।আর রাজদরবারের অসংখ্য মানুষের সামনে আনন্দচিত্তে “উলঙ্গ” হয়ে চলাফেরা করছিলো।
শেষে ভরামজলিশে একটি ছোট্ট শিশু সবাইকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো যে রাজা “ন্যাংটা”!
তারপর শুরু হলো হৈচৈ।
রাজা ন্যাংটা!
গল্পের রাজার মতো তোষামোদকারীদের আশ্রয়ে-প্রশ্রয়ে সমাজে-রাষ্ট্রে অনেকেই এখন একেবারে নগ্ন।কিন্তু তার সামান্যতম হিতাহিতজ্ঞান নেই যে, সে বুঝতে পারবে, সে নগ্ন।আপনার পোশাক ঠিক আছে কিনা, এখন আপনিই ভালো বলতে পারবেন।এর সঙ্গে আজ-এক্ষুনি আপনি আপনার ভাষাপোশাকটাও ভদ্রসমাজে প্রচলনের জন্য মার্জিত করুন।মনে রাখবেন, মানুষের দেহের যেমন পোশাক থাকে তেমনি মনের ভাষারও রয়েছে নিজস্ব-পোশাক।আপনি আপনার সামান্য স্বার্থের লোভে একমুহূর্তের মধ্যে অবিবেচক হয়ে নিজের ভাষাপোশাক খুলে ফেলবেন না।তাহলে, আপনিও সমাজ-রাষ্ট্রের কাছে একেবারে “উলঙ্গ” হয়ে পড়বেন।আর সমাজ-রাষ্ট্রে উলঙ্গ মানুষের কোনো স্থান নেই।

আপনার ভাষা ঠিক করার জন্য এখনই সচেতন হোন।আর আপনি নগ্নভাষার “শিকারী” কিনা তাও একবার উপলব্ধি করুন।আপনার চেহারা দেখার জন্য আয়না আছে।আর এই আয়না দিয়েই দেখুন আপনার ভাষাপোশাকের ব্যবহার।আর এক্ষেত্রে আপনাকে একটুখানি কষ্ট করে আপনার “মনের আয়না” খুলে বসতে হবে।একমাত্র আপনার মনের আয়নাই বলে দিতে পারবে আজকাল ভাষাপ্রকাশে আপনি কতখানি নগ্ন, আর কতখানি সচেতন, আর কতখানি মার্জিত।
নিজে উলঙ্গ হয়ে মানুষকে যতোই সদুপদেশ দেন না কেন, কেউ আপনার কথা শুনবে না।আর আপনার লেখায় দেদারসে যতোই “লাইক” বা “কমেন্টস” পড়ুক না কেন।আপনি হবেন ওই ন্যাংটা-রাজার মতো।সাধারণ চাটুকারদের কথায় সন্তুষ্ট হয়ে সমাজে-রাষ্ট্রে একেবারে “দিগম্বর” হয়ে বসে থাকবেন না।আপনি নিজের বিবেককে জাগ্রত করে তাকে পরিশুদ্ধ করে তুলুন।আর তখন আপনার “ভাষাপোশাক” হবে চমৎকার!তখন, সবাই আপনাকে হৃদয় থেকে অভিনন্দন জানাবে।আপনি হবেন মানুষের হৃদয়গ্রাহী।কোনোপ্রকার তোষামোদীর জন্য নয়, মানুষ তখন আপনাকে মন থেকে খুঁজবে, আর ভালোবাসবে।
“ভাষা” মানুষের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র।আর তাই, এই অস্ত্র দেখেশুনে, জেনেশুনে, বুঝেশুনে দেশ-মানুষ বিবেচনা করে প্রয়োগ করতে হবে।হাতে অস্ত্র আছে বলেই আপনি যাকে খুশি তাকে আঘাত করবেন, তাতো হয় না।আপনি নির্বোধের মতো অস্ত্র বের করলে, অন্যে আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র বের করতে বাধ্য হবে।এতে নিজেদের মধ্যে শুরু হবে সংঘাত।আর এই সংঘাতসৃষ্টির জন্য একমাত্র দায়ী হবেন আপনি।আর এক্ষেত্রে আপনার কোনো নিস্তার নেই।মনে রাখবেন, ‘ইটটি মারলে পাটকেলটি খেতে হয়’।এটি বিধির বিধান।আর প্রকৃতিরও বিধান।তাই, পৃথিবীতে মানুষহত্যা করে আজও একজন এজিদ, একজন হিটলার, একজন মুসোলিনি, আর একজন রাজাকার এখনও মানুষের কাছে চিরঘৃণিত।আপনাকে সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। আর চিরদিন মানুষের ভাষাপ্রয়োগ করতে হবে।মানুষ কিন্তু মানুষকেই ভালোবাসে।

আপনি কী ভাবছেন, আর কী লিখবেন, তা ঠিক করুন।আর দেশ ও মানুষের পক্ষে থাকুন।আর মনে রাখবেন, আমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি।কারণ, আমরা ১৯৭১ সালের ২৫-এ মার্চ রাতে ঘুমিয়ে ছিলাম।আর রাতের আঁধারে আমাদের উপর বিবিধ মারণাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় “পাগলাকুকুর” পাকিস্তানীহানাদারবাহিনী।তারপরও আমরা যুদ্ধ করে সেই পাকিস্তানীশয়তানদের পরাজিত করেছি।এখানেই আমাদের বীরত্ব।আর এখানেই আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব।আর মনে রাখবেন, ওরা পরাজিত হয়ে আমাদের কাছে “মাফ” চেয়েছে।“মাফ” চেয়েছে।“মাফ”!
এই পৃথিবীতে নগ্ন হয়ে কেউ বড় হয়নি।আর কেউ বড় হতে পারবেও না।কারণ, বুদ্ধ-সক্রেটিস থেকে যে-শিক্ষা মানবজীবনে শুরু হয়েছিলো, তা আজও দোর্দণ্ডপ্রতাপে বহমান।নীতি-নৈতিকতা পৃথিবীতে থাকবেই।তাই, শিক্ষাগুরু প্লেটো সেই ধারাই অনুসরণ করেছিলেন।
আর আপনি এখন কোন্ পক্ষে তা একবার নিজেকেই প্রশ্ন করুন।আর আপনার ভাষা সংযত করুন।আগুন নিয়ে খেলবেন না।আগুনে হাত পুড়ে যাবে।দম্ভোক্তি করবেন না।কারণ, ৪২ বছর পরে এই স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে ‘একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদে’র বিচার ও ফাঁসি হচ্ছে।আর আপনি একজন বাঙালি হলে, এখনই আন্তরিকভাবে অন্তত একবার হলেও এজন্য প্রচণ্ডজোরে-প্রকাশ্যে “শোকর আল হামদুলিল্লাহ” ও “সুবহানাল্লাহ” পড়ুন। আর তা করতে না পারলে, মানে, আপনার সাহস কম হলে, আপনি অন্তত মনে মনে তা পড়ুন।আর এটা আপনার নৈতিক দায়িত্ব।

সস্তা জনপ্রিয়তা অর্জন করার জন্য লাগামহীনভাবে নিজের অযাচিত ও অযৌক্তিক মন্তব্য ও মনগড়া-মতবাদ তুলে ধরবেন না।আপনি লিখুন ‘দেশ-মানুষ ও মানবতা’র পক্ষে।কথায়-কথায় পুরানো কাঁসুন্দি-ঘেঁটে নিজের চরিত্র বিনষ্ট করবেন না।তবে কেউ কোনো অসৎ-উদ্দেশ্যে মিথ্যা-কাঁসুন্দি ঘাঁটলে আপনিও তার উপযুক্ত জবাব দিতে পারেন।তবে তা অবশ্যই মানুষের ভাষায়।
দেশের “স্বাধীনতাসংগ্রামের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক” চিরায়ত-সত্যের বিরুদ্ধে কোনো আজেবাজে প্রসঙ্গের অবতারণা করা হলে আপনি সেক্ষেত্রে “সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল বাঘের” মতো গর্জে উঠুন।আর লিখুন চিরবিদ্রোহী হয়ে।আর দেশের প্রসঙ্গে সবসময় আপনার ভাষা শাণিত রাখুন, মার্জিত রাখুন, আর তা মানুষের পাঠযোগ্য রাখুন।
(চলবে)
---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.