নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: বেকসুরের কসুর

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৪



গল্প: বেকসুরের কসুর
সাইয়িদ রফিকুল হক

ছেলেটি ক্রমাগত হতাশায় ডুবছিল। আর ভুগছিল নীল-যন্ত্রণায়। কতকগুলো কালকেউটে যেন তাকে অবিরত দংশন করছিল! ভয়ংকর বিষের ছোঁয়ায় জীবনটা বুঝি তার সংকটাপন্ন!
ওর মনের ভিতরে-বাইরে তখন কালবৈশাখীর রুদ্র-মাতম। এই মাতম যেন কিছুতেই থামবার নয়। বিশ্বাসভঙ্গের বেদনায় সে এখন শরাহত পাখির মতো শুধুই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।

মেয়েটির সঙ্গে ওর সম্পর্ক ছিল সাড়ে-চার-বছরের। লোকে বলতো, অনেক মজবুত সম্পর্ক। কিন্তু সেই মজবুত সম্পর্কই ভেঙে গেল একদিনের ছলনায়। তাদের ভালোবাসায় নাকি খুব জোর ছিল! তাও একদিনে হঠাৎ ভেঙে গেল!
সেই থেকে ছেলেটি খুব হতাশ হয়ে পড়লো। তার জীবনে ঘটতে থাকে ছন্দপতন। যে মানুষ কখনও বিড়ি-সিগারেট খেত না—সেই কিনা শেষমেশ ধরলো একেবারে বাংলা-মদ!
তার বাড়ির লোকেরা এসব দেখেশুনে হৈ-হৈ করে উঠলো। কিন্তু ছেলেটি কারও কথাই শুনলো না। সে ক্রমাগত ডুবছিল। আর ডুবতেই যেন তার ভালো লাগছিল। নাতাশার কথা মনে হলে সে বাংলা-মদের পাশাপাশি হুইস্কিও খেয়ে থাকে। তবুও সে তার জীবন থেকে নাতাশার সমস্ত ভৌতিক ছায়া চিরতরে মুছে ফেলতে চায়। সে মদকে এখন খুব বিশ্বাস করে আর ভালোবাসে। কারণ, সে নাতাশার মতো ছলনাময়ী নয়।

তার বন্ধুরা একদিন বললো, “শোন ফারদিন, এসব ছেড়ে তুই আগের মতো হিরো হয়ে ওঠ তো। তোকে এসবে মানায় না। আর বুঝতেই তো পারিস, আরও কত মেয়ে আছে আমাদের দেশে। ওর জন্য এতটা বেশি-বেশি!”
তবুও সে হেসে বললো, “আমাকে কীসে মানায়—তা আমিই ভালো জানি। আর কারও ছলনার জালে আমি আটকাতে চাই না। তাই, মদকে বন্ধু ভেবে ভালোবেসে আলিঙ্গন করেছি।”
ফারদিনের মুখে এসব শুনে বন্ধুরা হতাশ হয়ে যে-যার বাড়িতে ফিরে যায়। সে কারও কোনো কথাই শুনতে চায় না। শুধু দিনে কয়েকবার মদের আহ্বানে সাড়া দেয়।
আরেক ঘনিষ্ঠ বন্ধু একদিন এসে তাকে বললো, “সামান্য একটা মেয়ের জন্য তুই মদ ধরেছিস! এই তোর বিদ্যাবুদ্ধি!”
বন্ধুর কথা শুনে ফারদিন হাসতে-হাসতে বললো, “মেয়েটার জন্য তো মদ ধরিনি। ওর মতো একটা মেয়ের জন্য মদ ধরবো কেন? মদ তো ধরেছি নিজের ওপর রাগ করে। আমি কেন ওরকম একটা সস্তা মেয়েকে ভালোবাসতে গিয়েছিলাম। আসলে, আমি নিজের ওপর রাগ করে মদ খাচ্ছি। আর আমি নিজেকে এখন শাস্তি দিচ্ছি।”

বন্ধুটি বললো, “এভাবে নিজেকে কষ্ট দিয়ে আর তোমার নিজের জীবনীশক্তি ক্ষয় করে কখনও শাস্তি হয় না। এটা বোকামি। এটা বড় ভুল। এতে যে তোমার নিজেরই ষোলোআনা ক্ষতি!”
ফারদিন আবারও হেসে বলে, “সে তো আমিও জানি। শুধু নিজের স্বভাবটাকে দমন করছি। আর যেন কারও খপ্পরে না পড়ি।”
বন্ধুটি তাকে মদ ছাড়াবার জন্য আবার বলে, “কিন্তু এতে তোমার তো কোনো অপরাধ নাই। তুমি কেন নিজেকে এভাবে শাস্তি দিবে?”

ফারদিন এবার গম্ভীর হয়ে বললো, “তা ঠিক। আমার কোনো অপরাধ নাই। আমি এককথায় বেকসুর। কিন্তু আমি কেন তাকে ভালোবাসতে গিয়েছিলাম—এই অপরাধে আজ নিজেকে শাস্তি দিচ্ছি। এটা হলো বেকসুরের কসুর।”


সাইয়িদ রফিকুল হক
০৫/১২/২০১৮

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: ফারদিন বোকা।

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৫৫

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: মানুষ বোকাই হয়।

ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা আপনাকে।

২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:২৭

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: পড়লাম

০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১৮

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: শুনে আনন্দিত হলাম।

আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা।

৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৬

ফারিহা হোসেন প্রভা বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৩০

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: গল্পটি পড়ায় খুশি হলাম।

অনেক ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা আপনাকে।

আর শুভকামনাও।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.