নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

সাইয়িদ রফিকুল হক

আমি লিখি “দেশ, জাতি, মানুষ আর মানবতার” জন্য। আমার লেখা কবিতা, গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও সমালোচনা আমার নিজস্ব ও মৌলিক রচনা। তাই, আমার অনুমতি ব্যতিরেকে এগুলো কপি বা নকল করা আইনতঃ দণ্ডনীয় অপরাধ। পৃথিবীর সকল মানুষের প্রতি আমার ভালোবাসা। জয় মানবের জয়।

সাইয়িদ রফিকুল হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

যাদের ভিন্নমতের প্রতি অ্যালার্জি আছে তাদের মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৫১



যাদের ভিন্নমতের প্রতি অ্যালার্জি আছে তাদের মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন
সাইয়িদ রফিকুল হক

দেশে একশ্রেণির লোকের দেহমনে প্রচণ্ডরকমের দাউদ, একজিমা, বিখাউজ (খাউজানি-চুলকানি), অ্যালার্জি ইত্যাদি রয়েছে। এরা বছরের-পর-বছর পুরুষানুক্রমে বা বংশানুক্রমে এইসব রোগ বহন করে চলেছে। এদের ব্যাধি সারবার নয়। কারণ, এরা ব্যাধি সারাবার জন্য কোনো চিকিৎসাপদ্ধতি গ্রহণ করছে না। উপরন্তু, চুলকানির উপর চুলকানিবৃদ্ধি পাওয়ায় এদের খাউজানি আরও বেড়ে চলেছে। কিন্তু এই ব্যাধি না-সারালে এদের যেমন ক্ষতি তেমনিভাবে জাতিরও বিরাট ক্ষতি হবে। দেশের একটা শ্রেণি চিরদিন রোগাক্রান্ত থাকলে জাতি কখনো সুস্থভাবে এগিয়ে যেতে পারে না।

অ্যালার্জির ক্ষেত্র ও বিষয়সমূহ:

১. মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক যেকোনো পোস্ট বা লেখা দেখলে এরা অযাচিতভাবে উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এদের এসব আর সহ্য হয় না। এরা মারাত্মক উত্তেজিত হয়ে আক্রমণ করে এতদ্বিষয়ক লেখককে বা পোস্টদাতাকে ঘায়েল করতে একেবারে উঠেপড়ে লাগে। এসব লেখা পড়ে এদের চুলকানি ও খাউজানি আরও বেড়ে যায় (কিন্তু, ব্লগের বা ব্লগিংয়ের নিয়ম হলো: যেকেউই যেকোনো লেখার গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারবেন। কিন্তু, এতদসংক্রান্ত আইন-অনুযায়ী পোস্টদাতা বা কোনো লেখককে আক্রমণ করা যাবে না। কিন্তু, এই রোগাক্রান্ত শ্রেণিটি সরাসরি লেখককে বা পোস্টদাতাকে আক্রমণ করে বসে। যা অন্যায়, নীতিগর্হিত, শিষ্টাচারবর্জিত ও সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত)। আমি বহুবার ব্লগে লেখা পোস্ট করে ভিন্নমানসিকতার ব্যক্তিবর্গের দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি। তারা মদীয় লেখা ভালোভাবে না-পড়ে কিংবা লেখা পড়ে লেখার গঠনমূলক সমালোচনা না-করে ব্যক্তিগতভাবে সরাসরি আমাকে আক্রমণ করেছে! তাদের এহেন কার্যকলাপে ও আচরণে আমি বিস্মিত, লজ্জিত ও পীড়িত হয়েছি।

২. দেশের স্বাধীনতাবিরোধীচক্র বা এই চক্রের কোনো হোতার বিরুদ্ধে যৎসামান্য লিখলে এদের চুলকানি আবার বেড়ে যায়! এরা এসব কখনোই সহ্য করতে পারে না। এমনকি কোনো পোস্টে চিহ্নিত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কোনো কুলাঙ্গারকে বা সুনির্দিষ্টভাবে অভিযুক্ত, চিহ্নিত, প্রমাণিত ও তালিকাভুক্ত রাজাকারকেও ‘রাজাকার’ বললে তাদের খাউজানি আরও বেড়ে যায়! এরা যথোপযুক্ত স্থানে বা প্রমাণসিদ্ধ লেখায় ‘রাজাকার’ শব্দের প্রয়োগ দেখলেও ক্ষেপে যায়। এই শব্দটি শুনলে এদের আর ভালো লাগে না। রাজাকার ও রাজাকারশ্রেণির প্রতি এদের দারুণ সহমর্মিতা! তাছাড়াও, এরা পাকিস্তানি-হানাদার, পাক-হানাদার, পাকিস্তানি-জানোয়ার (একাত্তরের প্রেক্ষাপটে পাকআর্মিদের উদ্দেশ্যে বলা), পাকবাহিনী, পাকিপ্রেমী, পাকিস্তানি-নরপশু, পাকিস্তানি-হায়েনা, পাকিস্তানি-জল্লাদ, পাকিস্তানি নরঘাতক ইত্যাদি শব্দের ব্যবহার দেখলেও ভীষণভাবে উত্তেজিত ও বেসামাল হয়ে পড়ে। এরা তখন পোস্টদাতাকে বা লেখককে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে বসে! শুধু তাই নয়, এরা গায়েপড়ে পোস্টদাতার সঙ্গে ঝগড়া বাঁধাতেও আসে! এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?

৩. কিছুসংখ্যক লেখক ও ব্লগার রয়েছেন, তারা বাঙালি-জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসেন। এরা তাদের লেখায় (গল্প, কবিতা, উপন্যাস ইত্যাদি ক্ষেত্রে) বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই পোস্টগুলো দেখামাত্র এই শ্রেণির লোকগুলোর চুলকানির মাত্রা এতোটাই বৃদ্ধি পায় যে, তারা সম্পূর্ণ হিতাহিতজ্ঞান হারিয়ে ফেলে। আর তারা সঙ্গে-সঙ্গে লেখাগুলো ভালোভাবে না-পড়েই সরাসরি বঙ্গবন্ধুকে আক্রমণ করে বসে! কী মূর্খ এরা! বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যৎসামান্য লিখেছি আমরা―কিন্তু তারা আমাদের লেখার গুণাগুণ ছেড়ে সমালোচনা করছে বঙ্গবন্ধুর! বোঝা যায়, এদের উদ্দেশ্য মোটেই ভালো নয়। কিন্তু, এদের ভিতরে-বাইরে চুলকানি! বোঝানো বড় দায়! আরও আছে: এই লেখা বঙ্গবন্ধু লেখেননি! আমরা তাঁকে ভালোবেসে লিখেছি। কিংবা পোস্টদাতা বা লেখক বঙ্গবন্ধুর কথা তুলে ধরতে গিয়ে কোনো ব্লগারকে বা মানুষকে আক্রমণ করেননি! তবুও তাদের চুলকানির মাত্রা উত্তোরত্তর আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে। কারও এসব পোস্ট ভালো না-লাগলে তিনি তা সযত্নে এড়িয়ে চলতে পারেন। কিন্তু তাই বলে বঙ্গবন্ধু-সম্পর্কে কটূক্তি করা কি বিধিসম্মত? যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখেন তাদের লেখার সমালোচনা করুন। পারলে তাদের লেখার ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিন। আর তা-ও করতে হবে সম্পূর্ণ যুক্তিসঙ্গতভাবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে বা বঙ্গবন্ধুবিষয়ক কোনো লেখার লেখক-ব্লগারকে আক্রমণ করবেন না। মনে রাখবেন: আপনি শুধু যেকোনো লেখার গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারবেন। কাউকে আক্রমণ করতে পারবেন না।
বঙ্গবন্ধু একজন মানুষ ছিলেন। আর মানুষমাত্রেই ভুল থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তাঁর শাসনামলের গঠনমূলক সমালোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু তা না-করে পূর্বশত্রুতা বা সম্পূর্ণ আক্রোশবশত কারও পোস্ট বা লেখা পড়ে অহেতুক তাঁর সম্পর্কে আজেবাজে কথা বলা শুধু অনভিপ্রেত নয় বরং তা নীচপ্রকৃতির ও হীনমানসিকতারও পরিচায়ক বটে। বিষয়টি সবারই ভেবে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছি। বঙ্গবন্ধুর কাজের গঠনমূলক সমালোচনা করুন। কিন্তু, এক্ষেত্রে কখনো পরের মুখে ঝাল খাবেন না। আর কোনোকিছু না-জেনে ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে আক্রমণ করে বসবেন না।

৪. ১০ই জানুআরি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ-প্রত্যাবর্তন-দিবস; ২১-এ ফেব্রুআরি ভাষাদিবস; ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ; ২৫-এ মার্চ কালরাত্রি; ২৬-এ মার্চ স্বাধীনতা-দিবস; ১৬ই ডিসেম্বর বিজয়-দিবস ইত্যাদি দিবসগুলো নিয়ে লেখায়ও অনেকে অযাচিত মন্তব্য করার অপচেষ্টা করে থাকে। কারও লেখায় দ্বিমত থাকতে পারে। সবাই আমার মতো হবে না বা আমি সবার মতো হবো না। কারও লেখায় দ্বিমত থাকলে যুক্তি দিয়ে তা খণ্ডন করার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু জাতির ইতিহাস নিয়ে কটাক্ষ করা চলবে না। চুলকানির জোরে মুক্তিযুদ্ধের মতো পবিত্র ও স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কোনো মনগড়া বা আবোলতাবোল কথা বললে তার খেসারত একদিন-না-একদিন আপনাকে দিতেই হবে। এব্যাপারে জাতি কাউকে ক্ষমা করবে না। যুক্তির জবাবে পাল্টা যুক্তি হতে পারে। কিন্তু তাই বলে আক্রোশ কখনোই কাম্য হতে পারে না। কারও লেখা পড়ে মন্তব্য করার নামে অহেতুক আজেবাজে বা আলতুফালতু কথা বলে লাভ কী? আমাদের সবাইকে মনে রাখতে হবে: ‘আইজ মরিলে কাইল দুইদিন!’

৫. ধর্মীয় ওয়াজের নামে একশ্রেণির ধর্মব্যবসায়ী এখন দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে লাগামহীন বক্তব্য দিচ্ছে। এরা নিজেদের স্বার্থে মনগড়া ফতোয়াবাজিও করছে। এরা আমাদের পবিত্র মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতাসম্পর্কিত বিভিন্ন ইতিহাস, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা ইত্যাদি বিষয়েও মারাত্মক অশালীন ও তীব্র অশ্লীল কথা বলতেও দ্বিধা করছে না! এদের বিরুদ্ধে ইতিহাসআশ্রিত, যৌক্তিকধারায়, যুক্তিসঙ্গতব্যাখ্যায় ও কুরআন-হাদিসের আলোকে কারও কোনো সঠিক লেখা প্রকাশিত হওয়ামাত্র তাদের চুলকানি আরও বেড়ে যায়। এরা ভণ্ড ওয়াজকারীদের ঘোর সমর্থক। তাই, এরা নতুন-পুরাতন চুলকানির জোশে এইসব ভণ্ড ওয়াজকারীদের অন্ধভাবে সমর্থন করে থাকে। কেউ-কেউ আবার ব্লগে ধর্মবিষয়ে লেখার নামে ‘মোকসোদুল মুমীন’ ও ‘নিয়ামুল কুরআনে’র কপিপেস্ট করে থাকেন (উচ্চস্তরের গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ-নিবন্ধ লেখার সামর্থ্য হয়তো এদের নাই)। এসব লেখা আমার মতো অনেকেই পড়লেও কোনো মন্তব্য করেন না। আমিও এসব পোস্টে কখনো মন্তব্য করি না। কিংবা এবিষয়ে কখনো কাউকে আঘাত করিনি। কারণ, আমাদের কোনো চুলকানি নাই। তাছাড়া, আমরা মনে করি: মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সবারই আছে। অধিকন্তু, যার-যার অভিরুচি অনুযায়ী পোস্ট বা লেখা প্রকাশিত হবে। এসব বিষয়ে একজন ব্লগার হিসাবে আমাদের বলার কিছুই নাই। এজন্য ব্লগ-কর্তৃপক্ষ রয়েছেন। আমাদের কাজ হলো ব্লগে মানসম্পন্ন লেখা পোস্ট করা, এবং উৎসাহব্যঞ্জক, আশাব্যঞ্জক ও গঠনমূলক মন্তব্য প্রকাশ করা। কিন্তু যাদের দেহমনে এলার্জি বেশি তারা সর্বক্ষেত্রে বেসামাল হয়ে অযাচিত মন্তব্য করে নতুন-পুরাতন ব্লগারদের অহেতুক উত্তেজিত করার মাধ্যমে নিজস্ব ফায়দা লুটতে চান। তাই, দেখা যায়, কোনো লেখা ব্লগে প্রকাশিত হওয়ামাত্রই পঠিত হওয়ার আগেই অযাচিত মন্তব্য চলে আসে। এটি শুভলক্ষণ নয়। আমাদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে বলেই আমরা যাখুশি তা-ই লিখতে ও বলতে পারি না। অন্যের মতামতের প্রতিও আমাদের শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

৬. রবীন্দ্রনাথের নামে কারও-কারও চুলকানির মাত্রা বেড়ে যায়। কিন্তু এত বেশি চুলকাবেন না। বেশি চুলকালে শেষে ঘা হয়ে যাবে। আর তখন মলমেও কাজ হবে না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের ভাষা ও সাহিত্যের প্রধানতম কবি। তাঁর কারণে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিশ্বসভায় প্রভূত মর্যাদালাভ করেছে। বাংলা ভাষার সর্বস্তরের কবি সাহিত্যিকগণ তাঁকে ‘কবিগুরু’ বা ‘বিশ্বকবি’ অভিধায় সম্বোধন করে থাকেন। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামও তাঁকে সবসময় ‘কবিগুরু’ বা ‘গুরু’ বলে সম্বোধন করতেন।
আপনার ভালো না-লাগলে আপনি রবীন্দ্রসাহিত্য পড়বেন না। কিন্তু তাই বলে তাঁর সম্পর্কে কোনো লেখা প্রকাশিত হলে আপনি অমুক-তমুক ভুয়া ঘটনা তুলে ধরে তাঁকে খাটো করার অপচেষ্টা করবেন কেন? এখানে তো উক্ত বিষয়টি সম্পর্কযুক্ত নয়। আপনি পঠিত লেখাটির গঠনমূলক সমালোচনা করুন। কিংবা প্রয়োজনে রবীন্দ্রসাহিত্য পাঠ করে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ করুন। আপনি মনখুলে রবীন্দ্রসাহিত্যের সমালোচনা করুন। কারও লেখা পড়ে ব্যক্তিগতভাবে বিশ্ববরেণ্য কবি রবীন্দ্রনাথকে আক্রমণ করবেন কেন? এটি তো সুস্থতার লক্ষণ নয়। এদেরও চিকিৎসা প্রয়োজন। কারণ, এরাও সমাজের কাটমোল্লাদের মতো রবীন্দ্রনাথকে আজও ‘হিন্দু-কবি’ মনে করে থাকে!

৭. অনেকে আছেন নিজের পছন্দের লেখকের বাইরে আর কাউকে লেখক মনে করেন না। বা তাঁদের দাম দেন না! পারলে সবসময় তাঁদের শুধু সমালোচনাই করেন! এটাও আধুনিক মানুষের বৈশিষ্ট্য হতে পারে না। তবে সবাই উচ্চস্তরের লেখক নন―একথা সত্য। আপনার কাছে আপনার পছন্দের লেখক খুব বড় বা খুব পণ্ডিত! ঠিক আছে, আপনি তাঁকে তা-ই ভাবুন। কিন্তু অপরের পছন্দের কবি, লেখক বা সাহিত্যিককে কখনো আঘাত করতে যাবেন না। আপনার যেমন পছন্দের কেউ থাকতে পারে অন্যেরও তো পছন্দের কেউ-একজন বা কয়েকজন থাকতে পারে। সেটা কি আপনি একবারও ভাববেন না? নাকি অন্যের পছন্দনীয় কোনো কবি-লেখকের পোস্ট দেখামাত্র আপনার চুলকানি শুরু হয়ে যাবে? সবকিছুতে আপনার এত চুলকায় কেন? আর আপনি এতদিন নতুন-পুরাতন চুলকানি কেন পুষে রেখেছেন? এগুলো সারান না কেন? এসব সারিয়ে ফেলুন। আর আধুনিকযুগে এগুলো কখনোই মানায় না।

৮. কবিতা, গল্প, ছোটগল্প, প্রবন্ধ-নিবন্ধ, উপন্যাস ইত্যাদি বোঝার মানসিকতা সবার সমান বা উপযুক্ত থাকে না। কিন্তু অনেকেই এতে মন্তব্য করে থাকেন। সবার মন্তব্যও যথাযথ ও কার্যকরী হয় না। তবুও অনেকে মন্তব্যের খাতিরে মন্তব্য করে থাকেন। বিশেষত ছোটগল্প ও কবিতা বুঝতে হয়। এটি বোঝার বিষয়। আর এটি আত্মস্থ করতে হয়। এই দুটিকে একসঙ্গে করার কারণ হলো: দুইটিই কবিতা। আসলে, ছোটগল্পও কবিতার মতো হতে হবে। আর তাই, যে-সব ছোটগল্প কবিতার মতো আবেগঘন বা হৃদয়গ্রাহী হবে সেগুলো তত বেশি সৃষ্টিশীল ও নান্দনিক হয়ে উঠবে। এজন্য রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পগুলো এত জনপ্রিয়। আর তিনি বাংলা সাহিত্যে ছোটগল্পের পথিকৃৎ তথা জনক। কবিতার ক্ষেত্রে কবির মতো বা কোনো-কোনো-ক্ষেত্রে কবির চেয়ে পাঠককে বেশি পরিমাণ ছন্দ, ভাবসম্পদ, অলংকার ইত্যাদি বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। তাহলে, তিনি কবিতার যথার্থ সমালোচক হতে পারবেন। কিন্তু যিনি কবিতার ছন্দ ও অলংকার শাস্ত্র বিষয়ে অনভিজ্ঞ―তিনি কীভাবে কবিতার সমালোচনা করবেন? এক্ষেত্রে কারও কবিতা পড়ে তা কারও মনঃপুত না-হলে তিনি যদি অহেতুক একটা মন্তব্য করে বসেন―সেটা কি বিধিসম্মত? চুলকানি আছে বলেই সবজায়গায় সবসময় চুলকাতে হয় না। এতে হিতে বিপরীত হয়।

৯. ‘জয়-বাংলা’ বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান। এটি মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান। আওয়ামীলীগের লোকজন এটি সবসময় ব্যবহার করেন বলেই এটি তাদের একমাত্র সম্পদ বা স্লোগান নয়। এটি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশরাষ্ট্রে বিশ্বাসী প্রতিটি বাঙালির পছন্দের ও প্রিয় স্লোগান। কেউ-কেউ পাকিস্তানকে এত ভালোবাসে যে, এই স্লোগান শুনলে বা এটা কোথাও লেখা দেখলে তাদের গা-জ্বলে! কিন্তু এত অ্যালার্জি রাখবেন না। আপনিও বাঙালি হয়ে উঠুন। অ্যালার্জি এমনিতে কমে যাবে।

১০. নারীবিষয়ক অনেক লেখায় কেউ-কেউ কাটমোল্লাদের মতো অযাচিত মন্তব্য করে থাকেন। তারা নারীদের অধিকার দিতে একেবারে নারাজ। আমি নারীবাদী নই। এমনকি নারীবাদীদের পক্ষেও বলছি না। কিন্তু সমাজে-রাষ্ট্রে নারীদের অধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে সবসময় তা সমর্থন করি। সকলক্ষেত্রে নারীদের সমান অধিকার দেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু কিছু-কিছু লোক নারীবিষয়ক পোস্ট বা লেখা দেখামাত্রই পোস্টকারীকে নারীবাদী বলে আক্রমণ করে তার বিরুদ্ধে নানারকম বিষোদগার করতে থাকেন? বাজারের ভণ্ড ওয়াজকারীদের মতো তাকে ঘায়েল করার চেষ্টা করেন। কারও এসব পোস্ট বা লেখা ভালো না-লাগলে তিনি তা সযত্নে এড়িয়ে যেতে পারেন। কিন্তু তিনি তা না-করে পোস্টদাতা বা লেখককে তার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেন!

ব্লগে এখন সবাই লিখতে পারেন। এটা লেখালেখির ক্ষেত্রে একটি উন্মুক্ত ও বিরাট প্ল্যাটফর্ম। দৈনিক পত্রিকার সাহিত্য-সম্পাদকদের কাছে আর করজোড়ে ধর্না দিতে হয় না। তারা আজ ছাপাই, কাল ছাপাই করে কাউকে আর বার্ধক্যে পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে না। এজন্য ব্লগগুলোর কাছে আমি একজন ক্ষুদ্র লিখিয়ে ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ। ব্লগগুলো আছে বলেই আমরা এখন নানারকম লেখালেখি নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলতে পারি! কিন্তু এক্ষেত্রে সৌজন্য, শিষ্টাচার ও শালীনতাবোধকে কোনোভাবেই বিসর্জন দেওয়া যাবে না।

যাদের ভিন্নমতের প্রতি এত অ্যালার্জি আছে তাদের জরুরিভিত্তিতে মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন। এতে তিনি যেমন শান্তি পাবেন বা সুস্থ হবেন ঠিক তেমনিভাবে সমাজ-রাষ্ট্রের সর্বস্তরের শান্তিকামী মানুষগুলোও পরিত্রাণলাভ করবেন।

জয় হোক ব্লগের। জয় হোক ব্লগারদের।



সাইয়িদ রফিকুল হক
১২/০১/২০২১

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমি রিটায়ার্ড ইন্জিনিয়ার; আপনি কি ধরণের পেশায় আছেন?

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:০১

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: আমি সাধারণ একজন মানুষ।
আর স্বশিক্ষিত।
শিক্ষকতায় নিয়োজিত।

২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:২৮

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: সকল ক্ষেত্রে মতবিরোধ বা মতের অমিল খারাপ নয় বরং তা পারস্পরিক আলাপ আলোচনায় সঠিক জিনিষটি জানতে সহায়তা করে। তবে পরমত আমাদের অনেকেরই সহ্য হয়না ।অথচ জীবনে এটাই সবচেয়ে জরুরী।

অন্যকে সম্মান করলে নিজে সম্মানিত হওয়া যায়, অন্যকে অসম্মান করে নয় -এটাই আমরা ভুলে যাই ।

জয় হোক মানবিকতার ,জয় হোক যুক্তি-তর্কের।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৫:৫৪

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: যেকোনো গঠনমূলক সমালোচনা ভালো। কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ বা আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ ভালো নয়।
যুক্তিসঙ্গত তর্কবিতর্কও ভালো। কিন্তু তা যেন সীমার মধ্যে থাকে।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা আর শুভকামনা রইলো।

৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২২

চাঁদগাজী বলেছেন:



লেখা ভালো হয়নি।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:১০

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: চেষ্টা করছি ভালো লেখার। দোয়া করবেন যেন ভালো লিখতে পারি।

৪| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১১

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: মূল বক্তব্যের সাথে এক মত।সংক্ষেপে লিখলে ক্ষতি ছিল না।

১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:৪৩

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সংক্ষেপ করতে পারিনি। এটা আমার ব্যর্থতা।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আর শুভেচ্ছা অগণিত।

৫| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১৭

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আগে বাজারে এলার্জির মলম বিক্রি হতো তা দিয়ে মানুষ ভালো হতো না । এখন দেখি না এইসব।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ১১:৫২

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: গ্রামে গেলে হাটেবাজারে আমিও দেখেছি।
মানুষ যেহেতেু ভালো হয় না সেহেতু এইসব মলম উঠে গেছে। B-)

আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আর শুভেচ্ছা অগণিত।

৬| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট দেখে তো মনে হচ্ছে আপনার ই এলার্জি আছে জনাব।

৭| ১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ বিকাল ৪:৪৮

অনল চৌধুরী বলেছেন: বাংলাদেশের বেশীরভাগ লোকের মজ্জাগত বৈশিষ্টই ভিন্নমত দমন। ধর্মীয় ব্যাক্তিত্ব বা এরশাদ, হু আজাদ, তসলমা, বা সত্যজিত-কারো যুক্তিসঙ্গত বিরোধিতাই এরা সহ্য করতে পারে না।
যুক্তি দিয়ে বিরোধিতা না করে করে যেকোনো ধরণের সন্ত্রাসের মাধ্যমে।

১৪ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:১৫

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: যাদের বুদ্ধি-বিবেক নাশ হয়ে যায় তাদের যুক্তি আর ভালো লাগে না।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর শুভেচ্ছা নিরন্তর।

৮| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ৩:৪৬

অনল চৌধুরী বলেছেন: এ্যামেরিকার রাষ্ট্রপতিদের কেউ পাগল ভাড় শয়তান কুকুর বললেও কেউ কারো বিরুদ্ধে মামলা হয় না বা কোনোদিন কোরাগারে যায় না।

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪০

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সেখানে সবকিছু সহনীয়।
আমেরিকার জনগণ কখনো দেশ, জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় পতাকা, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি সমর্থন করে না।
তারা দেশের প্রেসিডেন্টকে হত্যার বিরুদ্ধে।
সেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আছে বলেই তারা কখনো দেশের স্পর্শকাতর বিষয়ে বাজে মন্তব্য করে না। কিন্তু আমাদের দেশে একশ্রেণির অমানুষ দেশের বিরুদ্ধেও কথা বলতে দ্বিধা করে না।
সেখানকার সমালোচনা সাময়িক। আর আমাদের দেশের একশ্রেণির লোক ইতিহাসকে আঘাত করে আনন্দ পায়।
হয়তো আমাদের দেশে একদিন সুসভ্য মানুষের আবির্ভাব ঘটবে। সেইদিনের প্রত্যাশায়।

আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ। আর শুভেচ্ছা।

৯| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ সকাল ৯:৫১

রানার ব্লগ বলেছেন: আপনার পোস্ট খানা আমার পছন্দ হইছে। এই সকল চুলকানি যুক্ত লোক দিনে দিনে বারছে। এরা কথায় কথায় দেখবেন জাজাকাল্লাহ খাইরান, আলহামদুলিল্লাহ, সুবাহান আল্লাহ বলবে এবং বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের ইতিহাস নিয়ে হাসি তামাশায় মেতে উঠবে, এরা বিশাল মাপের উস্কানিমূলক ধর্মীয় আলচনা ফেদে বসবে ভাব খানা এমন তিনি একমাত্র তিনি যাহা জানেন তাহা অন্য কেউই জানে না। এদের হঠাৎ করে নজরুল প্রিতি ব্যাপক আকারে দেখা দিবে এই এরাই কিন্তু এক সময় নজরুল কে গালাগাল করতো নাস্তিক বলে এরাই সুর করে বলতো, "নজরুল তুমি করিয়াছো ভুল দারি না রেখে রাখিয়াছ চুল"

১৫ ই জানুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:২৪

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: ভণ্ডরা সবসময় মুখোশধারী। এরা মুখে মধু অন্তরে বিষ

আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা আর শুভকামনা রইলো।
ঢাকায় থাকলে একদিন চা-য়ের দাওয়াত রইলো।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.