নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছোটগল্প(জীবনের গল্প): এখনও রাজাকার

২৯ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৫৮


ছোটগল্প(জীবনের গল্প): এখনও রাজাকার
সাইয়িদ রফিকুল হক

হাসিব পিতার মৃত্যুসংবাদ শুনে আর কালবিলম্ব করলো না। সে তার উপরের বসকে বিষয়টা শুধু একবার জানিয়ে যেন একদৌড়ে বড় রাস্তায় নেমে এলো। এখনই তাকে দিনাজপুরে যেতে হবে।
হাসিব হাতের ঘড়ি দেখলো, এখন দুপুর দুইটা বাজে। বাড়ি যেতে-যেতে তার অনেক দেরি হয়ে হবে। তবে আশার কথা হলো: তার বাবা এই একটুক্ষণ আগে নাকি মারা গেছেন। সে গভীর রাতেও বাড়ি পৌঁছে এখন তার পিতার লাশ দেখতে পারবে।

পিতার মৃত্যুসংবাদ শুনে সে কিছুক্ষণ টালমাটাল হয়ে পড়েছিলো। তবুও সে যে অফিসের এতোগুলো সিঁড়ি-ভেঙ্গে এতো দ্রুত নিচে নেমে আসতে পেরেছে, এজন্য সে নিজেও কম অবাক হলো না। তার পা দুটো এখন পাথরের মতো খুব ভারী মনে হচ্ছে। সে আর হাঁটতে পারছে না। তাই, সে অফিসের সামনে দাঁড়িয়েই একটা রিক্সা খুঁজতে লাগলো।
মিনিট কয়েক পরে সে রিক্সা একটা পেয়েও গেল। সে অল্পসময়ের মধ্যে একটা বাসস্ট্যান্ডে এসে পড়লো। তারপর সে একটা সাধারণ বাসে চড়েই গাবতলীর উদ্দেশ্যে রওনা হলো। সে ভালো কোনো গাড়ি না পেয়ে এই গাড়িটাতেই চড়ে বসেছে।

গাড়িতে চড়েই সে ভাবছে: সে গতরাতেও তো তার বাবার সঙ্গে কথা বলেছে। তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিকই মনে হয়েছে। তার বাবার কোনোপ্রকার বুকে ব্যথা কিংবা হার্টের অসুখ কিংবা কোনোরকম প্রেসার-ট্রেসার ছিল না। তিনি খুব সুস্থমানুষ ছিলেন। হঠাৎ এমন কী হলো? আকস্মিক মৃত্যু! সে ভেবে কোনো কূল-কিনারা করতে পারলো না। তার ছোট ভাই-ই প্রথমে তাকে বাবার মৃত্যুসংবাদটা জানিয়েছে। সে শুধু বলেছে: “হঠাৎ মারা গেছেন। তুমি তাড়াতাড়ি চইলা আসো ভাইয়া।” তার ভাইটি খুব কাঁদছিলো। ভাইয়ের মুখে দুঃসংবাদটা শুনে সঙ্গে-সঙ্গে তার চোখেও জল এসে পড়েছে। আর তাই, সে ছোটভাইকে বেশি কিছু জিজ্ঞাসা করার সুযোগ পায়নি।

গাড়িটা লোকাল হলেও রাস্তা ফাঁকা পেয়ে বেশ তাড়াতাড়িই গাবতলী-বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে গেল। আর সে দ্রুত দিনাজপুরের একটা গাড়িতে কোনোরকমে সিটও পেয়ে গেল। আর গাড়িটা ছেড়েও দিলো কয়েক মিনিটের মধ্যে। সে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। যাক, তবুও সে ভালোয়-ভালোয় তাড়াতাড়ি গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে যেতে পারবে।
গাড়িটা খুব টানছিলো। এতো জোরে কোচটা চালাচ্ছিলো ড্রাইভার যে তা দেখে কয়েকজন যাত্রী ভয়ই পেয়ে গেল। অন্য সময় হলে হাসিবও কিছু বলতো। কিন্তু এখন তার এই বিষয়ে কোনো ভাবনাই নেই। পিতার মৃত্যুসংবাদ তাকে বিহ্বল করে রেখেছে। সে অনেকটা শোকাচ্ছন্ন। তার এখন কিছুই ভালো লাগছে না।

হাসিব শোকে মূহ্যমান হয়ে কখন যে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিলো। তা সে এখন বলতে পারবে না। সে দেখলো: বাস থেকে বেশির ভাগ যাত্রীই নেমে যাচ্ছে। সে বুঝলো: খুব তাড়াতাড়ি সে দিনাজপুরে পৌঁছে গেছে। এখান থেকে তার বাড়ি যেতে খুব বেশি হলে আধ ঘণ্টা লাগবে। সে খুব ব্যতিব্যস্ত হয়ে একটি সিএনজি-গাড়ি ভাড়া করে তাতে দ্রুত উঠে পড়লো। সে হাতের ঘড়ি দেখলো: এখন মাত্র সাড়ে দশটা বাজে। তার নিজের কাছেই মনে হলো: রাত খুব একটা বেশি হয়নি।

বাড়িতে পৌঁছেই সে দেখলো: বাড়িভর্তি মানুষ। গ্রামে-শহরে মিলিয়ে তাদের আত্মীয়স্বজন যে-যেখানে আছে প্রায় সবাই এসে পড়েছে। তাকে দেখেই তার ছোটচাচা ছুটে এসে তাকে জড়িয়ে ধরলেন। আর তিনি ভীষণভাবে কাঁদতে লাগলেন। একটু পরে তিনি কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে বললেন, “ভাইজান মারা যাননি। তাকে খুন করা হয়েছে! এই তো আজকে জোহরের নামাজ পড়ে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন এমন সময় কয়েকজন মুখোশধারী-জানোয়ার তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে। তারপরও তিনি ওদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করেছেন। আর এই ধস্তাধস্তির সময় ওদের একজনের মুখোশ খুলে যায়। আর তাতে আমাদের গ্রামের ধলাই তাকে চিনে ফেলে। আর ধলাই যাকে চিনেছে, সে আর কেউ নয়—সে মজিদ-চেয়ারম্যানের আপন-ভাইস্তা। আর এতে বুঝা যায়: কাজটা মজিদ-চেয়ারম্যানই করেছে। সে তো রাজাকারের বাচ্চা।”
সব শুনে হাসিব যেন একেবারে পাথর হয়ে যায়। আর সে কিছুটা সময় একেবারে নিশ্চুপ হয়ে যায়। এমন সময় কয়েকজন তাকে ধরাধরি করে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেল। আর নিশ্চুপ হয়ে বসে থেকে তার কেবলই মনে হতে লাগলো: এখনও রাজাকার! আর রাজাকাররা এখনও তৎপর!

লোকজন একটু দূরে সরে গেলে হাসিবের মামা আবু তালেব হাসিবের কাছে এসে বললেন, “মজিদের নির্দেশেই ভাইজানকে খুন করেছে তার ভাইস্তা ও তার ছেলে। ওদের সঙ্গে অবশ্য আরও কয়েকজন ছিল। চিন্তা কর মামা, প্রকাশ্য-দিবালোকে একেবারে দিনে দুপুরে একটা মানুষকে ওরা খুন করলো! ওদের কী সাহস বেড়ে গেছে!”

হাসিব বললো, “সাহস তো ওদের সেই একাত্তর সাল থেকে। মজিদের বাপ ছিল স্থানীয় আলবদরবাহিনীর কমান্ডার। মজিদ তখন বয়সে তরুণ বলে শান্তিকমিটির সদস্য ছিল। এখন সে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করে একাত্তরের মতো নৃশংসতায় মেতে উঠেছে। কিন্তু এবার ওদের শেষ করে ফেলবো। আর কোনো বিলম্ব নয়। এবং তা আইজ রাতেই।”
আবু তালেব চমকে ওঠার ভান করে বললেন, “পারবি তো, মামা। পারবি তো?”
হাসিব বললো, “পারবো মানে একশ’বার পারবো, মামা। আর আমরা পারবোই। আর আমাদের পারতেই হবে। তুমি শুধু আমার সঙ্গে থেকো, মামা।”
আবু তালেব চারদিকে তাকিয়ে দেখেশুনে বললেন, “শাবাশ মামা, শাবাশ। আমি আছি তোমার সঙ্গে। এই হায়েনাদের নিধন না করলে দেশ বাঁচবে না।”
এবার হাসিব শান্তস্বরে বললো, “মামা, তুমি শুধু ছোটচাচাকে আমাদের সঙ্গে রেখো।”
এবার তালেব-সাহেব বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে বললেন, “সে চিন্তা তোমাকে করতে হবে না, মামা। আমরা আগে থেকেই এসব ভেবে রেখেছি। শুধু তোমার ফেরার অপেক্ষায় ছিলাম। আর তোমার মুখের কথাটা শুধু শুনতে চেয়েছিলাম। আর তুমি এখন আমাদের সঙ্গে না থাকলেও এই সামান্য কাজটা আমরাই করতে পারবো। প্রতিশোধ আমাদের নিতেই হবে।”
হাসিব বাধা দিয়ে বললো, “না মামা, আমিও তোমাদের সঙ্গে থাকবো। শুধু আমার ছোটভাইটা বাদ থাকুক। যদি আমাদের কখনও ফেরারি হওয়ার দরকার হয় তখন ও মা-কে দেখতে পারবে।”
আবু তালেব-সাহেব বললেন, “তোমরা দুই ভাই-ই আমার বোনের কাছে থাকো। আর যা করার তা আমরাই করতে পারবো। শুধু তোমার ছোটচাচা থাকবে আমাদের সঙ্গে।”

হাসিব ভিতর-বাড়িতে ঢুকে মা-কে দেখলো। তিনি এখন একরকম অচেতন হয়ে রয়েছেন। আর তার ছোট ভাইটি খুব কাঁদছে। বোন দুটিও এসেছে কাঁদতে-কাঁদতে। বাড়িটা এখন ভয়াবহ একটা শোকের কারখানা। তার মেজচাচা এখন থেকেই দাফন-কাফনের জোগাড় করতে ব্যস্ত। আর তিনি মসজিদের মাইকে মৃত্যুসংবাদ-ঘোষণা দেওয়ার কাজটিও শেষ করেছেন। আগামীকাল সকালেই সোনাপদ্মা স্কুলের মাঠে জানাজাশেষে মরহুম মুক্তিযোদ্ধা আসগর আলীর লাশ দাফন করা হবে।

হাসিব এতোক্ষণ নিশ্চুপই ছিল। কিন্তু এবার তার পিতার ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখে সে ভয়ানকভাবে মুষড়ে পড়লো। আর তার কেবলই মনে হতে লাগলো: সমাজের একজন ভালোমানুষকে এভাবে কেউ হত্যা করতে পারে? তার বাবার অপরাধ মাত্র একটি: তিনি স্বাধীনতাবিরোধীদের এলাকার মসজিদে রাজনীতি করার কোনো সুযোগ দিতেন না। এব্যাপারে তিনি ছিলেন অত্র এলাকার মধ্যে সবচেয়ে সরব। তাই, একাত্তরের পরাজিত-হায়েনাগোষ্ঠী তার উপর প্রতিশোধ নিয়েছে।

অনেক রাতে হাসিব কী মনে করে তার ছোটচাচার বাইরের ঘরটাতে ঢুকে দেখলো, সেখানে মুখে কাপড়-বাঁধা আট-দশজন লোক বসে আছে। আর তার ছোটচাচা ও মামা আবু তালেব তাদের উদ্দেশ্যে যেন ফিসফিস করে কী-সব বলছে।
হাসিব তাদের দিকে এগিয়ে যেতেই তার ছোটচাচা তাকে বাধা দিয়ে বললেন, “বাপজান, তুমি এখানে কেন? এই আমরা চরের জমিজমার একটা ঝামেলা নিয়ে আলোচনা করছি। তুমি এখন যাও। বিশ্রাম নাও গে। আর একটু ঘুমাও। সব জোগাড়যত্ন আমরাই করতে পারবো।”
হাসিব তবুও বললো, “চাচা, আমি থাকি!”
তার ছোটচাচা আশরাফ-সাহেব সঙ্গে-সঙ্গে বাধা দিয়ে বললেন, “না-না, বাপজান, তুমি যাও। তুমি অনেকদূর থেকে এসেছো। এখন একটু বিশ্রাম কর।”
হাসিব আর দাঁড়ালো না। সত্যি তার খুব ঘুম পাচ্ছে।


দুঃখ-শোকে অনেকটা যেন জরাগ্রস্ত হয়ে হাসিব যে কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলো, তা সে নিজেই জানে না। ঘুম ভাঙ্গলো তার একেবারে সকালে—তাও সূর্য ওঠার অনেক পরে।

সে মনটাকে একটুখানি সতেজ করার জন্য বাড়ির সামনের বড়রাস্তায় এসে দাঁড়ালো। এমন সময় সে লক্ষ্য করলো: লোকজন যেন ব্যতিব্যস্ত হয়ে কী বলাবলি করছে। সে একটু মনোযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করলো। তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কয়েকজন বেশ ভয়ার্তকণ্ঠে বলছিলো: গতরাতে চেয়ারম্যান-বাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতি হইছে! আর এতে চেয়ারম্যানের দুই ছাওয়ালসহ তার ভাইস্তা নিহত হয়েছে।
শুনে হাসিব যেন কিছুটা চমকে উঠলো। তারপর তার ভিতরে একরকমের আনন্দের সঞ্চার হওয়া মাত্র সে খবরটা যাচাই করার জন্য তাদের বাড়ির কয়েকটা বাড়ির পরে তার এক-বন্ধুর বাড়ির দিকে রওনা হলো। সেখানে গিয়ে সে শুনলো: ঠিক তা-ই। গতরাতে চারজনই নিহত হয়েছে।
হাসিব আর-কিছু না বলে সোজা বাড়ি ফিরে এলো। আর তার যা বোঝার সে বুঝে গেছে।


সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২৫/০৪/২০১৬

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪১

রোয়ানু বলেছেন: হুম ..টিট ফর ট্যাট ... ! এমনই হওয়া উচিৎ মনে হয় ....

৩০ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৩:৫০

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: আসলে তা-ই। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা আমাদের নিতেই হবে।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

২| ২৯ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:২৯

আচার্য বাঙালি বলেছেন: ভালো হয়েছে। আনন্দ পেয়েছি।

৩০ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৪৩

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আর সঙ্গে শুভকামনা।

৩| ২৯ শে মে, ২০১৬ রাত ৮:৪২

ভগবান গণেশ বলেছেন: গল্পই লিখবেন। আপনার হাতে গল্প জমে ওঠে।

৩০ শে মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৫০

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: লিখছি। আপনাদের সহানুভূতি আমার পাথেয়।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর সঙ্গে শুভকামনা।

৪| ২৯ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:০৯

আমি রাজপথের সৈনিক বলেছেন: ভালো লাগার মতো একটা গল্প। লেখককে ধন্যবাদ।

৩০ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৪

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: শুনে আমারও ভালো লাগলো।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

৫| ৩০ শে মে, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৭

মো: সেলিম মাহমুদ বলেছেন: good

৩১ শে মে, ২০১৬ দুপুর ১:০২

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর সঙ্গে রইলো শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.