নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাত্র একদিন ঈদ! কিন্তু তার আয়োজন যেন সারাবছরের!

২৬ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৪:২১


মাত্র একদিন ঈদ! কিন্তু তার আয়োজন যেন সারাবছরের!
সাইয়িদ রফিকুল হক

মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর মাত্র একদিনের জন্য। বছরে একটা মাত্র দিন এই পৃথিবীতে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর যদি সেদিন, কোনো-কারণে বৃষ্টি হয়ে যায়—তাহলে, ম্যাচ পরিত্যাক্ত! আনন্দ প্রায় ষোলোআনাই মাটি। আর তারই জন্য একশ্রেণীর ঈদউৎসাহী-মুসলমানের আয়োজনের ও বিলাসিতার কোনো সীমারেখা নাই। যে যার মতো পারছে—এখন শুধু চোখবুজে ধুমসে কেনাকাটায় ব্যস্ত। আবার কালোটাকার মালিকরা কিংবা টাকার কুমিররা তো এদেশে ঈদের শপিং করে কোনো মজা পাচ্ছে না। তারা ছুটে যাচ্ছে ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, হংকং, চীন, ভারত ইত্যাদি।

ঈদ এলে একশ্রেণীর নামধারী-মুসলমানের খেলা জমে ওঠে। এরা নামাজ-রোজার চেয়ে ঈদকে বেশি ভালোবাসে। আর একমাত্র ঈদকেই ধর্ম মনে করে থাকে। অবশ্যই ঈদ আমাদের আনন্দের দিন। আর ঈদের দিনটি খুবই পবিত্র। কিন্তু এই দিনটি উদযাপনের জন্য অবশ্যই আগে ধর্মপালন করতে হবে।

পবিত্র ঈদুল ফিতর হলো তাদের জন্য—যারা কষ্টস্বীকার করে একমাস রোজাপালন করবে। আর যারা একমাস ‘রাহে লিল্লাহে’ ধৈর্যসহকারে সিয়ামপালন করবে তারা মাসশেষে পরদিন আনন্দের সঙ্গে পবিত্র ঈদুল ফিতরপালন করবে। এই দিনটি রোজাদারদের জন্য। শুধু রোজাদাররা এই দিন ঈদপালন করবে। তারা একমাস আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কষ্টস্বীকার করেছে, ধৈর্যধারণ করেছে। তাই, তাদের জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এই খুশি বা ঈদের ব্যবস্থা। আর যারা সুস্থ-সবল থাকা সত্ত্বেও পবিত্র সিয়ামপালন করেনি তাদের পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন ঈদগাহেই আসতে নিষেধ করেছেন আমাদের পবিত্র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এইজন্য এই ঈদকে ‘রোজার ঈদ’ বলা হয়ে থাকে। এটি রোজাশেষে রোজাদারদের জন্য ঈদ।

ঈদপালন করার জন্য নতুন পোশাক কিনতে হবে—এটি কোনো ফরজ কিংবা ওয়াজিব নয়। তবে সামর্থ্য থাকলে নতুন পোশাকআশাক কিনে পরিধান করা সুন্নত। কিন্তু একশ্রেণীর নামধারী-মুসলমান না বুঝেই ধর্মপালন করতে গিয়ে আজ তারা মনে করছে ঈদ মানেই হলো—নতুন পোশাকআশাক কেনা। আর তা একটার-পর-একটা কেনা আর পরিধান করা।

আসলে ঈদুল ফিতর মানে কী?
ঈদুল ফিতর মানে হলো: একমাস মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে রোজাপালন-শেষে তাঁরই উদ্দেশ্যে পুনরায় এই একটিমাত্র দিনে শরীয়তসম্মতভাবে আনন্দ করে তাঁর শোকরিয়া আদায় করা। আর তাঁর শোকরিয়া আদায় করার জন্য সামর্থ্যবান যে-কেউ তার নিজের জন্য মাত্র একটি পোশাক কিনতে পারবে। ঈদ উপলক্ষে একের অধিক পোশাক কেনাটা বিলাসিতা এবং অন্য মানুষের অধিকার বিনষ্ট করা। এইদিন যাদের পোশাক কেনার সামর্থ্য নাই—তাদের পোশাক কিনে দিতে হবে। আর যাদের ঘরে খাবার নাই তাদের ঘরে খাবারও পৌঁছে দিতে হবে সামর্থ্যবানদেরই।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে ভালো, উন্নতমানের ও সুস্বাদু খাবার খাওয়া পবিত্র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নত। আর এই দিন রক্তসম্পর্কীয় সকল আত্মীয়স্বজনকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আর কেউ গরিব হলে তাকেও সবার আগে সমাদর করতে হবে। কোনোভাবেই নিজেদের আত্মীয়স্বজনকে অবহেলা করা যাবে না। আর পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন সবচেয়ে বেশি অধিকার পাবে রক্তসম্পর্কীয় আত্মীয়স্বজন—তাদের হক বেশি। তারপর প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব ও অন্যান্য।

মনে হিংসা রেখে গায়ে দামি-দামি নতুন পোশাক পরে ঈদপালন হয় না। এসব হলো গায়ে নতুন পোশাক—অথচ, ভিতরে দুর্গন্ধ! পবিত্র ঈদুল ফিতরপালন করার জন্য এতো-এতো পোশাকআশাক কেনার কোনো প্রয়োজন নাই। আর যাদের অবস্থা ভালো, যাদের ঘরে এমনিতেই নতুন-নতুন অসংখ্য পোশাক আলমারির মধ্যে শুয়ে কিংবা ঘুমিয়ে আছে, তাদের তো নতুন পোশাক কেনার কোনো প্রয়োজন নাই। আর যারা লোকদেখানোর উদ্দেশ্যে কোনো পোশাকপরিচ্ছদ-পরিধান করবে—তাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম। আমাদের পবিত্র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা-ই বলে গেছেন। পোশাকপরিধান করতে হবে একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। আমাদের ভাবতে হবে: পোশাকের জন্য ঈদ নয়, ঈদের জন্য পোশাক মাত্র। আর ঈদের দিন নতুন-নতুন কিংবা দামি-দামি পোশাকআশাক পরে যারা একেকজন অহংকারী হয়ে উঠবে—তাদের ঠিকানা জাহান্নাম। মানুষের অহংকারপ্রকাশের কোনো অধিকার নাই। অহংকার হলো একমাত্র মহান আল্লাহর চাদর। আর এই চাদর যারা ধরতে চাইবে বা ধরবে, তারা পাপী ও শয়তান। তাই, পবিত্র ঈদের দিন কেউ যদি দামি কিংবা খুব দামি পোশাকআশাক-পরিধান করে থাকে—তাহলে, তাকে অবশ্যই অহংকারপরিত্যাগ করতে হবে। মহান আল্লাহ ও পবিত্র রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: তিনটি বস্তু মানুষকে ধ্বংস করে দেয়। এগুলো হলো: লোভ, হিংসা ও অহংকার। তাই, এইসব কেনাকাটার বিলাসিতা ও বাহুল্য বর্জন করে সুন্দর ও পবিত্র একটা মন নিয়ে ঈদুল ফিতরের দিন সবার সামনে আমাদের হাজির হতে হবে। মনে রাখতে হবে: লোকদেখানো শপিং বা কেনাকাটা গোনাহের কাজ।

এতো বেশি শপিংয়ের আমাদের কোনো প্রয়োজন নাই। পবিত্র ঈদপালন করতে এতো-এতো কেনাকাটারও কোনো দরকার নাই। পবিত্র ঈদপালনের জন্য সবার আগে প্রয়োজন একটি সুন্দর, পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র মন। আর আমাদের আরও মানবিক হতে হবে। সকল মানুষকে ভালোবাসতে হবে। আর নিজের আত্মীয়স্বজন যতোই গরিব হোক না কেন—সবার আগে তাদের বুকে টেনে নিতে হবে। তাহলেই মুসলমানের পবিত্র ঈদুল ফিতর হবে সার্থক ও সুন্দর।

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২৬/০৬/২০১৬

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৩

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সত্যিকারের রোজাদাররা কখনো অপচয় করে না ঈদের সময়। যারা বেশী খরচ করে তারা সারা বছরই করে। তাদের জন্য এটা শুধু একটা উপলক্ষ টাকা খরচের জন্য। ২০/৩০ হাজার টাকার লেহেঙ্গা কোন তাকওয়া অর্জনকারী পরতে পারে না...

২৮ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:১৯

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: আসলে তা-ই।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আর সঙ্গে রইলো শুভেচ্ছা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.