নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঈশ্বরের রহস্যময় হাসি (পর্ব—২)

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩৩



ধারাবাহিক উপন্যাস:
ঈশ্বরের রহস্যময় হাসি
(পর্ব—২)

সাইয়িদ রফিকুল হক



সকালে ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি অফিসে চলে যায় ইয়াসিন। আজও সে নাস্তা করতে পারেনি। সকালে স্বামীকে নাশতা পরিবেশন না-করাটা আজকালকার দিনের বেশিরভাগ মেয়েদের ফ্যাশন হয়ে গিয়েছে। তাই, সে নাশতার আশায় বসে না থেকে ছেলে-মেয়ের সঙ্গে দেখা করে দ্রুত বেরিয়ে পড়লো। প্রাইভেট-ফার্মে সে চাকরি করে। তাই, তার সবকিছু ঠিকঠাকমতো চালাতে হবে।

ইয়াসিন কবির রাস্তায় নেমে বুঝলো, আজ গাড়ির খুব সংকট। হরতালটরতাল কিছু নাই। তবুও মাঝে-মাঝে এই শহরে কী-যে হয়! মানুষের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়, নাকি গাড়িঘোড়া কমে যায়? টেম্পুর আশায় দাঁড়িয়ে না থেকে ইয়াসিন দ্রুত পা-চালিয়ে হাঁটতে থাকে। আর সে মনে মনে ভাবে: গরিবের একমাত্র মূল্যবান-সম্পদ এই পা-দুখানি। এই পা-ই গরিবের বিশ্বস্ত-বন্ধু। সে শুনেছে, ভিখারির পা নাকি লক্ষ্মী! কারণ, ভিখারি যতোক্ষণ হাঁটতে পারে ততোক্ষণ তার আয়-রোজগার হতে থাকে। কথাটা মনে হতেই সে আপনমনে হাসলো। আর আরও জোরে হাঁটতে লাগলো। সে আজ হাঁটতে-হাঁটতে অনেকদূর যেতে চায়। আর সে জানে, এই শহরে এখনও কিছু-লোক রোজ হেঁটে-হেঁটে অফিস করে। আর তারা শারীরিকভাবে অলসদের চেয়ে অনেক ভালো আছে। আর এতে অর্থও বাঁচে আবার শরীরের বিরাট উপকার হয়। তাছাড়া, অতিরিক্ত ভাড়া-গুনে সে এখন সিএনজিতে চড়তে পারবে না। আর সে এই সিএনজি-নামক গাড়িটাকে বিশেষভাবে অপছন্দও করে। এটাকে তার কোনো গাড়িই মনে হয় না। তার কাছে সবসময় মনে হয়: এটা যেন সাঁঝের ক্ষিপ্ত-শূয়র! রিক্সার চেয়ে নিচু একটা গাড়ি ক্ষিপ্রগতিতে এমনভাবে ছুটে চলে যেন সে মানুষের গায়ের উপর উঠে পড়বে। সে দেখেছে, মাঝে-মাঝে এই গাড়িগুলো ফুরৎ করে কোথা থেকে ছুটে এসে লোকের গায়ের উপর আছড়ে পড়তে চায়। আর এদের মতিগতিও ভালো না। এরা সবসময় যাত্রীকে ঠকাতে চায়। এরা একশ্রেণীর লোভীশয়তান! ইয়াসিনের তা-ই মনে হয়।

সেকেন্ড-ক্যাপিটালের কাছে এসে ইয়াসিন একটা মিনিবাসে কোনোরকমে উঠতে পারলো। আর এই সুযোগটি কাজে লাগাতে গিয়ে তার জামার বোতাম ছিঁড়েছে কিনা তা সে ভিড়ের মধ্যেও বেশ মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগলো। কোনো বোতামটোতাম না ছেঁড়ায় সে যারপরনাই খুশি হয়ে মহান ঈশ্বরকে মনে মনে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন-জ্ঞাপন করলো। সে ঈশ্বরে বিশ্বাসী একজন মানুষ। সে জানে, তার এই জীবাত্মা যখন-তখন শেষ হয়ে যেতে পারে। আর ঈশ্বর অপার বিস্ময়ের অধিকারী একজন ব্যক্তিত্ব। তাঁর সমক্ষক কেউ নেই। তাঁর হাতেই তার জীবন-মরণ। তাই, সে ঈশ্বরকে ভালোবাসে। তার শত দুঃখ-কষ্টের মধ্যেও সে ঈশ্বরকে কখনও হাতছাড়া করতে চায় না। সে মিনিবাসের চিপা-গলিতে একপাশে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। সে ধৈর্যশীল। আর সে জানে, সে নিরাপদে একসময় মহান ঈশ্বরের ইচ্ছায় তার কর্মস্থলে পৌঁছে যাবে। মহান ঈশ্বরই তাকে নিরাপদে অফিসে পৌঁছে দেবেন। আর এতোদিন যাবৎ তিনি তা-ই করেছেন। তাই, কারও কথায় কিংবা কারও ঈশ্বরবিহীন চিন্তাভাবনার দ্বারা ইয়াসিন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। সে বহু নাস্তিকের লেখা পড়েছে। কিন্তু কারও বক্তব্য সে কখনও গ্রহণ করেনি। কারণ, সে ঈশ্বরকে নিজের ঘনিষ্ঠ-বন্ধু মনে করে। তবে সে একথা কোথাও প্রকাশ করেনি কিংবা সে কারও কাছে তা গর্ব করে বলেনি। সে নিজের মনে ঈশ্বরকে ভালোবেসে সুখী হতে চায়। আর ঈশ্বর তার সকল কাজে ও চিন্তায় প্রেরণার উৎস। সে এই চিরচেনা পথেই হাঁটবে।

ইয়াসিন অফিসে ঢুকতে-না-ঢুকতেই বড়সাহেবের রুমে তার ডাক পড়লো। আর সে দ্রুত মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়ে বসের রুমে ঢুকলো।
বড়সাহেব একবার তার দিকে মুখ-তুলে তাকে দেখে হাসিমুখে বসতে বললেন। আর তা শোনামাত্র ইয়াসিন সঙ্গে-সঙ্গে একটা চেয়ারে বসে পড়লো।

ইয়াসিন লক্ষ্য করলো, তার বস খুব মনোযোগ দিয়ে কী যেন দেখছেন। সে কিছু না-বলে চুপচাপ বসে থাকে। আর ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে থাকে। তার ধৈর্য আছে। সে এখানে বসের হুকুমে সারাদিন বসে থাকতে পারবে।
সময় পেরিয়ে যায়। কমপক্ষে দশ মিনিট। অবশেষে বড়সাহেব মুখটা আরেকবার একটুখানি তুলে ইয়াসিনের দিকে একনজর চেয়ে বললেন, “এগুলো একটু দেখুন। তারপর সবটা বলছি।”
ইয়াসিন কাগজপত্রগুলো কিছুটা সময় নাড়াচাড়া করে বুঝতে পারলো: এগুলো পিএইচডি-থিসিসের কাজ। সে বললো, “স্যার, এগুলো তো কোনো গবেষণার কাগজপত্র! আমি...এগুলো...দিয়ে কী করবো, স্যার? ঠিক বুঝতে পারছি না।”
আলমগীর সাহেব এবার একগাল হেসে বললেন, “আমার মেয়ের খুব শখ সে পিএইচডি করবে। সে সামাজিক-বিজ্ঞান-অনুষদের ছাত্রী। সে থিসিসের অনেকখানি লিখে ফেলেছে। আপনাকে এগুলো খুব মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। আর প্রয়োজনে কারেকশন করতে হবে। আমি শুনেছি: আপনি নাকি লেখালেখি করেন। আর আপনি একজন লেখক। তাই, আমার, আপনার কথা মনে হলো। আর ভাবলাম আপনিই পারবেন এগুলো সুন্দরভাবে কারেকশন করতে। হাজার হলেও আপনি তো একজন লেখক।” বড়সাহেবের কথাটার মধ্যে একরকম ভক্তিভাব রয়েছে।
এবার ইয়াসিন লজ্জা পেয়ে বললো, “না, মানে স্যার, আমি এই একটুআধটু লেখালেখি করি আরকি! খুব বড় কিছু নই, স্যার।”
আলমগীর সাহেব এবার হাসিমুখে বললেন, “ব্যস, ব্যস, আর বলতে হবে না। আপনি লেখক এই যথেষ্ট। আপনার সম্পর্কে আমি আমার মেয়েকে কিছু বলেছিলাম, এই আপনার লেখালেখি, অফিসিয়াল কাজকর্ম, সিনসিয়ারলি-ভাব ইত্যাদি নিয়ে আরকি! আর আমার মুখ থেকে সব শুনে আমার মেয়ে বলেছে, ‘বাবা, উনিই পারবেন, আমার এগুলো একটু দেখে দিতে। তাই, আপনার কাছে আজ নিয়ে এলাম। তাছাড়া, আপনি একজন ইয়াং-মানুষ! আপনাদের মতো মানুষই তো মানুষের স্বকীয় প্রতিভার মূল্যায়ন করতে পারবেন।”
তারপর আলমগীর সাহেব একটু থেমে ইয়াসিনের দিকে চেয়ে হেসে বললেন, “আগুপিছু কোনোকিছু না-ভেবে মেয়ের কথায় আপনার কাছে এসব নিয়ে এসেছি, আপনাকে আবার ঝামেলায় ফেলে দিলাম নাতো?”
এবার ইয়াসিন বিনয়ের সঙ্গে গলে গিয়ে বললো, “না-না স্যার, এ আর এমন কি! বেশি কাজ নাতো! দেখতে-দেখতে হয়ে যাবে।”
একটু সময় নিয়ে সে বললো, “কিন্তু স্যার, কতোদিনের মধ্যে দিতে হবে, তা যদি একটু দয়া করে বলতেন স্যার!”
এবার আলমগীর সাহেব বললেন, “দাঁড়ান-দাঁড়ান, আমার রাজকন্যাকে আগে জিজ্ঞাসা করে দেখি। আর সে কী বলে!”
কথা শেষ করে তিনি মেয়েকে ফোন করতে লাগলেন। ওপাশ থেকে কারও আওয়াজ ভেসে এলো। আলমগীর সাহেব বললেন, “মামণি, তোমার এই কাগজপত্র কবে দিতে হবে? মানে, ইয়াসিন সাহেব কতোদিনের মধ্যে এগুলো দেখে দিবে।”
আচ্ছা-আচ্ছা, বলে বড়সাহেব একটু পরেই ফোন রেখে দিলেন। তারপর ইয়াসিনের দিকে চেয়ে বললেন, “সময় একমাস। এর বেশি দেওয়া যাবে না। আর-একটা কথা, ও আপনাকে ফোন করতে বলেছে। কাজ করতে গিয়ে আপনার কোনো প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। কিংবা আপনি ওর লেখায় কোনো অর্থগত-অসঙ্গতি খুঁজে পেলে, সেক্ষেত্রে ওর সঙ্গে নির্দ্বিধায় কথা বলবেন। আর ও-ই আপনাকে ওর ফোন-নাম্বারটা আমাকে দিতে বলেছে। মেয়েটি আমার ভারি লক্ষ্মী! সে সকল কাজ নিখুঁতভাবে করতে চায়।”
একটুখানি থেমে বড়সাহেব আবার বললেন, “এবার আপনি ওর ফোন-নাম্বারটা লিখে নিন তো।”
ইয়াসিন দ্রুত ফোন-নাম্বারটা লিখতে থাকে। প্রথমে সে তার নাম লিখলো। সে থিসিস পড়তে গিয়ে তার নামটা ইতোমধ্যে জেনে ফেলেছে।
ইতোমধ্যে বড়সাহেবের খাসপিয়ন দবিরউদ্দিন চা দিয়ে গেল। বড়সাহেব এবার ইয়াসিনকে চা-পানে আহ্বান করলেন।

ইয়াসিন দ্রুত উঠে পড়লো। আর কী যেন ভেবে একটু থমকে দাঁড়িয়ে বললো, “স্যার, আপনি আমাকে তুমি করে বলবেন। আপনি সবদিকে দিয়ে অনেক বড়োমানুষ।”
এবার আলমগীর সাহেব হাসতে-হাসতে বললেন, “একথা তো আপনি এর আগেও আমাকে আরও অনেকবার বলেছেন। আচ্ছা দেখা যাবে। আর একসময় হয়তো হয়েই যাবে।” কথাটা শেষ করে বড়সাহেব মৃদু হাসলেন।

ইয়াসিন সালাম দিয়ে বড়সাহেবের রুম থেকে বেরিয়ে এলো। আর অফিস-কলিগরা এটা দেখে রীতিমতো ঈর্ষা করতে লাগলো। তাছাড়া, ইয়াসিনের মুখে এখনও একরকম প্রশান্তি লেগে আছে। এটা তাদের আরও ঈর্ষাকাতর করে তুললো। আর ইয়াসিন কাউকে কিছু না বলে নিজের টেবিলে ফিরে কাজে মন দিলো।

লাঞ্চের সময় তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ-কলিগ হাসানুজ্জামান সাহেব তাকে ধরে বসলো। আর তিনি উত্তেজনায় ছটফট করে বলতে লাগলেন, “স্যারের রুমে তুমি এতোক্ষণ কী করলে!” তার যেন বিস্ময়ের সীমা নেই। তিনি আজ পনেরো বছর যাবৎ এই অফিসে একনাগাড়ে চাকরি করছেন। আর তিনি তার এই পনেরো বছরের জীবনে বড়সাহেবের রুমে গিয়েছেন সর্বসাকুল্যে মাত্র দুইবার। তাও তার ভুলের জন্য বড়সাহেব তাকে ডেকেছিলেন। আর তিনি বড়সাহেবের রুমে ছিলেন মাত্র পাঁচমিনিট। আর ইয়াসিন আজ কিনা পুরা একঘণ্টা বড়সাহেবের সঙ্গে কাটিয়েছে!
শুধু একজন জামান সাহেব নয়, এই অফিসের লোকগুলো এখন ইয়াসিনকে রীতিমতো শ্রদ্ধার চোখে দেখতে শুরু করেছে। এতোদিন তারা তাকে সাধারণ একজন কলিগই মনে করতো। কিন্তু আজ তাদের ধারণা বদলে গেছে। আর তার একনিষ্ঠ-শুভাকাঙ্ক্ষী জামান সাহেব তার পক্ষে ক্যানভাসে নেমেছেন। তিনি এখন ইয়াসিনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
অফিস ছুটির পরে জামান সাহেব জোর করে ইয়াসিনকে নিয়ে রিক্সায় চড়ে বসলেন। তিনি ইয়াসিনের কোনো কথা শুনলেন না।
ইয়াসিন বারবার বলছিলো: ভাইজান, এতো টাকা খরচ করবেন! তারচেয়ে আমরা একটা সিটিংগাড়িতে চড়ে বসি।
হাসানুজ্জামান সাহেব খুশিতে আত্মহারা হয়ে বললেন, “না, তা হবে না। আজ আমরা এখান থেকে রিক্সায় চড়েই বাসায় ফিরবো। আজ আমার বড় আনন্দের দিন। আপনার মতো একজন মানুষ যদি বড়সাহেবের নেকনজরে পড়ে প্রমোশন পেয়ে বড়-কিছু হয়ে যায়, তাহলে, আমাদের জন্য কত লাভ। আমরা খুব ভালো একজন অফিসার পাবো। আর এই অফিসে সুখে-শান্তিতে কাজ করতে পারবো।”

তারপর তিনি একটু থেমে পুনরায় বলতে লাগলেন, “রিক্সাভাড়া মাত্র একশ’ দশ টাকা। এই জীবনে কত টাকা কতখানে খরচ করেছি। আর এ-তো ভালো কাজে ব্যয় হচ্ছে। আপনার মতো একজন মানুষের জন্য সামান্য খরচ! আমি আপনার মতো এতো পড়ালেখা করতে পারিনি। সামান্য বিএ পাস একজন মানুষ। তাই, আপনি বড়-কিছু হলে আমার আনন্দের কোনো সীমা থাকবে না। আর আমি মনে করবো, আমার একজন ভাই-ই বড়-কিছু হয়েছেন।”
ইয়াসিন লক্ষ্য করলো, জামান সাহেবের চোখের কোণে জল জমেছে। এমন একজন ভালোমানুষকে দেখে তার মনটা আজকের নির্জন-সন্ধ্যায় আনন্দে ভরে উঠলো।

রিক্সাটা একেবারে দক্ষিণ পীরেরবাগে এসে থামবে। এখানে খুব কাছাকাছি থাকে ইয়াসিন ও জামান সাহেব।
(চলবে)

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.